![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।
টিং টিং করে কিছু একটা মাথার কাছে বেজেই যাচ্ছে । কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় মেজাজ খারাপের চূড়ান্ত অবস্থা । হাতিয়ে যাচ্ছি । শব্দের উৎস খুজে পাচ্ছি না । চোখ বুঝে ঢুলতে ঢুলতে হাতে সাথে মোবাইলের ছোট খাট একটা মুখমুখি সংঘর্স লেগে যাবার পর মোবাইলটা কে হাতিয়ে নিলাম । তখনো বে-শরমের মত বেজে যাচ্ছে । টি টিং টি টিং । হা করে লম্বা একটা হাই তুলে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে কিচমিচ করে উঠল, আপনি কি মানুষ না হনূমান । কখন থেকে ফোণ দিচ্ছি ধরতে পারেন না !
হ্যা আপনার ফোণ ধরার জন্যই তো আমি বসে থাকি , কি হয়েছে কি ? খানিক বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম । ওপাশে খানিক নিরাবতা । শোনা যায় কি যায় না এমন একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস এর শব্দ শুনতে শুনতে হারিয়ে গেল । আমার এক পায়ের নুপুর হারিয়ে গেছে ।
নুপুর হারিয়েছে, খুজুন , দেখুন কোথাও পরে গেছে কি না, খাটের নিচে খুজুন ওখানে পাবেন হয়ত ।
না, বাসায় হারায় নেই । সেই যে সরোওয়ার্দি উদ্যানে গেলাম সম্ভাবত ওখানেই পরেছে । যেয়ে দেখুন না একটু খুজে পান কি না ।
খেপেছেন? এই সন্ধ্যায় আমি যাবো সরোওয়ার্দি তে আপনার পায়ের নুপুর খুঁজতে । আর ঘটনার দুই দিন হয়ে গেছে । কেউ না কেউ পেয়ে নিয়ে গেছে ।
আয় হায় কি বলেন । কে নেবে ? আমার কতো স্বাদের নুপুর জানেন ?
আরে দেশের প্রেমিকের অভাব আছে । যে পেয়েছে সে তার বান্ধুবী কে গিফট দিয়ে দিয়েছে ।
চুপ থাকুন । সবাই আপনার মতো ফকির না । যান খুজে দেখুন ।তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
পারবো না । দুই দিনের আগের ঘটনা এখন যেয়েও লাভ নাই । বিরক্ত হয়ে বললাম । আমার খেয়ে দেয়ে কাজ নাই । এই সন্ধ্যার সময় দুই দিন আগের হারানো নুপুর খুঁজতে যাবো ।ফোণ রাখুন আমাকে ঘুমাতে দিন ।খটাস করে ওপাশ থেকে ফোণ কেটে দেবার আওয়াজ পেলাম । বিছানায় শুয়ে পায়ের পা রেখে নাচাতে লাগলাম । সেইদিনের স্মৃতি এখনো যেন তাজা । এই রকম ঘটনা বোধ করি হিন্দি সিনেমাতেও হয় না ।
তড়াং করে লাফিয়ে উঠলাম । হায় হায় কি কান্ড করে ফেলেছি । যার জন্য এতো কিছু তাকেই ফিরিয়ে দিলাম । নুপুর আমাকে খুজে পেতেই হবে । কোন রকমে প্যান্ট শার্ট গায়ে চাপিয়ে ছুট দিলাম । রাত আটটার সময় সরোওয়ার্দি উদ্যান ভুতের আড্ডা খানার মতো নিরব আর নিঝুম হয়ে আছে । বিশাল কোলাহলের মাঝে যেন এক টুকরো নিরাবতা । শহরের বুকে ঘুমিয়ে আছে ।লোহার রেলিং বেয়ে চোরের মতো নেমে পরলাম উদ্যানে । সামান্য কিছু জোনাকির হাতে ধরা পরা ছাড়া কিছুই ঘটলো না । ঠিক কোথায় যে দাঁড়িয়ে ছিলাম ওই দিন বুঝতে পারছি না । অন্ধকারে সব জায়গা এক রকম লাগে । পা টিপে টিপে চোরের মতো খুজতে লাগলাম । কিছু একটা চাঁদের আলোয়ে বা দুরের লাইটের আলোয় চকচক করলেই ছুটে যাচ্ছি খুজে দেখতে । কখনো পলেথিনের টুকরা বা এ্যালুমনিয়ামের টুকরা খুজে পাচ্ছি । নুপুরের দেখা পাই না । ধুস শালা , নিজকেই বকা দিলাম। এইবাহবে কি কিছু খুজে পাওয়া যায় । বেশ কিছুক্ষন খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে ঘাসের উপর বসে পরলাম ।
ভাইজান কি কাউরে খোঁজেন ? রিনি রিনি গলায় কে যেন ডাকলো পেছন থেকে । ঘাড় ঘুড়িয়ে কারু দেখা পেলাম না । ভুল শুনলাম নাকি , নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি । আমারে কন আমি খুইজা দিমু , আবার রিনিরনি গলায় পেছন থেকে কে যেন বলে উঠলো ।পেছন থেকে শব্দটা আসলো কিন্তু এইবার খুব কাছাকাছি যেন মনে হল। এইবার ভয় পেলাম । ভুত ফুত নাতো। শুনছি অন্ধকারে ভুতেরা লুকিয়ে থাকে।
এই কে আপনি , সামনে আসুন । ভাঙ্গা গলায় খানিক টা চেচিয়ে উঠলাম ।
ভাইজান কি ভয় পাইছেন? জরি জড়ানো ঝিকিমিকি শাড়ি পরে লম্বা দেখতে একটা মেয়ে সামনে এসে দাড়ালো । হালকা চাঁদ ও শহরের নিয়ন আলোয় মায়াবী একটা মুখ যেন মস্ত আকাশের ফ্রেমে ভেশে উঠল । খানিক টা বিব্রত হয়ে চেয়ে রইলাম । এই সময় কোন মেয়ে কে আমি আশা করি নাই । আশে পাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম অন্য কেউ আছে কি না । খুক করে কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে জিজ্ঞাসা করলাম ।
তুমি এখানে কি চাও ?
আমি কিছু চাই না , আপনি মনে কয় কিছু খুজতাছেন । দামি কিছু? খুইজা দেই ! এগিয়ে এলো মেয়ে টি
আমি বসা অবস্থায় তড়াং করে পেছনে পিছিয়ে গেলাম । না , না। খুঁজতে হবে না । আমি খুজে নেব ।
ভাইজান ভয় পাবেন না ।আমার নাম মুক্তা । পাশের ঝুপড়ীতে থাকি । তখন থেকে দেখতাছি আপনে আচালি বিচালি করে কিছু খুজতাছেন তাই কইলাম কিছু হারাইলে কোন আমি খুইজা দেই । আমি এই জায়গার পুরাটা চিনি। বুকে যেন খানিক সাহস ফিরে পেলাম । মুক্তার দিকে ভালো মতো তাকিয়ে দেখলাম । বেশ লম্বা টানের একটা মুখ । মুখে মায়া আছে কিন্তু মেকাপের অতিসাজ্জে মায়া টা আড়াল হয়ে সেখানে সস্তা উগ্রতা বেশি মাত্রায় প্রকাশ পাচ্ছে ।
আমার একটা নুপুর হারিয়ে গেছে । একটূ খুজে দেবে । বাঁধো বাঁধো গলায় বললাম
হি হি , আপনিও কি মুবিন ভাইয়ের মতো মাইয়া গো লাহান সাজেন?
তোমার মুবিন ভাই টা কে? হেঁসে জিজ্ঞাসা করলাম ।
আমাগো লগেই থাহে , গলায় মালা পরে, কানে দুল দেয় , টিপ পরে, লিপিস্টিকও দেয় ।মাইয়াগো মতোন করে । আপনি কি ওই দলে ? হি হি করে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরে মুক্তা ।
না, আমি ওদের মতন না । আমার একটা কাজের নুপুর হারিয়ে গেছে । তাই খুজচ্ছিলাম ।
ও বুজচ্ছি , আপনের নায়িকার নুপুর । হায় আল্লাহ, মাইনসের কতো ঢং রাইত বিরাইতে নুপুর খোঁজে । ইস আমার যদি এমন একজন থাকতো । তারে কইতাম ও নাগর, আমাই হারাই গেছি আমারে খুইজা দে ।
তোমাকে খুঁজতে হবে কেন? তুমি কি হারিয়ে গেছ ? হালকা তামাশা করে জিজ্ঞাসা করলাম ।
বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঝুপ করে পাশে বসে পরলো । হ গো ভাই, হারাই তো গেছি । নিজেরে নিজে কই , মুক্তারে কই ছিলি আর কই আইসা পরলি । তুই পথ চিনিলি না রে মুক্তা, তুই হারাই গেছত ।
বাহ, তুমি তো দেখছি বেশ ফিলসফিদের মত কথা বলো । পড়াশুনা করেছ?
জ্বি ভাই , পড়ছি, আট কেলাস তামাইক পড়ছি । হের পরেই তো বুদ্ধ নষ্ট হইলো। খাচ্চইররা ব্যডার পাল্লায় পইরা এই খানে আইছি ।
খাইচ্চইরা ব্যাডা? এইটা কে? কৌতহল হোল ।
থাক ভাই, বাদ দেন হেই কুত্তার কতা । আসেন আপনার মাল খুঁজি । কোন খানে হারাইছেন কইতে পারেন ?
নাহ, বাদ দাও , দুই দিন আগে হারাইছে । এখন আর পাবো না ।
কন কি ? দুই দিন আগে হারাইছে আর এই মুক্তার চোখে পরে নাই । হইতে পারে না । এই জায়গার সব চেনে মুক্তা ।
আমরো তাই মনে হয় , এখানে হারায় নাই । চিন্তিত হয়ে বলি । ভুরূ কুঁচকে আশে পাশে দেখার চেষ্টা করি ।
ভাই, মাইয়া আপনারে বেলাফ দিছে । বিজ্ঞের মতো মাথা নাড়ে মুক্তা। মিছা কতা কইছে । দেহেন গিয়া এই সুজুগে অন্য ব্যাডার লগে ফষ্টিনষ্টি করতাছে । কসম কইরা কইতাছি ।
এই চুপ, হাল্কা কিন্তু কঠিন করে ধমক দিলাম । কি বল এইগুলা । ও এমন না ।
আরে ভাই, কতো দেখলাম । মাথা নাড়তে থাকে মুক্তা । যান ভাই , বাড়ি যান, জায়গাটা ভালা না আমিও ভালা মাইয়া না ।
লম্বা হুইশেল শুনে চমকে উঠলাম । মুক্তা বসা থেকে তিড়িং করে উঠে দাড়ালো । ভাইজান ভাগেন, মামায় আইছে। ঝোপের দিকে ছুটতে ছুটতে চাঁপা গলায় বলে পালালো । কি করবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না । আমিও ছুট লাগালাম দিক বিদিক । কে যেন পেছন থেকে গেঞ্জি টেনে ধরে হ্যাচকা টানে মাটিতে ফেলে দিলো । ওদিকে একটা ঝোপের মধ্যে হুটপাটের আওয়াজ পেলাম । হালকা ঝাপসা আলোয় দেখলাম মুক্তা কে টেনে বের করছে একজন লোক ।
তোরে হাজার বার কইছি এইখানে মাগী গিরি করবি না । গায়ে লাগে না । গায়ে ত্যাল হিইছে! আইজ তোর সব ত্যাল আমি লাঠির গুতায় বাইর করবো । মুক্তা কে তার ওড়ানা দিয়ে পেচিয়ে টানতে টানতে আমার পাশে বসালো । হঠাত টানে মাটিতে পরে গিয়ে কোমরে বেশ লেগেছে ।
ওই খানকির পুত, রাইত বিরাইতে পিরিতের নাও চালাও! লাঠি দিয়ে খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো । ভয়ে ব্যাথায় আমার গলার শব্দ বের হচ্ছে না । আমি কোন ক্রমে বললাম , ভাই আমার একটা মূল্যবান জিনিস হারিয়ে গেছে ওইটা খুঁজতে এসেছিলাম ।
চুপ, হালার খাইস্টা খবিস। একদম চুপ । চুলের মুঠি ধরে ইচ্ছা মতো ঝাকালো । আমার লগে মিছা কথা কইলে গলায় পারা দিয়ে জিব্বা বাইর করে ফেলব । দুইটারে থানায় নিয়া ডলা দিলে বুঝবে । কতো গমে কতো আটা ।
মুক্তা তুমি কিছু বলো ।নিরুপায় হয়ে মুক্তা কে বললাম । মুক্তা একদম নিশ্চুপ । যেন আমাকে চেনেই না । অন্যদিক তাকিয়ে কান চুলকাতে লাগলো । এই মুক্তা , কিছু বলছো না কেন ! আমি হতাশ হয়ে বললাম
চুপ যা, ব্যাডা। কেডা মুক্তা । আমি সুফিয়া, মুক্তা ফুক্তা আমি না । পুলিশের দিকে তাকিয়ে বললো , পুলিশ মামা আমারে ছাইড়া দেন , এই ব্যডা হিরুঞ্চি, আমারে কু প্রস্তাব দিছে, আমি না কইরা দিছি , খোদার কসম ।ওই ব্যাডা কইছি না! পা দিয়ে আমাকে হালকা খোঁচা মেরে বলে । আমি ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলাম ।
আমাদের দুইজন কে টানতে টানতে পাশের থানায় নিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিলো । থানার বড় সাহেব তিন দিনের ছুটিতে গেছে । যা হবার তিন দিন পরেই নাকি হবে । এই তিন দিন আমাকে এখন জেলেই কাটাতে হবে । কি কুক্ষনে যে এই কুবুদ্ধির শিকার হলাম এটা ভেবেই মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে । জেলের এক কোনায় এক লোক পরে আছে , তার বমি প্রস্রাব আর পায়খানার গন্ধে জেল জাহান্নাম হয়ে আছে । নিজেকে যতোটা সম্ভাব কোনা বন্দী করে রাখার চেষ্টা করলাম । সামান্য চোখ ঢুলু ঢুলু করতে লাগলো । পায়খানার বিকট গন্ধে ঢুলঢুলানি ছুটে গেলো । চোখ খুলে দেখি , ছোচে মোচে একাকার একটা মুখ আমার মুখের সামনে শুকছে । যতোটা সম্ভাব নিজেকে গুটিয়ে নিতে চেষ্টা করলাম ।
একটা বিড়ি হবে? শামসু বিড়ি ! খসখসে গলায় জিজ্ঞাসা করলো ।
না আমি বিড়ি খাই না , গন্ধে পেট ঠেলে আসা বমি সামলে কোন মতে উত্তর দিলাম । ধপাস করে পাশে বসে পরলো লোকটা । গায়ে একটূ গন্ধ আছে কিছু মনে করবেন না বস । শালার কন্সটাবেলের হাত না যেন সদর ঘাটের কুলির হাত । ইচ্ছা মতো প্যাদাইছে । দেখেন না প্যাদানির ঠ্যালায় হাইগা দিছি । খিক খিক করে হাসতে লাগলো । নিজেকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলাম । আজ নির্ঘাত কপালে গুয়ের গন্ধে মরন আছে । বস, মাল ডা কেমন ছিলো , গোবদা কেনে আঙ্গুল দিয়ে খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ।
কোন মাল। কিসের মাল? কি বলেন এইসব ? প্রায় আর্তচিতকার দিয়ে উঠলাম ।
ওই যে শিউলি মালডারে যে তুললেন , কেমন মালডা? চখাস না ! চোখ টিপ দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ।
কে শিউলি! আমি কোন শিউলি কে চিনি না । ভাই একটু সরে বসেন । আর একটূ পর তো আমার কোলে বসে পরবেন । নাকে হাত দিয়ে নাকি গলায় বললাম ।
কি ন্যাকা ন্যাকা গলায় বলেন, হাত নামান। ধমক মারলো লোকটা । আসামির গা থেকে গুয়ের গন্ধ আসবে নাকি আতরের গন্ধ আসবে। দুই দিন থাকো চান্দু , তোমার গা থেকেও কুত্তার গুয়ের গন্ধ না আসলে আমি এক পাতিল নিজের গু ভাত খাওনের মতো মাইখা মাইখা খামু বুঝলা সোনার চান পিতলের মুরগী ।
আল্লার নাম নেয়া শুরু করলাম । জাহান্নাম এর থেকে মনে হয় আরামদায়ক । পকেট থেকে মোবাইল টা বের করে ফোন দিলাম । রিং বাজে । কেউই ধরে না । আবার দিলাম কেউই ধরে । ফোণ বেজেই যায় ।ওপাশ থেকে খ্যাক খ্যাক করে হাসার আওয়াজ পাই । ফোন দিয়া লাভ নাই । কেউ আইবো না । আসেন তার থিকা দুই ভাই মিলা হাইগা জেল খানা ভইরা ফালাই । গলগলিয়ে রক্ত পায়খানা দিয়ে জেল ভাসিয়ে দিলো । শালারা মাইরা মনে হয় গল ব্লাডার ফাটিয়ে দিছে । শালা, কেহেরমানের গুস্টি । মায়া দরদ কিচ্ছু নাই ।
ভোরের দিকে ফোন টা বেজে উঠলো । ধরমরিয়ে উঠে ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে চিন চিন গলায় বললো , কি নুপুর পেলেন ? আমার খুব প্রীয় নুপুর।
আরে রাখেন আপনার নুপুর। আপনার নূপুরের চক্করে পরে জেলখানায় ঢুকে আছি ।
হায় হায় বলেন কি ? শুনে দুঃখ পেলাম । দুঃখ পাবার কোন লক্ষন ওপাশ থেকে পাওয়া গেলো না । বেশ খুশি খুশি একটা ভাবের যেন প্রকাশ পেল । প্লিজ কিছু একটা করেন । এখানে থাকা যাচ্ছে না ।
কেন? খুব মারছে বুঝি । হি হি করে হাসতে লাগলো । আপনি কি মানুষ, দাঁত মুখ খিচিয়ে বললাম । একজন মানুষ আপনার হারানো জিনিস খুঁজতে গিয়ে জেলে ঢুকে বসে আছে আর আপনি তাকে নিয়ে হি হি করছেন । মেজাজ আমার চড়ক গাছে ঝুলে আছে । ফোন টা কেটে দিয়ে বসে রইলাম । প্রতিজ্ঞা করলাম । জেল থেকে বের হয়ে এই মহিলার শ্রীমুখ কষ্মিনকালের দর্শন করবো না । তাতে যা হয় হবে । এখানেই ফুল স্টপ , দ্যা এন্ড ।
কানের কাছে ঘটং ঘটং আওয়াজ শুনে ধড়মরিয়ে উঠে বসলাম । জেলের ওপাশ থেকে লম্বা একটা লাঠিয়ে দিয়ে খোঁচা দিয়ে ডাকছে । এই ব্যাডা, ওঠ উঠে পর । চোখ পিট পিট করে চেয়ে দেখলাম । দশাসই আকৃতির এক দানব দাঁড়িয়ে । বুঝে গেলাম আজ আর রক্ষা নাই । চোখের সামনেই তার উদাহারন দেখছি । মনেমনে প্রস্তুতি নিলাম । মাইর শুরু করলেই পা চেপে ধরে বলবো আমি নিরপরাধ । আমাকে মাফ করে দেন ।
ওই দাড়া, বাঘও বুঝি এর থেকে কম জোরে আওয়াজ করে । মনে হল, ছাঁদ খুলে পরে যাবে । পুরা জেলখানা গমগম করে উঠলো । আমি নিশ্চিত এর গলায় একটা ট্রামপিড ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে । কাঁপতে কাপতে উঠে দাড়ালাম । ঘটাং ঘট করে তালা খুলে আমার কান ধরে টেনে বের করে নিয়ে এলো । পেছন থেকে শুনতে পেলাম বলছে, আল্লা খোদার নাম নিয়া লাভ নাই , ক্যারামাইসিন খাইতেই হবে মনা । শরিল শক্ত কইরা না । ঢিল দিবা এতে মাইর কম লাগবো । কানের কাছে ট্রামপিড টা আবার বেজে উঠলো , চুপ থাক মাউরার পো । আর এক ডলা বাকি আছে খাবি? প্রতি উত্তরে কোন শব্দ এলো না ।
আমাকে টানতে টানতে বড় সাহেবের রুমে নিয়ে গেলো । পাটকাঠির মত শুকনা এক লোক যার চোখে বিশাল ঢাকনা সাইজের চশমা । সে চশমার ফাঁকা দিয়ে আমাকে দেখার চেষ্টা করছে । কিন্তু চোখ চশমার কোন ফাঁকা গলি খুজে পাচ্ছে না । পুরা মুখ জুড়ে চশমা । আর চোখে তাকিয়ে দেখি শ্রীমতি মহারানী ফুলের তোড়া হয়ে সোফায় বসে আছে । বড়সাহেব তার ঢাকনা সাইজের চশমার আড়াল থেকে ভালো মত দেখে নিয়ে ছেড়ে দিলেন। ভবিষ্যতে এমন হলে কি কি সব হতে পারে তার বিস্তারিত বর্ননা শুনে মাথা নেড়ে তাতে স্বিকৃতি জানিয়ে থাকা থেকে বের হলাম । আহ কি শান্তি । ভোরের ঢাকা যে এতো নির্মল আমার জানা ছিলো না ।
কি শিউলি মেয়ে টা কেমন ? মাথা নাড়তে নাড়তে জিজ্ঞাসা করলো ।
কোন শিউলি? আমি কোন শিউলি কে চিনি না । মুখ ব্যাজার করে বললাম ।
কেন যার সাথে ডেট করতে গিয়ে জেলের হাওয়া খেয়ে এলেন । সেই শিউলি , কেমন? ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ।
দেখুন আমি কোন শিউলি কে চিনি না । আর আপনার নুপুরও খুজে পাই নাই ।
নুপুর? কিসের নুপুর! হতভম্ব হয়ে তাকালো ।
আরে বাহ আপনি গতকাল বললেন না আপনার নুপুর হারিয়ে গেছে । আমাকে খুজে দিতে বললেন ।
কি সব বলছেন। আমি নুপুর পরি না । একদম বাজে লাগে । কানের কাছে ঝন ঝন শব্দ বিশ্রী লাগে ।
আমার ব্রম্মতালু যেন ফেটে যাবে রাগে । ইচ্ছা হচ্ছে তাকে ধরে আকাশ থেকে ফেলে দেই । সারা রাত এই নূপুরের জন্য ভুগলাম অথচ বলে কি না তার নুপুর নাই । সে কোন নুপুর হারায় নাই ।
আচ্ছা আপনি বলেন নাই আপনার নুপুর উদ্যানে হারিয়ে গেছে । চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞাসা করলাম ।
না, একদম না। আমিতো আপনাকে ফোন দেই নাই ।
আপনি ভোর বেলা ফণ দিয়ে জিজ্ঞাসা করেন নাই নুপুর পেয়েছি কি না ? দাঁত কিড়মিড় করে জিজ্ঞাসা করলাম ।
যাহ ! আপনার মাথা টা গেছে ।
কোন কথা না বলে হনহনিয়ে হাটা শুরু করলাম । অনেক হইছে আর না । এর পাল্লায় পরলে আমি কোনো না কোনো দিন ফাঁশিতে চড়বো । দ্রুত এখান থেকে দৌড়ে পালাতে হবে ।জোড় পায়া হাটা দিলাম । কোন রিক্সা বা অটো পেলে ভালো হতো । পালাতে হবে ।
তবে আপনি যদি আমাকে একটা নুপুর গিফট করেন তাহলে পায়ে পরতে পারি ।
চমকে পাশে চেয়ে দেখলাম শ্রীমতি আমার সাথেই পায়ে পা মিলিয়ে চলছে । আমি কোন নুপুর টুপুর গিফট করতে পারবো না । হাটার গতি বাড়িয়ে দিলাম ।
আরে কই যান ।খপ করে হাত টা টেনে ধরলো ।সময় টা দেখেছেন ! ভোড় বেলা। চলেন একটু কোথাও চা খাই তার পর দোকান পাট খুললে আপনি আমার জন্য একটা নুপুর কিনবেন । তারপর আমরা দুজন মিলে কক্সবাজারের বাসের টিকেট কাটবো । তারপ আপনি আমার এক পায়ে নুপুর পরিয়ে দেবেন , আমরা দুজন হাত ধরাধরি করে সমুদ্রের জলে পা ভিজাবো আর পানি ছিটিয়ে হাটবো । নূপুরে ঝুনঝুন আর সমুদ্রের গর্জন মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে । যাবেন আমার সাথে !
এমন ডাক কে না বলার ক্ষমতা আমার কোন কালেই ছিলো না । আচ্ছা আপনি এমন টা করলেন কেন ? হতাশ হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ।
দুই দিন ধরে আপনি লাপাত্তা কেন আগে তার উত্তর দিন । পালটা প্রশ্ন করলো । চিঠি পেয়েই সব পেয়ে গেছেন এমন টা ভাববেন না । এখনো কিছুই হয় নাই । তার আগেই এতো ভাব । দুই দিন বেখবর । তাই দিলাম একটূ মুচড়ে । খিল খিল হাসিতে সদ্য জন্ম নেয়া ভোর নিস্তব্দ রাস্তার সকল শুন্যতা পুর্ন হয়ে গেলো । রাস্তার এই মাথা থেকে ওই মাথায় খিল খিল হাঁসি ভোড়ের পাখনা হয়ে উড়ে বেড়াতে লাগলো ।
ফুটপাত ধরে আমরা হেটে যাচ্ছি। আমার একটা হাত কে কুক্ষিগত করে গুনগুনিয়ে গানের সুর গুনা গুনাচ্ছে । এক পায়ে নূপুর আমার, অন্য পা খালি, এক পাশে সাগর, এক পাশে বালি !
প্রতিজ্ঞা করলাম । দুই পায়েই নুপুর পড়িয়ে দেব । এক পা খালি রাখার কোন মানে হয় না ।
** রাত একটা বাজে । বানান ভুল হলে মার্জনা । ধড়িয়ে দেবেন ঠিক করে নেব ।
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৭
রানার ব্লগ বলেছেন: গান টা আমার কখনই ওতো ভালো লাগত না । তারপরেও চরিত্রের ডিমান্ড ।
বেশ কিছু বানান ও শব্দের অসংযুতি আছে । ঠিক করে নেব ।
২| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৪৮
কাঁউটাল বলেছেন: জটিল হইছে, +
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৮
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনাকে এই প্রথম আমার পোস্টে মন্তব্য করতে দেখলাম । ধন্যবাদ ! ভালো থাকুন !
৩| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৬
ডি এইচ তুহিন বলেছেন:
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৮
রানার ব্লগ বলেছেন: তুহিন ভাই কি নিরবে বকা দিয়ে গেলেন ? ধন্যবাদ !!!!
৪| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি একজন ভদ্র মানুষ।
আমার ভুবনে মন্দ কিছু নেই। আমি কখনও কাউকে গালি দেই নাই। এজন্য বাস্তব জীবনে এবং কোনো লেখায় গালি বা খারাপ শব্দ আমার পছন্দ নয়। হ্যা আমি অনেকে গালি ছাড়া কথাই বলতে পারেন না। যারা মন্দ কথা বলে, তারা মন্দ মানুষ। আমি মন্দ মানূষ থেকে দূরে থাকি।
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৪০
রানার ব্লগ বলেছেন: চরিত্রের প্রয়জনে চরিত্র গালি দেয় ! এখানে আমার কোন হাত নাই ! আমি শুধু বর্ননাকারি ।
আমি নিজেকে সাধারন মানুষ মনে করি । অর্থাৎ ভালো মন্দ মিলিয়ে একজন !
৫| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:১৯
আব্দুল মতিন মুনি্স বলেছেন: এমন মহিলার পাল্লায় যদি কেউ পড়ে তার জীবন শেষ
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৩০
রানার ব্লগ বলেছেন: হা হা হা
ভালোবাসার মানুষের সাথে মানুষ অনেক কিছু করে । এটাই স্বাভাবিক ।
৬| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৭
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: নুপুর কি কিনে দিয়েছিলেন?
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭
রানার ব্লগ বলেছেন: গল্পের নায়ক কে জিজ্ঞাসা করেন । আমি জানি না !
৭| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৪
নতুন নকিব বলেছেন:
গল্প সাধারণতঃ পড়া হয় না। আপনার এই গল্পটা পড়ে দেখার ইচ্ছে আছে।
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৩০
রানার ব্লগ বলেছেন: এর বাকি পর্ব গুলা একটু খুজলেই পাবেন৷ ধন্যবাদ।
৮| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:১০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- গল্প ভালো হয়েছে।
৯| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:২১
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
গল্পের প্লট ভালো, তবে আরও কম বাক্যে লিখতে পারতেন। লেখা বড় হয়ে গিযেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:২৮
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: দুই পায়ে'ই নূপুর পরিয়ে দেন, এক পা খালি রাখার দরকার নেই।
আপনার পোস্টের কল্যাণে অনেকদিন পর গানটি শুনতেছি।