নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেন মৃত্যু হচ্ছে লোকালয়ে প্রতিদিন,মরে যাচ্ছি আজাবে সুদহীন...

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা

শহুরে ডিপ্রেশনে আবদ্ধ.....

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাস্ত রাস্তারর আস্ত গল্প...

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

ঘটনা ১...



সাজিদ...



সখের ফটোগ্রাফার।ফটোগ্রাফের চাইতে যতই ফটোগ্রাফারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক তার মূল্য অন্যরকম।কারণ তার ছবি বিদেশের অনলাইনে বিভিন্ন পত্রিকা ছিড়ে কেড়ে নেয় তাদের কভার করার জন্য।একটু ভিন্ন ধর্মী কিছু বের করে আনতে ট্রাই করে সে তার শিল্পকর্মে।এর জন্য দু'এক পয়সা ছাড়তেও দ্বিধাবোধ করে না সে।কারণ ও আছে অবশ্য।পত্রিকা গুলো এমনি এমনি তার কাজগুলো নেয় না।এরজন্য তাকে সামান্য সংখ্যক ডলার ও দেয়।যা এই দেশীয় মুদ্রায় বৃহৎ কিছু....



একদিন রিক্সায় যাওয়ার রাস্তায় এক চাচাকে পড়ে থাকতে দেখে সে।পেশায় ভিক্ষুক।হাত-পা সবই আছে কিন্তু কোনো একটা অজানা কারণে সে চলতে পারে না ঠিকমতো কথাও বলতে পারেনা।মুখ দিয়ে ক্ষুধার্ত কুকুরের মতো লালা ঝড়ে। চাচা বলে সন্বোধন করে রিক্সা আলাকে থামিয়ে পাশে আশে।চাচা ভাবে নিশ্চয় ভিক্ষা দেবে।থালাটা বাড়িয়ে দেয়...



কিন্তু সাজিদ ভিক্ষা দেয় না।ঘাড়ে হাত রাখে।বলে...



-চাচা সকালে নাস্তা করেছেন....???



কালো ফ্রেমের মোটা গ্লাসের চশমা পড়া মোটা ছেলেটার মুখে অমায়িক হাসি।কিন্তু চাচা হাসতে পারে না।মাথা নেড়ে জানায় না খায়নি।



-আচ্ছা চাচা খাওয়াচ্ছি...



কাধের ব্যাগ নামিয়ে হাত ঢুকায় সে।চাচা ভাবে নিশ্চয় কোনো খাবার হবে।কিন্তু কালো রঙের সরু নলওয়ালা আজব এক জিনিস বেরিয়ে আসে ব্যাগের খোলা মুখ থেকে।চাচাকে বিভিন্ন এংগেলে রেখে বিভিন্ন আলো ছায়ার খেলা খেলিয়ে ছবি তোলে সে।মনে মনে অনেক খুশি।সাদা কালো ইফেক্টে অসাধারণ কিছু ছবি তুলেছে সে।অনেক ছবি তোলার পর...



-এই সামনের বেকারী থেকেই আমি খাবার আনছি।ওয়েট....



রিক্সা আলাকে বলে সে রওনা দেয়।আশেপাশে দোকান নেই।একটু সামনে গিয়েই বেকারি পেলো।একটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে ভাবে এখানেই বসেই ছবি আপলোড করে নেই।ল্যাপটপ টা খুলে ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে একে একে আপ করে সব ছবি।২-৩ মিনিটের মাথাতেই তার ছবি টা চড়া দামে বিক্রি হয়ে যায়।সেই উপলক্ষে হালকা পাতলা খাওয়া দাওয়া না দিলেই নয়।একটা চিকেন রোল আর কোল্ড কফির অর্ডার দেয় সে।চাচার পাউরুটির কথা বেমালুম ভুলে যায়।ফেসবুকে গার্লফ্রেন্ডকে গুড নিউজটা জানায়।গার্লফ্রেন্ড বাসায় যেতে বলেছে।তার আম্মু তার হবু জামাইয়ের জন্য তার পছন্দের পাউরুটির স্যান্ডুইচ বানিয়েছে....





ঘটনা ২...





শিক্ত...



দূর থেকেই চাচার সিগারেটের দোকান থেকে সাজিদের ছবি তোলা আর চলে যাওয়া দেখছিলো সে।মানুষের আক্কেল জ্ঞানের খুব অভাব।



ফেসবুকে তার অসংখ্য ফলোয়ার।সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করা দরকার।এক বিশদ বিবরণ দিয়ে বিব্রতকর সেই ছেলে সম্পর্কে বৃহৎ স্ট্যাটাস রচনা করে সে।সিগারেটের শেষ ছাইগুলো পড়ার আগেই লাইকের সংখ্যা গুলো দ্বিগুন হতে তিন গুনে চলে যায়।পড়তে থাকে অতিরিক্ত ভদ্র ভাষায় কিছু কমেন্ট....





ঘটনা ৩...



পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো একটা মা কুকুর তার তিনটে অবাধ্য বাচ্চা নিয়ে।কিচ্ছুক্ষণ চাচার পাশে এসে দাড়িয়ে থাকে।একটু ডাকাডাকি করে।চাচা ভয় পেয়ে হাত নাড়াতে চায়।হাত আর নড়ে না।নড়ে কিছু মাছি তার মুখ বেয়ে পড়া লালা থেকে....



মা কুকুরটা সম্ভবত পাউরুটি বানাতে জানে না তাই কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যার্থ প্রয়াস চালিয়ে মাথা নত করেই বাচ্চাগুলোকে নিয়ে চলে যায়.....



এই দৃশ্যটাকে বন্দী করার মতো কেউ থাকে না এক বিধাতা ছাড়া আর কেউ থাকে না। স্ট্যাটাস দেয়ার মতোও কেউ থাকে না।কারণ এর চড়া মূল্য নেই।এর জন্য কারো সোসাল স্ট্যাটাস ও হাই হয় না।কারো গার্লফ্রেন্ড এর আম্মুও স্যান্ডুইচ খাওয়ায় না....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.