নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেটে আশার আলো জাগবে কি?

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:০৭

বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদ শেষ হলে আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি হবে না এ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে একটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অবশেষে দুই নেত্রীর ভাষণে কিছুটা হলেও তর্ক-বিতর্ক, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেটে আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।



নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের বক্তব্য নেতৃবৃন্দ দিয়ে আসছিলেন। কখনো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার কখনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন এ নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এমন অবস্থায় সংঘাতের আশঙ্কায় দেশের সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ আতংকের মধ্যে দিন পাড় করছিলেন। সবার কাছে একটি বড় প্রশ্ন ছিলো, ২৫ অক্টোবরের পর দেশে কী হতে যাচ্ছে? এর মধ্যে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার দা-কুড়াল নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার বক্তব্য নিয়ে সর্বত্র আতংকের জন্ম দেয়।



গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের পর এসব অনিশ্চয়তার কিছুটা হলেও অবসান হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে নির্বাচন নিয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের প্রতি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে সংলাপ ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি মীমাংসায় পৌঁছাতে বিরোধী দলের নেতাকে বিএনপি থেকে সর্বদলীয় সরকার গঠনে নেতৃবৃন্দের নাম দেওয়ার আহ্বান জানান।



এর ধারাবাহিকয়তায় গত সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীও পাল্টা প্রস্তাব দেন। আর এর মধ্যদিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংঘাতের যে আশংকা বিরাজ করছিলো তা কিছুটা হলেও দূর হয়।



এদিকে গতকাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমঙ্গীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কাছে বিরোধী দলীয় নেত্রীর দেওয়া রূপরেখা ও আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে পাঠানো চিঠির মধ্য দিয়ে জনগনের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।



মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সমস্যা সমাধানের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে ভেবে সাধারণ মানুষ খুবই আশ্বস্ত হয়েছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবী উত্থাপিত হওয়ায় সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে অনেকের ধারণা যে, সরকারী দলের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য বেগম খালেদা জিয়া বিপরীতধর্মী প্রস্তাব দিয়েছেন। দু’পক্ষই আলোচনার জন্য প্রস্তুত, আলোচনার মাধ্যমেই হয়তোবা শেষপর্যন্ত সমস্যার একটা সমাধান হয়ে যাবে।



সুশীল সমাজও বিরোধীদলের এই প্রস্তাব নিয়ে ভিন্নমত ব্যক্ত করেছেন।

ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক - বেগম খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রস্তাব সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হলেও এটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সরকারী দল প্রস্তাবটি কিভাবে নেবে, তার উপর নির্ভর করবে সমঝোতার উদ্যোগ।

ড. আকবর আলী খান - সমঝোতার পথ রুদ্ধ হয়েছে বলেই মনে হয়। কারণ এজন্য সংবিধানে ৩টি সংশোধনী আনার প্রয়োজন হবে। তবে সমঝোতায় পৌঁছাতে হলে দু’পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। যদি এক পক্ষ মনে করে অন্য পক্ষ স্বম্পূর্ণ আত্মসমর্পন করবে তা ভুল। কারণ বাংলাদেশে এখন সেই পরিস্থিতি নেই। দুই দলের দুটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসলে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান আসতে পারে।



সুলতানা কামাল - বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব সংবিধান পরিপন্থী। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়েই সরকার গঠন করতে হবে। অনির্বাচিত ব্যত্তি“দের দিয়ে সরকার গঠন করা যাবে না। তবে সংবিধান মানুষের কল্যাণে তেরী করা হয়। রাজনেতিক দলগুলো চাইলে প্রয়োজনে তা সংশোধন করতে পারে।



ড. ইফতেখারুজ্জামান - প্রস্তাব আর পাল্টা প্রস্তাবের কারণে মনে হচ্ছে আপাততঃ কোন সমাধান আসবে না। তবে দুই প্রস্তাবকে আমলে নিয়ে যদি রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে, তাহলে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান পাওয়া যেতে পারে।



শাহাদীন মালিক - বেগম জিয়ার প্রস্তাবের পরে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে, এতে সমঝোতার কোন সম্ভাবনা নেই। সমঝোতার পথ আপাততঃ বন্ধ।



ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ - ১৯৯৬ সালে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যোগদানের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেন।



এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ - ২০০১ সালে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন যে, তাদের সময় দায়িত্বপালনকারী উপদেষ্টারা কেউ এই আহবানে সাড়া দেবে না।



ব্যবসায়ী মহল বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিইই ও ডিসিসিইই এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে, দু’টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং এ জন্য তারা উদ্যোগ নেবেন।



রাজনৈতিক সংগঠন সমূহও এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও যুগ্ম-সাধারণ স¤পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।



ওয়ার্কার্স পাটির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব স্ববিরোধী। কারণ তিনি ১৯৯৬ সালে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের উপর অনাস্থা জানিয়েছিলেন। বিএনপি আগের অবস্থানে অনঢ়। তবে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা হতে পারে।



সিপিবির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দুই প্রস্তাবের মধ্যে মৌলিক মতবিরোধ আছে। দ্রুতই সমঝোতা হওয়া উচিত, যাতে নির্বাচন করা যায়। প্রস্তাবণ্ডলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।



বেগম জিয়ার প্রস্তাবিত ১৯৯৬ এবং ২০০১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাগণের বর্তমান অবস্থান। বেগম জিয়া তাঁর বক্তব্যে ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হতে ০৫ জন এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হতে ০৫ জন এবং দেশের একজন বিশিষ্ট নাগরিককে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে বিগত উভয় আমলের উপদেষ্টাদের ০৪ জন ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন, কয়েকজন অসুস্থ, ০২ জন দুই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই উপদেষ্টা ছিলেন এবং ০২ জন ইতোমধ্যেই নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।



১৯৯৬ সালের তত্ত¦াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের বর্তমান অবস্থানঃ



(১) বিচারপতি হাবিবুর রহমান (প্রধান উপদেষ্টা, বর্তমানে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিšè শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বলে জানা যায়)।

(২) ব্যারি¯টার সৈয়দ ইসতিয়াক ইহমেদ (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এবং ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন)।

(৩) প্রফেসর ড. মুহা¤মদ ইউনুস (গ্রামীন ব্যাংক ইস্যুতে বর্তমানে বিতর্কিত)।

(৪) অধ্যাপক মোঃ শামসুল হক (ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন)।

(৫) সাবেক গভর্ণর সেণ্ডফতা বখত চৌধুরী (বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করছেন)।

(৬) মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রহমান খান।

(৭) সাবেক সচিব, এজেডএম নাসির উদ্দিন।

(৮)অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ (বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন)।

(৯) সৈয়দ মঞ্জুরে এলাহী (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন)।

(১০)অধ্যাপক ড. নাজমা চৌধুরী (বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ)।

(১১) অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (বেসরকারী এশিয়া প্যাসিফিক বিশ¡বিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন)।



২০০১ সালের তত্ত¦াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের বর্তমান অবস্থানঃ



(১) বিচারপতি লতিফুর রহমান (প্রধান উপদেষ্টা, ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বিতর্কিত)।

(২) ব্যারি¯টার সৈয়দ ইসতিয়াক ইহমেদ (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এবং ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন)।

(৩) বিচারপতি বিমলেন্দু বিকাশ রায় চৌধুরী (ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন)।

(৪) সাবেক ইইজিপি, এএসএম শাহজাহান (বর্তমানে বিভিšè সামাজিক কর্মকান্ড ও পুলিশের সংস্কার বিষয়ে তৎপর রয়েছেন)।

(৫) সৈয়দ মঞ্জুরে এলাহী (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন)।

(৬) সাবেক সচিব, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী (বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের সাথে জড়িত বলে জানা যায়)।

(৭) ইঞ্জিনিয়ার একেএম ইমানুল ইসলাম চৌধুরী (বিদ্যুৎ সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা যায়)।

(৮) সাবেক অডিটর জেনারেল, এম হাফিজ উদ্দিন খান (টিইইবি এর সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন)।

(৯)ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল মালেক (হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের তত্যাবধান করছেন)।

(১০) মেজর জেনারেল (অবঃ) মইনুল ইসলাম চৌধুরী (ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন)।

(১১) রোকেয়া ইফজাল রহমান (এফবিসিসিইই এর দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন)।



মূলত বেগম জিয়ার এই প্রস্তাব বেগম জিয়ার প্রস্তাব সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। সংসদ সদস্য হতে প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টার হওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সংবিধানের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ অনুচ্ছেদ একসাথে ব্যাখ্যা করলে দেখা যায় যে, বর্তমান মন্ত্রীসভা যদি পদত্যাগ না করে তাহলে তাঁদের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি কোন কারণে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন বা সংসদের আস্থা হারান তাহলেও নির্দলীয় কোন ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কোন আস্থাভাজন সদস্যকে অর্থাৎ সংসদ সদস্য ছাড়া প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কোন সুযোগ নেই।



ত্রয়োদশ সংশোধনীর বাতিল মামলা রায়ে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বাধ্যবাধকতা। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের সংক্ষিপ্ত রায়ে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ আগামী দু’টি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার অভিমত দিয়েছিল। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধুমাত্র জনগনের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যগণ দ্বারা গঠিত হতে পারে। কারণ জনগণের সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমাতয়ন, গণতন্ত্র, প্রজাতান্ত্রিকতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বিষয়ে এই রায়ে ণ্ডরুত্বারোপ করা হয়েছে।



বেগম জিয়া রাষ্ট্রপতি, স্পীকার ও মহিলা আসনের সংসদ সদস্যরা যেভাবে নির্বাচিত হন সেভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও স্পীকারের নির্বাচন জাতীয় সংসদ করে থাকে। অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন হয় সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত আনুপাতিক হারে। তাই সংবিধান সংশোধন ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় উপদেষ্টা নিয়োগ সম্ভব নয়।

বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আলোকে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা প্রদান করলেও, তিনি মূলতঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার প্রধান রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান না। তাই জেনেশুনেই দর কষাকষির জন্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক প্রস্তাবনা দিয়েছেন।



আগামীতে সরকার গঠনের ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়েছে। আর এ জন্য বিভিন্ন ইস্যুতে তার সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করে কাল ক্ষেপন করছেন। ছেলে ভুলানো গল্পের মত আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন আদায়ের জন্য সরকার গঠন করলে তিনি জঙ্গীবাদ বিরোধী অবস্থান নেবেন বলে উল্লেখ করেছেন। ভারতের সমর্থন লাভের জন্য প্রতিবেশী দেশণ্ডলোর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের সমর্থন লাভের জন্য তিনি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। বেগম জিয়া প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা সাংবিধানিক ভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।



১৯৯৬ ও ২০০১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের ০৪ জন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন, কয়েকজন অসুস্থ্য এবং কয়েকজন ইতোমধ্যে নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। বেগম জিয়ার এ ধরনের অপরিপক্ক দূর্বল প্রস্তাবে জাতি তার উপর আস্থা হারাচ্ছে।



আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের আপামর জনসাধারণের মধ্যে বিরাজিত অনিশ্চয়তা ও উৎকন্ঠা নিরসনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবনাটি আরও সুনির্দিষ্টভাবে জনসম্মুখে তুলে ধরা এবং এ আলোকে বিরোধী দলের সাথে আলাপ-আলোচনা এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.