নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘আমি অন্ধকারে আলো খুঁজি, নিরাশায়;আশায় বুক বাঁধি, জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি,স্বপ্ন বুনি, ……………সবার উলটো চলি!’

অনুজ্জ্বল_তারা

*******

অনুজ্জ্বল_তারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস

১১ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭



অনুবাদঃ



_____



হযরত আয়েশা (রাঃ)হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স)বলেছেন,ছয় ধরণের লোক এমন রয়েছেন,যাদের প্রতি আমি অভিসম্পাত করি এবং আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে অভিসম্পাত করে থাকেন।বস্তুত প্রত্যেক নবীর দোয়া কবুল হয়ে থাকে।(তারা হলো)১.আল্লাহর কিতাবে বৃদ্ধিকারী।২.আল্লাহর তাকদীরকে মিথ্যারোপকারী।৩***.জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলকারী।(যে এ উদ্দেশ্যে ক্ষমতা দখল করে যে,)আল্লাহ যাকে অপমানিত করেছেন,তাকে সে সম্মান দেবে এবং আল্লাহ যাকে সম্মান দান করেছেন,সে তাকে অপমান করবে।৪.যে ব্যক্তি হেরেম শরীফের অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ কাজ করাকে বৈধ মনে করে।৫.যে ব্যক্তি আমার বংশধরকে কষ্ট দেয়া বৈধ মনে করে;অথচ আল্লাহ তায়ালা তা হারাম করে দিয়েছেন।৬.আর আমার সুন্নাতকে বর্জনকারী।(বায়হাকী হাদীসটিকে মাদখালে এবং রাযীন তাঁর কিতাবে বর্ণনা করেছেন।)



হাদীসের ব্যাখ্যাঃ



__________



আলোচ্য হাদীসে বলা হয়েছে,ছয় প্রকার লোকের প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (স) লানত করে থাকেন।আর রাসূল (স)-এর দোয়া বা বদদোয়া নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুল হয়ে থাকে।উল্লিখিত ছয় প্রকারের লোক হচ্ছে-



১.যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবে নিজের সুবিধা অনুযায়ী শব্দ ও অর্থ সংযোজন করে।



২.যে আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীরকে অস্বীকার করে এবং এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করে।



৩***.যে লোক বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এ উদ্দেশ্যে ক্ষমতা দখল করে যে,সে কাফের,মুশরিক ও ফাসেকুদেরকে সম্মান প্রদর্শন করবে এবং দ্বীনদার লোকদেরকে অসম্মান করবে।



৪.যে ব্যক্তি হেরেম শরীফের অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ কাজ করাকে বৈধ মনে করে।



৫.যে ব্যক্তি আমার তথা বনু হাশেমকে কষ্ট দেয়া বৈধ মনে করে;অথচ আল্লাহ তায়ালা তা হারাম করে দিয়েছেন।



৬.যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে পরিত্যাগ কিংবা দুর্বল মনে করে অথবা এর প্রতি বিদ্রুপ করে।



________________________________________________________________________________



২.অনুবাদঃ



_______



হযরত আবু মুসা আশয়ারী (রাঃ)হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন,মানুষের অন্তরের দৃষ্টান্ত হলো,তৃণশূন্য মাঠে একটি পালকের মত।যাকে প্রচন্ড বায়ু এদিক সেদিক ঘুরিয়ে থাকে।(আহমদ)।



হাদীসে ব্যাখ্যাঃ



_________



আলোচ্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স)আদম সন্তানের অন্তরের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে গিয়ে বলেছেন,খোলা মাঠে খড়কুটা ও পালকের যে অবস্থা,মহান আল্লাহর হাতে মানুষের অবস্থাও তদ্রুপ।খোলা মাঠে বাতাস যেভাবে খড়কুটা ও পালককে বিভিন্ন দিকে আন্দোলিত করে,অনুরুপভাবে আল্লাহ তায়ালাও মানুষের মনের গতিকে বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করে থাকেন।



অনুবাদঃ



হযরত হাসসান ইবনে সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণত।তিনি বলেন,যখনই কোন জাতি তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদয়াত সৃষ্টি করেছে,তখনই আল্লাহ তায়ালা তাদের মধ্য হতে অনুরূপ একটি সুন্নাত উঠিয়ে নিয়েছেন।অতঃপর কেয়ামত পর্যন্ত সে সুন্নাত তাদের প্রতি ফিরিয়ে দেবেন না।(দারেমী)



_____________



সুন্নাতটি তাদের প্রতি ফিরিয়ে না দেয়ার কারণঃ



_____________



হাদীসে এসেছে বিদয়াত হলো গোমরাহী।তাই কোন সমাজে বিদয়াত চালু হলে সেখান থেকে অনুরূপ সুন্নাত প্রত্যাহার করা হয় এবং সে সুন্নাত তাদের প্রতি আর ফিরিয়ে দেয়া হয় না।কারণ বিদয়াত অন্ধকার সমতুল্য আর সুন্নাত আলো সমতুল্য।কোথাও অন্ধকার স্থান পেলে বুঝতে হবে যে আলো বিদূরিত হয়ে গেছে।কারণ অন্ধকার এবং আলো একসাথে থাকতে পারে না।আর বিদয়াত এমন প্রগাঢ় অন্ধকার,যা থেকে পুনরায় আলোর দিকে প্রত্যাবর্তন করা দুরুহ ব্যাপার।কারণ বিদয়াতীগণ তাকে দ্বীন মনে করেই প্রচলন করে থাকে।এটাই হলো সুন্নাতকে ফিরিয়ে না দেয়ার তাৎপর্য।



অনুবাদঃ



হযরত ইবরাহীম ইবনে মাইসারাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা)ইরশাদ করেছেন,যে ব্যক্তি কোন বিদয়াতীকে সম্মান প্রদর্শন করে,সে অবশ্যই ইসলামের ধ্বংস সাধনে সহায়তা করে।(ইমাম বায়হাকী (র)একে মুরসাল হাদীস হিসেবে শোয়াবুল ঈমান অধ্যায়ে বর্ণনা করেন)।



______________



হাদীসের ব্যাখ্যাঃ



______________



রাসূল (স)-এর জীবদ্দশাতেই আল্লাহ তায়াল ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানরূপে ঘোষণা দিয়েছেন।তাই তিনি ইসলামে নবআবিষ্কারের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেন,বিদয়াতীকে সম্মান করা প্রকারান্তরে দ্বীনকে ধ্বংস ও মূলোৎপাটন করার কাজে সহযোগিতা করা।কেননা,যে বিদয়াত সৃষ্টি করে ইসলামের মূলে কুঠারাঘাত করে,সে সম্মানের পাত্র হতে পারে না।এমতাবস্থায় তাকে সম্মান করা হলে বিদয়াতকে সমর্থন করা হয়।পক্ষান্তরে তাকে অসম্মান ও অসহযোগিতা করা হলে সে নিরুৎসাহিত হবে।সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের ঈমানী দাবি হচ্ছে বিদয়াতীকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা।



অনুবাদঃ



________



হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন,নিশ্চয়ই শয়তান মেষপালের নেকড়ে বাঘের ন্যায় মানুষের জন্য নেকড়ে বাঘ স্বরূপ।বাঘ দলবিচ্ছিন্ন ও খাদ্যের সন্ধানে দূরে অবস্থানকারী মেষ ও যে মেষ অলসতাবশত এক প্রান্তে পড়ে থাকে তাকে ছোঁ মেরে উঠিয়ে নিয়ে যায়(অনুরূপ শয়তানও দলবিচ্ছিন্ন লোককে আচ্ছন্ন করে ফেলে)।সাবধান!তোমরা(দলের সাথে পথ পরিহার করে) বিচ্ছিন্নভাবে ভ্রষ্টতার পথে-পর্বত পথে যাবে না।আর তোমরা জামায়াত(ইসলামী দল) ও সাধারণ মুসলমানদের সাথে যুক্ত থাকবে।(আহমদ)



হাদীসের ব্যাখ্যাঃ



________



অত্র হাদীসে মহানবী(স) রূপকার্থে শয়তানকে নেকড়ে বাঘের সাথে এবং দলচ্যুত ব্যক্তিকে পাল হতে বিচ্ছিন্ন বকরির সাথে তুলনা করেছেন।এ উপমা দ্বারা তিনি বুঝাতে চেয়েছেন,নেকড়ে বাঘ যেভাবে পাল হতে বিচ্ছিন্ন বকরিকে অনায়াসে শিকার করে ফেলে,তেমনি জামায়াত বা দল তথা সংগঠন থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকেও শয়তান অনায়াসে বিপথগামী করে থাকে।অতএব,সর্বাবস্থায় ইসলামি দলের সাথে থাকতে হবে।আর এটাই হলো কলুষমুক্ত পথ।



অনুবাদঃ



________



হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন,যে ব্যক্তি জামায়াত(ইসলামী সংগঠন) হতে(কিছুক্ষণের জন্য হলেও)এক বিঘত(সামান্য) পরিমাণ সরে পড়েছে,অবশ্যই সে ইসলামের রশি তার ঘাড় হতে খুলে ফেলেছে।(আহমদ ও আবু দাউদ)



হাদীসের ব্যাখ্যাঃ



________



হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) হতে বর্নিত এ হাদীসে জামায়াত হতে বিচ্ছিন্ন মুমিনের করুণ অবস্থার বর্ণনা দিয়ে নবী করীম(স)ইরশাদ করেছেন,রশিবিহীন প্রাণী যেমন স্বাধীন ও মুক্তভাবে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায় অবশেষে নেকরে,বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর খপ্পরে পতিত হয়,তেমনি দল বিচ্ছিন্ন মুমিন নিজের খেয়াল খুশীমত জীবন পরিচালনা করতে গিয়ে শয়তানের খপ্পরে পড়ে যায়।তাই আমাদের উচিত সর্বাবস্থায় ইসলামী দলের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা।



অনুবাদঃ



________



হযরত গুদাইফ ইবনে হারিস আস্ সুমালী (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন,যখনই কোন জাতি একটি বিদয়াত সৃষ্টি করে,(পরিণামে)তখনই তার অনুরূপ একটি সুন্নাত উঠিয়ে নেয়া হয়।সুতরাং একটি সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা একটি বিদয়াত সৃষ্টি করা হতে অতি উত্তম।(আহমদ)



হাদীসের ব্যাখ্যাঃ



________



রাসূল (স)আলোচ্য হাদীসে অসমর্থিত বিদয়াত সৃষ্টির অপকারিতা ও সুন্নাতের ওপর আমল করার উপকারিতা বর্ণনা করেছেন।তিনি বলেন,সমাজে যখনই কোন অসমর্থিত বিদয়াত সৃষ্টি করা হয়,তখনই অনিবার্যরূপে তথা হতে একটি সুন্নাত লুপ্ত হয়ে যায়।কেননা,সুন্নাত আলো সদৃশ,আর বিদয়াত অন্ধকার সদৃশ।আর দু’টি বিপরীতমুখী বস্তু একত্রিত হয় না।এতদ্ব্যতীত তিনি আরো উল্লেখ করেছেন,বিদয়াতে হাসানা যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন তার ওপর আমল করার চেয়ে প্রতিষ্টিত ক্ষুদ্র সুন্নাতের ওপর আমল করা অতি উত্তম।অতএব,হাদীসের আলোচনার নিরিখে সর্বপ্রকার বিদয়াত বর্জন করে সুন্নাতের ওপর আমল করাই ঈমানের অপরিহার্য দাবি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:১৫

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: সুন্দর কিছু জানলাম ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:১০

বেলা শেষে বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.