নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদ্ভুত মুগ্ধমানব

তার ছেড়া

Vagabond

তার ছেড়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

Mythology(1) - Narcissus and Echo

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬

গ্রীক পুরাণে narcissus আর echo কে নিয়ে অনেকরকম মিথ চালু আছে । মিথগুলো এতটাই জনপ্রিয় যে এগুলো বিভিন্ন ভাষায় বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে । যেমন স্বকাম (আত্নতৃপ্তি) শব্দটার প্রতিশব্দ narcissism । স্বজনপ্রীতি শব্দটাও এইটা থেকে এসেছে । আবার বলা হয় , পৃথিবীর সবথেকে সুগন্ধী ফুলের নামও narcissus ! এটা বলার পিছেও কারণ আছে । আসল কথায় আসি । নার্সিসাস হল নদীর দেবতা Cephissus এবং বনদেবী Liriope এর একমাত্র পুত্রসন্তান । নার্সিসাস ছিল অত্যন্ত সুদর্শন , সুপাত্র , আকর্ষণীয় দেহের অধিকারী এবং অনন্য । কিন্তু তার একটা জায়গায় খুঁত ছিল । সেটি হল , নার্সিসাস "ভালোবাসা" জিনিসটাকে ঘৃণা করত । ঘৃণা বলতে দারুণ রকমের ঘৃণা ।



এবার Echo এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া দরকার । ইকো হল একজন Oread বা পর্বতের পরী । ইকোর ছিল সুমধুর কন্ঠ । সে তার কন্ঠকে দারুণ ভালোবাসত । এই কন্ঠ যেকোন কিছুকেই বশে আনতে পারত । ইকো ছিলেন বাচাল ধরনের পরী । মাঝে মাঝে ইকো , দেবতা জিউসের মনোরঞ্জন করত । একদিন তারা প্রচন্ড উন্মত্ত হয়ে যান । ফলাফল , দেবতা জিউসের সাথে ইকো চূড়ান্ত রকমের অন্তরঙ্গ হয়ে যায় । দূর্ভাগ্যবসত দৃশ্যটি জিউসের স্ত্রী হেরার চোখে পড়ে যায় । হেরার প্রচন্ড রেগে যান । তিনি ইকোকে শাস্তি দেন এবং শাস্তি হিসেবে ইকোর কথা বলার ক্ষমতা কেড়ে নেন । এবং এখানে তিনি একটা ট্রিকস খাটান । তিনি তাকে বর দেন , ইকো কোন কথা বলতে পারবে না কিন্তু কারো বলা কথায় শেষ অংশটুকুই মাত্র বলতে পারবে ! এরপর হেরা তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন ।



এই গেল পরিচয় পর্ব । এবার গল্পে ফিরে যাই । একদিন নার্সিসাস গেল বনে শিকার করতে । ইকো নার্সিসাসকে দেখে প্রেমে পড়ে গেল । তাই সে নার্সিসাসকে লুকিয়ে লুকিয়ে অনুসরণ করতে লাগল । যেহেতু ইকোর নিজে থেকে কথা বলার ক্ষমতা ছিল না তাই সাহস করে নার্সিসাসের সাথে কথা বলতে পারছিল না । এদিকে পায়ের শব্দ শুনে নার্সিসাস একটু ভীত হয় । সে বলে ওঠে , "Who's there ?" ইকোও বলে ওঠে , "who's there" । নার্সিসাস বিভ্রান্ত হয়ে যায় । কাউকে দেখা যাচ্ছে না অথচ কথা শোনা যাচ্ছে , তাই এবার সে বলে , "Why do you run from me?" ইকো ও প্রত্যুত্তর করে , "run from me" । এবার নার্সিসাস কৌতুহূলী হয়ে ওঠে । সে বলে , "Let's meet together?" । ইকো খুশী হয়ে ওঠে । সে ভাবে , এই সুদর্শন যুবকও তাকে ভালোবেসে ফেলেছে । "meet together" কথাটি তার মুখ থেকে বের হয়ে আসে । সাথে নার্সিসাসও দেখতে পারে একটা পরী গাছের আড়াল থেকে বের হয়ে আসল । এগিয়ে আসছে তার দিকে । তাকে জড়িয়ে ধরতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ! কিন্তু নার্সিসাস তার আলিঙ্গন , তার ভালোবাসা প্রত্যাখান করে । কারণ সে ভালোবাসাকে ঘৃণা করে । সে বলে ওঠে , "May i die before what's mine is yours!" কষ্টে ইকোর মুখ থেকে বের হয়ে আসে ,"what's mine is yours!" ইকো পালিয়ে আসে সেখান থেকে এক সংকীর্ণ উপত্যকায় । সেদিন থেকে ইকো কাঁদতে থাকে কষ্টে , আর বলতে থাকে "what's mine is yours" । যতদিন তার শরীরে হাড় এবং গলার কন্ঠ থাকে ততদিনই সে কাঁদতে থাকে । একসময় সে পাথরে পরিণত হয় এবং পৃথিবীর সবখানে ছড়িয়ে পড়ে একটু কথা শোনার আশায় । তাইতো আজও উপত্যকার পাশে বা পাথুরে দেয়ালে আমরা আমাদের কথার প্রতিধ্বনি শুনতে পারি ।



এদিকে ইকোর পিতা vermes তার কন্যার বিয়োগ মেনে নিতে পারলেন না । তিনি গেলেন প্রতিশোধের দেবতা Nemesis এর কাছে । নালিশ জানালেন ভার্মিস । নেমেসিস সব শুনে বড্ড ক্ষেপে গেলেন । তিনি নার্সিসাসকে একটা শিক্ষা দিতে চাইলেন । বড্ড আজব শিক্ষা । তিনি নার্সিসাসের মনে ভালোবাসা ঢুকিয়ে দিলেন । ইয়াহ , ভালোবাসা ঢুকিয়ে দিলেন !



একদিন নার্সিসাস গেল একটি জলাধারে পানি পান করতে । সেখানে গিয়ে তার চোখ পড়ল তারই প্রতিবিম্বে ! এবং সে প্রেমে পড়ে গেল তার নিজের উপরেই । ভালোবাসতে শুরু করল নিজের প্রতিবিম্বকেই । সারাদিন সে পড়ে থাকত সেই জলাধারের পাড়ে । সারাদিন দেখত ঐ প্রতিবিম্ব । কিন্তু একটা সময় সে বুঝতে পারল যে এটা তারই প্রতিবিম্ব । একে শুধু দেখাই যাবে , ছোঁয়া যাবেনা , কাছে পাওয়াও হবে না । কিন্তু ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে । সে এটাও বুঝতে পারছিল যে , সে তার প্রতিবিম্বকে এতটাই ভালোবেসে ফেলেছে যে , তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত কাটানো সম্ভব না । অবশেষে সে সিন্ধান্ত নিল তারা একসাথে মিলবে । লাফ দিল সে পানিতে । এবং সেখানেই তার সলিল সমাধি ঘটে ।



এই ছিল নার্সিসাসের মিথ । এখনও পৃথিবীতে এধরনের মানুষ আছে যারা শুধু নিজেকেই ভালোবাসে । এবং তাদের বোঝা উচিত , এর পরিণতিও খুব খারাপ !



some info are collected from: "Metamorphosis of Narcissus III"

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো আপনার শেয়ার ।।

শুভেচ্ছা ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০২

তার ছেড়া বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ । :-)

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৪

ফা হিম বলেছেন: গল্পটা বিস্তারিত জানা ছিল না। আপনার উপাস্থাপনা ভালো হয়েছে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৬

তার ছেড়া বলেছেন: বিস্তারিত টা তুলে পরিমার্জিত ভাষায় নিয়ে আসতে একটু কষ্ট হয়েছে বটে , কিন্তু আপনাদের ভালো লেগেছে শুনে কষ্ট উপশম হয়ে গিয়েছে । ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.