![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাঠক এ লেখার কোন নাম আমি দিতে পারিনি। আপনাদের পছন্দ মত ঠিক করে নেবেন।
দুটো বড় রাস্তাকে যোগ করেছে
আমাদের এই গলিটা
আছে লেন – বাই লেন
দুপাশে বাড়ি আর চায়ের দোকান
অন্য গলির চেয়ে আলাদা নয় একটুও
খোলা নর্দমার পাশে পড়ে থাকা ডিমের খোসা
দেওয়ালে লাগা পানের পিক
ভোট চাওয়া লেখার পাশে
ছবি ফুটবলারের বা ক্রিকেটারের
গাছের ডালে বা দোকানের চালে ওড়ে
রাজনৈতিক দলের পতাকা
একটি ফুলগাছ পড়ে অযতনে – অনাদরে
গলিটা দিয়ে সর্টকাটে পৌঁছান যায় গন্তব্যে।
একটুও আলাদা নয় !
তাই না !
গলিটা আলাদা
গলিটার মাঝ দিয়ে শর্টকাট করে যারা
মাথা নিচু করে জোরে চলে যায়
তাকালেই যদি গলিটা গিলে খায় !
গলিটা দিনেতে ঘুমায় আর জেগে থাকে রাতে
ঘরছাড়া মানুষের আনন্দ – বেদনাতে।
রাত জাগা মানুষ
দিনে চলে যায়
হাসি আর কান্না
ফেলে রেখে যায়
আমাদের বিছানায়।
হ্যাঁ গো বাবু এই গলিতে আমরা থাকি
কত নামের নামাবলী জড়ানো শরীরে
অপ্সরা – দেবপ্রিয়া – দেবদাসী
নগর নটী – নগর বধূ আবার
রক্ষিতা – রাঁড় – বাজারের মেয়েছেলে – রাখন্তি
মনেও পড়ে না সব
আসলে আমরা সব বেশ্যা
আমরা PROSTITUTE !
সমাজের কি অসাধারণ বিচার
দিনের বেলায় ঘৃণিত আমাদের শরীর
রাতের অন্ধকারে গৃহীত তোমাদের প্রণয় আলিঙ্গনে !
যুগে যুগে – কালে কালে
আমরা ব্যবহৃত তোমাদের হাতে
তোমাদের প্রয়োজনে
উর্বশী – রম্ভা – মাতাহারি
আরও কত নাম
শত্রু শিবিরের খবর আনতে হবে
ব্যবসা অথবা রাজনিতির গোপন খবর
কিংবা স্কুপ
আমাদের শরীরে হয় মুশকিল আসান
তবু তোমরা ঘৃণা কর আমাদের গলিটাকে
আমাদের শরীরটাকে !
প্রতিরাতে আমাদের মাংস খেতে খেতে
একবারও কি মনে হয় না তোমাদের
কেন এল এ শরীরটা এ ঘরে – হল বহুভোগ্যা
হয়ত কর – আর উত্তর পাও
চরিত্র খারাপ ছিল – তাই এইখানে
মাতৃগর্ভ থেকে বার হয়ে
শৈশব হয়ে যায় পার
একটি মেয়ে কল্পনা করে চলে
প্রতিরাতে নিজ দেহ উন্মুক্ত করতেই হবে
নইলে খাওয়া জুটবে বা তার
মানবিকতার কি অসাধারণ উপহার !
তোমাদের লোলুপ দৃষ্টি ছাড়ে নি দেবীকে
বিদ্যাদেবীর বক্ষদেশের প্রতি পড়েছে
দৃষ্টি প্রথম
বর্ণনা করেনি তার মুখের সৌন্দর্য
নারীকে কামনার চক্ষে দেখিবার
আছে তব অধিকার !
ঘৃণা করি আমরা তোমাদের
ঘৃণা করি
তোমাদের কলুষ আলিঙ্গন কে ঘৃণা করি
যুগে যুগে ব্যবহৃত হতে হতে
ঘৃণা করি
পায়ে দলি তোমাদের লেখা কাব্য
নারীকে করেছ মহান বানিয়ে ভোগের উপাদান
সত্যবতী থেকে কুন্তী হয়ে দ্রৌপদী রূপে !
একালের দ্রৌপদী আমরা
আমরা তোমাদের দয়া করি
কারণ আমরা জানি – আমরা না থাকলে সমাজে
তোমাদের মা – বোন
পঞ্চ স্বামী নয় পঞ্চশত স্বামীর ভোগ্যা হত
ঠিক আমাদেরই মত।
হে পুরুষ মন্দিরে করজোড়ে কর প্রণাম
যদি মন হয় প্রকৃত উদার
একবার প্রণাম কোর আমাদের গলিটারে
কারণ
আমরা আছি বলেই
তোমাদের ঘর সুরক্ষিত আজ
তোমাদের লালসার কলুষতা হতে
আমরা বেশ্যা – বাজারের মেয়েছেলে ! শ্রীতোষ ২৩/০৮/২০১৫
©somewhere in net ltd.