নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
দেশের বাহিরে থাকি তাই মনটা সব সময় দেশে পরে থাকে, বাবা মা ভাই বোন নিকট আত্বীয় সবাই এই দেশে।
৬ বছর হতে চল্ল দেশ ছেড়ে এসেছি, এমন মন খারাপ কখনো হইনি।
মাঝে মাঝে মন খারাপ হয় আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় সব কিছু ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু এই কিছুটা দিন কেন যানি একেবারে ঝিমিয়ে পরেছি।
কাজের বিষন চাপ, সময় হয়ে উঠছেনা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। কি থেকে যে কি করি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
গত দুইদিন আগে আমার সবচেয়ে প্রিয় একজন কলিক চাকরি ছেড়ে চলে গেছে, তাতে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল। ভাবছি আমিও কোম্পানি ছেড়ে চলে যাব। এই ভাবে মানুষ থাকতে পারেনা।
আগের দিন বসের সাথে ছোট্ট একটু কথা কাটাকাটি হয়ে গেল, এমনিতেই মন খারাপ তার উপর বসের সাথে কথা কাটাকাটিতে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলাম, এই কোম্পানিতে আর থাকছিনা। অফিসের সকলে অনেক বুঝাল কিছুতেই বুঝ মানতে পাছিনা।
আজ একটু সকালে অফিসে এসেছি, সাধারনত সকাল ৮টা ৩০ থেকে ৪০ মিনিটে অফিসে আসি আজ ৮টা বাজার ১০ মিনিট আগে এসে উপস্থিত হয়েছি সবাই বুঝে গেছে আজ আমার শেষ দিন,
রিজাইন লেটার রেডি করে রেখেছি, বস আসলেই উনার টেবিলে রাখব। আর এক মুহূর্তের জন্য এইখানে থাকতে পারছিনা। আমার বসার টেবিলটার চার পাশ একনজর করে তাকালাম, কেমন যানি একটু মায়া পরেগেছে। ৬ টা বছর এই টেবিলটার সাথে ছিলাম, আামার সুখে দুঃখে পাশে ছিল। কখনো আমাকে ছেড়ে যায়নি। আজ কত নিষ্ঠোর হয়ে আমি নিজেই ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
ছোখের কোনে একটু একটু জল এসে ভিড় করছে, সবাই আমার দিকে কেমন এক নজর করে আছে। কেন যে এই পৃথিবীটা এমন যেখানেই যাই নতুন এক মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে পরি। ছেড়ে আসতে খুব কষ্ট হয়।
এইতো সেই দিন কলেজ ছেড়ে আসার সময় নিজেকে কত শক্ত করে রেখেছিলাম বন্ধুদের সামনে, কিন্তু বাড়িতে এসে কত যে কান্না কাটি করতে হয়েছে। আসলেই আমি মনুষটাই এমন কি থেকে কি করি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা। হঠাৎ করে চিন্তা করলাম লেখা পড়া করবনা, বন্ধু মহল থেকে শুরু করে আত্নীয় সজন সবাই বল্ল মেডিকেল ডিপ্লোমাটা শেষ করতে। কিন্তু কেন জানি শেষ করা পর্যন্ত যাওয়া হলনা, মাঝ পথে থামিয়ে দিলাম আমার চলন্ত গাড়ি।
হটাৎ কেন জানি পূর্বের কথা গুলি হুব মনে পরছে, কিছুই বুঝতে পারছিনা। তবে কি আমি এই কোম্পানিকে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলেছি?
আজ এই প্রশ্নের কোন উত্তর খুজে পাচ্ছিনা, শুধু ছটফট করছি কখন বস আসবে আমি বাহির হয়ে যাব।
চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই দিনটা ৬ বছর আগে ২০০৭ সালের জুলাই মাসের ২ তারিখ, আমার চার পাশে পরিচিত সবাই। কারো মুখেই হাসি নেই, ভাইবোন সবাই ভিতর বাড়িতে কারো কোন শব্দ নেই, শুধু মায়ের কান্নার শব্দ আসছে। কেমন যানি বুক ফাটা আর্তনাত করছে, যেন তার দেহ থেকে আত্বাটা বাহির হয়ে যাচ্ছে।
আমি সব সময় মায়ের পাশে পাশে থাকতাম, আজ বিদেশ পারি জমাচ্ছি তাই আজ মা কাঁদবে এটাই স্বাভাবিক। নিজেকে অনেক কঠিন অবস্থায় দার করিয়েছি, এই মূহুর্তে যদি আমি একটু মন হারাপ করি তাখলে বাড়ির সবাই কান্নার রোল তুলবে তাই অনেক কষ্টে মুখে হাসিটা দরে রাখছি।
বিদায় নিতে মায়ের সামনে দারাতেই মা আমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে দরে চিৎকার করে কাদতে লাগল, কোন রকম মার কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
এক এক করে সবার নিকট থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম, কিছু দূর যেতেই কেন জানি মনটা একটা শীতল শিখরন খেল। চাচাকে বল্লাম আমি একটু বাড়ির ভিতরে যাব, আামর শুবার ঘরটা একটু ভাল করে দেখে আসি। চাচা শক্ত করে হাতটা দরে বল্ল বিদায় বেলা পিছনের দিকে যাইতে নাই।
হটাৎ করে চোখ থেকে দুই ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল, অবাক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে থাকলাম পিছনের দিকে। আমাকে নিয়ে রিক্সাটা খুব দ্রুত গতিতে চলে যাচ্ছে, কিছুক্ষনের মাঝেই আমার দৃষ্টির বাহিরে চলে গেল আমার গ্রাম। পরদিন রাত ১১ টায় ফ্লাইট, তখন চোখের সিমানার বাহিরে চলে যাবে আমার মাতৃভুমি। আমার অনুভুতি গুলি হারিয়ে যাবে এক পলকের মাঝে।
আজকেন জানি সেই দিনটার মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি, বার বার টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে পিছনের স্মৃতিতে।
একটু পর জানতে পারলাম আজকে বস অফিসে আসবেনা, জরুরি ছুটি নিয়েছে। কে যেন ফোন করেছে, বস অফিসে আসলে আমি রিজাইন লেটার জমা দেব। আমাকে সেই চান্সটা না দেবার জন্য বসের এই কৌসল।
কেন জানি মনটা একটু ভাল হয়ে উঠল, অনেক কিছুই যেন হারাতে গিয়ে হারাইনি।
৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫১
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আমি সিঙ্গাপুরে আছি,
আসলে গল্পের মত করে বলা আর কি? মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে চাকরিটা ছেড়ে দেই, কিন্তু কেন জানি ছাড়া হয়ে উঠেনা
ভাল থাকবেন, অনেক ভাল
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৬
রোহান খান বলেছেন: ভুল কইরেন না ভাই। ইমোশন কমান...। কোন দেশে থাকেন..। আমি আবুধাবীতে আছি।