নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
০ ২০০৬ সালের প্রতিশোধ নিতে দেশজুড়ে শিবির ক্যাডারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে
০ নানা কৌশলে ঢাকায় আনা হচ্ছে
বিএনপির ঘাড়ে চেপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আড়ালে যুদ্ধাপরাধীদের মুুক্তির আশায় আগামী ২৫ অক্টোবর টার্গেট করেছে জামায়াত-শিবির। এ লক্ষ্যে ইতিবাচক হলেও নির্বাচন-সম্পর্কিত যে কোন সরকারী ঘোষণার বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে জামায়াত তার রাজনৈতিক মিত্র বিএনপিকেও জানিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে কষা হচ্ছে বড় ধরনের নাশকতার ছক। ১৮ দলের ব্যানারেই ২০০৬ সালের পল্টন সংঘর্ষে নিজেদের কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করে দেশজুড়ে শিবির ক্যাডারদের প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিশোধ ও নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিতে নেয়া হয়েছে নাশকতার পরিকল্পনা। শিবিরের ভাষায় প্রতিশোধ ও সব যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির আশায় চরম অস্থিরতা তৈরিতে ২৫ অক্টোবর ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশের দিনটিকেই কাজে লাগাতে চায় জামায়াত। যে কোন মূল্যে ঢাকায় আসার নির্দেশ দিয়ে ঈদের আগেই শিবিরের সব মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা, উপজেলার নেতাকর্মীদের ছুটিও বাতিল করেছে সংগঠনটি। নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতার বাইরে গিয়ে চলছে নানামুখী সঙ্কট তৈরির পাঁয়তারা। কাজে লাগানো হবে হেফাজতকেও।
এদিকে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তারের বিষয়ে জনমনে আশার সঞ্চার হলেও স্বাভাবিক কোন পথে কোনভাবেই যাচ্ছে না জামায়াত। নির্বাচন-ইস্যুতে সমস্যা সমাধানের পথেও তারা যাচ্ছে না। নির্বাচন ইস্যু হলেও জামায়াতের মূল টার্গেট যে কোন মূল্যে তাদের নেতাদের মুক্তির প্রেক্ষাপট তৈরি করা। লক্ষ্য পূরণে তাই স্বাভাবিক রাজনৈতিক অবস্থাকে সুখকর মনে করছে না জামায়াত নেতারা। এসব বিষয় বিএনপিকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় বিএনপি কোনভাবেই জামায়াতের অবস্থানের বাইরে যেতে পারবে না বলে মনে করছেন জামায়াত নেতারা। ২৫ অক্টোবর ঘিরে নাশকতার আশঙ্কায় সভা- সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ঘোষিত সব কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে। কর্মসূচী সফল করতে তিনি জামায়াতের নেতাকর্মীদের আহ্বানও জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও শিবিরের সাবেক সভাপতি সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে শুক্রবারই বলে দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীকে উপেক্ষা করে সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন সুযোগ নেই। গত ৫ বছর আপনাদের অগণতান্ত্রিক আচরণে আমরা শক্তি থাকার পরও ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছি। আর নয়। আগামী ২৫ তারিখ আমরা সমাবেশ করব। সভা-সমাবেশ আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যদি আবারও ২৫ তারিখে গণতান্ত্রিক সমাবেশে বাধা দেয়ার দুঃসাহস দেখান তাহলে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। রাজপথ দখলে রেখে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতার শেষ দিনে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হয় কয়েক শিবিরকর্মী। সেই ঘটনার প্রতিশোধ এবং একই সঙ্গে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিতে এখন কৌশলে এগোচ্ছে দলটি। প্রতিশোধের জন্য ২৫ অক্টোবর ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশের দিনটিকেই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়ে সারাদেশ থেকে কর্মীদের ঢাকায় আসার নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বাধা দিতে পারে এই শঙ্কায় কিছুটা কৌশলেই পরিকল্পনা করেছে দলটি। দলটির নেতারা বলছেন, ১৮ দলের জোটের সমাবেশকে সফল করতে তারা প্রস্তুত। ২৫ অক্টোবর ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশে সরকার বাধা দিলে নেতাকর্মীরা চুপ করে বসে থাকবে না। নিজেদের নিরাপদ রাখতে তারাও মাঠে প্রস্তুত থাকবেন। সরকারের পতন ঘটিয়েই আমাদের আন্দোলন সমাপ্ত হবে।
তবে এবার মাঠে ইসলামী ছাত্রশিবিরকেই সক্রিয়ভাবে দেখতে চায় জামায়াত। এ জন্য সারাদেশ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীকে ঢাকায় আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ যেন পথে পথে বাধা না দিতে পারে, এ জন্য ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষদের সঙ্গেই ঢাকা ফিরবে নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে ঢাকায় এসে হোটেলে না থেকে রাজধানীতে থাকা নেতাকর্মীদের আশ্রয়ে থাকার পরিকল্পনা শিবিরের। দেশের বিভিন্ন জেলার শিবিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় প্রতিটি জেলা থেকেই কর্মীদের ঢাকায় আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কর্মীদের সংখ্যা অনুপাতে প্রতি জেলা থেকে ৫ শ’ থেকে ১ হাজার কর্মীকে ঢাকায় আনার নির্দেশ আছে। সবাই একসঙ্গে ঢাকায় না এসে ভিন্ন ভিন্ন পথে আসাসহ বিভিন্ন কৌশলও নেয়া হচ্ছে। শিবির নেতারা বলছেন, কোন বাধায় সরকার সফল হবে না। সভা-সমাবেশ বন্ধ করে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না সরকার। শিবিরের সেক্রেটারি আবদুস জব্বার হুমকি দিয়ে বলেছেন, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে হলেও আমাদের আন্দোলন সফল করব। দলের বন্দী নেতাকর্মীদের মুক্ত করেই ক্ষান্ত হব। সরকার দেশব্যাপী যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার মাশুল সরকারকে দিতেই হবে। জনতার মিছিলে হামলার নির্দেশদাতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের কোন কর্তা-ব্যক্তিই পার পাবে না। সরকার যতই চালাকি করুক না কেন, শেষ রক্ষা হবে না।
এদিকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শিবিরের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সব ছুটি ঈদের আগেই বাতিল করেছিল সংগঠনটি। এ জন্য সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের সব মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা, উপজেলার সব ধরনের ছুটি বাতিল করার নির্দেশ দেয়া হয়। কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে জামায়াত ও শিবিরের পক্ষ থেকে আলাদা ঈদ ফান্ড ও কোরবানির গরুও দেয়া হয়েছে এবার। নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২৪ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। তাই ২৫ অক্টোবর সরকার যদি পদত্যাগ না করে বা সংসদ না ভাঙ্গে, তবে ১৮ দলীয় জোট থেকে যে কোন ধরনের কর্মসূচী আসতে পারে। তাই পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে কর্মীদের সব ছুটি বাতিল করা হয়। তবে শর্তসাপেক্ষে যারা ছুটি নিয়েছে তাদের ১৮-১৯ অক্টোবরের মধ্যেই নিজ নিজ এলাকায় ফিরে আসার নির্দেশও দেয়া হয়েছিল বলে বলছেন জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া এবার শিবিরকর্মীদের ঈদের ছুটি উপভোগ করতে কেন্দ্র থেকে আলাদা ফান্ড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর প্রায় ৯০টি ইউনিটে একটি করে কোরবানির গরু উপহার দিয়েছে জামায়াত। আর শিবিরের মহানগর ও কেন্দ্র থেকেও বাছাই করা কয়েকটি থানা ও ওয়ার্ডকে গরু ও ছাগল কোরবানির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। রাজধানীকে মোট চারটি মহানগর এলাকায় (পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ) ভাগ করে কাজ করে শিবির। এই চারটি শাখার ১শ’ টিরও বেশি সাংগঠনিক থানা রয়েছে। আর সারাদেশে সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ৭৭টি। এ বিষয়ে শিবিরের সহকারী প্রচার সম্পাদক জামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, অন্য ঈদেও সব নেতাকর্মী ছুটি পায় না। এবারও যেহেতু প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন, তাই ছুটির বিষয়ে আরেকটু কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিবিরের সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো, খুলনা, সাতক্ষীরা অঞ্চলে স্ট্রাইকিং ফোর্স আছে, তাদের পর্যায়ক্রমে ঢাকা পাঠানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব স্কোয়াড বা বাহিনীকে সব সময় সর্তক ও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় মনে করছে জামায়াত-শিবির।
জামায়াত নেতারা বলছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের অভিজ্ঞতার কারণেই এবার তারা সতর্ক। ২০০৬ সালে চারদলীয় জোটের ক্ষমতা ত্যাগের দিনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে পল্টনে সংঘর্ষ হয় জামায়াতের। যে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের ছয় কর্মী প্রাণ হারান। ওয়ার্কার্স পার্টির এক কর্মীও নিহত হন। জামায়াতের নিজস্ব^ মূল্যায়নে ওই দিনের ঘটনায় নিজেদের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবকে দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মাঠ পর্যায়ে জামায়াতের সক্রিয় নেতারা এ নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। আন্দোলনে জামায়াতের মূল ফোর্স ছাত্রশিবিরের নেতারাও এ নিয়ে নিজেদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে ২৫ তারিখ পুরোপুরি সফল না হলেও যত দ্রুত সম্ভব হেফাজতকে নিয়ে নতুন করে মাঠে নামার পরিকল্পনাও আছে জামায়াতের। বিএনপির নেতৃত্বে তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের আন্দোলন হলেও এবার আন্দোলনে সরাসরি হেফাজতকে নিয়ে মাঠে নামতে চায় তারা। ২৫ অক্টোবর থেকে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে কৌশলগত কারণে সামনে জামায়াত থাকলেও পেছনে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে নামানো হচ্ছে। এ লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম ও ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে ভিন্ন কোন কর্মসূচী না-দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী ও ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলোর একাধিক উচ্চপর্যায়ের সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, জামায়াত ও হেফাজত এ দুটি শক্তিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে দুভাবে ব্যবহার করতে চায় বিএনপি। বিএনপি চায়, জামায়াত-শিবির থাকুক রাজপথে সহিংস, ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের মগজ ধোলাইয়ের দায়িত্ব নিক হেফাজত। জানা গেছে, হেফাজতের শরিক খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১৮ দলীয় জোটভুক্ত। দলগুলোর শীর্ষ নেতারা একাধিকবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে খালেদা জিয়া তাদের ২৪ অক্টোবর-পরবর্তী রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার নির্দেশনা সামনে রেখেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলো। সুত্র
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৭
পটাশিয়াম নাইট্রেট বলেছেন: ২৪ অক্টোবরের পর থেকে শিবিরের কাজ হলো আওয়ামিলীগ কে ধরে জাপটে ধরে ফেলা। এর পর সাধারণ জনগন পিটিয়ে আলুভর্তা বানাবে।