নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্যের আদ্যোপান্ত

সাব্বির উদ্দিন

দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে অনেক থেকেছি সাহিত্যের সংস্পর্শে, লিখেছি মানুষ ও প্রকৃতি নিয়ে। যা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।

সাব্বির উদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১১

আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের ৩৬৮ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। পিতৃহীন পরিবারের ৬ নম্বর সন্তান। বলা যায় অভাবের মধ্য দিয়েই আমরা ৯ ভাই-বোন বড় হচ্ছিলাম। বাবা বহু পূর্বেই মাকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন, একবারও ভাবেননি পরিবারের এতগুলো সদস্য কী করে দিন যাপন করবেন। মায়ের কিছুই করার ছিলোনা, কয়েক বিঘা জমি ছিলো তা বিক্রি করেই আমাদের ভরণপোষণ করছিলেন। বহু কষ্টে মা প্রতিমাসে ৭০০ টাকা ডাকযোগে পাঠাতেন, কখনো নির্দিষ্ট সময়ে পাঠাতে পারতেন না। তাই পোষ্টম্যান মামার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হতো, আমাদের সময় প্রাইভেট পড়ানোর তেমন ভাবনা আমাদের মাথায় কাজ করেনি, করলে হয়ত প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু টাকা রোজগার করে মাকে রেহাই দেওয়া যেত! অনেক দিনের কথা, সম্বোবতঃ দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিলো। অনেক রাত অবধী পড়ালেখা করে ঘুমিয়েছিলাম, ভোর রাতে হঠাত করেই আমার দরজায় কে জেনো ডাকছিলো, কিন্তু আমার খুব রাগ হচ্ছিলো, তাই তাকে বকা দিচ্ছিলাম! হলের নাইটগাড বলছিলো আমার মা নাকি এসেছে। তখন প্রচন্ড শীত।বাইরে হওয়া খুবই কঠিন। আর আমার মা ঢাকা তো দূরে থাক বগুরা শহরেও কোনোদিন একা গিয়েছেন কিনা সন্দেহও ! তাই বিশ্বাস করতে পাচ্ছিলাম না। অনেক রাগ করে লেপের মুরি থেকে উঠলাম, দারয়ানকে অনুসরণ করে মহসিন হলের ঠিক ডানপাশে হলের গেস্ট রুম, জড়সড় হয়ে বসে আছে আমার মা। তার সারা শরীর শীতে ঠকঠক করে কাপছে, আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম, অনেকক্ষণ কাঁদলাম । মায়ের শরীরের ঘ্রাণ পেয়ে যেনো খানিকক্ষণ ভুলেই গেলাম আমি যে বড় হয়েছি। মাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কেনো এসেছ মা! মা বললেন, বাবা এ মাসে আর টাকা জোগার করতে পারব না, তাই টাকা ডাকে দেইনি। যদি হাড়িয়ে যায়! মাকে ধরে আরো কিছুক্ষণ কাদলাম। হাউস্টিউটরকে জানিয়ে মাকে নিয়ে আমার থাকার রুমে নিয়ে গেলাম, গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিলাম। তার পর দুপুর বারোটার হাসনা পরিবহণে বগুড়ার উদ্দেশ্যে তুলে দিলাম। আর এই হলো আমার মা।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:২৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আল্লাহ আপনার মাকে উত্তম প্রতিদান দিক ।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:১৪

ভূতের কেচ্ছা বলেছেন: আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম, অনেকক্ষণ কাঁদলাম । মায়ের শরীরের ঘ্রাণ পেয়ে যেনো খানিকক্ষণ ভুলেই গেলাম আমি যে বড় হয়েছি।
মায়ের কথা মনে করিয়ে দিলেন..

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: মা তুমি বেহেশতেরই খোদার হাসি মা..

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: মায়েরা এমনই, সব মা. আল্লাহ আপনার মাকে শান্তি ও পুরস্কার দিন.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.