নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।
সময়টা ১৯৭১, ২৮,শে আগস্টের ঠিক সকাল গড়িয়ে দুপুর বেলা, মোসাম্মৎ আলেয়া বেগম, মোকামিয়া বোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। ভাদ্র মাসের তিব্র গরমে তিনি কুলকুলিয়ে ঘামছেন, ব্লাউজ ভিজে শাড়ির আচোল বেয়ে ঘাম টপ্টপ করে পরছে, এই স্কুলে বিদ্যুত নাই। গত ইলেকশানে স্থানীয় চেয়ারম্যান অনেক কথা বলে গিয়েছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নাই। বিদ্যুৎ আসে নাই। তিব্র গরমেও তিনি মাথায় ছেলেদের মত একপ্রকার টুপি পরে আছেন, অনেকে আড়ালে আবডালে বান্দর টুপি বলে এর কারন তার মাথায় এক গাছি চুলও নাই, শত কস্টেও তিনি টুপি খোলেন না। আড়ালে আবডালে তাকে সবাই জাম্বুরা ম্যাডাম ডাকে। কিছুক্ষন পর পর তিনি একটা রুমাল দিয়ে মুখ মুচ্ছেন, রুমাল ভিজে ন্যাকড়া হয়ে গেছে। মনে মনে তিনি একটা কুৎসিত গালি দিলেন, যখন টিচার্স রুমে কেউই থাকে না তখন তিনি মনের আনন্দে গালাগাল করেন যদিও তা মনে মনে। প্রচন্ড পিপাষা পেয়েছে, এই স্কুলের সব খারাপ কিন্তু পানির টিউব ওয়াল টা যেন বিশাল মরুভুমিতে এক খন্ড মরুদ্যান। পানি বরফেরমত ঠান্ডা।
মৃনালী ও মৃনালী, কামের বেডির নাম মৃনালী মনে মনে গজ গজ করতে লাগলেন, কাজের সময় যদি কাউরে কাছে পাওয়া যায় ।
এই নবাবের বেডি, কর্কস গলায় চিৎকার করে উঠলেন
দরজার ফাকা দিয়ে ছট্ট একটা মাথা উঁকি দিলো, ভয়ার্ত চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে পুর শরীরটা ঘরের ভেতর নিয়ে এলো। এলোমেলো দৃষ্টিতে চারিদিকে একবার নজর বুলিয়ে নিলো। কেউই নাই হেড ম্যাডাম ছাড়া। কোত করে ঢোক গিললো মৃনালী।
আফা আমারে ডাকছেন, মাথা নিচু করে জিজ্ঞাসা করলো
এই অভাগীর বেডি, আফা কি রে, আমি তোর কোন জন্মের আফা লাগি। মারমার খেপে গেলেন আলেয়া বেগম, ম্যাডাম ডাকতে কি জিব্বায় ফোসকা পরে?
জ্বি আফা না ম্যাডাম!! মাথা নিচু করে পায়ের বুড় আঙ্গুল দিয়ে মেঝের মাটি খুটতে লাগলো।
পানি আন, পিপাসা পাইছে, কলের পানি আনবি, মাইট্যা জগের পানি দিবি না খবরদার, বাসি পানি আমি খাই না। নাক চোখ ভুরু এক করে ক্রু দৃষ্টিতে তাকিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন আলেয়া বেগম ।
আচ্ছা, ঘাড় নেরে চলে গেলো মৃনালী।
বেলা বাজে দেড়টা, সবার ছুটি হয়ে গেছে , আলেয়া বেগম বসে আছেন, থানা থেকে খবর আসছে, কোন মেজর না জানি কে দেখা করবে তার সাথে, তিনি চিন্তায় অস্থির, ছাতার মাথা এই সব মেজর টেজর তার কাছে কি কাজ কে জানে। মৃনালীর ছোট্ট মাথাটা মাঝে মাঝে দরজার আড়াল থেকে দেখা যাচ্ছে। আলেয়া বেগম তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে আছেন, আর একবার দেখা গেলেই ডাস্টার ছুড়ে মারবেন। ক্ষুধায় তার পেট চোঁ চোঁ করছে । ক্ষুধা লাগলে তিনি চোখে অন্ধকার দেখেন। হাতের কাছে যাই পান তাই খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।
ঘরঘর করতে করতে একটা জিপ এসে স্কুলের মাঠে থামলো, বেশ লম্বা সুদর্শন একজন সামরিক উর্দি পড়া লোক জিপ থেকে নামলো, বুকের নেম প্লেটে স্পষ্ট করে লেখা এহসান মালিক, সিনা টান্টান করে কিছুক্ষন তিনি স্কুলের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তিনি স্কুল বলতে ভেবেছিলেন বড় পাকা বিল্ডিং কিন্তু এতো টিনের কয়েকটা ঘড়, তিনি আশাহতো, তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা ইদ্রিস গাজীর দিকে বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ক্যায়া গাজী সাহাব, ইয়ে ক্যায়া , ইয়ে স্কুল হ্যায় !!!
ইদ্রিস গাজী অতি পাকা ধুরন্দর লোক তিনি বুঝে গেছেন মেজর পছন্দ করে নাই, তিনি তঠস্ত হয়ে বললেন, জ্বি জনাব ইয়েই ইস্কুল হায় !! হিন্দু কা ইস্কুল, হিন্দু কা বাচ্চা ইদার পাড়তা হায়।
হিন্দু, অবাক হলেন মেজর, হিন্দু ক্যায়া হ্যায়
জনাব, মালাউন, মালাউন কা ইস্কুল
আচ্ছা , মালাউন, মেজর চারিদিকে ভালো করে দেখলেন , ও কে গাজী সাহাব, চালো , স্কুল কা হেড মাস্টার কো বোলাও।
ইদ্রিস গাজী হন্তদন্ত হয়ে স্কুলের হেডমাস্টারের রুমে ঢুকে দেখে আলেয়া বেগম চেয়ারে কাত হয়ে ঘুমাচ্ছে, মনে মনে গালি দিলো ইদ্রিস গাজী, মুটকি দেখছো কেমনে ঘুমায়, তোর জম যে আসছে এটার খবর নাই।
ও ম্যডাম, ওঠেন
ধরমরিয়ে আলেয়া বেগম জেগে গেলেন, চোখ মিটমিট করে তাকালেন, সরু পাট কাঠির মতো ইদ্রিস মিয়া কে দেখে তার ক্ষুধা আরো বেড়ে গেলো, ছোট বেলায় মায়ের হাতের এই রকম চিকন সেমাই খেতে তার খুব ভালো লাগতো। চোখ কুঁচকে তিনি ইদ্রিস গাজী কে দেখে মেজাজ টিনের চালের মত গরম হয়ে গেলো, গতো বছর এই লোক স্কুল ভাঙ্গার জন্য কিছু ষণ্ডা মার্কা লোক নিয়ে এসেছিলো তার দাবি এখানে নাকি ইসলাম বিরধি কর্মকান্ড হয়, নবীজী অশিক্ষিত ছিলেন তাই মুসলমানদের ও অশিক্ষিত থাকা সুন্নত।
ও ম্যডাম , মইরা গেলেন নাকি, ওঠেন, মেজর স্যার আসছে, অবশ্য আপনার মরণই ভালো, তাইলে বিনা যুদ্ধে পাইয়া যাইবো সুতাগ্র মেদেনী ।
আলেয়া বেগম মথা ঠান্ডা রেখে চবিয়ে চিবিয়ে বললেন , আপনি মেজর কে বলেন আমার সাথে দেখা করতে আমি যেতে পারবো না।
ইদ্রিস গাজী পানি ছাড়া মাছের মতো খাবি খেতে লাগলো, বলে কি এই মহিলা, বির সেনানী মেজর সাব আসবে তার সাথে দেখা করতে, এই মহিলার মাথা নষ্ট নাকি। রাগে ইদ্রিস গাজী ফুটন্ত পানির মতো টগবগিয়ে উঠলো কিন্তু সামনে যেতে সাহস করলো না, হেডমাস্টার ভিশন মোটা, তাক এক থাপ্পর মারলে তার শরীরে হাড্ডি সব তুর পাহাড়ের সুরমার মতো গুড়াগুড়া হয়ে যাবে। তিনি গলা খাঁকড়ি দিয়ে বললেন, আফা , মেজর সাব জ্ঞানী মানুষ, মেজাজ ও বেশি, তয় জ্ঞ্যানী মানুষের মেজাজ থাকা ভালো, যেমন আপনি জ্ঞ্যানী আপনার মেজাজও বেশি।
আলেয়া বেগম ঠান্ডা গলায় বললেন, আপনি মেজর কে আমার রুমে আনেন, আমি তার সাথে এখানেই কথা বলবো।
মনে মনে খ্যাক খ্যাক করতে করতে ইদ্রিস ছুটে গেলো, শালির শালী জাম্বুরা ! আইজ তোরে যদি না ছিলছি আমার নাম ইদ্রিস গাজী না। তোর আইজ ছিলা ভাগা দিয়া খামু।
মাঠের মাঝখানে মেজর দাঁড়িয়ে ইদ্রিস গাজীর অপেক্ষায় করছিলো, তিনি এই পিপড়ার মতো দেখতে লোক টা কে একদম সহ্য করতে পারছেন না, এই পর্যন্ত তার সব ইনফরমেসান ভুল ছিলো, একটাও দেশদ্রহী তারা ধরতে পারে নাই। তিনি ভেবেছিলেন বড় একটা স্কুল এখানে তিনি দেখবেন যেখানে তিনি তার ট্রুপের অর্ধেক রাখবেন এতে এই এলাকার উপর তার আধিপত্ত বজায় থাকবে কিন্তু তিনি হতাস, দুইটা টিনের ঘড় ছাড়া কিছুই নাই এখানে।
ক্যায়া গাজী সাহাব, আপকা হেড মিস্ট্রেস সাহাবা কিধার
জনাব বড়ই শাকচুন্নি হ্যায়, শালী বুলাতা হায় , যাতা হায় ?
মেজর কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলেন ইদ্রিস গাজীর দিকে। তার হাসি পাচ্ছে, তিনি হাসি আড়াল করে বললেন আচ্ছা, কাহা হায় আপকা হেড মিস্ট্রেস।
মেজর এহসান মালিক, পায়ের উপর পা তুলে বসে আছেন, সামনে মোকামিয়া বোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আলেয়া বেগম। তিনি বেশ কৌতুক বোধ করছেন, তিনি এই পর্যন্ত এতো মোটা মহিলা দেখে নাই। তিনি মনে মনে ভাবছেন এই মহিলার সহর কি করে এই পাহাড় ডিঙ্গায়।
আলেয় বেগম, মৃনালী কে ডেকে পাঠালো, মৃনালী ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সামনে এসে হাজির, মৃনালী যাও এক জগ পানি আর একটা গ্লাস আনো ভালো করে ধুয়ে আনবে, মেহমান এসেছে বুঝছো বলে চোখ মটকালেন। মৃনালী শূন্য দৃষ্টি মেলে চলে গেলো, তারা অনুভূতি কাজ করছে না। সে পালিয়ে যেতে পারলে বাঁচে।
আপ লোগ পানি বলতে হ্যায়, অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন মেজর এহসান মালিক
জ্বি, সংক্ষেপে উত্তর দিলেন আলেয়া বেগম
স্ট্রেইঞ্জ, জল নেহি বলতে
জল বাংলা শব্দ, পানি উর্দু শব্দ, এটাই পার্থক্য। ঠান্ডা মাথায় ইংরিজিতে উত্তর দিলেন আলেয়া বেগম
তো তুম উর্দু বলনা পাছান্দ কারতি হো, মৃদু হেসে বললেন মেজর মালিক।
জ্বি না , আমি বাংলা বলা পছন্দ করি, এটা আমার মতৃভাষা।
তো পানি কিউ বলা জাল বলো , বাকা হাসি দিলেন মালিক
জ্বি না, আমরা পানিই বলি ।
ইদ্রিস গাজী পাসে দাঁড়িয়ে উসখুস করছিলো, মেজর সাবের এত্ত কথার দরকার কি, ভুটকি টারে দুই লাত্থি মাইরা ভাগাই দিলেই তো হলো, তার ইচ্ছা আছে এই জায়গা দখল নিয়া একটা মসজিদ বানাবে, প্রতিবছর মাহাফিল দিয়া দুই পয়সা ইনকাম ও হবে আবার দোজাহানের অশেষ নেকি ও হাসিল হবে। তিনি পাঁশ থেক খুক করে কাশি দিয়ে মেজর কে বলার চেষ্টা করলেন যে আসল কথায় আসা যাক। মেজর মালিক বিরক্ত হয়ে তাকালেন ইদ্রিসের দিকে, তার বেশ লাগছিলো এই মাংসের পাহাড়ের সাথে কথা বলে, সাধারনতো সবাই ভয়ে প্রস্রাব পায়খানা করে দেয় তাকে দেখে কিন্তু এই মহিলা বেশ সরাসরি কথা বলছে ব্যাপারটা তাকে মুগ্ধ করেছে। সাহসি মানুষ তিনি এই দেশে খুবই কম দেখেছেন।
হা, হেড মিস্ট্রেস , হামি তোমার দেশ একথা আর্মি ক্যাম্প করবে, মেজর মালিক গর্বের সাথে তাকালেন তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন তিনিও ভালো বাংলা বলেন।
মেজর তুমি বাংলা বলো না, শুনে মনে হচ্ছে তোমার স্ট্রং ডায়রিয়া হচ্ছে। আমি উর্দু বুঝি তুমি বলতে পারো।
মেজর মালিকের ব্রম্মতালু জ্বলে গেলো, চেয়ারের দুই হাতল শক্ত করে চেপে ধরে কিছুক্ষন চেয়ে রইলেন, ইংরেজিতে স্পস্ট করে বললেন, আমি তোমার স্কুলে আর্মি ক্যাম্প করবো, তোমাকে স্কুল ছেড়ে দিতে হবে।
না, সম্ভব না, সরাসরি উত্তর দিলেন আলেয়া বেগম। আগামীকাল থেকে বাচ্চাদের দ্বিতীয় বার্ষিকি পরিক্ষা , আমি স্কুল খালি করতে পারবো না।
ইদ্রিস গাজী আর ধর্য রাখতে পারলো না, ওই মুটকি ব্যাডি, মালাউনের বাচ্চা, এই জায়গায়, আল্লাহের ফেরেস্তারা আসবে থাকার জন্য আর তুই কস স্কুল দিবি না, স্কুল কি তোর বাপের।
আলেয়া বেগম ইদ্রিসের দিকে না তাকিয়ে মেজর কে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি তোমার এই পাটকাঠি দারোয়ান কে চুপ করতে বলে নতুবা আমি ওর এমন জায়গায় মারবো ও আর জীবনেও বাবা হতে পারবে না।
তোমার পরিক্ষা কতো দিন চলবে, পাত্তা না দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো মেজর
পনের দিন, ঝর বৃষ্টি হলে বিশ পঁচিশ দিন লেগে যাবে।
না হেড মিস্ট্রেস, আমি এতো দিন সময় নিতে পারবো না। আজই এখানে ক্যাম্প বসবে । তুমি তোমার জিনিস পত্র নিয়ে যেতে পারো। তুমি যদি আমার কথা না শোনো আমি তোমাকে এতো পিস করবো যে ওটা কে মাংসের কিমা বলে লোক ভুল করবে।
ইদ্রিস মহা খুশি , যাক এতক্ষনে মেজর সাব গরম হইছে। সে আলেয়া বেগমের দিকে তাকিয়ে দাঁত দেখিয়ে হাস্তে লাগলো।
আলেয়া বেগোম বাহিরে তাকালেন, ছয় জন সৈনিক আর্মস নিয়ে পাহারা দিচ্ছে, এদের কথা না শুনলে এরা গুলি চালাতে পারে, তিনি স্বাভাবিক গলায় বললেন ঠিক আছে আমাকে ও আমার দপ্তরি কে যেতে দাও।
মেন্নালি নেহি যায় গা, উসকো হামার দরকার হায়, চেচিয়ে উঠলো ইদিরস গাজী। মনে মনে মৃনালীর শরীর মাপতে থাকে ইদ্রিস গাজী, গায় গতরে মাশাল্লাহ একদম টস টসা । তারা অনেক দিনের ইচ্ছা মৃনালিকে কাছে পাওয়ার। খাটাস মাতারি, খালি ফোস ফোঁস করে। গতো বছর পুজার সময় মন্ডপের আন্ধারে চাইপা ধরছিলো, ছেনাল মাগী কামড় দিয়া ভাগছে, আইজ রক্ষা নাই, শালী তরে পাইছি মওকা মতো, শিয়ালের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ইদ্রিস গাজী।
মৃনালী কে ছাড়া আমি এক পা নড়ছি না মেজর, দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললো আলেয়া বেগম।
আফা আমারে বাচান, আমারে সঙ্গে না নিয়ে যায়েন না, ওই ইদ্রিস আমারে শেষ করে ফেলবে, আড়াল থেকে মৃনালী চিৎকার করে উঠলো।
আরে অভাগীর বেডি, মালাউনের বাচ্চা, তোর জেবন সুখের হইবে, যদি মেজর সাবের সেবা করস , হেয় তরে খুশি করে দেবে, আড়াল থেকে চুল ধরে টেনে বের করে আনলো মৃনালী কে ইদিরস গাজী।
আলেয়া বেগম লাফ দিয়ে উঠে, ফুটবলে লাথি মারার মতো ইদ্রিসের পাছায় লাথি মারলো, ইদ্রিস শুকনা পাতার মত উড়ে গিয়ে টিনের বেড়ার গায়ে ধপাস করে পরলো, তার পরনের লুঙ্গী খুলে তিন হাত দূরে টিনের ছাদের কড়িকাঠে লটকে থাকলো। আচমকা লাথি খেয়ে ইদ্রিস হতবুদ্ধি হয়ে কেউ কেউ করতে লাগলো। তার চোখে হাজার তারার বাতি জ্বলছে।
মেজর হতবিহবল হয়ে তাকিয়ে থাকলো, এমন বড় একটা মাংসের পাহাড়ের শরীরে এতো শক্তি কোথা থেকে আসলো আর কি তিব্র তার গতি, ইদ্রিস কে বিন্দু মাত্র সুজুগ দেয় নাই। তিনি মনে মনে কৌতুক বোধ করতে লাগলেন, যদিও তার এখন রেগে যাওয়ার কথা কিন্তু তিনি অনেক চেষ্টা করেও রাগতে পারছেন না, আলেয়া বেগম ঘরের মাঝখানে দাড়িয়ে আছেন, চিত হয়ে পরে আছে উলঙ্গ ইদ্রিস গাজী আর মেজর এহসান হতবিহবল হয়ে চেয়ে আছেন দির্ঘদেহী আলেয়া বেগমের দিকে।
মেজর আমি মৃনালী কে নিয়ে যাচ্ছি, তুমি আমাকে বাধা দিতে আসলে আমি তোমাকেও একই হাল করবো। রাগে ফুসতে ফুসতে বলল আলেয়া বেগম।
মৃনালীর হাত ধরে টান দিয়ে হাটা দিলেন আলেয়া বেগম, ইদ্রিস গাজীর ততক্ষনে জ্ঞ্যান ফিরে এসেছে সে ঝাপিয়ে পরে পাকিস্থান জিন্দাবাদ বলে আলেয়া বেগমের পায়ে কামড়ে ধরলো, আলেয়া বেগম পা ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য ইদিস গাজীর অণ্ডকোষে কসে একটা লাথি মারলেন। মেজর কিছু বুঝতে না পেরে তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে ফাকা আওয়াজ করলো, আলেয়া বেগম হিতাহিত জ্ঞ্যান হারিয়ে মৃনালীর হাত শক্ত করে ধরে ঝাপিয়ে পড়লেন মেজরের উপর, মেজরের মুখে বিশাল এক আধ সেরি ঘুসি হেকে দিলেন, মেজর উলটে গিয়ে ধপাস করে চেয়ার ভেঙ্গে পরে গেলো, যেভাবেই হোক এই ঘর থেকে পালাতে হবে, আলেয়া বেগম মৃনালী কে ধাক্কা দিয়ে ঘরের বাহরে ফেলে দিলেন, তিনি তার শাড়িরি আঁচল কোমড়ে গুজে মেজরের ঘারের উপর চেপে বসলো, মেজরের গলা চেপে ধরে বললো মেজর তুমি তোমার লোকদের বলো আমাকে আর আমার দপ্তরী কে চলে যেতে না দিলে আমি তোমার ঘাড় ভেঙ্গে দেবো। মেজর হাসফাস করছে শ্বাস নেয়ার জন্য, তিনি তার পিস্তলটা কুড়িয়ে নিয়ে আলেয়া বেগমের পেটে ঠেকিয়ে দুটা গুলি করলেন, থরথর করে কেপে উঠলেন আলেয়া বেগম , বুঝলেন আর পারবে না, তিনি মেজরের মাথা টা শক্ত করে ধরে নাক কামড়ে ধরে হায়চকা টানে নাক ছিরে ফেললেন , পেছনে থেকে এক ঝাক গুলি এসে আলেয়া বেগমের পিঠ ঝাঁঝরা করে দিলো। আলেয়া বেগম একপাশে গড়িয়ে পড়লেন। তিনি শক্ত হাতে মৃনালীর হাত চেপে ধরে আছেন কিছুতেই ছারবেন না।
*** ইহা কাল্পনিকচরিত্র, কারো সাথে মিলে গেলে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী।
২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:০৪
রানার ব্লগ বলেছেন: বানান ভুল গুল দেখিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ, অভ্রতে অটকারেক্ট বলে এক্কখানা ব্যাপার আছে ।
৭১ এমন অনেক সিনেমাটিক ব্যাপার ঘটেছে!!!
গাজী একটা বংশের নাম যা নোয়াখালী ও বরিশালে বেশি দেখা যায়।
৭১ সালে পাকিস্থান আর্মির কাছে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চল সম্পর্কে তেমন ভালো ধারনা ছিলো না।
২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: গাজী বংশ আমার মাতুল বংশ, গালি দিলে নিজের টা কেই দেই, অন্যদের টা দিয়ে মাইরের হাত থেকে বাচতে পারবো না
২| ২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:১৮
ভুয়া মফিজ বলেছেন: গাজী বংশ আমার মাতুল বংশ, গালি দিলে নিজের টা কেই দেই, অন্যদের টা দিয়ে মাইরের হাত থেকে বাচতে পারবো না ওকে, তাইলে ঠিক আছে।
২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৫:২৭
রানার ব্লগ বলেছেন:
৩| ২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
শেরজা তপন বলেছেন: গল্প পড়ে মজা পেয়েছি - যদিও সহজ কিছু বানানের ভুল দৃষ্টিকটু ঠেকেছে।
সাসপেন্স ছিল চরম
২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৩
রানার ব্লগ বলেছেন: আমি অভ্র দিয়ে টাইপ করি, সমস্যা হলো আভ্র অটকারেক্সান করে ফেলে
৪| ২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীর এই হাল করলো আলেয়া বেগম
জীবনে মনে হয় আর বাপ হতে পারবেনা !!
হায়রে অভাগীর বেটে, নিজেও মরলি আর
আমারেও মারলি! মিন্নালি দিয়া কি করুম
এখন !!
২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:৫১
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনি গাজী নাকি , থুক্কু
৫| ২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৫:২০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলায় (অভিনেতা আনিসের বাড়ির পাশে) ভারত সীমান্তে একটা দীঘি আছে সমশের গাজী দিঘী উনি মনে হয় রাজা ছিলেন।
২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৫:২৬
রানার ব্লগ বলেছেন: হুম নোয়াখালী ও বরিশালে গাজী বংশ দেখা যায়।
৬| ২২ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে। পড়লাম।
২২ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩২
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ৮:৫১
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: গল্প খুব সুন্দর হয়েছে।আলেয়া বেগম তৎকালীন সাহসী বাঙালির প্রতীক।ক্লাইম্যাক্স অবাস্তব নয় মোটেও।স্বাধীনতা যুদ্ধে এমন আপাতদৃষ্টিতে অবাস্তব কিন্তু প্রকৃতভাবে দুর্ধর্ষ ও বাস্তব ঘটনা আছে।
২২ শে মে, ২০২১ রাত ৮:৫৯
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ!! ১৯৭১ সালে অনেক অবাস্তব ঘটনা ঘোটেছে যা এখন কল্পনাও করা যায় না। ততকালীন বাংগালী নারীরা অসম্ভব সাহসী ছিলেন।
৮| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:০৪
মা.হাসান বলেছেন: ১৯৭১এ অনেক জেলা সদরের সব জায়গাই বিদ্যুৎ ছিলো না,বর্ননা পড়ে মোকামিয়া বোর্ড স্কুলটা মনে হলো বড় কোনো জেলা শহরে না, এখানে বিদ্যুৎ না থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে ঐ সময়ে বাংলাদেশের প্রায় সব স্কুলেই বছরে দুটা পরীক্ষা হতো- হাফ ইয়ার্লি- জুন-জুলাইতে আর অ্যানুয়াল- ডিসেম্বরে। বছরে তিনটা পরীক্ষা বা নভেম্বরে ফাইনাল পরীক্ষা - এগুলো অনেক পরের কালচার- ৯০এর পরে এসেছে।
ঐ সময়ে আসলেই অনেক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে। আপনার গল্পের মধ্যে নতুনত্ব ছিলো যা ভালো লেগেছে।
নোয়াখালি-বরিশাল অঞ্চলে গাজীটাইটেলধারী লোকেদের মাঝে এক সময় অনেক প্রতাপশালী লোকেরা ছিলেন। এই দেখে ভুয়া সৈয়দের মতো এখন অনেক ভুয়া গাজীও তৈরি হয়েছে। যা হোক, ভালো ব্রান্ডেরই ডুপ্লিকেট তৈরি হয়, দুই নম্বরি ব্রান্ডের ডুপ্লিকেটতো আর হয় না।
২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:১৮
রানার ব্লগ বলেছেন: মজার ব্যাপার এই স্কুলটা আজো বিদ্যুৎহীন। ইহা কাল্পনিক গল্প আর কাল্পনিক গল্প নিখুঁত হয় না।
৯| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:২৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: ইদ্রিস গাজী
২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৩০
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনি তো গল্প পড়েন না, কি ধরে নেবো আবনতি না উন্নতি!!!???
১০| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখক বলেছেন: আপনি গাজী নাকি , থুক্কু
আমি ইদ্রিস গাজীর কথা কইছি
আমনে বুল বুইজজেন না !!
২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৫৮
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ!! ভুল বোঝার জন্য দুস্কিত
১১| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৫৬
জটিল ভাই বলেছেন:
গল্প সুন্দর। তবে এই সময়ে গাজী ক্যারেক্টার........
২২ শে মে, ২০২১ রাত ১১:০৪
রানার ব্লগ বলেছেন: গল্প সুন্দর লেগেছে এর জন্য ধন্যবাদ।
ভাই, গাজী বংশটা আমি চান্দ গাজী ভাই কে উদ্দেশ্য করে দেই না, এটা কোইনসিডেন্ট, সব কিছুর লিমিট থাকা উত্তম, যখন তা ছাড়িয়ে যায় তা আর সুন্দর থাকে না। চান্দগাজী ভাই আমার খুব প্রীয় একজন ব্লগার। আমি তা কে পছন্দ করি। দয়া করে এই সব বন্ধ করেন।
১২| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৮
জটিল ভাই বলেছেন:
চান্দগাজী ভাই আমার খুব প্রীয় একজন ব্লগার। আমি তা কে পছন্দ করি। দয়া করে এই সব বন্ধ করেন।
অসংলগ্নতা বন্ধ করলে তিনি অন্যদেরও প্রিয় হতে পারতেন। বন্ধ করাতে পারবেন?
২৩ শে মে, ২০২১ রাত ১:০৫
রানার ব্লগ বলেছেন: তার অসংলগ্নতা তার কাছে এটা আমার বন্ধ করার কথা না।
১৩| ২৩ শে মে, ২০২১ রাত ৩:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি অদ্ভুত এক গল্প লিখেছেন; সেই সময়কার অবস্হাকে আপনি সুন্দর করে তুলে ধরেছেন; অদ্ভুত।
২৩ শে মে, ২০২১ ভোর ৫:০৭
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ
১৪| ০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৪৮
আমি সাজিদ বলেছেন: খুব চমৎকার রানা ভাই। ইদ্রিস আলী উগ্র ছাগলকে নিজ হাতে জালি বেত দিয়ে প্রহার করতে পারলে শান্তি পেতাম।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:৪৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: জাম্বুরা আপা মনে মনেই যদি গালি দিবে, কেউ থাকলেই বা কি অসুবিধা?
তিব্র<তীব্র
পিপাষা<পিপাসা
কর্কস<কর্কশ
আরো প্রচুর বানান ভুল। আর দেখাইতে পারবো না, এনার্জি নাই।
মেজর ব্যাটা মনে হয় ঠিকমতো ব্রিফিং পায় নাই। নয়তো 'হিন্দু' মানে তার জানার কথা। গাজী নামের রাজাকার কোন চরিত্র আনা আপনার ঠিক হয় নাই। পারলে নামটা বদলায়ে দেন। আপা'র শেষের কাজ-কারবার বেশী সিনেমাটিক হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে পাকিটার সাথে যা করলো। ঠিক বাস্তব-সম্মত না।
এনিওয়ে, গল্পের প্রান্জলতা ভালো লাগলো।