![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুড়ি। পুরান ঢাকায় কবে, কখন, কোথায় প্রথম ঘুড়ি উৎসব শুরু হয়েছিল--তা ইতিহাস থেকে ভালোভাবে জানা যায় না। ঐতিহাসিকদের মতে, ১৭৪০ সালের দিকে নবাব নাজিম নওয়াজেস মোহাম্মদ খাঁন এর সময় থেকে ঢাকায় ‘ঘুড়ি উড়ানো’ উৎসব হিসাবে প্রচলিত হয় এবং নবাব পরিবাররা এ উৎসবের উৎসাহদাতা ছিলেন। সেই সময় ঘুড়ি উড়ানো আনন্দ অভিজাত মহলে সীমাবদ্ধ ছিল--যা এখন সর্বসাধারনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত দুই দিন ধরে পুরান ঢাকায় চলছে পৌষ সংক্রান্তি উৎসব। এ বছর সঙক্রান্তি উৎসব নাকি দুদিন পড়েছে, সরকারীভাবে গত মঙ্গলবার, বাংলা পন্চিকা অনুসারে বুধবার। তাই গত দুই দিন পুরান ঢাকার অলিতে গলিতে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই নাটাই-ঘুড়ি-সাজ-সজ্জায় ব্যস্ত।
পুরান ঢাকার ঘুড়ি উৎসবের আনন্দ বরাবরের মত এ বছরও জাঁকজমকভাবে উদযাপিত হয়েছে। প্রজাপতি, পঙ্খিরাজ, চুড়িদার, গাহেলদার, কাউঠাদার, চোখদার, চাঁনদার, ঘর গুড্ডি, বাক্স গুড্ডি, কয়রা ইত্যাদি নানারকমের ঘুড়ি উড়ানো; প্লাকার্ড, ফেস্টুন প্রদর্শনী এবং সাজানো ঘোড়ার গাড়ীতে অলি-গলি ঘুড়ে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার মানুষের পৌষ সংক্রান্তি উৎসব উদযাপিত হয়েছে। মোড়ে-মোড়ে, বাড়ীর ছাদে-ছাদে, ক্লাব, সংঘ অথবা বন্ধুদের দল মিলে গান বাজিয়ে নেচে-গেয়ে সারাদিন সবাইকে মাতিয়ে রেখেছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া হিন্দি গানের আওয়াজ রাত ২টা/৩টা পর্যন্ত চলে। কেউ কোন বিরক্তি প্রকাশ করেছে বলে আজ পর্যন্ত শুনি নাই। পূজা-পার্বন আর ডোল-কাসার কান ফাটানো আওয়াজ তো সারা বছরই পুরান ঢাকায় লেগেই আছে, তারপর হিন্দু বিয়েতে পূজার মতই সময়-অসময় ডোল-কাসার শব্দ; আবার রমজান মাসে সেহেরীর সময় মসজিদের মাইকে বা মুসুল্লিদের ঘুম থেকে উঠার আহ্বান অথবা হাজার-হাজার গরু কোরবানীর সময়টাতেও সবাই অনেক ধৈর্য্যশীল থাকে, যেন সবই নিজেদের কাজ। শত শত বছর ধরে পুরান ঢাকার মানুষ এভাবেই ধৈয্যের অগ্নি পরীক্ষায় কালোত্তীর্ণ।
পৌষের শেষ দিন, কেউ বা মাঘের প্রথম দিন সনাতন হিন্দুরা বাসার কাছে খোলা জায়গায় পৌষ সংক্রান্তির পূজা করে গুচ্ছ কাঠের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে। নানা রকমের শাড়ি, জড়িদার কাপড়-চোপড় পড়ে ছোট বড় সব বয়সের নারীরা আগুনের চারিদিকে পূজা সামগ্রী সাজিয়ে বসে ‘বুড়া-বুড়ির পূজা’ উদযাপন করে; পৌষ মাসকে বিদায় জানিয়ে মাঘ মাসকে গ্রহণ করে।
পুরান ঢাকার ছাদে ছাদে গত দুইদিন ধরে বর্নাঢ্য ঘুড়ি উৎসব চলছে। ছোট বড় সবাই নানা রঙের সূতা মেজে, হরেক রকমের ঘুড়ি উড়িয়ে, বিচিত্র রকমের পিঠার আয়োজনে নাচ-গান-বাজনার মধ্য দিয়ে সারাদিন ব্যাপী পৌষ সংক্রান্তির ঘুড়ি উৎসবের আযোজন করে। রাতের বেলা পটকা ফাটিয়ে, আকাশে নানা রকম আতশবাজি জ্বালিয়ে পৌষ সংক্রান্তিতে কিশোর-যুবকরা আনন্দ প্রকাশ করেছে। আবার কেউ কেউ মুখের ভিতর কেরোসিন তেল নিয়ে সামনে মশাল রেখে মুখের তেল মশালের উপর ছুড়ে মারে--হঠাৎ করে আগুন জ্বলে ওঠে ঘন কুয়াশার অন্ধকারে। কেউ কেউ রাতের আঁধারে ঘুড়ির সূতার সাথে আলোকিত ফানুশ বেঁধে আকাশে উঁড়িয়ে দেয়; দুর থেকে দেখলে মনে হয়, আকাশে যেন ধুমকেতুর গুচ্ছ জ্বলছে। পৌষকে বিদায় দেবার এ যেন অন্য রকম পৌষ সংক্রান্তি উৎসব।
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০০
রাসেলহাসান বলেছেন: ভালো।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩
রাতুল_শাহ বলেছেন: