নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তনির কান্নার রহস্যটা জানা হলনা।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

মেয়েটা যে এত কাধঁতে পারে আমার চিন্তার বাহিরে ছিল,

আজ সকালে অফিসে আসার সাথে সাথে সে আমাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেধেঁ উঠল,

এই কান্নার রহস্য কি?

তনির মত একটা হাসি খুশি মেয়ে এই ভাবে কাধঁতে পারেনা।

আমি অনেক কষ্টে তনির মাথায় হাত রাখলাম, আস্তে করে বল্লাম তনি কি সমস্যা আমাকে খুলে বল।

এত ক্ষনে অফিসে সবাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে তনির কান্নার দৃশ্য দেখছে।



আজ সকালে বাসা থেকে সরাসরি একটা প্রজেক্ট এ গিয়েছিলাম, কি নাকি একটা অডিট আছে মেইকন্ট্রাকটর এর সেফটি অফিসার গতকাল বিকালে মেইল করেছিল আজ সকাল ৮টার মধ্যে প্রজেক্ট এ থাকার জন্য। উনাদের কথা ফেলার কোন পথ নেই তাই সকাল ভোরেই প্রজেক্ট এ গিয়ে অফিসার এর সাথে কথা বল্লাম। সামাজিকতা রক্ষা করতে গিয়ে অফিসারকে নিয়ে একটু কফিসপে গেলাম, সকাল প্রায় ৯.৩০ বাজে অফিসে আসতে আসতে ১০টার কিছু বেশি হল।

গতকাল রাতে তনি আমাকে একটা এসএমএস করেছিল, লিখেছিল তার খুব কাঁধতে ইচ্ছা করছে। আমি ভেবেছিলাম হয়ত মেয়ে মানুষি করছে নইতবা এত রাতে এই কথার কোন মানে হয়।

আমি ঠাট্টার ছলে উড়িয়ে দিলাম, এর পরেও মেয়েটা অনেক এসএমএস দিল আমি তেমন সিরিয়াসলি উত্তর দিলাম না জাষ্ট লিখার জন্য লিখা।

শেষ এসএমএস টা এমন ছিল - আমি কান্না ভুলে গেছি, প্লিজ তুমি আমাকে কান্না করতে একটু সাহায্য কর। নতুবা আমি আত্নহত্যা করব।

এর পর থেকে মেয়েটার মোবাইল অফ কিছুতেই কল করে পাওয়া যাচ্ছিলনা, উর বাসার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে ছিলাম অনেকক্ষন। উর রুমমেট বল্ল তনির শরীর খারাপ তাই সে ঘুমাচ্ছে। অস্বাভাবিক কিছু সে দেখেনি। আমিও ভাবলাম এই মেয়েটা আমার সাথে দুষ্টামি করছে, বাসয় চলে আসলাম। কেনজানি রাত্রে তেমন ঘুম হলনা, না জানি মেয়েটার কোন সমস্যা হয়েছে কিনা।



সকালে কোম্মানির কাজের চাপে প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম তনির সমস্যার কথা, অফিসে ঢুকতেই সে এই কান্ড করে বসবে ভাবতে পারিনি।



আস্তে করে তনিকে চেয়ারে বসালাম, চোখের পানি গুলি মুছেদিতে লাগলাম।

- কি হয়েছে তনি, এই ভাবে কাঁধছ কেন?

- শরিফ আমি মরে যাব, এই যন্ত্রনা আমার একদম ভাল লাগছেনা। আমি আর পারছিনা প্লিজ .............

- আরে পাগল এইভাবে অফিসে কেউ কাঁধে?

- আমি আজ রিজাইন দেব, শুধু তোমার আসার অপেক্ষায় ছিলাম। এই দেখ রিজাইন লেটার।

এই কথা বলে সে তার রিজাইন লেটারটা দিল, আমি চমকিয়ে উঠলাম যে মেয়ে গতকালও বলেছিল সে এই কোম্পানী ছেড়ে অন্য কোথাও যাবে না হঠৎ কি হল। কাজের কোন ঝামেলা?

মনে হয়না, এমন কিছু হলে অন্তত্য ম্যাডাম আমাকে বলত। ম্যাডাম জানে এই অফিসে তনির সাথে আমার চলাফেরা সবচেয়ে বেশি। আর বর্তমানে এই অফিসে সবচেয়ে পুরান লোক হিসাবে যেকোন সিদ্ধান্ত নেবার আগে ম্যাডাম আমাকে একটু হলেও ইনফর্ম করে।

সাথে সাথে গেলাম ম্যাডাম এর রুমে, সব কিছু বলার পর ম্যাডাম বল্ল আজ সকাল থেকেই তনির মনটা খারাপ। কেও কোন কথা বলেনি, একবার তাকে কাঁধতে দেখেছে। কিন্তু সে কারোসাথে কিছুই শেয়ার করে নি।

তনিকে অনেক কথা বল্লাম কিন্তু সে কোন উত্তর দিলনা, শুধু একটাই কথা সে চলে যাবে তার চার পাশের চেনা পরিবেশ থেকে অনেক দূরে।

তনির রিজাইন লেটারটা আমার হাতে নিয়ে বল্লাম,

- চল আজ আমার কাজ করতে তেমন ভাল লাগছেনা, কোথাও বেড়াতে যাই।

- না আমি তোমার সাথে কোথাও যাব না, আামর লেটার দাও আমি বসের রুমে জমা দিয়ে চলে যাব।

- ঠিক আছে তুমি চলে গেলে কেওত আর ফেরাতে পারবেনা, তবু আজকে দিওনা একটা শুসংবাদ আছে তোমার জন্য। চল বাহিরে কোথাও বেরিয়ে এসে তারপর কাল জমা দেই।

- কি সংবাদ?

- আরে অফিস হল কাজের জায়গা এখানে কি কোন ব্যাক্তিগত কথা বলা যায়? তার চেয়ে চল কোথাও বসে দুইজন আড্ডা দেই।

অনেক কথা বলার পর তনি রাজি হল, তবে শর্ত তার রিজাইন লেটারটা উর হাতে দিতে হবে।

আমি তাতেই রাজি, ম্যাডামকে বলে আজকের জন্য ছুটি নিলাম ১১টার মধ্যেই তনিকে নিয়ে বাহির হলাম। বিষন্ন মন নিয়ে তনি আমার পাশে হাটছে, হাজার কথা বল্লে সে একটা কথা বলে।

হঠাৎ আমকে চমকিয়ে দিয়ে সে বল্ল

- শরিফ চল পালাও উভিন থেকে ঘুরে আসি। (পালাও উভিন ছোট্ট একটা দ্বীপ সিঙ্গাপুর চাঙ্গি ভেলেজ থেকে ছোট্র ভুটে করে যেতে হয়, নিরব একটা দ্বীপ একা সময় কাটানোর জন্য এই জায়গাটা অনেক প্রিয় আমার)

আমি তনির দিকে তাকিয়ে থাকলাম মেয়েটা কি সত্যি বলছে?

আমি জানি সে অনেক সময় আমার সাথে এইরকম দুষ্টমি করে থাকে, কিন্তু তার দুষ্টামি করার মত মন আছে বলে মনে হয়না। তাখলে?

আমি তনির দিকে এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষন তাকিয়ে থেকে বল্লাম সত্যি যাবা?

- হ্যা, প্লিজ যাবা আমার সাথে। নতুবা আমাকে একা যেতে হবে। আমার খুব ভয় করে একা ঐখানে যেতে।



দুজনে সিঙ্গাপুরের সীমানা পেরিয়ে পালাও উভিন এসে পৌছালাম দুপুর ৩দিকে, এখানে এসে তনিকে কেমন যেন ফুরফুরে মেজাজে দেখাচ্ছে।

- আমি কি তোমার হাতটা একটু দড়তে পারি?

তনির এমন কথায় আমি থ হয়ে দাড়িয়ে থাকলাম।

- হাতটা দড়তে দিবানা?

- হ্যা না মানে।

- কি? হ্যা না মানে?

আমি তনির দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলাম, একটু আলতো পরশে সে আমার হাতটা দরল। যেন পৃথিবীর সব সুখ এখানে খুজে পাওয়া যায়।



এতটা সময় তনির পাশে থাকলাম কিন্তু উর কান্নার রহ স্যটা এখনো জানা হলনা।



বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হল তনি আমার হাতটা দরেই রাখল, তাকিয়ে দেখছি সবাই বুটে করে দ্বীপ ছাড়ছে শুধু আমি আর তনি অপেক্ষায় আছি শেষ বুটে যাওয়ার জন্য।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮

সেবা করতে চাই বলেছেন: আমি তনির দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলাম, একটু আলতো পরশে সে আমার হাতটা দরল। যেন পৃথিবীর সব সুখ এখানে খুজে পাওয়া যায়।


ভাইজান তনির একটা ছবি আপলোড কইরেন, এক নজর দেকুম আপারে।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩২

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: হাহাহাহাহাহা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.