নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাপখাতা

_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________

সৈয়দ আফসার__১৯৭৯

''কিছুতেই আজকাল মানু্ষের চোখের দিকে তাকাতে পারি না-লজ্জা করে! ভিতরে কেবলই প্রাসাদ ভেঙে পড়ে, কেউ শোনে না: আমি সারাক্ষণ পঙ্গু, অর্থব ঘোড়ার ডাক শুনি।তাই,কিছুতেই আজকাল মানুষের, মানুষীর চোখের দিকে তাকাতে পারি না।'' ______শামসের আনোয়ার ________♣ ♣ ♣_______ ___________সৈয়দ আফসার ________জন্ম: ২১শে মার্চ ৭৯ [email protected]

সৈয়দ আফসার__১৯৭৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি, বৃষ রাশির বালিকাটি

০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১১:৪০



সৈয়দ আফসার



বৃষ্টিপর্ব

জল ফুটছে করতলে, ঠোঁট ছুঁয়ে উড়ে গেছে মেঘ— সুন্দর! মনে করো

আমরা যে পথ ধরে হেঁটেছি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে দৃশ্যাবলি যত

বোবাস্মৃতি সেজে। তবু কেন যে ছুঁয়ে দেখার আগে বৃষ্টিপর্ব শুরু হলো

না অজল চোখে



পাত্রের গায়ে লেগে আছে তৃষ্ণা, বাকিটুকু শৈবালে-তোমার মুগ্ধতা

আড়ালে-আবড়ালে মেঘের কালে… অবাক হবার কিছুই নেই

বেদনাত্ন চোখে, ভোররাতে হাত বাড়ালে যদি ঝড়ো হাওয়া

ফিরে আসে পুর্নবার ডালে-ডালে। পাতায় তুলে রাখি ছায়া

শুকনো জল দেই ঢেলে সামনে দাঁড়ালে জলে ঘাম পুড়ে করতলে

তোমার চোখে শ্রাবণের ঢল নেমে এলে



কার স্পর্শে যেন মিশে যেত হাত; চুষে নিতে জল ম্লান চোখ দু’টি

মিশে যেত হাওয়ায়-আবহাওয়াপাড়ায়। উড়ু হাওয়া বলুক রোদের

তীব্রতা খেয়ে গেল কে? আর্দ্র হাত দুটি কার আয়ু গুনে রাখে মনে-

রোদ কুড়ানোর ছলে তুমি লুকোবে আজ কার খোঁপায়। যদি ফিরে

আসে ওই দুটি হাত কলঙ্কফুল গেঁথে আমি গুনে নেবো স্মৃতি একা পেলে



জলে স্বপ্ন লুকানো বলে ভাবিনি এতসব জল অবলম্বনে জেনেছি স্বপ্নফুল

কবে ফুটেছে ঝরেছে তুমি জেগে ওঠার আগে- তাই জল ছুঁতে ভয় হয়,

বসে থাকি পেখম মেলে— আমি জল কখনো জমতে দেব না আর্তচোখে

ঢল নেমে এলে শোকগাথা যতসব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেবো ছত্রাকে-শৈবালে



৩০শে জুলাই

আজ তোর জন্মদিন! আমার তারও ঢের পরে

তাই একটি নক্ষত্র ঝরে গেলো; উড়ে গেলো দিঘীর পাড়ে

কি দেবো আজ তোকে— গোলাপ-কাজল নাকি কংকন

তুই বোবার মতো তাকালে মুখ ঢেকে মুছে নিলে

শুকনো চোখের জল



তোকে কাল চিঠি দেবো তাই বৃষ্টিভেজা আজ কাগজ কলম

জন্মদিনে যত্ন করে রাখিস; স্মৃতিসহ ওই বোবা পুতুল



আমি তো দূরে চলে যাবো-দেখবো না কভু আর তোর মিষ্টি মুখে

হাসির ফুল জানিস্ সে কথা ভাবলে ভোররাতে আমাকে

জাগিয়ে তোলে তোর মোলায়েম গালের তিল



কুড়ানো পাথর

একারে মিশে আছো; জবাকুসুমের আশায়

তাই কলঙ্ক শুয়ে আছে মধ্যিখানে— পড়োশি পাড়ায়



তোমার অপেক্ষা কেবল জিলিপি প্যাঁচেই জানে

একদিন কি যেন বলেছিলে অনিচ্ছায়; কানে-কানে



অবশেষে কুড়িয়েছি নুড়িপাথর বিচানায়; খাটে



ইচ্ছে

আজ আমি জল শুকাতে দেবো না রোদে

আজ তবে বৃষ্টি নামুক তার মতো করে

আজ একাই ছিঁড়ে নেবো এক টুকরো জল

তুমি কি আমাকে অর্ধেক রোদ পোহাতে দেবে?



কাল তোমাকে আমি ছায়া এনে দেবো—

তোমার হাতের কাছাকাছি অর্ধেক রেখো

রোদটুকু ফেরৎ পাবে



আবার তোমার কাছ থেকে মেঘ চেয়ে নেবো

আজ না হয় কাল— অবধারিত বৃষ্টি এলে



ব্যবহার

রমণীর যন্ত্রণা যতটুকু বুকে কল্পনায় তার অর্ধেক নয়

তবু তুমি সাদৃশ্য খুঁজে চলো বাক্য বিন্যাসে ক্রিয়ায়



শব্দ তরঙ্গে স্তব্ধ তুমি-চুমু খেলে শির-শির দেহ কঙ্কাল

আমি ব্যাকরণের পাঠ নিতে এসে দেখি তুমি; তুমি আগুনের মশাল



ধ্বনি-বর্ণের ব্যবহার যেন ঘুমন্ত লিঙ্গের দীর্ঘশ্বাস

ছায়া কুড়োতে এসে দেখি তুমি শিখে ফেলেছো সমাস-বিন্যাস



তুমি যতই সন্ধি বিচ্ছেদ করো; এখনো কারকের ব্যবহার শিখনি

ভাষা শিখিনি আজো; শুধু সন্ধ্যানে ফিরি; এ কথা কভু তোমাকে বলিনি



বেলা-অবেলা

যতটুকু বিশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো

তাকে অনুসরণ করো— কিংবা অনুকরণ করে

ককনো কি ছুঁয়ে দেখেছো হাত, ছায়া মেপে—

প্রকাশ করেছো কি কভু গেঁথে রাখা চোখের ভাষা?

তবে কেনো দৃষ্টিস্ফীত করে খুলে রাখো চোখ আর

আউলা চুলে শুকাচ্ছো জল যেন ঝরে পড়ছে জলজ উষ্ণতা



তোমাকে জাগাতে এসে ভুলে গেছি স্বপ্ন দেখেছি কবে

ওসব বললে হেসে ওঠো বাস্তবতাটুকু

মেনে নিতে পারো না



ফুলপাথর

পাথরের ঘর্ষণে পাথর ফুটুক, অনড় চোখে

তোমার স্পর্শ ছাড়া একাকী দীর্ঘ সহবাস ছেড়ে উঠুক স্বপ্ন

তার মতো করে

ফুল তবে ফুটুক কারো স্পর্শ ছাড়া নিঃস্ব দায়ভার রেখে

ঝরে পড়ুক তুমি ছুঁয়ে দেখার আগে ডালে-ডালে



তোমার দু’হাতে ঝরাফুলের হাসি নিয়ে ফিরেছো; জড়ো করছো

দু’হাতের ঘ্রাণ— আমি তো যত্ন করে কুড়িয়ে এনেছি

গোলাপের কলি বহু আগে



স্পর্শ করিনি তবু পাথরের ঘর্ষণে পাথর কাঁপে

ফুল ফোটে নিভৃতে ঝরে পড়ে তার মতো করে রোদের তাপে

আজো বাঁধা আমাদের মতো হাজারও প্রাণ সেই পাথর ঘর্ষণ—

আর ফুলের কাছে



পরিতাপ

পরিতাপের ভাষা জানা নেই; ততুমি দাঁড়িয়েছো কপাট খুলে

তাই বলে কি— স্পর্শদোষে দীর্ঘশ্বাস ছুঁড়ে ফেলা যায়

কারো প্ররোচনায়

একা ঝুলে আছি চিরতার ডালে দু-জনের স্বপ্ন খুলে

তুমি পায়ের পাতায় গেঁথেছো কন্টকফুল; ক্ষতহাত

সবই জানে— তুমি কি জানো, তোমার চোখের সৌন্দর্য

কীভাবে ঢাকা পড়ছে এক্সট্টা চশমার ফাঁকে

দূরত্ব কতটুকু জমা রেখেছো বলো ঘূর্ণন বাতাসে



পরিতাপের ভাষা তালুবন্দি করো; কপাট খুলে ওইখানে

আমি তুলে নেবো বুকে জমা যত অস্থিরতা রাত্রিবেলায়; অতি গোপনে



অভিমান

শীতল বাতাসে শিহরণ তুলে… অশ্রু জমেছে দীর্ঘরাত, তবু নিদ্রা জাগেনি

ঘুরতে-ঘুরতে কিনারে ঠেকেছে বাতাস; সহস্র রাত্রি কুড়োনো স্মৃতি শুধু বৃষ্টির জন্য কিনি



বাতাসে শরীর ছুঁলে কপালের ঘাম মুছে নাও পাশাপাশি বসে

আমার শরীর জুড়ে গ্রামের গন্ধ; মনে করো জমেছে তোড়া-তোড়া দীর্ঘশ্বাস



দূরে তাকালে রোদে পুড়ে চোখ; তুমি দূরে রাখো ঠেলে

বাতাসে শরীর ছুঁলে উড়ে যায় স্বপ্নফুল এই তো দলে-দলে

আমি তো বাঁধা পড়েছি বৃষ্টির জলে নয়, তোমার ঘনকালো চুলে



ভয় ছিল তবু ছুঁয়ে দিতাম ডানাওয়ালা চুল

চুলের পরিখা, তুলে নিতাম গোছা-গোছা ঘ্রাণ

হাত ফসকে গেলে মনে হতো কার বুকে জমা রাখা

চাপা অভিমান



জল কুড়ানো দীর্ঘশ্বাস

একাকী বাড়ি ফিরিনি কভু বৃষ্টিপাত হলে

তুমি বলতে— ভাদ্রমাসে শান্ত পুকুরের জলে

শুয়ে পড়ি এসো; লাজ শরম ভুলে



দীর্ঘ অপেক্ষা তোমার; দীর্ঘশ্বাস কুড়াও জলে



সংকট

রোদ সংকট পুড়ছে ছায়া তাই আমার দু-হাতে জমেছে খরা

তোর দু-চোখ বিভোর সোনালি স্বপ্নে; আমি আজো স্বপ্নহারা



আজ মুঠো ভরে রেখেছি অশ্রু-তোর চোখে পরাবো কাজল

তুই দাঁড়ালে না পাশে মুঠো খুলে দেখি অশ্রুতে ফুটেছে কান্নাজল



জ্যোতি

যাদের চোখে জল; তারা বুঝে বকজ্বালাস্মৃতি

দুঃখ ভুলে যেতে জানে না— খুঁজো ত্রুটি-বিচ্যুতি

তোমার তাকানোর রহস্য দেখে ফেটেছে চোখ

ঘূর্ণিপাকে ফোটোনি তুমি; ছিঁড়েছো চোখের জ্যোতি



হাত

হাত ছুঁয়ে দেখো ঋণ নেবো না; গেঁথে নেবো কাজলসহ দু-চোখের কান্না

হাত খুলে দেখো জীবন দুর্ভাবনা; স্বপ্ন কিছু নয় নামমাত্র বালুকণা

হাত ছুঁতে করোনি মানা— পূর্ণ করোনি কখনো দেনা-পাওনা

হাত মেপে দেখো দিনা; জলের মতো ঝরে পড়ছে সব অনুশোচনা



হাতে হাত রাখো পূর্ণতা পাবে— দূর হবে তোমার মনের সবটুকু ঘৃণা



কাঙ্ক্ষা

তুমি নীল আকাশে চেয়ে থাকো অবিরত

আমি মেঘের গর্জনে কান পেতে বসি



ধুলোরঙে হাওয়া বয়ে চলে-তবু বৃষ্টি হয়নি

তাই দরজা পাশে দাঁড়ানো একমুঠোরোদ

পেখম মেলে

যদি ঘুম ভেঙে যায় তারা গুনে জমা রেখো হাতে



১১সেপ্টেম্বর

চোখ বুঁজে যা কিছু দেখি— ভালো লাগে খুব

আহ! কি সুন্দর দেহ-লতা রুগ্ন নাভিখানি

পঁচিশ তো পার হয়ে গেলো কে তা জানে

হাড়ে ফুটেছে যন্ত্রণা, তাই কুঁজো হয়ে বসি—

দিবারাত্রিমধ্যদুপুর



কার নাম ভালোবাসাবাসি; বাকিটুকু সে শুধু জানে

বৃষ্টিপাত হলে কেন? কেনো জানি বুকে জ্বালাতন বাড়ে



যা দেখি ভালো লাগে খুব, ভালো; আরো ভালো রাত্রিদ্বার

গুনে রাখা স্মৃতিগুলো মনে হয় রূপকথা— হারানো সংসার



শেষটান ছেড়ে দেখি বুকে ব্যথা বেড়েছে দ্বিগুণ; চোখ ঢাকা ঘন অন্ধকারে

ঘোর কেটে গেলো কবে— জেগে দেখি তুমি মুগ্ধ করেছো দেহ চুপিসারে



বৃষ্টি বিষয়ক একটি



চারিদিকে স্ফূরণ, অবিরত ক্ষরণ… বিস্ফোরণ

কার লাগি লিখি এই রাত্রি বরিষণ




মূলত সুখটাই বাস্তব জেনে এগোলে পথ পদতলে পৃষ্ট হলো

বরষাক্রান্ত রাত আমি প্রলম্বিত হয়ে কেবল দূরত্ব আঁকি—

আর তুমি ক্রমশ ঘোর রাত্রিতে স্বপ্ন বুনে যেতে চাও অবিরত

মোহে; ফলে ধনরত্নে গুঁজে দিলে মাথা কাল মুষলধারে বৃষ্টি

হয়নি বলে ফিরে এলে তুমি— গতিপথে এঁকে দিলে সব স্তব্ধতা



অবিরত খুলে নিতে দেহের শরম তুলে নিতে ঘ্রাণ যেন শস্যদানা

অসময়ে গেয়ে যেতে শ্রীকান্ত-মৌসুমীর গান(আবার যেদিন তুমি

সমুদ্র স্নানে যাবে… বৃষ্টি তোমাকে দিলাম) এখন সুরের মুর্ছনা

অন্য পথে চলে— তাই রোদে গড়িয়ে পড়তো জল, কল্পনা যেন

সমুদ্রস্নান; হেসে উঠতে তুমি স্বপ্ন নিয়ে বুকে, জ্বলে ওঠে ক্রোধ যেন

তোমারই নিজস্বতা। দেহ থেকে খসে পড়ে ঘাস; বেদনাগুচ্ছ

বুকে হেঁটে চলে অবিরাম-দেহ ছুঁয়ে দেখো কীভাবে চৈত্রে ঝরাপাতার মতো

দেহ থেকে উড়ে যায় মর্মর সুর, তুমি না ছুঁলে দেহপোড়াযান



রঙিন স্বপ্ন নিয়ে আকাশে উড়বে সে কথা বলনি কভু; ভালো নেই আমি—

তবুও ভয় জাগে মনে, কেননা চেয়ে দেখো দূরে তোমার জন্য আকা দূরের

বনে; স্বপ্ন নয়— নীরবতা। আকাশ ভর্তি কালো মেঘ কার চোখে ফোটে;

তোমার চোখে ফোটে তাই বাতাস ভর্তি ছায়া। মাতাল আমিই সেজেছি

তাই গাঢ় জলে পুড়ছে বুক জ্বলছে ঝাউবন, ।অপেক্ষা কেবল ফিরে আসা

নিয়ে, সুতো ছিঁড়ে গেলে তো মুছবে না কভু কারো আঙুলের পোড়াক্ষতদাগ



স্মৃতিঘোরে উড়ে যেও যদি দূরে ভাসে স্পর্শরীতি শুধু বুকের কাপড়টুকু বাদে সবটুকু উড়াতে করো না মানা— লক্ষ রাখো তোমার বুকে জমা রাখো আমারই স্পর্শে আঁকা পূর্ণিমার চাঁদ… কেননা ঘনঘোরে নির্ঝর বনে অধিকার অধিকার শুধু আমার; একার। তাই জলপূর্ণ কাঙ্ক্ষায় কেঁপে ওঠে দিঘীর পাড় দীর্ঘরাত্রির অপেক্ষা কেবল ক্ষয়ে-ক্ষয়ে যায় তবু তুমি খুঁজি ফিরো কালো চশমার ফাঁকে শূন্যতার ছায়া।

তাই দুরত্বে গেলে দেখো শংকিত দেহের ভাঁজে ফুলে ফেঁপে ওঠে দেহের হাজারো দীর্ঘশ্বাস



জানি এগোলে পথ খোলা নেই; চোখে আঁক স্পর্শরীতি বাদে উপেক্ষিত রাত

তাই দূরে দাঁড়ালে তুমি তিন হাত পরে— দূরে গেলে বলে যেও হাত রাখি

কই, আঙুলের পোড়াক্ষত দেখনি আজো সে-কথা স্মরণে এলে তৃপ্তি ভেবে

খেয়ে ফেলি সিগারেটের অবশিষ্ট ছাই। জানি পালাবার পথ খোলা নেই, তাই

ডুবোরাত্রির কাছে তুমি ডুবে গেলে ডুবো সন্ধ্যা আমার। খড় কুঠুরি যাই ভাবি আসলে নির্জনতাই মূল; তুমি হারালে ভালো চাওয়া র’বেনা কভু স্বপ্ন একাকী পড়ে রবে দূর্বায়



আমি লুকাবো বৃষ্টিপাত হলে কত আগেই বলেছি সেসব কথা ফলে

তুমি লক্ষ রেখেছো হাতের স্বপ্ন; তাই গতিপথে কোথায় লুকিয়েছে

তোমার দুটি পা।আমি স্মৃতি কুড়নোর আগে খুঁজেছি তোমায়; তুমি

ভান ধরে হেসেছিলে দূরে— তাই ফের তাকালে দেখি তোমার বুকের

বিষণ্ণতা এখনও কাটেনি— সহজ-সরল চোখ যেন শূন্যতায় ঠাসা।

আর এখন যতসব ঘটে মনে হয় সবই ছিল বির্বতন স্মৃতি তবু;

তবুও তোমার চোখে নেই জল বৃষ্টিপাত হলে আমিও আর কাঁদবো না



বার-বার বলতে আমার আর সহ্য হয় না; আজোবধি জানা হলো না—

কে কার কাছে বাঁধা পড়ছি আগে; কতটুকু হয়েছি ঋণী— একটু বলো

সে-কথা শুনতে ভালো লাগতো খুব; কখনো বিব্রত বোধ করিনি

বলতাম প্রশ্নের রহস্য কী খোলাসা করো— হেসে বলতে এই মনে করো

সকাল-সন্ধ্যা; দুপুর কিংবা রাত জোক করে বলতাম তবে বাজি হয়ে

যাক্ তুমি তা মানতে বার-বার নারাজ। অপারগ হলে বলতাম সবার

অধিকার একই রকম; সবাই একই বৃত্তে ঘুরে ফেরে চলে কিংবা মনে করো

স্পর্শ পেলে লোভ বেড়ে যায়… দেহে কম্পন তুলে সমান-সমান



মেঘের গুঞ্জনে সোজাসুজি বসি তাই মৃদুকম্পনে হাসছে রোদ, কাঁপছে জানালা কাচ, উড়ছে নিমপাতা পুড়ছে দেহ জাগা গাছ— তোমার স্বপ্নে ডালে ডালে দুলছে আধাপাকা আম। কারণ ছাড়াই বলে উঠতে হঠাৎ আমার শরীর ছুঁয়ে দেখো কাঁচা মাংশের গন্ধে ভাসছে বৃষ্টিবর্ষারাত। আমি তো রাত্রিকে জড়িয়েছি দেহের ভাঁজে; দেখবো পুরোটা মেঘে তবু যদি লোভাতুর চোখে কখনো জল তৃষ্ণা জাগে



আমি কি জানতাম বৃষ্টিফোঁটায় জ্বলে যাবে স্মৃতি-লিখে নেবো চোখে

যত বদনাম। ডাল-পালায় উড়ে যাবে কথা; পাতায়-পাতায় ঝুলিয়ে

দেবে দ্বিধাদ্বন্দ্ব যত সাথে তুলে নেবে মান-অভিমান। তবু রাগ করো

না; ধুলোয় মিলে মিশে থাকো— হয়ত একদিন বৃষ্টিও রোদে ফেটে যাবে

আমিও সে-দিন জল কেটে লিখে নেবো রাত্রিকাহন



চোখের শরম কি খেয়ে নিল কেউ একবার বুকে হাত রেখে বলো

ওজন করো; দেখো কার দেহে কত আছে ঘূর্ণিপাক। দেখো কার স্বাদ

কেমন লাগে; কার দেহে ফুটে আছে পোড়াক্ষতদাগ। তাই তুমিই বলো

এবছর কি ফিরে আসা ভালো— ফিরবে কি কেউ আমার মতো করে

ব্যর্থ অভিযোগ নিয়ে; তুমিও তো সব ছেড়ে চলে গেলে দূরে; পুড়ছি

তাই চৈত্রের তাপদাহ রোদে আমাকে ঘুমুতে দেয়নি তোমার বধু বেশে

বেজে ওঠা বিয়ের সানাই



আমি গোপনে ধূপ জ্বেলে রাখি; স্মৃতি সব পোড়াই

ফলে খরস্রোতে মিশে পড়ো তুমি— আমি শুধু বাতাসের

শব্দ জপে বৃষ্টিকাঙ্খায় একা বসে থাকি। জানি স্বপ্ন

সাজাতে কেউ আসবে না আর… তোমার জন্য প্রতি রাতে

একটি করে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখি



দেহপোড়া গান

যদি শুকনো পাতায় স্মৃতি মেলে ধরো

আমি তবে স্বর্ণলতা গাছের মর্মর গিলে

তৃণলতায় বসে গেয়ে যাব গান



দেখবো কার মুখ থেকে বেরোবে লোনাজল

কারা পুড়ে গেছে আগে



কার জন্য তোমার দেহ পোড়ে অবিরত



পা

পা ডুবিয়ে রাখি কাদায় টেনে নাও— ফলে

ধারে কাছে জমেছে শ্যাওলা; খুঁড়ে দাও তল

সাতরঙাজলে

ডরভয় জাগে তবু কেটে ফেলি জল

চুলে বেণী বাঁধা নেই, তবু বেড়ে ওঠতে দেখি

হাত পায়ের নোখ

যদি টেনে নাও জলে বাঁধা পড়বে তল

তাই গোপনে ডুবিয়ে রাখি কাদা-জলের ফাঁকে

তোমার অর্ধেক পা



দ্বিধা বিষয়ক আরো একটি

আমাকে চূর্ণ করতে এসেছে ডাঙর চোখ নাকফুলজল আর উড়ন্ত চুলের

হাওয়া হাতের কঙ্কন মৃদু সুরে বাজে— হৃদে কম্পন তুলে নির্বাক চণ্ডাল

সেজে দণ্ডিত হই; গোপন শ্বাসনালী ফুলে-ফেঁপে ওঠে চোখ ভরে দেখি

মনে-মনে জপি গীতা-বাইবেল— অসংখ্য সুরা। প্রার্থনা করি আমাকে

স্বর্ণাভ করো প্রভু…



তবু যদি মিশে যায় স্রোতজল বেয়ে, যদি লবণাক্ত জল চুষে নেয় কেউ

ক্রমশ ম্লান হবে তুমি। তাই ভয়ার্ত কত চোখ সাগরের জল বেয়ে ওঠে।

আর আমি জলের কাছে লুকাবো বলে স্নান ঘরে আসি মনে সংশয় দ্বিধা;

তবে কি আমি ভুরে যাবো সব ঘুমোবার আগে তুমি আজো বলনি ওই

পথ ধরে হেঁটে গেছে কারা? আমাদের আগে



আমি লুকাবো কি জলে একবার সম্মতি দাও— স্পর্শ করো না কভু শরীর

গুপ্ত সীমানা। তবে কেনো জড়তা নিয়ে জেগে রবে তুমি ঘোররাত্রি পাড়ে

তাই নৈঃশস্দ এগুলো হাত তোমাকে ছুঁয়ে দেখার আগে আঙুলের পতন হল

পিচলে স্মৃতি-স্বপ্নসহ চুম্বনের দাগ, কপালের ভাঁজে-ভাঁজে তোমার অসংখ্য

রোমাঞ্চ



আমি তো ওই পথে চোখ খুলিনি, তুমি তাকিয়ে আছো গভীর ধ্যানে—তাই

নিরবধি জপি যেভাবে শিখিয়েছো প্রেরণা কাকে বলে; কখনো ভাবিনি কতটা দূরত্বে দাঁড়ালে তুমি— বোবাজলও কাত হয়ে শোয়। তাই নিজস্ব আগ্রহে লুকিয়েছো মুখ; মুখের প্রীতি। ফলে ভাসা ভাসা বিজুলি সংকেতে ফেটে ডাবে চোখ; চোখের জ্যোতি। তুমি ফিরবে না জেনে সবটুকু জল জমা রেখেছি পথের ঠোঁটে



অঙ্গগুলো মৃদু দুলে ওঠে জলপথ হেঁটে ছেঁকে নেবো মৌ… তুমি জলের পাশে খুঁজে ফেরো বাষ্পদানা; তার আগে শূন্যে উড়ে গেছে ঘ্রাণ বরফের কাছে গলে-গলে পড়ছে জলস্পৃহা। তাই নিরবধি জপি দ্বিধালিপি যত তোমার শূন্যতা জমা রাখো গাছের আড়ালে ওই জারুলের বনে। আমি তো একাকী জেগে আছি আড়ালে; সাতাশটি পাতার ফাঁকে। দ্বিধা যত জমা থাকুক বুকে



এবার তুমিই বলো রোদ আজ কোথায় দাঁড়ালো; আলো ফোটালো কার গায়

তুমি আর কতবার শরীর পোড়াবে রোদে। রোদে পুড়িনি কভু তবুও তোমার

রোদের তৃষ্ণা মিটেনি। রোদের তীব্রতা জড়াতে চাও পায়ে, আমি রোদবিহীন জ্বলে পুড়ে সেজেছি কয়লা—অবশিষ্ট স্পৃহা যত গেঁথে রেখেছো হাতের রেখায়



তবুও জানি মেঘের ঘনঘটা হলে মেঘাচ্ছন্ন দিনে তোমার কাছে বেড়ে যায়

রোদের কদর, তাই আঁধার ঘনালে পাশ ফিরে দেখো ধ্রুবজলছায়া- জেনে

রাখো ঘোরপ্রবণ রাতের কাছে কারো দায়ভার নেই,কখনো তাকবেও না



হাত ছুঁয়ে দেখো কতটা পাথর হলো বুক, ফুটে ওঠে জিভ তৃষ্ণার্ত ঠোটে

আর তুমি ঠোঁট ছুঁয়ে দেখারভান করে লালা জলে খেলা করো গালভর্তি

দীর্ঘশ্বাস ফেলে— তাই তোমার তো জলের কাছাকাছি যেতে মানা



এখন শুধু নীরবে জপি প্রেরণা কাকে বলে— আর কখনো যাবো না

তোমাকে



বিরামহীন বুক

কার ইশারায় শঙ্কিত হও— পুঁতে রাখো হাড়গোড় অন্তিম হিমে আমি

পাহাড়ের গা ধরে হেলেদুলে খাড়া হতে থাকি তুমি মুখ ঢাকতে গিয়ে

দৃষ্টি খুলে রাখো দূরে চোখ তুলে ধরো দেখো কতটুকু গুঁড়ো গুঁড়ো

বৃষ্টি হলে রাত্রি কৌতূহলে রাড়ে যদি ফিরে এসো একসাথে ডুবে যাব

ঝরনার জলে দেখবো কত স্মৃতিচিহ্ন জমা রেখেছো বিরামহীন বুকে



বিষফল

তলিয়ে যাবার ভয় নেই, তবুও জলকলহের আগে

কুটে-কুটে তুলে নাও আরো কিছু জল; জ্বলে পুড়ে

তাপভষ্মদেহ— তোমাকে ছুঁলে বৃষ্টি শুকিয়ে হবে মৃতদেহ কংকাল

তাই রোদফুল কুড়োতে যাব কি না ভেবে জাগে কৌতূহল

আমাকে জাগিয়ে তোলে শতবর্ষের বেদুইন সকাল

হাতে তুলে রাখি আধোজাগা স্বপ্ন; তুমি ফিরবে না কেবল…



ঘোরবৃষ্টিদিনে চোখে জল নেই; দিকে দিকে ছড়িয়েছে বিষফল



জলফল

চোখের পাতায় জমেছে স্মৃতিক্লান্ত ভুল

ফলে আগে-পিছে জমেছে বিন্দু বিন্দু জল

তুমি বলো চেয়ে দেখো ফুটেছে জলফুল

তুলে আনতে দেখি গেঁথে নিয়েছো খোঁপায়

তাই চুলে ঝরেছে জলফুল; জলে ভাসছে নাকফুল প্রীতি

তুমি যখন ছিঁড়ে নেবে জল; আমি গুনে রাখবো যত দুর্গতি



জাগতিক পাতা

বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে যত জল পড়ে

ঠোঁটে তুলে রাখো যদি কখনোও তৃষ্ণা বাড়ে

একটু পরে যখন উঠোনের ঠোঁটে

চুম্বন দিলো বৃষ্টির ফোঁটা ফোঁটা জল

তখন তোমার কল্পনাগুলো লাফ দিয়ে উঠে গেল

ফণা তুলে হেসে গেলে তুমি, সাথে মুচকি হাসি

দেয় জানালার গ্রীল আর আতশি কাচ

যতটুকু বৃষ্টি হলে ঘিরে রাখো শূন্যতা

বাকিটুকুও রেখে দিও সময়ের কথায়



জলকাহন

আমাদের জলকলহগুলো জড়িয়ে

উঠেছে কচুরিপানার মূলে—

হাতে-হাতে উঠে এসেছে জলজ শাপলা আর

ক’ফোটা কলঙ্কিত জল তবে ইদানীং কেন

জল ছুঁতে গেলে অযথাই সংশয় জাগে



অথচ তুমি সেই কল্পিত সুরে কথা বলো

যেন সব স্বপ্ন লুকানো ছিল আমাদের কায়ায়…



আর— আমি জলাধিকার প্রশ্ন খুঁজতে রয়ে যাব জলে

এতে তোমারও প্রণিধান রয়ে গেলো জলের দিকে



______________বৃষ্টি, বৃষ রাশির বালিকাটি আরো একটি পোষ্ট হবে

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১১:৪৪

কালপুরুষ বলেছেন: প্রিয়তে রেখে দিলাম। আরাম করে অবসরে পড়বো।

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৩

সহেলী বলেছেন: বার-বার বলতে আমার আর সহ্য হয় না; আজোবধি জানা হলো না—
কে কার কাছে বাঁধা পড়ছি আগে; কতটুকু হয়েছি ঋণী— একটু বলো
সে-কথা শুনতে ভালো লাগতো খুব; কখনো বিব্রত বোধ করিনি
বলতাম প্রশ্নের রহস্য কী খোলাসা করো— হেসে বলতে এই মনে করো
সকাল-সন্ধ্যা; দুপুর কিংবা রাত জোক করে বলতাম তবে বাজি হয়ে
যাক্ তুমি তা মানতে বার-বার নারাজ। অপারগ হলে বলতাম সবার
অধিকার একই রকম; সবাই একই বৃত্তে ঘুরে ফেরে চলে.....

আপনার লেখা আরো কত কথা এমন করে । কিছু কিছু জায়গায় থ' হয়ে থাকি । সামনে পিছনে যেতে পারি না ।
অসম্ভব ভাল লাগা নিয়ে চলে যেতে হয় ।
শুভকামনা আপনার জন্য ।

১১ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:৫৮

সৈয়দ আফসার__১৯৭৯ বলেছেন: আমি ধরে নিয়েছি যা ভাবি-ভাবছি তা কবিতা নয়। কবিতা কি কথার কথা, কথার ঝাপটা? যা চোখের সামনে ছবি হয়ে ভাসে। পাঠ্যবিষয় আমার কাছে কখনো কোমল, কখনো গুঞ্জন, কখনো রোমঞ্জক মনে হয়। যা প্রাণের ভেতর ঢুকে শ্বাস নেয়, আমাকে জাগিয়ে রাখে, সেও বাঁচে। জল কবিতাকে ডাকে, নদী কবিতাকে বুকে টানে, আকাশ কবিতাকে রূপ দেয়, বাতাস কবিতাকে ধান্যক্ষতে মেখে শিষ দেয়। বংশী বাজায়।

রহস্যের সাথে ক’বার দেখা হয়েছিল জানি না। তবুও তাকে নিয়ে লিখি। সিক্ত-ইতস্তত এই জীবনে লুকানো উষ্ণতা কমে গেলে, তার পরের বছর থেকে আমি রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যাকে কিনে জ্যোৎস্না দেখবো। বর্তমান যাই হোক ভবিষ্যত চিরকাল ছন্দময় গতিময়, বিনষ্ট হবে না রহস্য-কল্পনা। বয়স বাড়লেও ভুলতে পারবো না এক সাথে একাধিক চিন্তা-ভাবনা। অনেক কিছু বেড়ে উঠতে দেখি লতানো দেহে, গাছে-ডালে-পাতায়, তার সাথে যদি স্বস্তি আসে, যদি বিপরীত গতির সাথে দেখা হয়ে যায়। যা দেখি সহসা ভালো লাগে না। নিসর্গ গাছপালা আর আকাশ ছাড়া আর কোনো দৃশ্য দেখতে ভালো লাগে না। ভালো আছি বলে মনে থেকে যায় তরুণ বয়স, বিস্মরণশীলা। তোমার কি মনে হয় লোমে পরিপূর্ণ থাকে কল্পপ্রচেষ্টা? এতোকাল শুধু সন্ধান। শুধু আয়োজন-সংগোপন। ব্যর্থ প্রত্যাশা। বেদনা নিজের সাথে রাখি তাতেও সুখ! কেননা ‘ফিরে এসো চাকা’ ভাবতে ভাবতে সহজে বানাতে পারি মাংস দিয়ে রকমারি কিমা। দেহের জ্বালার মতো, সহজে ওড়াতে পারি নিকোটিনের ধোঁয়া। সহজে কল্পনা করতে পারি কথকতা, যা হৃদয়ে প্রতিমা-প্রিয়তমার মুখোমুখি দাঁড়ায়, ওই যা আঘাতদায়ী স্মৃতি ... হাবিজাবি-নিমেষলভ্য ভাবনার বিষয় হবার কথাও নয়। দৃশ্য দেখি হৃদয়ের রোগ মুক্তির তাগিদে। এরূপ ভাবা ... ভাবনা-কল্পনা-আশা-আকাঙ্খা আমার কাছে এতো লোভনীয় মনে হয়। এসব ভেবে অবয়বহীন হয়ে যাই এমন বিষয়ে বাস্তব চিন্তাগুলো বুকের ভেতর হৃদয় জাগাতে গরম লাল চায়ের পেয়ালায় চুমুক বসাই। তারপর প্রশ্ন উঠতেই পারে! আপনার কি এ-রকম হয়?

জয় গোস্বামী যখন লিখেন ‘জীবন নিয়ে এক লাইন লিখা অসম্ভব’ তখন অন্ধকারে হাঁটি, অপরিচিতাকে হৃদয় দিয়ে বাঁধি। চোখ বন্ধ করে জানালায় দাঁড়াই। সময় বিস্ময়ে তাকাই। কেননা জীবনের বর্ণিল ছায়াগুলো যেভাবে ছায়াছবিতে ফুটে ওঠে, তেমনি কবিতা জীবনের রূপগুলোকে ধরে রাখে। কবিতা কি? জানার জন্য বুঝার জন্য অনেক ধী-সম্পন্ন পাঠকের সাথে আলোচনা করে তাদের জিজ্ঞাসা করেছি- কবিতায় এতো রহস্য, এতো ভাবনার দৃশ্যরূপ, এতো মগ্নতা-মুগ্ধতা, এতো চিন্তার খোরাক যেন মনের দর্পণ, দ্বিতীয় আয়না। একই কথা ঘুরে ফিরে আসে কবিতাকে কোনো অলঙ্করণ করা যায় না। আসলে কবিতা কি? কবিতা কি পরিস্ফুট সত্তা?
না-কথা? অস্থির ভেতর স্বস্থি রাখা? ক্ষতস্থানে নিজেকে খোঁজা? বুকের ভেতর দীর্ঘস্থায়ী চাপা ঘ্রাণের এপাশে-ওপাশে ক্রোধ জমিয়ে রাখা? নাকি রসাত্মক বাক্য লিখে কিছুটা সময় ভালোবেসে শীতবসন্ত হাওয়ার ঘুমে পার্কে বসে থাকা? ... আদি শুশ্রূষায় বেজে ওঠা সেতার। মুক্ত-চিন্তা, চিন্তার মুক্তি? যা পূর্ণতৃষ্ণায় জাগে। না তাও মনে হয় না। কবিতা কি তারচে’ বেশি কিছু? যার দীর্ঘ আলোড়ন আছে, পাল্টা প্রশ্ন করে না। বিষয়বস্তু আছে। কথা জমিয়ে রাখার ক্ষমতা আছে। স্বয়ং প্রকাশ-জিজ্ঞাসার নেশা আছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমার দীর্ঘশ্বাসে জমা স্মৃতিগুলো এক একটি কবিতা। উলটো হলেও ... না তাও কবিতা হতে পারে না। কবিতা অন্য কিছু ...

কবিতা আমায় অন্তর্লোকে জ্বালায়, পোড়ায়। উত্তাপে নাড়ায়। অবিশ্বাসের ভেতর অভিনয় শিখায়। নিজের ভেতর প্রাণপণ ঠেলাঠেলি করছি শেষ হচ্ছে না, সহজে ফসকে পড়ছি ধাঁধায়। দ্বিধায়। কবিতা কি শুধু কথার কথা? হাসায়-কাঁদায়। না, তাও কবিতা নয়, কবিতা অন্য কিছু। যা লিখিনি, যা লিখা হবে না এ-জনমে তা কি কবিতা? আহা! কত কিছুই ভাবি, যা মনে রাখিনি, যখন ঘুমে থাকি। অতি সহজে পেতে পারি অনেক কিছু কিন্তু কবিতা?... মনে মনে যা ভাবি কাজের ফাঁকে ঘরে ফেরার আগে ভুলে যাই, তাও কি কবিতা? যা উপলব্ধি দ্বারা ঘাত হই, ঘোরে মিশে যাই, অপেক্ষা গুনতে থাকি, মুরুগের ডাক শুনার আগে যা লিখি তাও কি কবিতা? কবিতা তাও নয়, কবিতা তারচে’ বেশি কিছু।

কবিতার আকর্ষণ, বলতো পারো নিজের মতো করে নান্দনিক উচ্চারণ, আর্তি-আত্মজিজ্ঞাসার বলতে না-পারা গুঞ্জন। কীর্তিনাশা-স্পন্দন - উদ্যম-চিন্তা একজন লিখেন অন্যজন পাঠ করেন তাও কি কবিতা? হৃদয়ের কল্পনায় কি এমন রহস্য থাকে যে পাঠের পর এক ধরণের আত্মতৃপ্তি-তৃষ্ণা-পিপাসা মিটে যা বারবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবায়, বাস্তবিক জীবনের মুখোমুখি করে। আত্মবিশ্বাসে মনোজগৎকে বুকের সন্নিকটে কাঁপায়, অবিশ্বাস রকম আবেগি করে তুলে, স্বপ্নগুলো মনে হয় স্পর্শহীন নিঃসঙ্গ। তখন কেন জানি মনে হয় কিছুই জানে না শোকপাখি ...। কবিতা তাও মনে হয় না। তাহলে কবিতা কি? কেন কবিতার জন্য পথ খুঁজে নেয়া হাজার বছর ধরে। কবিতায় কি এমন চুম্বকত্ব থাকে (উৎপ্রেক্ষা-উপমা-চিত্রকল্প) যা পাঠককে দুই মেরু থেকে টানে, স্পর্শ করে। তার ব্যাখ্যা করা যায় না। কবিতা কি প্রিয়তমার উপহার দেয়া রুমালে ভাঁজে লুকানো দু’লাইন লেখা, ''ভুলনা আমায়''। কবিতা তাও নয়, অন্য কিছু- কবিতা নিয়ে ঘুমাই। কবিতার রস-যশ আস্বাদন করি, নির্বাসনে জীবন বাস্তবতার ফাঁকে কবিতা খাই। কবিতা চিবাই। যান্ত্রিক জীবন-দর্শনের প্যানপ্যানানিতে দূর্বল মুহূর্তগুলোকে ফোটাই, অন্যতায় ক্ষিধে পাই।

ইন্দ্রিয় ও বোধির অন্তনাট্য ঋদ্ধ করে, ব্যক্তিগত লক্ষ্যভেদী ঘাত-প্রতিঘাত-অবস্থান-ভীরুতা-পরগাছাবৃত্তিও কবিতার ভেতর আবছায়ার মর্মস্থলে ঘুরতে দেখা যায়। ব্যক্তিক জীবন সবাই তাঁর সত্তার কাছে নিভৃতচারী। তাও কি কবিতা? কবিতা অন্য কিছু। কবিতা কি শুধু শব্দবদ্ধ করা। কবিতা বিষন্নতা-বেদনা-মুদ্ধতা-নারীপ্রেম-সজীবতা সময়কে ধরে রাখে। না তাও নয় কবিতা। কবিতা স্বপ্নের মতো মনে হয়, কিন্তু অন্তরাত্মার টানে স্বপ্ন দেখি না। সারাক্ষণ কবিতা নিয়ে ভাবি-কবিতা আমাকে কাছে টানে স্পর্শ করে, কবিতা কি যাদু জানে? কবিতা সুখে বাজে, দুঃখে বাজে, মনে বাজে, ক্ষণে বাজে। কবিতা চেতনে বাজে অবচেতনে বাজে। কবিতা সুরে বাজে ভোরে বাজে। তনুমন সেঁচে-ছেনে দেহের ভেতর অনুভূতিগুলো আলোড়িত-বিলোড়িত করে অনুরণন তোলে। স্পষ্ট জিজ্ঞাসার ব্যাপ্তি খুঁজে, কবিতা তাও নয়; কবিতা অন্য কিছু- অন্তর্লোকে যে সকল জিজ্ঞাসা ঘড়ির টুংটাং শব্দে প্রকট হয়ে ওঠা কিংবা নিজের ভেতর জেগে ওঠা নিজস্বতা।

দ্বিধা ও দূর্বলতা দ্বারা কবিতা প্রপীড়িত, তাও বলা যায় না। কারণ কবিতার নিজস্ব একটি দাবী আছে। কবিতা নদীর মতো হতে পারে, কিন্তু ভিনদেশে নদী দেখি না। এমনই নির্বাসন! নদী-খাল-বিল-গাছ-লতা-পাতার কোলাহল নেই। ঋতুর রূপ-পরিবর্তন নেই, মাঠ-ঘাট-মেঠোপথ নেই। পানির কলতান নেই। তবুও কবিতা তার ছন্দে বাজে। তার বিষয়বৈচিত্রের সহজতা রপ্ত করে বাজে। কবিতা আবশ্যক কিছু স্বকীয়তা কিছু সত্যকে আড়াল করে বাজে। কবিতা কি নিজের চারপাশে গড়ে-তোলা প্রতিরোধকৌশল,আত্মিক নিঃসঙ্গতা-বোধ, নিজের বিশালতা, সত্তার কাছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, একাকীত্বের ভয়াবহতা, ভাঙনের স্পর্শকাতরতা। কবিতা কি গভীর সমুদ্রের ঢেউ নাকি মোমবাতি শিখা? যার জন্য বুকের গভীরে বেদনাপ্রবাহ মোমবাতির সাথে জ্বালিয়ে রাখি।

কবিতা কি ঝিনুকের খোলে লুকানো মুক্তাদানা। কবিতা কি রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা কোনো রূপকথা, তাও হয় না কবিতা। কবিতা ভালো লাগে তাই পড়ি। কবিতার স্পর্শে গড়াই। কবিতার ছন্দে হাঁটি, নিজেই পথ হয়ে যাই। কবিতা নিয়ে ঘুমাই। কবিতায় শান্তি পাই। কবিতার খুঁজে লংড্রাইভে ঘুরি। কবিতাকে উঁচা-উঁচা গাছের পাতায় খুঁজি। ওভারব্রিজের দিকে তাকাই, কবিতার ধ্যানে প্রাণপাখিকে আকাশের ডানায় উড়াই। কিন্তু কবিতা কি? আমি জানি না। আমার সমস্ত অনুভব-অনুভূতি-কাঙ্খা তারায় তারায় হাসে-কাঁদে। চুল-মাথা-চোখ-নাক-কান-ভ্রু-মুখ-ঠোঁট-জিহ্বা-হাত-পা শিরায়-শিরায় উত্তেজনা চড়ায়। কবিতা আলাদা জগতে বাস করে নতুন ভূবন সৃষ্টি করে, যেখানে আশা-আকাঙ্খার হাত ধরাধরি করে চলে।

জীবনের ছবি আঁকি, জীবনের চর্চা শিখি। কিন্তু কবিতা ...? কবিতা ছাড়া কি আর ব্যাকুল-অস্থিকে উদভ্রান্ত করবে? কে আমাকে বাঁচার স্বপ্ন দেখাবে? কে আমাকে রোদে স্নান করাবে, শান্তি দেবে? কবিতা ছাড়া কে হৃদয়ের ভেতর, ধ্যানের ভেতর, স্বপ্নের ভেতর বিবর্ণ ইচ্ছের মতো দ্যুতি-ব্যঞ্জনা ছড়াবে।

কবি কবিতা লিখেন, পিপাসার বেগে। সময়কে কাছে টেনে। কবিতায় কবিকে সর্বদা পীড়িত করে জীবনের পথে, কাঠ চেরাইয়ের শব্দে, অপরিণত ফল কিংবা অপরিচিত ফুলের সৌরভে, নারী-নিসর্গের স্পর্শে, জীবনের গ্লানি টেনে টেনে। কবি তাঁর ভাবনার জনক, কল্পনার জনক, উপমার জনক, আনন্দ-বেদনা-হাসি-কান্নার জনক। কবিতা পাপড়ি মেলে, রূপ ছড়ায়, আষাঢ়ে ফাগুণে, আঁধার ও আলোতে রহস্য বাড়ায়। মনোবেদনায় পোড়ায়, আশা-বিরহ ভালোবাসায়। আশ-পাশ থেকে তুলে আনা আমাদের আটপৌরে কথা, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রয়োজনাতিহাসসহ প্রাত্যহিক জীবন ধারণের অনেক সত্যকে কবি অনাবশ্যক ভেবে এড়িয়ে চলতে হয়। কেননা মানুষ কখনও সমষ্টির ভেতর নিজেকে বিলীন করে দিয়ে নিঃস্বার্থ হতে পারে না। কবিতার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে এতো আনন্দ, এতো প্রীতি এতো ছোঁয়া, এতো স্পর্শ স্মৃতিকথা, কথকতা ...। কবিতা ছাড়া-জীবন ধোঁয়ার মতো,- জীবন ছায়ার মতো ভাসে, যে অঙ্গার জ্বলে জ্বলে নিভে যাবে,- হয়ে যাবে ছাই,- সাঁপের মতন বিষ লয়ে-সেই আগুনের ফাঁসে জীবন পুড়িয়া যায়,- আমরাও ঝরে পুড়ে যাই! আকাশে নক্ষত্র হয়ে জ্বলিবার মতো শক্তি - তবু শক্তি চাই (জীবনানন্দ দাশ/ জীবন) কবি যা ভাবেন তাই লিখেন, কবি ছাড়া কে আর ভাবতে পারে - পৃথিবীর সমস্ত ধূসরপ্রিয় মৃতদের মুখ নক্ষত্রের রাত দেখতে পারে (জীবনানন্দ দাশ/ হাওয়ার রাত) কবি ছাড়া কে আর লুকাবে রহস্যের ভেতর? কবি ছাড়া কে বাস্তব - সন্ধানে তাকাবে দূর্বাভাসে উপলব্ধি করবে-পৃথিবীর সবরূপ লেগে আছে ঘাসে, (জীবনানন্দ দাশ/ সন্ধ্যা হয়-চারিদিকে) আলোতে আঁধারে কবিতা খুঁজি, খুঁজি সারারাত জুড়ে।

‘তথাকথিত ছোট সুখ ও ছোট দুঃখের পেছনে রয়ে যায় সমাজ ও সময়ের অনেক বড় সত্যের উপকূল রেখা। এই জন্য ছোট সুখ বা দুঃখ বলে কিছু হয় না।’ কেননা অণুকে ভাঙলে যেভাবে অসংখ্য পরমাণু পাওয়া যায় তেমনি অনেক সুখ-দুঃখ কল্পনার চোখে চোখে দেখলে তাতেও অনেক ভালোলাগা ভালোবাসার স্মৃতি-তৃপ্তি-ঘ্রাণ-আকাঙ্খা-বাসনা সান্ত্বনা পাওয়া যাবে। কবিতা শান্তি দেবে, তৃপ্তি দেবে। তোমাকে না-খুঁজে সারাক্ষণ সারা জীবন কবিতাকে খুঁজবো তার রক্ত খাবো মাংস খাবো হাড়গোড় খাবো। তুমি আমাকে না-বাসলেও ভালো, কবিতা আমাকে ছেড়ে যাবে না এই জীবনে। তাকেই আমি মনে-প্রাণে বাসবো ভালো।

আমার ভেতর জেগে ওঠা কতিার ঘোর-কল্পনা ... জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে খুব সহজ করে জীবনের গান গাওয়া একেই তো আমরা বলি কাব্যময়তা। নিজের শৈশব-কৈশোর দেখেছি স্মৃতি উপরে তুলে। গাছ যেভাবে মাটিতে মূল ঘেড়ে তার ডালপালা ছড়ায়, পাতায় পাতায় হাওয়া উড়ায়, নিজস্বজগৎ ও বহির্জগত থেকে তাঁর অভিপ্রায়-কল্পনা-ভাবকে দোলায়-উৎরায়। মনে হয় যেন‘চেতনাগর্ভে ঋদ্ধ হওয়া এক সম্মোহনী ভ্রুণ।’ অন্তঃপুর-মনোবেদনা-রহস্য-স্পর্শ-প্ররোচনার ভেতর কবিকে নাড়ায়। পাঠককে নাড়িয়ে তুলে। যেন প্রাণের মায়াধারণ। কবিতা পাঠে কখনো তৃপ্তি দেয়, কখনো ভাবায়, নিরবতায় পাঠায়। হাসায়-কাঁদায়। জীবনকে নেশার মতো ঘুরায়। দুঃখ ঘুচায়। অন্যের সুরে বলি, কিন্তু কবিতা কি? কেন কবিতার গ্রহণ-যাত্রা জীবনে-জীবনে?
__সৈয়দ আফসার

কথা-ব্যথা-ব্যর্থতা-ভণিতা মিশলেই জন্ম নেয় একটি কবিতা।

কথা-ব্যথা-ব্যর্থতা-ভণিতা
ওইকথাগুলো আমার মনে হয় কবিতার মূলকথা।
কিন্তু উপরিউল্লেখিত কোন শব্দের সাথে আমার তেমন মিল নেই।
যাহা দ্বারা আমি কবিতার পথে হাঁটবো-
হয়ত সে আমার সীমাবদ্ধতা...
তবে আপনার ভাললাগা কবিতাগুলো লিখার সময় ২০০২-০৪সাল।
(ভরা যৌবণ কাল) কবিতায় অনেক আবেগ আছে হয়ত।
কিন্তু দেবার আগে অনেক ভয় বুকে ছিল ধী-সম্পন্ন পাঠকরা কি ওই
কবিতাগুলো পড়বেন!!! সে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল মনে।
যার জন্য কোন মন্তব্যের জবাব দিতে সংকোচ ছিল।
আমি আসলে কবিতা নিয়ে তেমন উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করি না।
আমার জন্য লিখি, আর একটি মাত্র কারণ লুকানো তা হল
পুরনো স্মৃতিকে জাগাতে , ভবিষ্যতে পাঠ করা; তারচে' বেশি ভাবি না।
আর আপনার ভালা লাগাটুকু জেনে প্রীত হলাম অনেক।
ব্লগে আছে কটি কবিতা যেমন ''ভোরে রচিত কথাগুচ্ছ, দেয়ালপর্ব, অন্ধশিকারী''সহ আরো কিছু কবিতা পাঠ করলে প্রীত হবো।
আর নতুন লিখা ব্লগে বেশি দেই না কারণ কোন কোন লিটলম্যাগ
সম্পাদকরা করুণা করে হয়ত তাদের প্রত্রিকা'য় ছাপান তাই।
যদি ইচ্ছে করেন আমার প্রোফাইলে ই-মেইল করলে আপনাকে
নতুন কবিতা পাঠাতে পারবো হয়ত।

তাহলে পাঠ হউক নতুন একটি কবিতা

কিসে যেন রেগে গেলে তার মানে
হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে
আরো তিনটি বছর পর--
সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে
ওই মুখ 'বর্ণিত হবার লোভে' লাজুক বাগানে
মনে ও বনে

এসব ঘটনা কুড়ি বছর পর কবিকে চিনে
শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি
কাঁধে-পিঠে ধূলির নগরে
কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও
অতি গোপনে
_________________কুড়ি বছর পর


আপনি
ভাল থাকুন।
নিরন্তর...

৩| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:০৭

আবু মকসুদ বলেছেন: আফসার ভাই আজকেই মন্তব্য করার ছাড়পত্র পেয়েছি ভাবছিলাম কোথায় প্রথম মন্তব্য করা যায়, তবে মনে মনে স্থির করে রেখেছিলাম যা আমার মন ছুঁয়ে যাবে তাকেই দেবো আমার প্রথম অঞ্জলি।

সত্যিই আপনার এই কবিতাগুলো মন ছুঁয়ে গেলো। আপনাকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন।

১১ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:০২

সৈয়দ আফসার__১৯৭৯ বলেছেন:
ঋণী করে ফেললেন আমায়
যে ঋণ নিজেকে ভাবায়...

ভাল থাকুন।

৪| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:৩৭

মাশূক আনিস বলেছেন: আর— আমি জলাধিকার প্রশ্ন খুঁজতে রয়ে যাব জলে
এতে তোমারও প্রণিধান রয়ে গেলো জলের দিকে





কবিতাগুলো মন ছুঁয়ে গেলো। ধন্যবাদ...

১১ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:০৪

সৈয়দ আফসার__১৯৭৯ বলেছেন:
চাচা, ভাল লাগা জেনে প্রীত হলাম।

আপনি ভাল থাকুন।

৫| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:১৯

সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন:
আফসার
অনেক অনেক ভালোলাগা কবিতা.....।
ঘুরে ঘুরে পড়বার মত।
এ'সব কবিতার বই থাকলে ভালো হতো.....

অনেক শুভকামনা।

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:৩২

শাহনাজ সুলতানা বলেছেন: দেহপোড়া গান

যদি শুকনো পাতায় স্মৃতি মেলে ধরো
আমি তবে স্বর্ণলতা গাছের মর্মর গিলে
তৃণলতায় বসে গেয়ে যাব গান

দেখবো কার মুখ থেকে বেরোবে লোনাজল
কারা পুড়ে গেছে আগে

কার জন্য তোমার দেহ পোড়ে অবিরত

আফসার! তোমার এই কবিতাটি দারুণ++++++++++++।

ভালো থেকো।

৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫৬

আন্দালীব বলেছেন: বুকমার্কড।

কিছু পড়েছি
কিছু পড়িনি

পড়বার জন্য ফিরে আসছি...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.