![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শরতে ক্ষীণ মেঘে ভাসিবে আকাশে
স্বরণবেদনার বরণে আঁকা সে।
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শরতের প্রকৃতিটা বড়ই বৈচিত্রময়। এই রোদ তো এই বৃষ্টি। প্রকৃতিতে আলো-আঁধারের লুকোচুরি খেলা। মিষ্টি রোদে হেসে উঠে প্রকৃতি। অধিকাংশ সময় সারা আকাশময় সাদা মেঘপুঞ্জকে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় । পাখিরা দলবেঁধে ভেসে বেড়ায় গগনের সায়রে। শুরু হয় এই মেঘ এই বৃষ্টি খেলা। আর বৃষ্টির ফোটাগুলো বড়ই বিচিত্র রকমের। চিকন চিকন সেমাইয়ের মত। তরুণী মেয়ের চুলের মতো। আমার মায়ের নাকফুলের মতো। আমার বোনের হাসির মতো। রজনীগন্ধা ফুলের মতো। এই সময় তরুণীরা ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে। তরুণীরা বৃষ্টির জলে ভিজতে কেন যে এতটা পছন্দ করে তা আমার বুঝে আসে না। কোন তরুণী মেয়ের কাছে এটা আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে। সে এক রহস্যজনক ব্যাপার। সে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার জন্য এখনো পর্যন্ত কাউকে খুঁজে পেলাম না। হয়তো ভালোবাসার মানুষকে মনে পড়ে তাই; বৃষ্টির ফোটা তাদের হৃদয়ের উঠানে অজানা শিহরণ জাগিয়ে তুলে বলেই তারা বৃষ্টিতে ভিজতে এত ভালোবাসে। গ্রামের কাশ বাগানে ভিজে পল্লী মায়ের দস্যি ছেলের দল। শরতের বৃষ্টি, নীল আকাশ, কাশ আর শিউলি ফুল আমাদের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের আকাশ। বুকের ভেতর অজানা পুলকের শিহরণের ঝড় উঠে। তাইতো আন্টি আর আপাদের শিউলি তলায় ফুল কুঁড়াতে দেখা যায়।
শহরের শরতকে উপভোগ করার জন্য সন্ধ্যায় কবি নোমান’কে নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গেলাম। শিখা অনির্বাণের দক্ষিণ পাশে আমরা পাশাপাশি বসলাম। নোমান গান লিখছে আর কথা বলছে। ও ভালো গল্প বলতে পারে। আর আমি লিখেছি এই লিখাটি। আমাদের চারপাশে সাদা সাদা লাইট জ্বলছে। প্রকৃতিতে বইছে প্রবল ঠান্ডা বাতাস। বাতাস এত বেশি ঠান্ডা আর মিষ্টি ছিল যে, তা আমার ঘর্মাক্ত শরীরের প্রতিটি লোমকূপে পৌঁছে দিল শান্তি আর অজানা সুখের নহর। মনে হয় কোন ষোড়শী তন্বী সুনয়না অপরূপা দেবী আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে। কাশফুলের কোমল পরশ যেন আমার পিঠে বুলিয়ে দিচ্ছে যতœ সহকারে। যার ছোঁয়ায় আমি জেগে জেগে উঠছি। মেঘলা, এমন দিনে খুব বেশি মনে পড়ছে তোমাকে। শুধু তোমাকে। মনে পড়ছে, এক বছর আগে কথা। আমি আর তুমি এই নাগেশ্বর গাছের নিচে এসে বসেছিলাম। তখন আমাদের মাথার উপর ছিল গাঢ় সবুজ রঙের ঢালের ছাউনি। জিরিজিরি বাতাসে গাছের পাতাগুলো শিরশির করে দুলতে লাগল। উপরে উন্মুক্ত আকাশ। মিটিমিটি জ্বলছে তারা। তুমি হাসছো আর আমার কাঁধের উপর ঝুলে পড়ছ বারবার। আকাশের বুকে জ্বলছে তারা। চাঁদ, তারা যেন আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে। আকাশটা আজ কেন জানি কিছুটা মেঘলা। জানো, আকাশে মেঘ জমলে তোমার কথা মনে পড়ে। তাই আকাশে আজ চাঁদ উঠেনি। তবে আমার মনের আকাশে একটা চাঁদ উঠেছে। সেটা হচ্ছে শুধু তুমি আর তুমি। তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি। ভালোবাসবো শেষদিন অবধি। তার পরের জীবনের জীবনেও। প্রিয়তমা মেঘলা, যেখানে থাকো, তুমি অনেক অনেক ভালো থেকো। শরতের কাশফুলের পরশ নিয়ে এসো আমার জীবনে। তোমার প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে রইলাম। শরতের নীল আকাশে তুমি আমার চাঁদ। তুমি আসবে তো...।
©somewhere in net ltd.