নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
নিশির সাথে আমার পরিচয় গত জানুয়ারি থেকে, ভার্চুয়াল পরিচয় বল্লেই ভাল। আজও আমাদের দেখা হইনি, যদিও মে এবং আগষ্ট দুইবারই দেশে আসার পর নিশির সাথে দেখা করার সুযোগ ছিল এমন কি মে মাসে নিশিদের বাসায় আসার জন্য নিশি খুব রিকুয়েষ্ট করেছিল। ব্যস্ততা আর উদাসীনতার জন্য নিশির সাথে দেখা হয়নি।
এতদিন নিশিকে একটাবারের জন্যও বুঝতে দেইনি আমার কল্পনার জগতের বাস করা মেয়েটা এই নিশি, বরং সব কথাতে কেমন একটা পাগলামী রেখেছি যাতে করে মেয়েটা বুঝতে না পারে আমার জগত বলতে এই মেয়েটা।
ঐদিন কি যেন মনে হল হঠাৎ করেই বলে দিলাম "নিশি আমি তোমাকে ভালবাসি" নিশি সরাসরি "না" বলে দিল, এমনকি এই ব্যপারে কথা বল্লে পরবর্তিতে আমার সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেবে এমন একটা হুমকিও দিয়ে বসল।
গত দুইটা সপ্তাহ বলতে গেলে আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় গেছে, নিশির সাথে কথা শেষ করতেই ম্যানপাওয়ার অথরিটি থেকে কল আসল অডিটের জন্য। ক্লাইন্ট একটা বড় বিল আটকিয়ে দিল, সব মিলিয়ে হিবিজিবি একটা সময় পার করলাম।
আসলেই নিশিটা আমার জীবনের একটা সুভাগ্যের বার্তা নিয়ে এসেছে, মেয়েটার সাথে যেদিন থেকে পরিচয় হয়েছে সেই দিন থেকেই কেমন জানি সব কিছু নিজের মত করে হচ্ছে। কিন্তু আজকে নিশিকে একটু রাগিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই ঝামেলার শুরু.......
পরদিন নিশি ফেইসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভ, কিছুতেই মেয়েটার সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। নিশি ছাড়া ফেইসবুকটা বড্ড ফাকা মনে হয় তাই আমিও আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে বসে থাকলাম, আসলে ফেইসবুকে আসা হয় শুধু নিশিটার জন্য। নিশি না থাকলে ফেইসবুকে থাকা আর না থাকা একি কথা।
গতকাল একাউন্ট এক্টিভ করে দেখি নিশি অনলাইনে, আবার শুরু করলাম সেই পুরানো ঢোল বাজাতে "ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি........"
- দেখ শরিফ তুমি যাই বল আর যেখাবেই বোঝানোর চেষ্টা কর আমার উত্তর ঐ একই থাকবে । আমি কাউকে না দেখে কোন রিলেশনের মধ্যে যাবো না।
- এখন আমি কিভাবে দেশে আসবো বল? নিজেই বুঝতে পারলাম আমার কন্ঠে এই প্রথম কেমন জানি একটা কাতর ভঙ্গি।
তবুও নিশির মনটা যেন একটুও নরম হল না । বলল
- আমি তো তোমাকে দেশে আসতে বলি নি। তুমি বুঝতে পারছো না যে আমি এটা চাচ্ছি না। আমি চাচ্ছি না তুমি আমাকে প্রোপজ কর ।
-কিন্তু কেন?
- শরিফ তুমি কচি খোকা না? তুমি জানো আমার এমন টা বলার কারন কি? এরকম ভার্চুয়াল রিলেশনের কোন মানে নেই।
আমি কোন কথা বল্লাম না । নিশি আবার বলল
- আমি চাইলেই তোমাকে দেখতে পারবো না চাইলেই তোমার হাত ধরতে পারবো না। একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতে পারবো না। কোন বিশেষ দিনে তোমাকে কাছে পাবো না। অন্যেরা যখন তাদের মনের মানুষগুলোর সাথে সময় কাটাবে আর আমাকে তখন চেয়ে দেখতে হবে। আমি এতোটা কষ্ট সহ্য করতে পারবো না। এটা আমি মেনে নিবো না।
নিশি খানিকটা সময় নিল। আমার কোন কথা আছে নাকি শোনতে চাইল। আমি কোন কথা বল্লাম না । নিশি হইতো জানতো আমি কিছু বলব না। এটাও জানতো এই পরিস্থিতিতে আমার কিছু বলারও নাই ।
নিশি আবার বলতে আরাম্ভ করল
- দেখো তবুও আমি এটা মেনে নিতে পারতাম যদি আমাদের রিলেশনটা একটা সুন্দর পরিনতির দিকে যেত। আমি কষ্ট করে হলেও অপেক্ষা করে থাকতাম। কিন্তু তাও তো হবার নয়।
- কেন? তুমি এমন কথা কেন বলছ ?
- বোঝ না আমি এমনটা কেন বলছি? তুমি দেশে আস দুই দিনের ছুটি নিয়ে, গত কয়েক মাসের পরিচয়ে তোমাকে সর্বোচ্চ ৫দিন দেশে থাকতে দেখেছি। এমনিতেই সব পরিবারের প্রবাসী ছেলেদের নিয়ে একটু বেশি এলার্জি আছে, তার উপর তুমি এমন ২/৩ দিনের জন্য দেশে আসলে কোন বাবাই তার মেয়েকে তোমার কাছে বিয়ে দিতে চাইবেনা না। তোমার পড়াশোনা ব্যবসা চাকরি, সব মিলিয়ে সময় কাটে খুবই ব্যস্ততার মাঝে। তুমি কিছুতেই ১ মাসের জন্য ছুটি নিয়ে আসতে পারবেনা, সর্বোচ্চ ১ সপ্তাহের জন্য আসবে। এমন পরিস্থিতিতে বাবা মা তোমার কাছে আমাকে বিয়ে দেব কেন? হইতো তুমি বলবে "বিয়ের পর আমাকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবে" কিন্তু ভেবে দেখেছ আমি মাত্র অনার্স প্রথম সেমিষ্টার শেষ করলাম আরো ৩.৫ থেকে ৪ বছর সময় লাগবে, এই মুহুর্তে আমি ইচ্ছা করলেই তোমার কাছে চলে আসতে পারবনা। এটাকি সম্ভব? বল?
নিশি জানতো আমার কাছে এটারও কোন জবাব নেই, তাই অপেক্ষা না করে আবার বলতে শুরু করল -
- তুমি নিশ্চই এটা আশা কর না যে তোমার জন্য আমি আমার বাবা মাকে কষ্ট দিবো বা তাদের মতের বিরুদ্ধে যাবো।
- না তা তো না।
- আমার বাবা মা আমার কাছে সবার থেকে বড়। আজ পর্যন্ত তারা আমাকে দিয়েই গেছেন। কোন কিছু আমাকে মুখ ফুটে চাইতে হয়নি। তাহলে কেন আমি তাদের কে কষ্ট দিবো?
- আমি তো তাদের কে কষ্ট দিতে বলছি না।
- না। পরোক্ষ ভাবে তাই বোঝায়। তোমার সাথে রিলেশন হওয়া মানে তাই বোঝায়।
তারপর দুজনেই চুপ হয়ে গেলাম, কারো যেন আর কিছু বলার নাই । অনেকক্ষন পর আমি বল্লাম -
- তাহলে এটাই কি শেষ? আর কি আমাদের যোগাযোগ হবে না?
- না হওয়াটাই ভাল। তোমার সাথে যোগাযোগ হওয়া মানে কষ্টটা বেড়ে যাওয়া। আমি এসব চাই না।
“আচ্ছা ভাল থেকো” বলে ফোন রেখে দিলাম। ফোন রাখার পরও অনেকক্ষন ফোনটা কানে ধরে রেখেছিলাম, কেন তা জনািনা।
আমার কাছে মনে হল কি যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আমি ভাল করেই জানি কি হরিয়ে যাচ্ছে। আমার ধ্যান জ্ঞান ইচ্ছা শক্তি কল্পনার জগত বলতে নিশিটাই ছিল, যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমি মেয়েটাকে ধরে রাখতে চেয়ে ছিলাম কিন্তু পারলাম না। নিশিতো বলেই দিল, কিছুটা দিনের জন্য কাছাকাছি থাকর মানে কষ্টটা আরো একটু বাড়ানো। এখন কষ্ট হবে কিন্তু এই মূহুর্তে দূরে চলে গেলে একটা সময় সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু দুজন সম্পর্কে জড়িয়ে গেলে একদিন হাজার গুন কষ্ট পেতে হবে। আর সেই কষ্ট কাটিয়ে উঠার সামর্থ নাকি দুজনের কারোই হবেনা। তার থেকে এখনই ভাল । কোন কিছু শুরুর আগেই সব কিছু শেষ হয়ে গেল। ভাল হল।
এখন খুব খারাপ লাগছে কিন্তু নিশি বলেছে এটা সময়ের সাথে সাথে কমে যাবে। কিন্তু কমছে না কেন? নিশির সাথে শেষ কথা হয়েছে সপ্তাহ আগে। কিন্তু নিশিটাকে প্রচন্ড রকমের মিস করছি।
গত কিছুদিন যাবত অফিসে আসছিনা, ক্যাম্পাসেও যাচ্ছিনা। বন্ধু মহল থেকে শুরু করে সবার ফোনই ইগনর করার চেষ্টা করছি, শুধু নিজেকে নিয়ে পরে আছি।
সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি নিশিকে ভুলে থাকার জন্য কিন্তু পারছিনা, সব কিছুতেই যেন নিশিময় হয়ে উঠেছে।
আমার হতাশা কিংবা আনন্দ সব কিছুই গুরু মোশারফ ভাইয়ের সাথে শেয়ার করি, এই কয়েকটা দিন নিরব হয়ে যাওয়ার জন্য উনার সাথে তেমন কথা বার্তা নেই তাই বেচারা সরাসরি আমার বাসায় এসে হাজির। সব কথা শুনে গুরু আমার হেসে ফেল্ল, কিছুটা উচ্চ স্বরেই বল্ল "মেয়েটা আপনাকে কোন দিন দেখেনি তাহলে কি করে প্রপোজ এক্সেপ্ট করবে?"
তারচেয়ে আপনি সরাসরি মেয়েটা সামনে গিয়ে হাজির হোন, দেখবেন কিছুতেই আপনাকে ফিরাবেনা। আরো কিছু পরামর্শ দিল, আজকে মনে হচ্ছে গুরুর চরন ধুলি নেই। আহা এত দিনের হতাশা সবটাই শেষ করে দিয়ে নতুন আলোর পথ দেখালেন। কিন্তু নিশিকে খুজে পাব কিভাবে? এটা নতুন সমস্যা দেখা দিল, কিন্তু গুরু বলে কথা এখানেও উনার খুবই সহজ সরল সমাধান "পরীকে ফোন করেন" একমাত্র পরীই পারে আমাকে নিশির সাথে দেখা করিয়ে দিতে, যতদূর জানি নিশির সাথে পরীরও একটা ভাল সম্পর্ক আছে। সাথে সাথেই ফোন করলাম পরীকে, ভাগ্য খারাপ থাকলে যা হয় মোবাইলে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকায় কল করতে পারছিনা। বাধ্য হয়ে গুরুর মোবাইল নিতে হল, কিন্তু সমস্যা হল অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলে পরী রিসিপ করেনা। এত নিয়ম কানুন একটা রাগই উঠছে, মেয়েটা কি সব আজব নিয়মে নিজেকে বেধে রাখে। এসএমএস করে কল করার সাথে সাথেই রিসিপ করল, নিশির সাথে দেখা করতে হবে বলার পর মনে হয় আমার চেয়ে পরীটাই বেশি অস্থির হয়ে পরেছে। সব শেষে বল্ল আপনি আজই দেশে চলে আসেন, আমি নিশির সাথে দেখা করার সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
ততক্ষনে ঘড়িতে বিকাল ৫টা ছুই ছুই করছে, ক্রিসফ্লাই এর মেম্বারশীপ থাকাতে সিঙ্গাপুর এয়ারের একটা টিকেট শেষ মুহুর্তেও কিনতে পারলাম। আমি আর গুরু এয়ারপোর্টের দিকে চল্লাম, পথে গুরু অনেক কথাই বল্লেন আমি খুব একটা মনযোগি ছিলামনা শুধু একটা কথাই মাথায় ঘুরপাক হাচ্ছে "কালকে আমি নিশির মুখমুখি হতে যাচ্ছি"
বিমানটা আকাশে উড়ার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত কথা হচ্ছিল পরীটার সাথে, ইতি মধ্যে পরী নিশির সাথে দেখা করেছে।
নিশির সাথে আমার পরিচয় নেট এ, প্রথমে টুকটাক কথা হত তারপর এমন একটা পর্যায় এল সারা দিন আমি অন লাইনে থাকতাম শুধু নিশির জন্য। কেমন জানি নিশিকে ছাড়া কোথাও ভাল লাগতোনা, সবকিছুতেই কেমন জানি নিশি ময় হয়ে উঠেছে। নিশির যে জিনিসটা আমার কাছে সব থেকে ভাল লাগতো সেটা হল নিশি আমাকে খুব ভাল করে বুঝতো। আমার কখন কি চায়, মন খারাপ নাকি ভাল সব কিছু যেন নিশির জানা ।
তারপর প্রথম যেদিন নিশির সাথে কথা হল বুকের মাঝে কি যে এক অনুভুতি হচ্ছিল সেটা বলে বুঝাতে পারব না, কেবল সেদিন মনে হল নিশি নামের এই মেয়েটাকে আমি ভালবাসি প্রচন্ড রকমের ভালবাসি। সত্যি ভালবাসি। সেইদিন থেকেই নিশিকে নিয়ে আমার পাগলামি শুরু হল, নিশির দেয়া প্রতিটা ছবি বাসার দালানে টানিয়ে রাখতাম। লিভিং রুম থেকে অফিসের মিটিং রুম সব যায়গাতে নিশির নিজের হাতে উঠানো ফুলের ছবি টানানো। এক কথায় বলতে গেলে আমার জগতের চারিপাশ শুধু নিশি আর নিশি। কিন্তু ঐদিন নিশির কথাগুলি শুনে মনে হলে আমার সাজানো সব স্বপ্নগুলি মুহুর্তের মাঝেই ভেঙ্গে গেল।
২৫০০ মাইল আকাশে উড়ে এসে শত ক্লান্তির মাঝেও আমি ঢাবির ক্যাম্পাসে এসে হাজির, ততক্ষতে ভোরের সূর্য কিছুটা আলো দিতে শুরু করেছে। শুক্রবার যদিও ক্যাম্পাস বন্ধ তারপরও এই পাশটাতে কিছু ছেলে মেয়ে হাটা চলা করতে দেখা যাচ্ছে, তবে ক্যান্টিনটা ফাঁকাই বলা চলে। সকাল বেলাতো এখনও লোকজন আসে নি, কেবল বাঁ দিকের একটা চেয়ারে আমি বসে আছি।
পরী মনে হয় আমার এখানে আসার বিষয়টা নিশিকে বলেনি, তাখলে নিশ্চয় নিশি আসতোনা। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম পরী আসছে পাশে একজন অতিরূপবতি কইন্যা, হালকা নীলের একটা জামা পরে আছে। হইতো ভোর হয়ে গেছে তাই ভয় পাচ্ছিনা নতুনা মেয়েটাকে রূপকথার পরীভেবে ভয়ে দৌড় দিতে হত।
ক্যান্টিনে এসেই নিশি একপ্রকার দমকের সাথেই পরীকে বল্ল "সেই সকাল থেকেই বলছিল আমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে, কোথায় তর সারপ্রাইজ? সকালে এই ক্যান্টিনের চা খাওয়ানোটাই তর সারপ্রাইজ?"
ঠিকমত কথাটা শেষ করতে পারেনি, ততক্ষনে নিশির চোখে আটকিয়ে গেছে ঠিক একটা টেবিল পরেই উস্কুহুস্কু মানুষটার দিকে।
ততক্ষনে পরীটা হেসে আমার দিকে ইশারা করে বলে উঠল, এই যে আস্ত একটা মানুষ তর সারপ্রাইজ।
নিশি নিশ্চয় চিনতে পেয়েছে, কেননা আমি নিশিকে কখনো ছবিতে কিংবা বাস্তবে দেখিনি কিন্তু নিশি আমাকে ছবিতে দেখছে বলতে গেলে হাজারো ছবিতে দেখেছে। আমি এতোক্ষন অন্য দিকে তাকিয়ে ছিলাম এবার নিশির দিকে ফিরে বসা থেকে উঠে দাড়ালাম
নিশি তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বলে উঠল
- এতো ...., এইটুকু বলেই মনেহয় নিশির দুটো হার্ট বীট মিস হল। তারপর পুরো শরীরটা কেঁপে উঠল উত্তেজনায়।
এতো শরিফ। সত্যি সত্যি শরিফ!
পরীর দিকে তাকিয়ে বল্ল
- কিন্তু ও এখানে কিভাবে?
পরী একটা অদ্ভূত হাসি হাসল, খুব মিষ্টি করেই বল্ল -
- সত্যি ওটা দাদাভাই। রাতের ফ্লাইটে এসেছে। বেচারা সারা রাত্র ঢকার রাস্তায় হেটে চলেছে। বেশি রাত্র হয়ে গেছে বলে তোকে ডাকিনি, আমার কেন জানি মনে হল এটা তর জন্য সবচেয়ে বেষ্ট সারপ্রাইজ হবে তাই এত সকালে ঘুম ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসলাম।
নিশি এক ভাবে পরীর দিকে তাকিয়ে রইল। হইতো মনে মনে ভাবছে পরীটা ওর সব থেকে ভাল বন্ধু। নতুবা কেও এমনটা করতোনা।
নিশির নিরবতা দেখে পরীটা আবারও বল্ল
- এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আসিছ কেন? সামনে দাদাভাই দাড়িয়ে, ইচ্ছে হলে এগিয়ে যেতে পারিস।
নিশি কাঁপা পায়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। ধুকধুক বুকে ঠিক সামনের চেয়ারে বসল। নিশির মনে হয় এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমি সত্যিই ওর সামনে বসে আছে !
- সত্যিই কি তুমি?
- বিশ্বাস হচ্ছে না? আমি একটু হাসলাম।
- তুমি কেন আসলে?
- তুমি জানো আমি কেন এসেছি।
- শরিফ তুমি ব্রাহ্মনবাড়িয়ে থেকে ঢাকা আসনি কিংবা সাভার থেকে ঢাবিতে আসনি, ২৫০০ মাইল দূরের সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে এসেছ!
আমি কোন কথা বল্লাম না। নিশিই কিছুটা আশ্চর্য হয়েই প্রশ্নটা করল।
- কেন?
- তুমি বলেছিলে না, কাউকে না দেখে প্রপোজ একসেপ্ট করবে না।
নিশির মনে হয় কথা আটকে গেল। হইতো ভাবছে এই ছেলেটা কি পাগল নাকি।
এবার আমি উঠে দাড়ালাম। পাশে একটা দোলনচাঁপা ফুল রাখা ছিল, ওটা তুলে নিয়ে নিশির সামনে একহাটু বাঁকা করে বসলাম। দোলনচাঁপা ফুলটা নিশি দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বল্লাম
- নিশি আমি পুরো ২৫০০ মাইল পার করে এসেছি কেবল তোমাকে একটা কথা বলার জন্য। "আমি তোমাকে ভালবাসি, প্রচন্ড রকম ভালবাসি"
নিশি চোখের পানি আটকে রাখতে পারল না, হইতো ভাবছে কেবল ওর জন্য একটা ছেলে সিঙ্গাপুর থেকে চলে এসেছে কেবল "ভালবাসি" বলার জন্য। ও কেমন করে এই ছেলেটাকে না বলবে? ওর সব যুক্তি তর্ক যেন মুহুর্তের মধ্যে ভেঙ্গে গেল। নিশিকে দেখে মনে হচ্ছে সেও আমাকে ভালবাসে, প্রচন্ড রকম ভালবাসে ।
- ডু ইউ লাভ মি?
নিশির মুখ দিয়ে আর কিছু বেরই হল না। কেবল বলল "ইয়েস"
পাশে দাড়নো পরীটা বিজয়ের হাসি হেসে উঠল, যেন নিশির গল্পটার এক সুন্দর সমাপ্তি করতে পেরে।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৫
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কঙ্কাবতী রাজকন্যা, এই গল্পটা যখন লিখেছিলাম সবটাই কল্পনা ছিল কিন্তু নিশির জন্মদিনে অনেকটাই বাস্তব হয়ে গিয়েছিল শুধু "ইয়েস" শব্দটা বাধে
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৮
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: ইয়েস শব্দটাও বাস্তব হয়ে যাক। শুভেচ্ছা রইলো।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৩৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ধন্যবাদ, পাগলামু গুলি এইভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়ে যাবে বলেই বিশ্বাস
৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২২
ওমেরা বলেছেন: ভালবাসা মানে শক্তি, তাই হাজার কেন লক্ষ মাইলও উড়ে আসা যায় তার জন্য ।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: তাইতো উড়ে এসে পরেছিলাম শুধু এতটুকু বলতে
৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩
নীল আকাশ বলেছেন: বেশীর ভাগ ভালোবাসার বাস্তব গল্প গুলো পজেটিভ এনডিং হয় না। আর মেয়ে রা কখনই সহজে রাজী হয় না।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৩৫
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: এই জন্যইতো ২৫০০ মাইল উড়ে এসেও ইয়েস শব্দটা শুনতে পেলামনা, যদিও গল্পের এনডিংটা ইয়েস দিয়ে করেছি
৫| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখলেন?
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৩৫
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: হ্যা ভাই, একেবারেই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। যদিও "ইয়েস" শব্দটা বাড়িয়ে লেখা
৬| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
ছবিতে আপনি ও নিশি?
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৩৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আরে নাহ, কি বলেন মিয়া ভাই।
৭| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২৮
Amit Chaki বলেছেন: Click This Link
৮| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫৩
মাআইপা বলেছেন: বেশ ভাল হয়েছে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৩৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ধন্যবাদ আমার দুঃখ হীন পৃথিবীতে
৯| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪
খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লাগল
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫৩
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ ভাল লাগল, আহা যেন ২৫০০মাইলের অ্যন্টনি ফিরিঙ্গি!
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: নিশির সাথে দেখা হবে বলে কথা
১১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫৮
কালো_পালকের_কলম বলেছেন: দারুণ
১২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০৭
Md. Monjur বলেছেন: ইয়েস স্যার কেমন আছেন। ভালবাসা বড় মধুময়, যখন সে ভালবাসা বাস্তবে রুপ নেয়। ভালবাসাহীন জীবন মুল্যহীন।ধন্যবাদ। আরো জানতে - Click This Link
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: হা হা দারুন।