![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের প্রায় সরকারী/বেসরকারী পলিটেকনিকগুলোতে চলছে শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন.
একজন পলিটেকনিক শিক্ষার্থী হয়ে আমার মনে হলো সরকার আমাদের শিক্ষার মান ও যোগ্যতা উভয়েরই অবনমন করেছে. তাই এই নিয়ে কিছু লেখা উচিৎ বলে মনে করলাম.
তো প্রথমেই দেখি আসলে আমাদের দুই দফা দাবীগুলো কী কী-
এক. ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারদের বেতনবৈষম্য ও পেশাগত সমস্যা সমাধানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও সরকার গঠিত আলাদা দুটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে.দুই.
(ক) দেশের ইন্জিনিয়ারিং সার্ভিসে টাইমবার পদোন্নতি প্রথা প্রবর্তনসহ ইন্জিনিয়ারিং সার্ভিসকে ডেস্ক ও ফিল্ড ইন্জিনিয়ারিং এ ভাগ করে একাডেমিকব্যাকগ্রাউন্ড অনুযায়ী ডিগ্রী ইন্জিনিয়ারদের ডেস্ক ও ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারদের ফিল্ডের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে.
এবং
(খ) দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল প্রশাসনিক পদে কারিগরি পেশাজীবীদের নিয়োগ বন্ধ করে জেনারেল শিক্ষিতদের নিয়োগ দিতে হবে.
এই মূল দুইদফা দাবীর পাশাপাশি আরো একটি দাবী বেশি সমোচ্চারিত হচ্ছে তা হলো-"সকল সরকারী পলিটেকনিকগুলোতে অতিসত্ত্বর BSC course চালু করা হোক"
এছাড়া ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারদের "ডিপ্লোমা
হোল্ডার ইন্জিনিয়ার" বলে ঘোষণা দেয়ার কারণে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মনে জমেছে চাপা ক্ষোভ.
তাই পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের কিছু ভাবনা ও মতামত তুলে দিলাম নিচে.
আমরা অতিদ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এই সমস্যার যথাযথ সমাধানের আবেদন করছি.
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন,চলমান বৈষম্য বন্ধ,তাঁদের দক্ষ জনশক্তি ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে আপনাদের সঠিক হস্তক্ষেপ নিতান্তই কাম্য.
পলিটেকনিক শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমান সংকট উত্তরণে আমার অভিজ্ঞতা হতে কিছু ব্যাপার অনুধাবন করি।
যুগের সাথে তাল না মিলিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার চিন্তাভাবনা করাটা হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় বোকামি!
আমি বুঝতে পারছি না আমাদের দাবীটা কেন দুই দফা! সাথে আরোও কয়েকটি দফা যোগ হওয়া উচিৎ যেগুলো নীতি নির্ধারণ করবে এই শিক্ষাব্যবস্থারগুণগত মান এবং সামনের দিনে প্রতিযোগিতামূলকপৃথিবীতে আমাদের অভিযোজন ক্ষমতার নিশ্চয়তার বিষয়ে।
✔প্রথম ব্যাপারটা আসে ভর্তি যোগ্যতা এবং ভর্তি পরীক্ষার বিষয়গুলো। যে কোর্সটার নামের সাথে 'প্রকৌশল ' শব্দটি জড়িত, সেখানে কিভাবে মানবিক বা ব্যাবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পড়তে দেওয়া হয়?
নিয়ম করতে হবে, সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থারবিজ্ঞান বিভাগ হতে উত্তীর্ণ এবং গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ ন্যূনতম ৪.০০ ব্যাতীত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অযোগ্য বিবেচিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা হবে মানসম্পন্ন। ইংরেজি,গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নবিজ্ঞানের সমন্বয়ে ন্যূনতম৩৫০ মার্কসের লিখিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।
✔মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী সিলেবাস এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ও বিষয় বহির্ভূত সিলেবাস বাদ দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান এবং গণিত বিষয় গুলো হুবহু বিভিন্ন পর্বে ভাগ করে পড়াতে হবে। টেকনোলজি রিলেটেড বিষয়গুলো প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ দলের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বই আহবান করতে হবে। বিভিন্ন লেখকের লিখিত বইয়ের মধ্যে সহজবোধ্য, নির্ভুল এবং যথার্থ গুলো অনুমোদিত করতে হবে। এরুপ কিছু পাওয়া না গেলে, বিদেশী ইংরেজি মাধ্যমের বই চালাতে হবে। (পলিটেকনিক এর বর্তমান প্রচলিত বইগুলো দেখলে প্রত্যেকটা পাতায় পাতায় ভূল, আর পড়লে মনে হবে তা লেখা হয়েছে উচ্চতর জ্ঞান সম্পন্নলোকজন এর জন্য, নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য না! মৌলিকতারচিহ্ন মাত্র নাই, সব একই! )
✔এরপর আসে বিষয়গুলো পড়ানোর জন্য যোগ্যতম, আদর্শ শিক্ষক এবং তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা বা তৎপরতা। অতএব, শিক্ষকদের হাতে কোন মার্কস রাখা যাবে না। সকল পরীক্ষা হবে বোর্ডের অধীনে।
(টাকা কামানোর অবাধ সুযোগ সামনে থাকলে এবং কর্ম ফাকি দিয়ে মাসোহারা নিয়মিত অব্যাহত থাকলে খুব অল্পসংখ্যক মানুষ পৃথিবীর বুকে পাওয়া যেতে পারে, যারা তার সদ্ব্যবহার করে না! আমার মনে হয়, সংখ্যাটা অতি নগণ্য, ০.১%। )
✔ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করার পর উচ্চ শিক্ষার অবারিত দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর অনুকরণে কমপক্ষে আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে হবে। অন্যথায়, দেশের সকল "প্রকৌশল ও প্রযুক্তি" এবং "বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি" বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কোটা পদ্ধতিতে আসন বরাদ্দ রেখে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। (অন্তত এই দাবীতে - নো কম্প্রোমাইজ!)
✔প্রকৌশল শিক্ষাংগনে রাজনীতির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট এবং হত্যা, সন্ত্রাসের অভায়রণ্যের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।
✔প্র্যাকটিক্যালক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় সরাঞ্জামাদি, ল্যাব এবং জনবল নিশ্চিত করতে হবে।
✔বেসরকারি পলিটেকনিক অনুমোদন বন্ধ করতে হবে এবং অনুমোদনবিহীনভাবে যে সকল পলিটেকনিক চলছে, তা অনতিবিলম্বে তুলে নিতে হবে।
সর্বোপরি, পলিটেকনিক গুলোকে এনসিটিবি এর অনুসরণ করে সর্বাধুনিক ও সর্বোত্তম প্রকৌশল শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণত করে আদর্শ "ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ" হিসেবে গড়তে হবে।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের যথাযোগ্য জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের পর্যাপ্ত উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং সামাজিক ওরাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে।
(যে বা যাদের প্রশ্ন, আমি এসব বলারকে? সে বা তাদের বলছি, আমি বিটিইবিএর অধীনে চার বছরের কোর্সটা করসি। সো আই এম ওয়ান অব দ্যা রিপ্রেজেনটেটিভ অব দেম।
আর এইগুলা যদি খুব বেশি আপনাকে আঘাত করে থাকে, দেন বি কনফার্মড এবাউট ইউর সেলফ আইডেন্টিটি - ইউ আর নাথিং বাট এ "সুবিধাভোগী চুশীলচুতিয়া"!
©somewhere in net ltd.