![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এক ঐতিহাসিক নব সৃষ্টি / মুক্ত লিখি দুর্বার দৃষ্টি
গ্রাম বাংলার গল্প বিচিত্রা
****** পরিবেশ বন্ধু
গ্রাম বাংলার গল্প বিচিত্রা
চার , ভানবাসি
মা মা ভাত দে ভাত দে চিৎকার করে কাঁদে ছোট শিশু , বাড়ির উটানে থই থই বন্যার পানি । ভাংগা বেড়ার ফাঁক গলে বাতাসের ঝাপটায় শিষ আসে ঘরে , ছালার ছট দিয়ে ঘর মেরামতে ব্যাস্ত লক্ষ্মী ,মেয়ের কান্নায় বিরক্তি লাগে পাশ ফিরে টাস করে অর গালে বসায় ধুম চর ।বান্দরনি এত খাই খাই করস কেন মরবার পারস্ না আর কত জালাবি ক । আরও জুরে সুরে মাটিতে পড়ে কাদে অবুজ শিশু , অনেকক্ষণ কাজ করে মা আর মেয়ে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়ে মেযে । কলার বেলায় চড়ে বসু ডাকে মা এহনি লও পশ্চিম পাড়ায় , কেন রে আবু কি ব্যাপার ,
চেয়ারম্যান সাব চিরা মুড়ি ডাইল হজ্ঞলরে দিতাছে শেষে গেলে টগবা ।হাছা কইছস বাজান ,মাইয়া আমার প্যাডের জালায় গুমাইয়া গেল তয় খাড়া আমি এহনি
আহি ।
ঘুমন্ত মেয়েকে কুলে লয়ে মা ছেলে ছুটে মিয়া বাড়ীতে । অনেক মানুষের হৈ হল্লা
মেম্বার রতন চৌকিদার কে নির্দেশ দেয়, সব যেন সারিতে দ্বারায় নইলে রিলিফ
বন্ধ করে দেওয়া হবে । দুতিন জন চৌকিদার বাঁশি বাজায় অনবরত, মাঝে
মাঝে লাটি দিয়ে আঘাত করে ,কার ও গায়ে কিন্তু কে শুনে কার কথা । যারা রিলিফ বিলানোতে ব্যস্ত তারা বিরক্তি বোধ করে , কেউ যৎসামান্য পায় আবার কেউ গালি দেয় ,চেচা মেচি শুনে কুলের শিশুটি জাগে ,মাগো প্যাডে বড় খিদা এই দেহ কুত্তায় ক্যামনে খায় আমারে দিবা , কুকুর ও কাকের খাওয়া দেখে মা ধমকে উটে, এই বসু
বেহলের মত খারাইয়া রইছস কেন , বেবাক মাইন সে পাইল আর মগ ভাগ্য অহন
এক্টা দানাও মিল্লনা । বসু হটাৎ খেয়াল করে, জটলার মধ্য থেকে দুতিন জন লোক কি নিয়ে তারা তারি সরে পড়ে । দাতে দাত কাটে সে , তখন ওর মুখে একটা শব্দ ফুটে চুর চুর চুর ।
মাসুদ রানা , রচনা ৬/১/২০১২ইং ।
গ্রাম বাংলার গল্প বিচিত্রা
সলিল সমাধি
************
১৪ টি পরম আত্মীয় এক সারিতে ধরম পাশা হাসপাতালের জমিনে , হাজারও মানুষের মৌন চলাফেরা । সবে নির্বাক । ওরা বাদশা গঞ্জ পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ।
প্রতিদিনের মত ওরা একত্রিত হয় ঘাটে , হাওরের মুক্ত বায়ু প্রান জুড়ায় ।
জনি সম্পা তারিনা হালিমা চৈতি বাবুল রাকেশ আর ও অনেকেই । ট্রলার ঘাটে
ভিড়লে হুড়মুড় করে উটে পড়বে যাবে স্কুলে । স্কুলের সময় হয়ে গেল এখন ও ট্রলার আসছেনা কেন বাবুল , হু আসবে আসবে ঈষৎ গাঁড় নাড়ে জনি অই দেখ
মজার কাণ্ড , আকাশের দিকে তাকায় সবে এক ঝাক পাখি এক খণ্ড মেঘ ছুয়ে ছুয়ে
ওড়ে ।চৈতি টিস্পনি কাটে ,কই আমি ত কিছুই দেখছিনা । সম্পা জবাব দেয় তর
চোখে ব্যরাম দেখবি কেমনে । কথা শুনে আর সব খিল খিল হাসে ।
একসময় ট্রলার ঘাটে ভিড়ে । তিল পরিমান জায়গা নেই পা ফেলার । গাদা গাদি করে ওড়া উটে , গ্রামের নাম বালি জুড়ি , সারা আকাশ জুড়ে ভাসমান মেঘ মালা । পশ্চিমে একটা লাল বিজলী শিখা ধিরে ধিরে মিশে যায় হিমালয় পাহাড়ের পাদদেশে । বাতাসের ঝাপটায় ডেউয়ের ক্ষনা আঁচড়ে পড়ে নায়ে , ওদের নিস্পাপ
শরীরে ।পাশেই জেলেদের ছোট ছোট নৌকা , জলায় কত গুলো হাস সাতার কাটে । এইসব দৃশ্য দেখে দেখে ও রা এ গিয়ে যায় ।
নিরবতা বাঙ্গে মাহি আইজ স্কুলে যাইতে আমার মন চাইছিলনা , তারিনা হু আমারও। বাবুল আমি স্বপনে দেখলাম এক টা বিরাট জংগলে ছুটছি কিন্তু কোন
পথ খুজে পাচ্ছি লাম না , সেই থেকে আমার মনটা ভালনা । ধমক দেয় জনি দূর বোকা স্বপন আবার সত্য হয় নাকি ।
হটাৎ ইঞ্জিনের বিকট শব্দে কানে তালা লাগে ।কেঁপে উটে বুক , চারিদিকে শুধু পানি আর পানি । নৌকা ডুবে যায় ।
সলিল সমাধি হয় ওরা ।স্কুলের গন্তব্য ছাড়িয়ে , ওরা চলে যায় দূর সিমানায়
সেখান থেকে আর কোন দিন আমাদের স্বপ্নলোকে ফিরবেনা ।
[সত্য ঘটনা অবলম্বনে নাম ও কথা রূপক ]
মাসুদ রানা , রচনা ৬/৭/২০১২ ইং শুক্রবার
©somewhere in net ltd.