নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুমন নিনাদ

বাংলা ও বাংলাদেশ- আমার ভাগফল, আমার ভাগশেষ

সুমন নিনাদ

সুমন নিনাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বিমাত্রিক

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩৯



এক

বছরখানেক আগের কথা। আমার পেনড্রাইভটা বেশ কিছুদিন যাবত খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কিনি কিনি করে নতুন একটা পেনড্রাইভ আর কেনা হয়ে উঠছেনা। হঠাৎ একদিন ফার্মগেটে ওভারব্রিজের ওপর দেখি ঝুড়িতে করে একজন পেনড্রাইভ বিক্রি করছে। দাম ছিল নিতান্তই কম। আমি সাতপাঁচ না ভেবে খুব সুন্দর দেখে একটা ৮ গিগাবাইটের পেনড্রাইভ কিনলাম।

পেনড্রাইভ নিয়ে খুশী মনে বাড়ি ফিরলাম। তাড়াহুড়া করে ফ্রেশ না হয়েই ল্যাপটপে পেনড্রাইভ গুঁজলাম। নতুন পেনড্রাইভ কেনার চাপা উত্তেজনায় আমি মশগুল। পেনড্রাইভ ইউএসবি পোর্টে ঢুকানোর পর নতুন ডিভাইস পাওয়া উপলক্ষে একটা আওয়াজ বের হবার কথা। কোন আওয়াজ নাই। পোর্ট চেঞ্জ করে দেখলাম, কোন খবর নাই। ল্যাপটপ রিস্টার্ট দিলাম, কোন খবর নাই। আমি যেন একটা মৃত জীবকে জীবন্ত ভেবে বৃথা আর্তনাদ করছি। ঠকে যাবার লজ্জা আর গিন্নীর কাছে এটা নিয়ে অপমানিত হবার ভয় আমাকে ভেতর থেকে ঘুণপোকার মত খাচ্ছিল।

পরে এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম, এটা নাকি একটা মিথ্যা পেনড্রাইভ। মানে পেনড্রাইভের মত দেখতে, কিন্তু আসলে একটা ইউএসবি প্লাগ ছাড়া কিছুই নয়। আহারে ব্যাবসা! আহারে আমার সোনার বাংলা। মনে পরে গেল আমরা একসময় দুর্নীতির অলিম্পিকে স্বর্ণপদক পেতাম। এখন মনে হয় ব্রোঞ্জ ট্রোঞ্জ পাই।



দুই

ঢাকা শহরে অনেকেই আছেন যারা লোকাল বাসে চড়েন না। মুলতঃ তাদের লোকাল বাসে চড়তেই হয়না। আমি এই দলে পরিনা। আমাকে হয়ত মাসে একবার দুইবার চড়তে হয়। কিন্তু মজার বিষয় হল, আজ পর্যন্ত লোকাল বাসে চড়ে আমি কোনদিন সীটে বসে থাকতে পারিনাই। এমন না যে আমি সীটই পাইনা। সীট আমি প্রায়ই পাই। কিন্তু সীটে বসার পর কোন বৃদ্ধ বা নারী এসে আমার আশে পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে আমার আর সীটে বসে থাকা হয় না। এটা আমার স্বভাববিরুদ্ধ। হ্যাঁ, যদি মনে করেন নিজের ঢোল নিজে পেটাচ্ছি তাহলে তাই।

ঘটনাটা আজ দুপুরের। কোন এক অখ্যাত লোকাল বাসে চড়ে বসেছি। গন্তব্য উত্তরা। আমি সামনের দিকের একটা সীটে বসেছি মাত্র। একই স্টপেজে ঠিক তখনি একটি পরিবার এসে বাসে উঠলো। পরিবারের সদস্য চার। মা, দুই মেয়ে(একটির বয়স আনুমানিক ছয় সাত অন্যটির তের চৌদ্দ) আর একটি বছর চারেকের ছেলে। মা, ছোট মেয়েটি আর বছর চারেকের সেই ছেলেটি লেডিস সীটে জায়গা পেল। তের চৌদ্দ বছরের সেই মেয়েটি আমার সীটের পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকলো।

বেশ বুঝতে পারছিলাম মেয়েটির দাঁড়িয়ে থাকতে বেশ অসুবিধা হচ্ছে। তার উপর কনট্রাকটর বারবার এই রাস্তা দিয়ে আসে যায়। যাত্রীরা এই রাস্তা দিয়ে ওঠানামা করে। আর সমগ্র বাসের কমপক্ষে ত্রিশ জোড়া চোখের ক্ষুধার্ত দৃষ্টি তো আছেই। আমি উঠে দাঁড়িয়ে মেয়েটাকে বললাম, বসো। মেয়েটা তাড়াহুড়ো করে বসে পড়লো। বসতে বসতে কৃতজ্ঞতার হাসি হেসে বলল, থ্যাংক ইউ আঙ্কেল। আমি মাথা নেড়ে কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করলাম। বিমানবন্দরে এসে ঐ সীটে বসা অন্য ভদ্রলোক নেমে গেলেন। আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, অন্য একজন দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী যখন ঐ সীটে বসতে চাচ্ছে মেয়েটা তাকে কঠোরভাবে রিফিউজ করে আমাকে বসার জন্য ডাকছে। আমি বললাম যে, আমি সামনেই নেমে যাবো। মেয়েটা তারপর লোকটাকে বসতে এলাউ করল।

যাই হোক, আমি উত্তরায় নেমে রিকশা নিলাম। আমার গন্তব্যস্থান রিকশায় তিন মিনিটের পথ। রিকশা থেকে নেমে হিপ পকেটে হাত ঢুকিয়েছি ভাড়া দেবার জন্য। কিন্তু একি? আমার মানিব্যাগ কই? আমার পকেট তো গড়ের মাঠ। সাথে সাথে অ্যাকশন মুভির ফ্ল্যাশব্যাকের মত আমার মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। অনুমান করলাম মেয়েটাকে বসতে বলে যখন আমি বাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম তখনি ঘটনাটা ঘটেছে। টাকা হয়ত বেশী ছিলনা সেখানে কিন্তু ছিল আমার পরিচয়পত্র এবং গোটা তিনেক ডেবিট ক্রেডিট কার্ড।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি। মাগো তোমার কপালে কলংকের টিপ পড়াতে আমার হাত বারবার কেঁপে ওঠে। আমায় ক্ষমা করো মা।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

রাজিব বলেছেন: খুবই দুঃখজনক অভিজ্ঞতা। লোকাল বাসে আমিও ছড়েছি জীবনের প্রায় ১০ বছর তবে সখে নয় বাধ্য হয়ে। আর লোকাল বাস মানে ৯০% ক্ষেত্রেই মিনিবাস এবং আমি ৬ ফুট লম্বা। তাই কত সুখকর ছিল তা বুঝতেই পারছেন।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০০

রাজিব বলেছেন: আপনি লেখেন বেশ সুন্দর ভাবে। ভাল কথা আমি আপনার উল্টো অভিজ্ঞতার বিষয় নিয়ে একটি অনুবাদ পোস্ট করেছি আমার ব্লগেঃ
Click This Link

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:১৭

সুমন নিনাদ বলেছেন: নিরন্তর ধন্যবাদ রাজীব। শুভকামনা। আপনার লেখা দেখছি।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫১

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++
কি আর করবেন ভাই !
শুভকামনা :)

৫| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫২

ট্রোল বলেছেন: সুন্দর লেখা

৬| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৫

সুমন নিনাদ বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা অপূর্ণ ও ট্রোল

৭| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৯

চড়ুই বলেছেন: সুমন নিনাদ প্রত্যেকের কমেন্টের ঘরে ১ টা সবুজ রঙের তীর চিহ্ন থাকে সেটাতে ক্লিক করে আপনার মন্তব্য করুন নতুবা এভাবে মন্তব্য করলে আসলে বুঝা যাই না যে আপনি উত্তর দিচ্ছেন কিনা।
ভালো থাকবেন।

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০৫

সুমন নিনাদ বলেছেন: থ্যাংকস এ লট চড়ুই। আপনিও ভাল থাকবেন।

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার অভিজ্ঞতা । যারা মাঝে মাঝে লোকাল বাসে উঠেন তাদেরই এইসকল অভিজ্ঞতা হয় ।কারন তারা নিজেদের পকেট সম্পর্কে একটু কম খেয়াল রাখেন । আর এর ফাঁকেই...
ভালো লিখেছেন ।

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৪

সুমন নিনাদ বলেছেন: সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু কলমের কালি শেষ কেন ভাই? এখন কি তাহলে
কী বোর্ডে কাজ চলছে?

৯| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ডিজিটাল বাংলাদেশে কি আর কলম দিয়ে চলে !! তাই কী বোর্ডে চলছে ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৮

সুমন নিনাদ বলেছেন: ভেরি গুড

১০| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৯

মামুন রশিদ বলেছেন: দুঃখজনক । লোক ঠকানো আমাদের জাতিগত বৈশিষট হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২০

সুমন নিনাদ বলেছেন: হুম। হয়ত ঠিকই বলেছেন। হয়ত পুরোপুরি ঠিক না। কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

১১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক নিচে নেমে গেছি আমরা।

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২১

সুমন নিনাদ বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা প্রোফেসর শঙ্কু। ভাল থাকুন।

১২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৫১

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: টিপিক্যাল "এ জার্নি বাই বাস"। অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২২

সুমন নিনাদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও। শুভকামনা।

১৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: লুক এ লাইক পেনড্রাইভ!! :O

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২৩

সুমন নিনাদ বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা অভি

১৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:২২

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
দুঃখজনক।

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৯

সুমন নিনাদ বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ দুর্জয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.