নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর অশান্তি সৃষ্টি

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৫৪



এ বছরের প্রথমদিকে দেশে এসেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে নানা রকমের আলোচনা হয়। দেশের সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। আমরা সবাই গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বলে দেই, যদিও কেউ কর্ণপাত করে না। এতে অবশ্য আমরা কেউ নিরুসাহিত হই না। একদিন এক তরুণ আত্মীয় রুষ্ঠভাবে বললো যে, ইউনূসকে অপদস্ত করবার জন্যই আওয়ামী লীগ ইলেকশনে হেরে যাবে। ইউনূসের নামের সঙ্গে প্রফেসর বা সাহেব না বলাটা আমার আত্মীয়ের কথা বলবার ধরন। এর কোনো বিশেষ অর্থ নেই। সে থামবার পর আমি জিজ্ঞেস করলাম এবার (যদিও প্রতি বছর অক্টোবরে শান্তির নোবেল পুরস্কার ঘোষিত হয়) শান্তির নোবেল পুরস্কার কে পেয়েছে? একটা নীরবতা নেমে এলো। কেউই জানেন না কে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন শান্তির জন্য। একজন মন্তব্য করলেন, “তাহলে দেখা যাচ্ছে যে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারটা গুরুত্বপূর্ণ নয় আমাদের কাছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে যে ইউনূস পুরস্কারটি পেয়েছেন”।



আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছিলাম যখন ইউনূস সাহেব পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। বাঙালি হিসেবে গর্বও বোধ করেছিলাম এবং এখনো করি। বিলেতের রেডিওতে খবরটি শুনবার সঙ্গে সঙ্গে এক বন্ধুকে ফোন করলাম ও বললাম, “ইউনূস ইকনোমিকসে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন”। বন্ধু বললো, “এ বছর অন্য একজন ইকনোমিকসে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে”। এতোক্ষণ খুশিতে এটা আমার মাথায় আসেনি। আমরা দুই বন্ধু তখন ভাবলাম তবে ইউনূস সাহেব নিশ্চয়ই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। বছরের ঐ সময় তো শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়। আসলে ইউনূস সাহেব ইকনোমিকস ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন এটা আমার মাথায় আসেনি। একদিন শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা দেখছিলাম। এ পর্যন্ত ১০১ জন ব্যক্তি ও ২০টি সংগঠনকে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে। যদিও রেডক্রসকে দেয়া হয়েছে তিনবার আর জাতিসংঘের শরণার্থী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে দুবার। প্রতিবার নোবেল পুরস্কার দেয়ার সময় বলা হয়, কেন ঐ ব্যক্তি / সংস্থাকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ২০০৬ সালের পুরস্কার বিজয়ীর সম্পর্কে বলা হয়েছে যে “মাইক্রোক্রেডিটের মাধ্যমে দরিদ্র বিশেষ করে মহিলাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির সুযোগ করে দেয়ার জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে”। পুরস্কারটি দেয়ার কারণ যদি এই হয় তবে সাধারণভাবে মনে হবে যে অর্থনীতির জন্যই পুরস্কারটি দেয়া স্বাভাবিক ছিল।



২১ বার শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছে আমেরিকা। ১২ বার পেয়েছে ইংল্যান্ড ও ৯ বার পেয়েছে ফ্রান্স। শান্তির জন্য আমেরিকার নোবেল পুরস্কার পাবার ব্যাপারটা বেশ মজার। বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে ফিলিপাইনসের ওপর যে অত্যাচার আমেরিকা চালিয়েছিল তা সহ্য করতে না পেরে মার্ক টোয়েন যে মন্তব্য করেছিলেন তা উদ্ধৃত করেছেন বিখ্যাত ঐতিহাসিক সাইমন শামা তার “দ্য আমেরিকান ফিউচার” বইতে। মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, “অন্য দেশে নিজের দেশের পতাকা উড়তে দেখে আমাদের ভালো লাগে। তবে আমাদের উচিত হবে আমাদের পতাকার সাদা দাগগুলোকে কালো রঙ করা এবং তারাগুলো মুছে ফেলে সেখানে মরা মানুষের মাথা ও উরুর কঙ্কাল বসানো”। কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইরাক, আফগানিস্তানে আমেরিকার ভূমিকা আমাদের জানা আছে। ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে যে ব্যাপক নরহত্যা তারা করেছে নওম চমস্কির “হাউ দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়ার্কস” বইটি পড়লে তার কিছু জানা যায়। বাংলাদেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সংলাপের কথা বলেন। কিন্তু কয়টি দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছে আমেরিকা?



শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন কিসিঞ্জার যিনি বাংলাদেশকে “তলাবিহীন ভিক্ষার ঝুলি” বলে বর্ণনা করে এ দেশের মানুষকে অপমান করেছিলেন। ইনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের গণতান্ত্রিক রায়কে ঔদ্ধত্যভরে উপেক্ষা করেছিলেন। তিনি পাকিস্তান সরকারকে আলোচনার কথা না বলে নরহত্যায় উৎসাহিত করেছিলেন। ভিয়েতনামের যুদ্ধ তিনি থামাতে বাধ্য হয়েছিলেন যুদ্ধে আমেরিকার খারাপ অবস্থার জন্য আর বিশ্ব জনমতের চাপে। শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন একদা সন্ত্রাসী বেগিন। শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন রবিন আর পেরেস, ইয়াসির আরাফতের সঙ্গে। প্যালেস্টাইন সমস্যার সমাধান হয়েছে কি? শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দালাইলামা আর স্যান সু কি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য। কিন্তু শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ দেখাবার জন্য যিনি বিশ্বে প্রশংসিত সেই মহাত্মা গান্ধীকে তো এই পুরস্কার দেয়া হয়নি। এর কারণ কি এই যে তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন নিজ দেশের স্বাধীনতার জন্য। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার কিছু সময়ের মধ্যে শান্তির জন্য ওবামাকে নোবেল পুরস্কার দেয়া সম্পর্কে কিছু না বলাই ভালো।



যখন প্রথম শুনেছিলাম ইউনূস নামের একজন ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে গরিব মানুষদের সাহায্য করছেন তখন মনে মনে তাকে প্রশংসা করেছিলাম। তারপর তিনি যখন নোবেল পুরস্কার পেলেন তখন অন্যান্য বাঙালির মতো গর্ববোধ করেছি। পত্রিকায় কেউ কেউ তখন লিখেছিলেন যে তার ঋণের সুদের হার শতকরা ২৭। এতো উচ্চহারে সুদ দিয়ে কারো অবস্থা ভালো হতে পারে না, এসব কথাও লিখেছিলেন কেউ কেউ। এসব কথায় কান দেইনি। রবীন্দ্রনাথের গানের কথা মনে পড়েছে “হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বি নিত্য নিষ্ঠুর দ্বন্দ্ব”। তারপর যখন সরকার তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল তখন বিরক্ত হয়র ভেবেছিলাম সরকারের তো আরো অনেক কাজ রয়েছে। এরপর দেখলাম তিনি উচ্চ আদালতে গেছেন। ভালো কথা। আদালতের রায় তার বিরুদ্ধে গেলো। সে রায় তিনি মানলেন না। নিশ্চিন্ত হলাম দেখে যে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়নি। আমেরিকা সরকার একজন ব্যক্তির জন্য ওকালতি করলো। এই স্পর্শকাতর সময়ে আমেরিকা সরকার তাকে সুউচ্চ পুরস্কার দিলো। এবার আমার মনে পড়লো জন পার্কিনের লেখা “কনফেশন অফ এন ইকনোমিক হিটম্যান” এর কথা। আমি বিশ্বাস করতে চাই না যে অধ্যাপক ইউনূস আমেরিকার হয়ে ইকনোমিক হিউম্যানের কাজ করছেন। কিন্তু একজন নোবেল বিজয়ী এসব কী করছেন? তিনি রাজনীতিকদের মতো আচরণ করছেন। তিনি আ স ম আব্দুর রব, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, কল্যাণ পার্টির ইব্রাহিম প্রমুখকে নিয়ে টিভিতে আসছেন, নিজের জন্য প্রচার করছেন। একজন নোবেল বিজয়ীর এমন আচরণ কি শোভা পায়? প্যাস্টেরনাক তো এমন আচরণ করেননি। বার্নাড শ’ আর জঁ পল সার্ত্র‘র কথা না হয় নাই বললাম।



নিজের জন্য তার এরকম প্রচার অভিযান কি ন্যায়সঙ্গত? জানি বিএনপি তাকে উসকিয়ে দিচ্ছে। রাজনৈতিক সুবিধাবাদের এটা একটা নিকৃষ্ট উদাহরণ। গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ৬০ বছর বয়সে সবার অবসর গ্রহণ করবার কথা। গ্রামীণ ব্যংকের নিয়মে লেখা নেই যে নোবেল বিজয়ী কোনো দিন অবসর গ্রহণ করবেন না। আমরা চাই না যে যারা একাত্তরের খুনিদের পক্ষে কাজ করেছে তারা রাজনৈতিক সুবিধা পাক। ইউনূস সাহেব সেরকম কাজ করছেন। ২০০১ সালের ব্যাপক খুন-খারাবি ও এই জাতীয় কাজ যারা করেছে তারা শান্তির পক্ষের লোক নয়। অথচ তিনি এদের সঙ্গে মিলে কাজ করছেন। তার কাজে শান্তি বিঘিœত করা উৎসাহিত হচ্ছে। এসব তার মতো বুদ্ধিমান মানুষ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। মনে হচ্ছে আত্মগরিমা তাকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে।

সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪১

তারেক রহমান বলেছেন: কি করেছে তোমার বাবা, কি করেছে স্বামী/ গল্প সেসব তোমার চেয়ে কম জানি না আমি;
তোমার যত কীর্তিকলাপ সেও তো আছে জানা/ ইচ্ছে করেই মুখ খুলি না, বলতে ওসব মানা।
স্বামী বাবার নাম ভাঙিয়ে আর কতকাল খাবে/ এবার ওদের ঘুমোতে দাও, আত্মা শান্তি পাবে,
তাঁদের প্রতি আমার সকল শ্রদ্ধা রেখেই বলি/ খুব বেশী দিন আমার চোখে যায় না দেয়া ধূলি।
আমার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার দিন তো শেষ/ নাম আমার জনগণ, আমি’ই বাংলাদেশ।

বৃক্ষের নাম দিয়ে কি? ফলেই পরিচয়/ রাজারা মিছেই কেবল কথার খৈ ফোটায়,
কেবলই নিজের গীতে বিভোর হয়ে রয়/ দেবতা ফেরেশতা সব, ভুল কি তাদের হয়?
অপরের নিন্দা করেই ভাঙলে কেবল গলা/ নির্বাচনের আগে তোমার শতেক ছলাকলা,
কখনো শান্তি-প্রীতি, কখনো বিক্ষোভ/ আসেলে তো জানি সবই সিংহাসনের লোভ।
আমায় দেখে ভাবছ বুঝি বুদ্ধু-বোকা-সোজা/ সময়ে টের পাবে ঠিক আসলে কে রাজা।
আমার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার দিন তো শেষ/ নাম আমার জনগণ, আমি’ই বাংলাদেশ।

তোমার ওই মনটা বড় বড্ড বেশী ভুলো/ তোমার ওই ইশতেহারে কি কি যেন ছিলো,
যদি দেখি হাতের আঙুল, ভুলে তাদের কাজ/ দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে হচ্ছে কলাগাছ।
যদিও তোমার চোখের চশমাটা রঙীন/ চোরদের দশদিন আর গেরস্থের একদিন।
আমাকে রাখলে খুশি মাথায় তুলে রাখি/ নরম নরম গদির প’রে বসতে তোমায় ডাকি।
ধাপ্পাবাজি টের পেলে ঠিক পাল্টে দেবো মন/ সোনা দিয়ে মুড়োলে লাভ হবে না তখন।
আমার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার দিন তো শেষ/ নাম আমার জনগণ, আমি’ই বাংলাদেশ।

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৩

ভোরের সূর্য বলেছেন: খুব বেশি ভিতরে বা বিতর্কে আমি যাব না। আমার কথা হল এসব কিছু হচ্চে বা সমালোচনা হচ্ছে গত ২বছর থেকে। এর আগে কি ডঃইউনুস আমেরিকার এজেন্ট ছিলেন না?গ্রামীণ ব্যাংকে থাকার মেয়াদ তার অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে তাহলে কেন খালি গত ২বছর এটা চোখে পড়লো?এখানে লেখা দেখলাম ডঃইউনুস কিন্তু একজন নোবেল বিজয়ী এসব কী করছেন? তিনি রাজনীতিকদের মতো আচরণ করছেন। তিনি আ স ম আব্দুর রব, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, কল্যাণ পার্টির ইব্রাহিম প্রমুখকে নিয়ে টিভিতে আসছেন, নিজের জন্য প্রচার করছেন। একজন নোবেল বিজয়ীর এমন আচরণ কি শোভা পায়?

কেন?একজন নোবেল বিজয়ী কি রাজণিতি করতে পারবেন না?তিনি কি আ স ম আব্দুর রব, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, কল্যাণ পার্টির ইব্রাহিম প্রমুখকে নিয়ে টিভিতে আসছেন নাকি টিভি রিপোর্টার রা যেয়ে সেইসব ছবি গুল ইলেট্রনিক মিডিয়াতে প্রকাশ করছেন? আচ্ছা ইউনুস যদি আমেরিকার এজেন্ট হয় তাহলে এখনও কেন তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এম ডি পদ টা ফিরে পাচ্ছেন না? আমেরিকা যদি কিছু চায় তাহলে কারো কি সাহস আছে না দিয়ে পারার? আমেরিকা যদি শেখ হাসিনা কে বলে যে ইউনুস কে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ টা ফিরিয়ে দিতে তাহলে আমাদের বা হাসিনার সেই ক্ষমতা আছে না বলার যেখানে আমেরিকা ইরাক,লিবিয়ার মতন দেশ কে গিলে খাচ্ছে সেখানে আমরা তো কোন ছাড়।আরো কথা হচ্ছে ইউনুস যদি আমেরিকার তাবেদারি করে তাহলে তো ভাল কথা।বরং বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ হবে এটা কাজে লাগানো।ইউনুস কে দিয়ে আমারিকার কাছ থেকে যথা সম্ভব সুবিধা আদায় করা।চাই কি পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংক কে ফিরিয়ে আনা ইউনুসের মাধ্যমে লবিং করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.