![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- শ্রাবণ একটু নিচে যা তো বাপ।
- সোহাগকে বলো।
- ও পারবে না। তুই যা।
- আমি ঘুমাচ্ছি এখন। পরে যাব।
- এখন যেতে বলেছি, এখনই যাবি। নো এক্সকিউজ।
- প্লিজ আম্মু।
- এইনে টাকা। কেজি কয়েক গরুর মাংস আনবি।
আমি কম্বলের মধ্যে থেকে ইঁদুরের মতো মাথা বের করে দেখলাম আম্মু রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। বিছানায় উঠে বসলাম। দেখলাম এক হাজার টাকার তিনখানা চকচকে নোট। দ্রুত বেগে নোটগুলো পকেটের চিপায় নিয়ে বিছানা ছাড়লাম। দাঁত ব্রাশ করতে করতে ভাবলাম এই সাত সকালে গরুর মাংস কেন? মেহমানদারী করবে টরবে নাকি? আমাকে ব্রাশ করতে দেখে আম্মু বিরক্তির স্বরে বললো, এখনো যাসনি? দাঁত কি পরে এসে মাজা যাবে না?
আমি ব্রাশ মুখের মধ্যে নিয়ে নিচে নামতেছি আর গান গাচ্ছি "আমি তোমায় ভালোবাসি, জগতে হইয়াছি দোষী।" সিড়ির মোড় ঘুরতেই লে হালুয়া। একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে চিৎ পটাং হয়ে ইচ্ছে করেই শুয়ে পড়লাম। যাতে মেয়েটা আমাকে কিছু না বলতে পারে। নয়তো একগাদা কথা শুনাবে, "কানা নাকি? চোখ কি পকেটে নিয়ে হাঁটেন? মেয়ে দেখলেই..." ইত্যাদি ইত্যাদি।
মেয়েটা আমার হাত ধরে টেনে তুলে বললো, লাগেনি তো? আমি মেয়েটির দিকে চেয়ে আছি। অসম্ভব সুন্দরী। মেয়েটি আমার বউ। একমাস হলো বিয়ে করেছি। আমি বললাম, আচ্ছা সুজানা এতো সকালে গরুর মাংস দিয়ে কী হবে?
- কে সুজানা?
- তুমি।
- পাগল টাগল নাকি?
- এই এই তুমি আমাকে চিনতে পারছো না? আমি শ্রাবণ।
- আমি মহাপ্লাবন। মেয়ে দেখলেই বউ ভাবতে ইচ্ছে করে না?
- দেখো বউ সাত সকালে মশকরা কইরো না।
- ধুর যত্তসব পাগল ছাগল।
বউ উপরে চলে গেল। আমি রাস্তার ওপাশে থাকা মাংসের দোকানে গিয়ে চার কেজি মাংস নিলাম। মাংস নিয়ে রাস্তার এ পারে আসতেই দেখি সুজানা দাঁড়িয়ে আছে। আমি তার হাতে মাংস দিয়ে বললাম, যাও এগুলো নিয়ে উপরে যাও।
সে চুপচাপ আমার হাত থেকে মাংস নিয়ে উপরে চলে গেল। আমি পাশের একটা দোকান থাকে ছোট ভাইয়ের জন্য কয়েকটা চকলেট নিলাম। কারণ তাকে দিয়ে আজ একটা কাজ সম্পন্ন করাব।
.
বাসায় ঢুকতেই আম্মু বলে উঠলো, কিরে এখনো যাসনি মাংস কিনতে?
- গেছিলাম তো।
- তাহলে মাংস কই?
- কেন? সুজানা মাংস নিয়ে বাসায় ফেরেনি?
- সুজানা কে?
- সুজানা কে মানে? তোমার বেটার বউ।
- কি? তুই বিয়ে করেছিস? ও শ্রাবণের বাপ শুনছো, তোমার ছেলে নাকি বিয়ে করেছে।
- আম্মু তুমি চিল্লাছো কেন? তোমার পছন্দেই না বিয়ে করলাম।
আম্মুর চেঁচামেচি দেখে সোহাগ ছুটে এলো। এসেই আমার হাত থেকে চকলেটগুলো ছোবল দিয়ে নিয়ে বললো, কী হয়েছে ভাইয়া? আম্মু এই সাত সকালে চেঁচাচ্ছে কেন?
- আরে দেখ না আমি সুজানার কাছে মাংস কিনে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আর আম্মু বলে সুজানা আবার কে?
- হ্যাঁ তাইতো! এই সুজানা কে?
- সোহাগ ফাইজলামি করিস না। সুজানা তোর ভাবি। তুই না বিয়েতে তোর ভাবির সাথে ছবি উঠলি? দেখাবো ছবি?
- হু দেখাও।
আমি মোবাইল বের করে ছবি বের করতে গিয়ে দেখি ছবি নেই। আরে ছবি গেল কোথায়? গ্যালারি ভর্তি না ছবি ছিল? গেল কোথায় সব? আর এসব কী হচ্ছে আমার সাথে? নিশ্চয়ই আম্মু মজা করছে। কিন্তু এই সুজানাটা গেল কোথায়? সে এলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
.
বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি। পুরো মাথাটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। ৬০ ফিটে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। ভাবছি আজ আর বাসায় যাব না। হাসানকে বললাম, দোস্ত আজ তোদের ওখানে থাকা যাবে?
সে না করল না। কিন্তু সিয়াম বললো, কিরে আজ বোধ হয় ভাবির সাথে ঝগড়া হয়েছে?
আমি বললাম, আরে না তেমন কিছু না।
হাসানের ওখানে আর যাওয়া হয়নি। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলে সুজানা দরজা খুলে দিলো। আমাকে দেখে বললো, সারাদিন কোথায় ছিলে? আর ফোন বন্ধ করে রেখেছো কেন?
- কেমন আছো সুজানা? তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
- বলো।
- তুমি কিন্তু দেখতে সুন্দর। তুমি চাইলে আমি তোমাকে সাজিয়ে রাখতে পারি।
- কী বলছো এসব?
- আমার টাকা পয়সার অভাব নেই।
- আমি তোমার বউ।
- আরেব্বা বিয়ে না করতেই বউ?
সুজানা আম্মুকে ডাকতে লাগলো। আমি বললাম, তুমি চাইলে আমরা বিয়ে করতে পারি।
আম্মু এলে সুজানা বললো, মা দেখেন আপনার ছেলে কীসব আবোলতাবোল বকছে।
- কী হয়েছে?
- আম্মু সুজানা মেয়েটা অনেক সুন্দর না?
- হ্যাঁ।
- তোমার বউমা হিসেবে কিন্তু মন্দ হবে না।
- কী বলছিস এসব?
- তুমি আব্বাকে বিয়ের ব্যবস্থা করতে বলো।
- পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি? সে তো তোর বউ। আবার বিয়ে কেন?
- আম্মু তোমার মাথা টাথা কি ঠিক আছে? সে আমার বউ হলো কবে? সে তো আমার বান্ধবী।
- তোর বান্ধবী তো আমাদের বাসায় কী করছে?
- বেড়াতে এসেছে। তুমি বিয়ের ব্যবস্থা করো। আমি একটু রেস্ট নেই।
রুমে এসে দরজা লাগিয়ে লুঙ্গি পড়ে কিছুক্ষণ ডান্স দিলাম। কেমন লাগে এখন? সকালে আমাকে বলদ বানিয়েছো। এখন কেমন লাগছে বলদ সাজতে? সকালে বললে সুজানা আবার কে? আর এখন বলছো সুজানা আমার বউ।
খানিকবাদে সুজানা রুমে এলো। আমি বললাম, কী ব্যাপার বিয়ের আগেই তুমি আমার রুমে কী করো? লোকে মন্দ বলবে। যাও বাইরে যাও। আগে বিয়েটা করে নেই।
- এই লক্ষ্মী বর, তুমি কি কিছু খেয়ে এসেছো? উল্টাপাল্টা কীসব বলছো?
- দেখো সুজানা, আম্মু দেখে ফেললে প্রবলেম হয়ে যাবে। বাইরে যাও।
আমি হাত ধরে টেনে তাকে রুম থেকে বের করে দিলাম। আজ রাতে আম্মুর কাছে ঘুমা। আমার সাথে নাটক করিস হ্যাঁ? আজ কার বুকে মাথা রাখবি?
.
রাত আনুমানিক এগারোটা কিংবা সাড়ে এগারোটা। ফোনের রিংটোনে ঘুম ভাঙলো। আম্মু কল করেছে। আমি রিসিভ করলাম।
- শ্রাবণ সুজানাকে তোর কাছে নিয়ে যা। মেয়েটা কান্না করছে।
- ছিঃ আম্মু ছিঃ, একটা বেগানা নারীকে এতরাতে আমার কাছে রাখবো কেন? লোকে জানলে কী হবে ভেবেছো?
- সে তো তোর বউ?
- সকালের কথা ভুলে গিয়েছো আম্মু? সারাদিন না খেয়ে ছিলাম। নিজের হাতে গরুর মাংস কিনলাম। অথচ খেতে পারলাম না। তোমরা আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিলে।
- আচ্ছা বাবা সরি। এখন তোর বউকে তুই নিয়ে যা।
- পাঠিয়ে দাও।
খানিক পর সুজানা দরজায় নক করলো। আমি দরজা খুল দিতেই সে জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করলো। বললো, সরি শ্রাবণ একটু মজা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মজা করতে গিয়ে তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। তুমি বসো, আমি খাবার নিয়ে আসছি। গরুর মাংস পোলাও সব রেখে দিয়েছি তোমার জন্য।
আহা আহা! অথচ বউটা জানে না আমি বাইরে থেকে বিরিয়ানি খেয়ে এসেছি।
.
বউ
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৮
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: আমি বারবার কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিলাম!! খেলাটা ভালই জমেছিল- মজা পেলাম বেশ
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৮
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: হাহাহা, ধন্যবাদ ভাই।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: গুড।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৪
পদ্মপুকুর বলেছেন: হেভি পার্ট নিলেন.... তবে ভাববেন না, এক মাঘে শীত যায় না... তার উপর সুজানার মত সুন্দরী বউ! একটু সাবধানে থাইকেন স্যার...
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৯
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: বউ যাবে না। দীর্ঘ সময়ের পিরিতের বিয়ে।
৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৬
সাগর শরীফ বলেছেন: সুন্দর।
৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুব সুন্দর
৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: একবার ভাবছি বউ !! - আবার ভাবছি বউনা !!!।কি এক মুসিবতে ফালাইছিলেন ভাইজান।
যাক সবশেষে ভালায় ভালায় বউ অইল ,কনফিউশন দূর অইল - সুখে ,শান্তি ও সন্ধিতে রাতে মিলিত হল। আহা বেশ,বেশ,বেশ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫০
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: বউ ছাড়া থাকাও পসিবল না। অবশ্য আম্মু ফোন না করলেও তাকে আমি নিজেই নিয়ে আসতাম
৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৮
অশুভ বলেছেন: প্রথমে ভাবছিলাম সাইকোথ্রিলার জাতীয় কিছু একটা। পরে দেখি রোমান্টিক রম্য। অসাধারণ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫০
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: হাহাহা। ধন্যবাদ ভাই
৯| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হাহাহাহাহাহ দারুন মজার হয়েছে গল্প
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫০
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু
১০| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সব লেখাই একই রকম হয়ে যাচ্ছে। নতুন কিছু নাই।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৭
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: এটাই অনেকদিন পর লিখলাম ভাইজান। যদি একটু বলতেন কেমন টাইপ গল্প হলে ভালো হয়। তবে সেই টাইপ লিখতাম।
১১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪
নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: বাঃ, বেশ মজার গল্প তো।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৬
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫২
শোভন শামস বলেছেন: সুন্দর লিখা, শুভেচ্ছা