নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
৪ মিলিয়ন গার্মেন্ট শ্রমিক বাঁচাতে ‘এসওএস’ সংকেত
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান বর্তমানে বিশেষ করে দুটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভয়াবহ ও ভীতিকর চক্রের ভেতর ঘুরপাক অবস্থানে। প্রথমটি হচ্ছে- আগামী জাতীয় নির্বাচনকালীন সময়ে কোন প্রক্রিয়ায় বা রূপরেখায় সরকার জনগণ ও সকল রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত হবে কিংবা আদৌ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা অবশ্যম্ভাবীÑ যা ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক অবস্থানকে বড় মাপের হুমকির দিকে নিয়ে যাবে। সকল রাজনৈতিক দলের স্মরণ রাখা উচিত, প্রকৃতি অনির্দিষ্টকালের জন্য শূন্যস্থান খালি রাখে না। কখনো কখনো প্রকৃতি অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একঠি বড় অশনি সংকেত দৃশ্যমান। দ্বিতীয়ত যে ভীতিকর অবস্থানের উদ্ভব হয়েছে, সেটি পোশাক শিল্পে। এ শিল্পের চল্লিশ লাখ নর-নারী যারা অজ পাড়াগাঁতে মানবেতর জীবন-যাপন করছিল তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শহরে এসে পোশাক শিল্পের বদৌলতে কর্মে যোগ দিয়ে স্বাধীনভাবে একটি নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছিল। ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিকের মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি গ্রাম থেকে আসা শিক্ষাহীন, অনভিজ্ঞ নারী।
তাজরীন ও সাভারের রানা প্লাজার দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ৪০ লাখ শ্রমিক আবারো সম্পূর্ণ বেকার হয়ে বা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনের দিকে ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ঐ সমস্ত দুর্ঘটনার উদ্ধারকাজ এবং প্রতিটি বিকৃত লাশের ছবি সরাসরি টেলিভিশনের পর্দায় এবং পত্রিকায় প্রকাশ করার সুবাদে। ফলে বিশ্বের অন্যান্য মিডিয়া যেমন : আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএনসহ বিশ্বের সব মিডিযা এই চিত্রগুলো সারা বিশ্বে সম্প্রচার করেছে। এই বিকৃত ও মর্মান্তিক লাশের ছবি দেখে উন্নত বিশ্বে খুচরা ক্রেতা জনসাধারণের মাঝে এর মধ্যে বাংলাদেশ সম্বন্ধে এক ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছে। ফলে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে তাদের অনীহা লক্ষণীয়। এছাড়াও একটি চক্র বিশ্বের জনগোষ্ঠীর কাছে এমন একটা বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে যে, বাংলাদেশের পোশাকে গরিবের রক্তের দাগ আছে। যা বাংলাদেশের অনেক অর্জনকে বিলীন করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১ এর টুইন টাওয়ারের ঘটনা অনেক বেশি মাত্রার মর্মান্তিক ছিল। মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজারের ঊর্ধ্বে। কিন্তু সে দেশের সরকার অত্যন্ত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সিদ্ধান্ত ও দ্রুততার সাথে সমস্ত এলাকা সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘেরাও করে টেলিভিশন, পত্রিকার সাংবাদিক বা জনগণকে ঐ এলাকায় প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে বিশ্বের কোথাও কেউ ঐ দুর্ঘটনার উদ্ধার কাজ এবং কোনো বিকৃত লাশের ছবি প্রকাশ বা দেখার সুযোগ পায়নি। বাংলাদেশ সরকারেরও ঐভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল জাতীয় স¦ার্থে অপরিহার্য । কিন্তু দলীয় রাজনীতির কাছে রাষ্ট্রের এই বৃহত্তর স্বার্থ ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। বরং উল্টো প্রতিদিন এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এমন সব মন্তব্য ও সুপারিশ দেয়া শুরু করেন যে, বিষয়টি সম্বদ্ধে তাদের সম্যক জ্ঞান অনুপস্থিত। এই ক্ষেত্রে আমার বোধগম্য নয় যে, তাজরীন কারখানার আগুনের ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সাথে শ্রমিক মজুরি এবং শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের কী সম্পর্ক ! শ্রমিকের মজুরি যদি বহুমাত্রায় বৃদ্ধি করা হতো সেক্ষেত্রে তাজরীনের আগুনের দুর্ঘটনা কি বন্ধ হয়ে যেতো? কিংবা শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন থাকলে সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি কি পাওয়া যেতো? বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার টুইন টাওয়ার, রাষ্ট্রপতি ভবন হোয়াইট হাউস সন্ত্রাসী আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছিল কি? ২০০৫ সালে হজের সময় মক্কায় একটি ১২ তলা ভবনের ধসে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু সে দেশের সরকার কোনো লাশের ছবি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করেনি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের বহু ঘটনা দৃশ্যমান। এই পরিস্থিতিতে বিভেদ-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ অসহায় ৪০ লক্ষ শ্রমিককে বেকার বা কর্মহীন হওয়া থেকে কিভাবে রক্ষা করা যায় তার একটি সুনিপুণ এবং সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সবার জন্য জাতীয় কর্তব্য এবং সমস্ত বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য জরুরিভাবে বন্ধ হওয়া উচিত। শ্রমিক অধিকার ও তাদের সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে এবং একই সঙ্গে কারখানার ভবন বিল্ডিং কোড অনুযায়ী মানসম্মত হতে হবে। আবার একই সাথে অগ্নিদুর্ঘটনার সম্ভাবনাও হ্রাস করার প্রয়াস নিতে হবে। এই সমস্ত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা খুব বেশি দুরূহ কিছু নয়Ñ প্রয়োজন শুধু স্বচ্ছতা, আন্তরিকতা ও নতুন এবং যুগোপযোগী আইন করে দ্রুততার সাথে পদক্ষেপ নেয়া এবং বিশ্ববাসীকে তা জানিয়ে দেয়া। শ্রমিকদের নিরাপদ আবাসন, পরিবেশ, চিকিৎসা ও তাদের সন্তানদের শিক্ষা বিনা খরচের সুযোগ অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে তাদের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর রেশনিংয়ের আওতায় আনা খুবই জরুরি। সাথে সাথে শ্রমিকদেরও কর্মদক্ষতা, উৎপাদনশীলতা ও আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।
বর্তমান সংসদ পোশাক শিল্প শ্রমিক ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করার নিমিত্তে অঢ়ঢ়ধৎবষ ডড়ৎশবৎং ডবষভধৎব অপঃ-২০১৩ এই শিরোনামে আইন করে এবং অঢ়ঢ়ধৎবষ ডড়ৎশবৎং ডবষভধৎব ঝপযবসব-২০১৩ নামে প্রজ্ঞাপন জারি করে এর মাধ্যমে ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাদি নেয়া গেলে একদিকে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত হবে, অন্যদিকে তাদের জীবিকা নির্বাহ সহজতর হবে। একই সাথে প্রত্যেক শিল্পে বাধ্যতামূলক শ্রমিক ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন গঠন করে ও উক্ত কারখানা সময় সময় তাদের অবস্থান বোর্ডকে পেশ করবে। বোর্ড আইনের ধারা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার রাখবে। হতে পারে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বা এর অধিক সদস্য নিয়ে একটি বোর্ড। সেখানে বিজিএমইএ/বিকেএমইএ এর প্রতিনিধি প্রয়োজনীয় শ্রমিক প্রতিনিধি শ্রম মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন করে মোট দুজন (জয়েন্ট সেক্রেটারি পদবির নিচে নয়) সুশীল সমাজের বিজ্ঞ তিন জন, বিশিষ্ট দুজন ইঞ্জিনিয়ার (১ জন ইলেকট্রিক্যাল এবং অন্যজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার), শিপিং এজেন্ট, কন্টেইনার অপারেটর, ফ্রেইড ফরওয়ার্ডার, জাহাজ মালিক, ব্যাংক ও ইন্সুরেন্স এসোসিয়েশান এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (মেম্বার পদের নিচে নয়) প্রতিনিধি নিয়ে উপরোক্ত বোর্ডটি গঠন করা যেতে পারে। উক্ত বোর্ডের সিভিল সোসাইটির সদস্য থেকে ১ জন চেয়ারম্যান, বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ থেকে দুজন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং বাকি সদস্যরা বোর্ডেও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। উপরোক্ত বোর্ড ১ জন যোগ্য প্রধান কর্মকর্তা (সিইও) এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা নিয়োগ দেবেন, যারা দৈনন্দিন কাজের তদারকি করবেন। এ কাজগুলো করার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবেÑ যা নতুন আইনের ধারা অনুযায়ী শিল্পের ঋণপত্র থেকে একটি ক্ষুদ্র অংশ ব্যাংক কর্তন করে বোর্ডে জমা দেবে এবং এই শিল্পের মাধ্যমে যারা বেনিফিশিয়ারি তাদের বোর্ড ন্যায্য হারে ‘লেভি’ ধার্য করবে। যেমন : পোশাক শিল্পে আমদানি-রপ্তানির করণে শিপিং এজেন্ট, বার্থ অপারেটর, ফ্রেইড ফরওয়ার্ডার, জাহাজ মালিক, ব্যাংক, বীমা এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ এই শিল্পের কারণে অধিক মাত্রায় ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করছে এবং সে কারণে তাদের ওপর বাধ্যতামূলক ‘লেভি’ ধার্য করা হবে নৈতিক। এছাড়াও সরকার ঋণপত্রের এফওবি থেকে যে, ০.৮০ শতাংশ সোর্স ট্যাক্স হিসেবে কর্তন করে- সেখান থেকে ০.৪০ শতাংশ শ্রমিক ওয়েলফেয়ারের জন্য বোর্ডে জমা দেবে। এছাড়াও বিশ্বের অনেক দেশ এবং বড় বড় ক্রেতা আর্থিক সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার সম্ভাবনাও আছে- যদি আমরা তাদের কাছে যথাযথ প্রস্তাবনা ও যুক্তি তুলে ধরতে পারি। উপরোক্ত অর্থ আদায় করা হলে তাতে পোশাক শিল্পের প্রত্যেক শ্রমিকের আবাসন, হাসপাতাল, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং তাদের সন্তানদের জন্য স্কুল তৈরি করা অতি সহজে সম্ভব। এক্ষেত্রে, শ্রমিকরা বিনামূল্যে এই সুযোগ ভোগ করবে। সুতরাং সরকার বিভিন্ন এলাকায় (ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরের কিছুটা বাহিরে) খাস জমি বা ভূমি অধিকরণ করে বিনামূল্যে জায়গার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। যে পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের ডক শ্রমিকদের জন্য করা হয়েছিল। এই পোশাক শিল্পের বিনিময়ে বাংলাদেশ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং ৪০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে- সে কারণে প্রত্যেক পোশাক শ্রমিকের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যে কোনো কল্যাণমুখী সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক। এই ব্যবস্থাগুলো নেয়া হলে শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহের খরচ বহুলাংশে কমে যাবে। একই সাথে শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধিরও নতুন কাঠামো প্রয়োজন। যাতে বিশ্ব জণগোষ্ঠী শ্রমিকের হাসি দেখতে পায়। এমতাবস্থায় শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের প্রয়োজন হবে না। বরং শ্রমিক ইউনিয়ন মূলত রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন হয়ে পড়ে এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করার সুযোগ নেয়। বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে অসহায় শ্রমিক শ্রেণী কখনো লাভবান হয় না।
একই সাথে যুগোপযোগী পোশাক কারখানা নির্মাণ করার জন্য ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরের নিকটস্থ জায়গায় খাস জমি এবং ভূমি অধিগ্রহণ করে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ‘অর্থনৈতিক জোন’ (কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন এলাকায়) করে বিভিন্ন গার্মেন্টস মালিককে দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেয়ার ব্যবস্থা অতি দ্রুততার সাথে করা একান্তই প্রয়োজন এবং এই শিল্প নির্মাণে যৌক্তিক সুদে ব্যাংক কর্তৃক দীর্ঘমেয়াদি প্রজেক্ট ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা নিলে অতি দ্রুততার সাথে বিশ্বমানের কারখানা গড়ে উঠবে অথবা সেখানে বিল্ডিং তৈরি করে ভাড়া পদ্ধতি ব্যবস্থা ও গ্রহণ করতে পারে যেমনটি ইপিজেড-এ করা হয়েছে, সাথে সাথে শহর অঞ্চল থেকে শিল্পগুলো বাইরে চলে গেলে একদিকে ট্রাফিক জ্যাম অনেকাংশে কমবে এবং একই সাথে অন্যদিকে শহরের পরিবেশ বাসস্থানের জন্য উপযোগী হয়ে উঠবে। সমাজের সচেতন নাগরিকবৃন্দ বিজিএমইএ/বিকেএমইএ, এফবিসিসিআইকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এই একটি ক্ষেত্রে অন্তত ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপরোক্ত সুপারিশ বা আরো কোনো উন্নত পদক্ষেপ নেয়া জাতির জন্য মঙ্গলকর হবে। শ্রমিক ইউনিয়ন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লেজুরভিত্তিক অঙ্গ সংগঠন হয়ে দানবের রূপ ধারণ করবে। অতীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার বাংলার’ সোনালি আঁশ (পাট শিল্প) এই দানব কর্তৃক ধ্বংস হয়ে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। ১৯৭২-৭৩ এই জুট শিল্প খাত থেকে বাংলাদেশ ৭৯ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতো এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছিল। অতি বৃহৎ আদমজী জুট মিল আজ একটি ইতিহাসের পাতায় স্মৃতি হয়ে আছে। শ্রমিক নেতাদের অনৈতিক কর্মকা-ের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর তিনবার কনজেশন সারচার্জ আরোপ করে বিদেশী জাহাজ মালিকরা কোটি কোটি ডলার ক্ষতি পূরণ হিসেবে আমদানি-রপ্তানিকারকদের থেকে আদায় করেছে। একইভাবে এই শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকা-ের ফলশ্রুতিতে ইউরোপের ব্রেক-বাল্ক জাহাজের মালিকরা সভা করে ‘চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করার বেশ কয়েকবার পদক্ষেপ নিয়েছিল। যৌথভাবে সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবহারকারীদের ত্বরিত পদক্ষেপের কারণে এই অশুভ অবস্থা থেকে বন্দর মুক্তি পেয়েছিল। সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দীন সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে, বন্দর আবার তার অবয়ব ফিরে পেয়েছে। পরিশেষে, সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে পোশাক শিল্প বিলীন হলে যেমনটা হয়েছিল জুট মিলগুলোর। তখন শুধু ৪০ লক্ষ পোশাক শ্রমিক ও কর্মচারী বেকার হবে না, বরং একই সাথে ব্যাংক, বীমাসহ সর্বত্র যে বেকারের সংখ্যা দাঁড়াবে তা সামাল দেয়ার ক্ষমতা কারো হাতে থাকবে না। গার্মেন্টস মালিকরা হয়তো অন্য কোনো ব্যবসা বা অন্যদেশে নতুন কিছু করার উদ্যোগ নিতে সক্ষম হবে। এই পরিস্থিতিতে এই গরির অসহায় শ্রমিকদের রক্ষা করতে সবাই এগিয়ে আসুন এবং রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সচল রাখার সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি
সুত্র
©somewhere in net ltd.