নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গরিবের স্কুল, ক্ষুদ্র হলেও তবু চাই শুরু হোক

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫



২০১৩ সালে দেশে বেড়াতে গিয়েছিলাম ১ সপ্তাহের জন্য, তখন ছোট বোনের স্কুলে গিয়ে ছিলাম একদিন সকালে। সাভার বাজার থেকে একটু পশ্চিম দিকে এসে হাতে বাম পাশেই স্কুলটা, সম্ভবত জায়গাটার নাম রাজাশান।
খুবযে চিকচিকে তা কিন্তু না, কোন রকম স্কুল বলা চলে। প্রধান শিক্ষক নিজেই এটার মালিক, উনার বাসাও এই স্কুলের ভিতরে দুইটা রুম নিয়ে। কিছুটা সময় ছিলাম শিক্ষকদের রুমে এবং বেতন আর নিয়ম শৃংখলা নিয়ে কিছু কথা হল, ৫০০ টাকা থেকে নাকি বেতন শুরু হয়ে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত বেতন ১৫০০ টাকা।
বাহিরে এসে দেখলাম একজন রিক্সা চালক তার মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে যাচ্ছে, আমি উঠলাম উনার রিক্সায় সাভার যাওয়ার জন্য। মেয়ে নাকি এই স্কুলে ৫ম শ্রেনীতে পড়ে, মাসিক বেতন নাকি দিতে হচ্ছে প্রায় ১০০০ টাকা।
একবার হিসাব করে দেখুনতো একজন রিক্সা চালক সারাদিন রিক্সাচালিয়ে ভাড়া পরিশোধ করার পরে হয়তো উনার কাছ ২/৩ শত টাকা থাকে, তাখলে উনার মেয়ের স্কুলের বেতন পরিশোধ করার জন্য উনাকে ৪/৫ দিনের ইনকাম দিয়ে দিতে হয়। সাথে অন্য খরচতো আছেই।
সব বাবা মায়ের এমন স্প্রীট থাকেনা যে এত অভাবের মাঝেও লেখা পড়া চালিয়ে নেওয়ার, ফলাফল শুরুতেই ঝড়ে পরে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে।

***************
হয়তো ১৯৯৮/১৯৯৯ সালের কথা,
তখন আমি হাইস্কুলের একজন ছাত্র, পরীক্ষার সময় দেখতাম অনেক ছেলে মেয়ে বেতনের জন্য পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারেনা।
গ্রামের স্কুল বেতন আর কত হবে? মাসে ২৫ টাকা বেতন আর পরীক্ষায় ফি মিলিয়ে হয়ত বার্ষিক পরীক্ষার সময় ৬০০ টাকার মত হয়, এই টাকাটা আবার তিন বারে নেয়া হয়। ৬/৯/১২ মাস অনুসারে, তখন দেখতাম পরীক্ষায় বসা একটা ছেলেকে স্যার বাহির করে দিচ্ছে বেতন ক্লিয়ার না করাতে। ছেলেটা কাদঁতে কাদঁতে বাড়ি চলে যেত, হয়ত বাবা মাকে টাকার কথা বলতো কিন্তু উনাদের সামর্থ ছিলনা এই টাকাটা পরিশোধ করার তাই উনারাও আড়ালে চোখের পানি ফেলতেন।
এমন টি করে জোড় করে স্কুল থেকে বাহির করে দেওয়ার জন্য অনেক ছেলে মেয়ের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গেছে, আমি নিজেই তার স্বাক্ষী।

এই যখন অবস্থা তখন আমার মত সাধারন মানুষ দু'চোখে দেখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনা, আবার নিজের ভিবেকের কাছে অপরাধি হয়ে থাকতেও পারিনা। অনেক হিসাব নিকাশ মিলিয়ে দেখলাম একটা বিনা বেতনের স্কুলই পারে এই সমস্যার একটু হলেও সমাধান দিতে, আর এই কাজটা করতে হবে আমার মত একেবারে সাধারন একজন মানুষকেই।
অনেকদিন যাবত বন্ধুদের সাথে কথা বলে চলছি, কেও উৎসাহ দিয়েছে আবার কেহ বৎসনা করে। এই সব কিছুর পরেও আজ আমার স্বপ্নের একাউন্টে একটা ছোট্ট পরিমান টাকা জমা হয়েছে, হয়তো একদিন সকলের প্রচেষ্টায় অনেক বড় কিছু হবে।
সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরই স্কুলের জন্য সাভারে জমি কিনব এবং "গরিবের স্কুল" এর কার্যক্রমন শুরু করতে আরো একধাপ এগিয়ে যাব। হয়তো স্কুল চালু করতে আরো ২/৩ বছর লেগে যেতে পারে, তবে আমি আস্থে ধীরে শুরু করার পক্ষে। যাতে কোন ঝড় তুফানে তেমন ক্ষতি করতে না পারে।

আমাদের "গরিবের স্কুল" এ কেবল মাত্র অসচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে পড়তে পারবে আর যাদের সামর্থ ভাল তাদের ছেলে মেয়ে নির্দিষ্ট পরিমানের ফি দিয়ে পড়াশুনা করবে।
সামর্থবানদের কাছ থেকে যে টাকা আসবে তা দিয়ে গরিব ছেলেমেয়েদের খাতা কলম বই কিনে দেওয়া হবে, সম্পূর্ন অলাভজনক একটা প্রথিষ্ঠান হবে এটা। আমার আয়ের অর্ধেকের বেশি এইখানে দিয়ে দেব যাতে স্কুলটা পরিচালনা করতে তেমন সমস্যা না হয়।
নিজের জন্যেতো অনেক হল, এবার অন্যের জন্য কিছু একটা করে দেখি।

আশার কথা হল অনেক হৃদয়বান মানুষ ইতিমধ্যে আমাদের পাশে দাড়াতে চেয়েছে, এবং আমরাও অনেকের সাথে কথা বলেছি আমাদের পাশে দাড়ানোর জন্য।
সবশেষর একটাই কথা - "মানুষের পাশে মানুষ দাড়াবে, মানুষের দিকে দু'হাত বাড়াবে"
শিক্ষার আলোতে আলোকিত হোক প্রটিটা শিশু, আমরা দায় মুক্তি চাই পরবর্তি প্রজন্ম থেকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

ছাসা ডোনার বলেছেন: খুব ভাল উদ্দোগ ভাই, সত্যি বলতে কি আপনার মনটা অনেক বড়।চালিয়ে জান আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন এই দোয়াই করি।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২১

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.