![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্লগে হিট হওয়ার জন্য মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে রাজীবের ব্লগ না দেখলে তা কেউ বিস্বাস করতে পারবেন না। শুধু রাজীব না, আরও অনেক নামকরা ব্লগার আছেন যারা বিভিন্ন ধর্মকে আক্রমণ করে তাদের ব্লগে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন।
আমি বিশাল বড় ধার্মিক নই, কিন্ত এতটুকু জানি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা অনুচিত। ধর্ম যার যার নিজস্ব ব্যাপার। ধর্মে বিস্পাস করা না করাটাও যার যার ব্যাপার। ব্লগার রাজীব নাস্তিক ছিল এটাও তার একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দ। তার নাস্তিকতা নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। স্বাধীন দেশে স্বাধীন পছন্দ। কিন্তু নিজে নাস্তিক বলে যে অপরের বিস্বাস-ধর্মকে আঘাত করতে হবে এটা কেমন স্বাধীনতা?
আমরা সবাই জানি আমাদের দেশে ব্লগারদের একটা বড় অংশই নাস্তিক। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে সেইসব "নাস্তিক ব্লগার" দের অনুরোধ করছি, দয়া করে কারও ধর্ম নিয়ে আপনারা মাথা ঘামাবেন না। আপনারাতো ধর্মে বিস্বাসী না তাইনা?
যেই জিনিসে আপনারা বিস্বাসই করেননা সেটা নিয়ে মাথা ঘামানো তো বোকামি তাইনা?
দয়া করে কোন ধর্মকে আঘাত করে লাখো মানুষের মনে তথা বিস্বাসে আঘাত করে নিজেদের "বোকা" হিসেবে পরিচয় দিবেন না।
থাবাবাবা'র ব্লগ পড়ে আক্ষরিক অর্থেই "হা" হয়েছিলাম। তিনি নাস্তিক, সেটা একান্তই ছিল তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। তিনি তার ব্লগ এ তার নিজস্ব মতামত ব্যাখ্যা করতে চাইলে সেটাও তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আমাদের কাছে তিনি ছিলেন রাজাকার বিরোধী একজন সহযোদ্ধা। কিন্তু তার ব্লগ দেখে মেজাজ খারাপ হয়েছে, এটা সত্যি। তিনি নাস্তিক এবং সেটা তিনি প্রকাশ করেছেন জোরেশোরে, সেজন্য নয়। তিনি কুৎসিত ভাবে ইসলাম কে আক্রমণ করেছেন, সেজন্য। তিনি খোদা এবং তার রাসুল (সাঃ) নিয়ে নিম্নমানের কথাবার্তা বলেছেন সেইজন্য। তিনি হাজার হাজার মুসলিম দের ও এবং পবিত্র মুসলিম ধর্ম কে কুৎসিত ভাবে আক্রমণ করেছেন, সেইজন্য।
হে নাস্তিকগণ! আপনাদের বিশ্বাস সম্পূর্ণই আপনাদের ব্যাপার। সেটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আপনার কোনই অধিকার নাই মুসলিম ধর্ম এবং মুসলিম সম্প্রদায় কে আক্রমণ করার। আমরা তো আপনার নাস্তিকতা কে আক্রমণ করিনি। আপনি কেন করবেন? আপনার ব্লগ এ আপনি আপনার মতামত প্রকাশ করতেই পারেন, কিন্তু বিনা কারণে, বিনা যুক্তিতে আক্রমণ কেন করবেন?
আমরা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চাই না, কিন্তু এক ই সাথে ধর্ম-আক্রমণভিত্তিক রাজনীতি ও চাই না। দিনশেষে সকলের ধর্ম বিশ্বাস একান্তই ব্যক্তিগত; কারোর অধিকার নাই সেটা নিয়ে কথা বলার।
সকল নাস্তিকগণের প্রতি অনুরোধ, অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন। এক ই অনুরোধ রইল সকল ধর্মের অনুসারীর জন্য। আমাদের প্রতিবাদ রাজাকার দের বিরুদ্ধে; দয়া করে এটাকে ধর্ম/বিধর্ম ভিত্তিক রূপ দিবেন না।
শুরু টা ছিল আশাবাঞ্জক। এক কুখ্যাত কসাই রাজাকার কে যাবজ্জীবন দেয়া হোল আমাদের মানবতাবোধ কে ঘোল খাইয়ে। সবাই প্রজন্ম চত্বর এ জড়ো হলাম তার ফাঁসির দাবীতে। সব ঠিক ছিল।
তারপর কি হোল? সেই নোংরা রাজনীতি। "সকল রাজাকার' এর ফাঁসি চাই থেকে দাবী কিভাবে কিভাবে হয়ে গেল "জামায়াত জবাই করো, শিবির এর চামড়া খোল, ইত্যাদি ইত্যাদি।" কিভাবে এটা হোল, সেটা নাহয় বিস্তারিত নাই বা বললাম। যারা বুদ্ধিমান এবং নিরপেক্ষ, সরল দৃষ্টি দিয়ে আন্দোলন এর ব্যাপারে পড়ছেন তারা ঠিক বুঝতে পারবেন।
শুরু হোল ধর্ম নিয়ে নোংরা খেলা। আমরা আন্দোলনকারীরা নাকি নাস্তিক ! আমরা নাকি মুসলিম বিরোধী ! যেই দল ধর্ম কে পুঁজি করে হত্যা করে, ধর্ষণ করে, তারা নাকি ধার্মিক ! আমরা মোমবাতি জ্বালিয়ে সম্মান প্রদান করলে হয়ে আগুন পূজা ! অথচ বিদ্যুৎ চলে গেলে তারা যখন মোমবাতি জ্বালান সেটা নিয়ে কোন বিবৃতি নাই। আমরা নাকি পথে নেমে খোদা কে না ডেকে দেশ কে বিভ্রান্তি'র পথে নিয়ে যাচ্ছি, অথচ তারা পবিত্র কুরআন শরীফ এর নামে হত্যা, ধর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। খোদা বলেছেন, ন্যায়বিচার এর পথে হাঁটতে। তিনি বলেছেন, যারা ভাগ্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করে না, তিনি তাদের সাহায্য করেন না। তারা বলছেন, রাজাকার দের বিচার আল্লাহ্ করবেন, আমরা করার কে ? তাহলে দেশে আর সরকার রাখার দরকার ই বা কি ? সব কিছু তার হাতেই ছেড়ে দেই ? যখন আমাদের আপনজন খুন হবেন, আমরা হত্যাকারী কে ছেড়ে দিয়ে বলবো যে "যান, খোদা আপনার বিচার করবেন। আমি ছেড়ে দিলাম।" নাকি ?
যাই হোক, আন্দোলন এ ফিরে যাই। তো আমরা এসেছিলাম সকল রাজাকার এর ফাঁসি চাইতে, হয়ে গেল জামাত-শিবির এর বিপক্ষে আন্দোলন। জামাত-শিবির কে আমি নিজেও বাক্তিগত ভাবে ঘৃণা করি, কিন্তু তার মানে এই না যে আন্দোলন এর উদ্দেশ্য ভুলে যাব। আমি সকল রাজাকার এর ফাঁসির আদেশ এর জন্য আন্দোলনকারী, আর কোন উদ্দেশ্য নাই আমার। আমি জানি সকল নিরপেক্ষ অভিন্ন দাবী নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। জনতার আবেগ কে পুঁজি করে এটাকে নোংরা রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু হোল। বিভিন্ন নেতারা এসে সুযোগ মতো বক্তব্য দিলেন। উস্কানো হোল জামাতকে, ব্যবহার করা হোল জনগন কে।
ফলাফল-ব্লগার থাবাবাবা জবাই। কে এই থাবাবাবা ? এমন একজন যিনি শুধু নাস্তিক ই নন, বরং মুসলিম ধর্ম নিয়ে নিজের ব্লগে যা তাই লিখেছেন। পড়লাম তার ব্লগ। পরার পর একটাই প্রতিক্রিয়া-নাউজুবিল্লাহ।
যিনি মুসলিম ধর্ম নিয়ে এত বেখাপ্পা জিনিস লিখতে পারেন তিনি আর যাই হোক মুসলিম নন।
তবে, তিনি কি মানুষকে বাধ্য করছেন তার কথা মানতে? তিনি কি ধর্মের নামে হত্যাকাণ্ড করছেন? তিনি কি মানুষকে জোর করে তার কথা শুনতে বাধ্য করছেন? তিনি কি মহাসমাবেশ করে নিজের মতামত সবার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন? তিনি তার ব্লগে ব্যাক্তিগত মতামত প্রকাশ করেছেন-এই স্বাধীনতা কি তার নাই ? তাহলে আমরা স্বাধীন জাতি কিভাবে ?
শিবির একটা খুব জঘন্য কিন্তু বড় একটা চাল চাললো। একজন নাস্তিক হত্যা করে দুনিয়ার কাছে তুলে ধরতে চাইল এই যুদ্ধ আস্তিক আর নাস্তিকদের মধ্যে। আরও দেখাতে চাইলো যে এই আন্দোলনের নিয়ন্ত্রনকর্তারা সব নাস্তিক যারা কিনা দেশে ইসলাম এর শাসন চায় না।
আমরা সাধারন জনগন বিশ্বাস করি আল্লাহর সেই বানিতে যেই বানি বলে একজন মানুষকে হত্যা করা চরম অপরাধ। সে ধার্মিক হোক আর বিধর্মী হোক। আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন, ধর্ষক এবং খুনিরা ইসলাম এর নাম ভাংগিয়ে পার পাবে না ইনশাল্লাহ।
আমাকে বলুন তো, যদি জানতে পারেন যে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা নাস্তিক ছিলেন, তাহলে কি তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করবেন না ?
এই থাবাবাবা কি বিশ্বাস করতেন তা আমার কাছে জরুরী না। এই থাবাবাবার ব্লগ কি আসল নাকি নকল সেটাও জানি না। তবে এটা জানি, রাজাকার এর ফাঁসির বিচার এর সাথে ধর্ম নিয়ে কোন সম্পর্ক নাই। এটা জানি যে, মানুষ হত্যা সকল ধর্মেই, সকল আইনেই অপরাধ।
©somewhere in net ltd.