নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি এখন জামায়াতে বিলীন- আন্দোলনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৬

ছাত্রদল আজ অনেকটাই বিকলাঙ্গ ॥ খালেদার সমাবেশ চাঙ্গা করে রাখে শিবির।



রাজনৈতিক কৌশলে, কূটনীতিতে, আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে, আন্দোলনের মাঠে বিএনপির এখন সক্ষমতা কতটুকু এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কেবল জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই সবক্ষেত্রে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই দলটি।

এখন জামায়াত-শিবির যদি সঙ্গে না থাকে, সেক্ষেত্রে বিএনপির রাজনৈতিক শক্তি কতটা টিকে আছে, সে প্রশ্নটা সামনে চলে আসবে। অনেকের ধারণা, বিএনপি এখন দারুণভাবে জামায়াত-শিবির প্রভাবিত দল। আন্দোলনের মাঠে জামায়াতের কৌশলই এখন বিএনপির কৌশল। একটা সময় ছিল যখন বিএনপি তার রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োগ দেখাত জনপ্রিয়তায়, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের উদ্যমে। এখন জামায়াতের পথ ধরে বিএনপির আন্দোলনও জ্বালাও-পোড়াওয়ে সীমাবদ্ধ।

অতীতে রাজপথের মিছিল যে শক্তি দিত এই রাজনৈতিক দলটিকে, তা এখন আর নেই। দলের নেতারা পাঞ্জাবি-পাজামার সঙ্গে কেডস পরে নেমে আসতেন মিছিলে। বিক্ষোভে ফেটে পড়তেন দাবি আদায়ের আন্দোলনে। এখন নেতারা পাঞ্জাবি-পাজামার সঙ্গে কোলাপুরি স্যান্ডেলে পরিপাটি হয়ে কেবলই প্রেস কনফারেন্স করেন। দলের প্রধান নেতারা মিছিলে শামিল হয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করছেন সেøাগানে-সেøাগানে, এমন চিত্র গত দুই মাসে দেখা যায়নি।

দেখা গেছে, সকাল-বিকেল পোশাক পাল্টে প্রেস কনফারেন্স করতে। মাঝে কিছু দিন সমাবেশ-মিছিলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা যখন উঠে গেল তখনও কোন মিছিল নিয়ে কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা যোগাতে দেখা যায়নি বিএনপি নেতাদের। হরতালের দিনগুলোতে গতানুগতিক ব্রিফিংয়ে সারাদেশে ধরপাকড়ের হিসাবনিকাশ তুলে ধরেছেন, দিয়েছেন অবাস্তব পরিসংখ্যান। এটুকুই!

বিএনপির এই যে নতুন ধরন, সেটিও জামায়াতেরই ধরন। জামায়াতের নেতারা জিন্নাহ কিংবা রুমি টুপি পরে আচকান-পাঞ্জাবিতে সেজে কেবলই নির্দেশ দিতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তাঁরা গায়ে সামান্য ধুলোর ছোঁয়া না লাগিয়ে দেশজুড়ে রাজাকার-আলবদর বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে খুন-ধর্ষণ আর পৈশাচিক নৃশংসতা চালিয়েছেন। আর সে সুবাদেই মানবতাবিরোধী অপরাধে এই দলের শীর্ষ নেতাদের নাম আসছে, তাদের অনেকেই এখন বন্দী, বিচার চলছে তাদের। কেউ কেউ এরই মধ্যে দণ্ডিতও।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ডাকসুর নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদল বড় ভূমিকা রেখেছিল। সেই ছাত্রদলের নেতৃত্ব এখন অছাত্র ‘চাচা মিয়াদের’ হাতে চলে গেছে। ছাত্রদল আজ তাই অনেকটাই বিকলাঙ্গ। অবশ্য এখনও ছাত্রশিবিরের প্রভাবমুক্তই আছে ছাত্রদল। শিবিরের নেতৃত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা সবাই ছাত্র এবং তারাই জামায়াতের মূল প্রাণশক্তি।

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৮ দলের সমাবেশগুলোতে গেলে শিবিরের প্রধান্যই চোখে পড়ে। ‘শিবির...শিবির’ উচ্চারণে যে সেøাগান তারা তোলে, তা খালেদা জিয়ার বক্তৃতাকেও ছাপিয়ে যায়। মাঠে এমন সেøাগান ছাত্রদলের শক্তিকে ম্লান থেকে ম্লানতর করে দেয়। উল্টো ছাত্রশিবিরের ধাওয়া খায় ছাত্রদল। খালেদা জিয়ার সামনেই মাঠ দখলে ছাত্রশিবির এগিয়ে থাকছে ছাত্রদলের চেয়ে।

সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি তথা ছাত্রদলকে শিক্ষা দিতে শিবির মাঝে মধ্যে ‘রশিতে ঢিলা দেয়।’ আর যেখানেই শিবির ঢিলা দেয়, সেখানেই ফ্লপ বিএনপি তথা ১৮ দলের কর্মসূচী।

একটা সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আন্দোলনের পাশাপাশি নৈতিকতাবোধ ও আদর্শিক দিকটা বেশ গুরুত্ব পেত। জ্বালাও-পোড়াও না করে গণমানুষের অংশগ্রহণের শক্তিকেই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। বিএনপিও সেভাবেই চলার চেষ্টা করত।

শিবিরের আন্দোলন গোড়া থেকেই ‘জ্বালাও-পোড়াও, রগকাট-জবাই কর’ ধরনের। গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে সাধারণ মানুষ হত্যা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, পেট্রোলবোমায় পুড়িয়ে মারাÑ এ সবকিছুই এখন হচ্ছে শিবিরের কুপ্রভাবে।

সাংবাদিক ডেকে, ক্যামেরা ফিট করে আগুন জ্বালানো কিংবা ককটেল ফাটানোর অপকর্মও শিবিরই আগে শুরু করেছে। তাদের দেখাদেখি এখন যুবদল, ছাত্রদলও ‘কল’ (ফোনকল) দিয়ে গাড়ি পোড়ায়।

রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বিএনপির অবস্থা কী সেটা বিশ্লেষণ সাপেক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনে বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের জয় তাদের মধ্যে এক ধরনের কনফিডেন্স দিয়েছে এটা ঠিক। তবে দলের যাঁরা সত্যিকারের রাজনীতি বোঝেন, তাঁরা কিন্তু ভাল করেই জানেন, এ ভোট এসেছে বিএনপিকে ভালবেসে নয়, এ ভোট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার ফল। দুর্নীতি, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু, হলমার্ক কেলেঙ্কারিÑ এ সবের কারণে দেশের মানুষের আস্থা হারিয়েছে সরকার। তাতেই তাদের ভোট পেয়েছে বিএনপি প্রার্থীরা।

নির্বাচনে জয়-পরাজয়ই আসল বলে যতই সান্ত¡না দলের নেতারা খুঁজুন না কেন, নেগেটিভ ভোটে জয়ী হওয়ার মধ্যে যে গর্বের কিছু নেই, তা-ও তাঁরা ভালই বোঝেন।

সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম যা-ই করুক না কেন, সাধারণ মানুষের ভালবাসার ভোট পেতে দলটিকে দীর্ঘপথই পাড়ি দিতে হবে।

শিশু-কিশোরদের পরীক্ষার দিনে হরতাল দিয়ে, দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও তাণ্ডব চালিয়ে, পেট্রোল ঢেলে মানুষ পুড়িয়ে বিএনপি জনপ্রিয়তায় আরও একধাপ পিছিয়েছে। আর এ কাজটিও বিএনপি করেছে জামায়াত-শিবিরেরই প্ররোচনায়। না হলে পাবলিক পরীক্ষায় হরতাল? অথচ এটাই দেখল দেশ। বিএনপি-জামায়াতের হরতালে পরীক্ষার ফল খারাপ হলো এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। ও-লেভেলের শিক্ষার্থীদের জীবন থেকেই ঝরে গেল একটি শিক্ষা বছর। আর এখন জেএসসি-জেডিসির ১৯ লাখ পরীক্ষার্থী হরতালের জ্বালা ও ভয় বুকে নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। দুই দফা পিছিয়েছে তাদের পরীক্ষা। ২৯ লাখ পরীক্ষার্থীর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে সপ্তাহব্যাপী হঠকারী হরতাল কর্মসূচী নিয়েও নাকি ভাবছে ১৮ দল।

৫০ লাখ পরীক্ষার্থীর পরিবারের মোট আড়াই কোটি মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে কিনা, সেটি এখন বিএনপিকেই ভাবতে হবে। যদি তা না দেয়, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরা ভোট দিতে চেয়েছিল, তারাই তো এখন বিএনপিকে ভোট দেবে না। এতে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনেই হোক কিংবা সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হোক। ভোটে জয়ী হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে বিএনপিকে নতুন করেই হিসাবনিকাশ করতে হবে।

আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপি কি কারও আস্থা অর্জন করতে পেরেছে? ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে’ বিএনপির এ কথায় আন্তর্জাতিক মহলও একমত। কিন্তু সে মহল আবার এতেও কনভিন্সড যে, এ বিচার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষেরই প্রত্যাশা।

আর বিএনপি যে জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার কারণেই কেবল এ বিচারের বিরোধিতা করছে না, সে ব্যাপারে তারা আন্তর্জাতিক মহলে আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এমনটি কোন তরফ থেকেই কেউ কখনও বলেনি, বা দাবি করাও সম্ভব হয়নি।

আর দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক সঙ্কট টিকে থাকার পেছনে সরকারের পাশাপাশি বিএনপিকেও যে সমান হিস্যা নিতে হবে, তাও হয়ত আন্তর্জাতিক মহলে এতদিনে স্পষ্ট হয়ে গেছে।

সে কারণেই তিন দিনের সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই আবারও দুইপক্ষের থেকে সমঝোতারই পরমর্শ দিয়েছেন। আর তাঁরা যে দেশে চলমান জ্বালাও-পোড়াও পছন্দ করছেন না, তা বোঝাতে বলেই দিয়েছেন ‘গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনও স্থান নেই।’

বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে টানা পাঁচ বছর ধরে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে দফায় দফায় আল্টিমেটামও দিয়েছে। কিন্তু সরকার তার পূর্ণাঙ্গ মেয়াদ শেষ করেই এখন নির্বাচন আয়োজনে ব্যস্ত। পাঁচ বছরেও যখন আন্দোলন সফল হয় না, তখন তা যে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির শক্তিহীনতাই বোঝায়, তা বলাই বাহুল্য। সংশ্লিষ্ট অনেকেরই ধারণা, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে অতি মাখামাখির কারণেই বিএনপি এখন এতটা কোনঠাসা। একজন ঘোর বিএনপিসমর্থক নাম প্রকাশ না করে বাংলানিউজের কাছে সেই আক্ষেপটাই করলেন।সুত্র

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৪

সেমিবস বলেছেন: আপনি মোটামুটি ঝানু রাজনীতিবিদ, দেশ আপনাকেই চায়, তবে হয়ত এখন নয়, এখন খেলায় আসুন

Click This Link

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫২

বিজন শররমা বলেছেন: এটি একটি বিশেষ দলের ভাড়াটে লোকদের লেখা ।

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
মুলত জামাতের চাপেই বিএনপি সংলাপে বা নির্বাচনে আসছে না।

বিম্পির জামাত নির্ভরতা নতুন কিছু না।
গতকালও ছেচড়ার মত নিষিদ্ধ জামাতের নেতাদের সাথে নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে গেলেন

অবস্য এর আগেও ২০০৮এ বিএনপি নিশ্চিত পরাজয় জেনে নির্বাচনে যেতে চায়নি।
তখন জামাত নেতা মোজাহিদ খন্দকার দেলয়ার কে সাথে নিয়ে জেলে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে নির্বাচনে রাজি করায়।

এবার জামাত-বিম্পি নিজের অস্তিত্ত টিকিয়ে রাখতে আওয়ামীলীগকে নির্বাচনের আগেই পরাস্ত করে জয় নিশ্চিত করা ছাড়া আলোচনা বা নর্মাল নির্বাচনে না যেতে বদ্ধ পরিকর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.