নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প, অনুভূতি আর জীবনের টুকরো কথা

সুম১৪৩২

আমি লিখি আমার দেখা, শোনা আর অনুভবের গল্প। কল্পনা আর বাস্তবের মিলনে গড়ে তুলি নতুন এক জগত। কলমে আমি হলো আমার একান্ত লেখা, শুধু আমার নিজের শব্দের ভুবন।

সুম১৪৩২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা : যে হাসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে না

২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭



২৩ অক্টোবর, ২০২৫।

বাংলাদেশের মিরপুর স্টেডিয়াম তখন লোকে লোকারণ্য। গ্যালারি ভর্তি মানুষ—হাতের পতাকা উড়ছে, কেউ শিস দিচ্ছে, কেউ চা খাচ্ছে প্লাস্টিকের গ্লাসে। মাঠে বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচ চলছে।

দুপুর থেকে শুরু হওয়া এই ম্যাচে বাংলাদেশ ব্যাট করে ফেলেছে ২৯৭ রান—মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছে বলা যায়। এখন সন্ধ্যা। মাঠের বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। পিচের চারপাশে একটু ধুলো উড়ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই ধুঁকছে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে।

সম্ভবত তখন সন্ধ্যা ৭টা ১৫ বা ২০ হবে। বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন তার নবম ওভারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩২ বছরের বাঁহাতি ব্যাটার আকিল জেরোম হোসেইন।

রিশাদ গতি না বাড়িয়ে, হালকা ভরসা নিয়ে প্রথম বলটা ছুড়ে দিল। হোসেইন উড়িয়ে মারলেন এবং আউট। হোসেইন আউট, কিন্তু আম্পায়ার এক আঙুল না তুলে দুই হাত তুলে সিগন্যাল দিলেন—সিক্স! ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান গর্বের সঙ্গে হাত মেলালেন ছয় মারার আনন্দে। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কোনো প্রতিবাদ না করে আবার পরের বল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর স্টেডিয়ামের দর্শকরা হাততালি দিচ্ছে, উল্লাস করছে।

আমার নিজেরই কেমন যেন বিভ্রান্তি লাগছে। একবার বলছি—আউট! আবার বলছি—সিক্স! দেশের মাটিতে খেলা হচ্ছে, তবু ছয়ের জন্যই উচ্ছ্বাস! কেমন জানি এলোমেলো, তাই না?

আসলে আমি যা বলছি, সবই ঠিক । মাঠে যা ঘটছে, তাও ঠিক। এবার একটু খুলে বলি।

রিশাদের প্রথম বলে হোসেইন উড়িয়ে মেরেছে, বল চলে গেছে মাঠের বাইরে। যার ফলে, আম্পায়ার দুই হাত তুলে জানিয়ে দিয়েছে এটা ছয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা পরের বলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু গ্যালারিতে একটা উচ্ছ্বাস ধরা পড়ছে। সেই উচ্ছ্বাসটা হলো—হোসেইনের উড়িয়ে মারা বলটি দুর্দান্তভাবে ক্যাচ ধরেছে বাংলাদেশের এক পুলিশ সদস্য। ওই ক্যাচের কারণেই গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস।

সেই পুলিশ সদস্য দু’হাত উঁচু করে ধরে হাসলেন—একটা একেবারে নিঃস্বার্থ, শিশুর মতো হাসি। তার চারপাশের দর্শকরা হাততালি দিচ্ছে, কেউ কেউ বল ধরার জন্য তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। ওই হাসিটাই ছিল সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটা পুরো মাঠের মধ্যে।

তিনি হয়তো কিছুই পাবেন না—না পুরস্কার, না খবরের কাগজে নাম। কিন্তু সেই হাসিটা ছিল তার একান্ত নিজের। আর আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, তার সেই একান্ত নিজের হাসিটাতেই আমি ভাগ বসিয়েছি। কারণ, তার হাসিটা আসলে আমাদের সবার হাসি।

বাংলাদেশ জিতলে, ঠিক ওই রকম মনখোলা হাসিই আসে আমাদের মুখে—যা কখনোই ক্যামেরায় ধরা পড়ে না।

cricinfo commenteary তে ওই বল টি নিয়ে যা বলা হয়েছে


29.1 over
Rishad Hossain to Hosein, SIX runs
winds those shoulders up and goes for an almighty slog sweep that comfortably clears the rope at wide long-on. Lands safely in the hands of a security officer who flashes a big beaming smile after taking the catch

বাংলা
২৯.১ ওভার
“রিশাদ হোসেন টু হোসেইন, ছয় রান।”
“কাঁধ দুটো ঘুরিয়ে জোরে এক বিশাল স্লগ-সুইপ মারল, যা অনায়াসে ওয়াইড লং-অন দিয়ে দড়ি (বাউন্ডারি) পার হয়ে গেল। বলটি নিরাপদে গিয়ে পড়ল এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার হাতে, যিনি ক্যাচ ধরার পর মুখভরা এক বড় হাসি হাসলেন।”

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৮

সুম১৪৩২ বলেছেন: Welcome Back Samu ;)

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ঘটনাটা দেখেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.