নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাদের নামাঃ মুখে মধু অন্তরে বিষ!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬

মুখে মধু, অন্তরে বিষ কাদেরের। ঢাকায় খুন, ধর্ষণ ও লুটতরাজ চালিয়ে ফরিদপুরে এসে ভোল পাল্টে ছিলেন তিনি। তাকে দেখে মনেই হতো না যে, এতো বড় একজন যুদ্ধাপরাধী-নরপশু তিনি। কারণ, ফরিদপুরের মানুষের কাছে সাধু সেজে থাকতেন কাদের মোল্লা।



কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা রশিদ মোল্লা। এ উপজেলারই আমিরবাদ গ্রামে ১৯৪৮ সালে জন্ম মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার। ১৯৬৯ সালে তিনি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ফেরেন মুক্তিযুদ্ধ শেষে। তাই পুরো একাত্তর সালজুড়ে ঢাকার বৃহত্তর মিরপুরে তাণ্ডব চালিয়ে বেড়ানো কাদের মোল্লার কুকীর্তি সম্পর্কে তেমন একটা অবগত ছিলেন না তার নিজ গ্রামবাসী।

গ্রামের মানুষ প্রথমদিকে তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে চিনলেও বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরুর করার পর একে একে ফাঁস হতে শুরু করে কাদের মোল্লার কুকীর্তির কথা। একপর্যায়ে আব্দুল কাদের মোল্লাকে গ্রেফতার করার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় আসতে শুরু করে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটসহ তার করা বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা। এসব অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর কাদের মোল্লাকেও নতুনভাবে চিনেছেন সদরপুরের মানুষ।

এখন নিজ গ্রামের মানুষের কাছেই ধিক্কারের পাত্র কাদের মোল্লা। আর বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে দেশের এই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর আনন্দে ভাসছে পুরো গ্রাম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদ মোল্লা আরও বলেন, এতোদিনে মানুষ বুঝতে পেরেছেন, মুখে মধু থাকলেও অন্তরে বিষ ছিল কাদেরের। একদিকে ঢাকায় খুন, ধর্ষণ ও লুটতরাজ চালিয়েছেন, অন্যদিকে ফরিদপুরের মানুষের কাছে এসে সাধু সেজে থাকতেন তিনি- এটাও বুঝতে পেরেছেন সবাই।

আমিরাবাদ গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, গ্রেফতারের আগে কাদের মোল্লা সপরিবারে ঢাকায়ই থাকতেন। ঢাকার ৪৯৩ বড় মগবাজারের গ্রিন ভ্যালি অ্যাপার্টমেন্টের ৮/এ ফ্ল্যাটে বসবাস ছিল তার। তবে মাঝে মাঝেই গ্রামের বাড়িতে আসতেন। আর সংসদ নির্বাচনের সময় এ আসনের (সদরপুর-চরভদ্রাসন) প্রার্থী হওয়ায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।

তবে আমিরাবাদের গ্রামের বাড়িতে কাদের মোল্লার ভাইয়েরা থকেন।

গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ বাদশা সরদার বলেন, ওপরে এক রকম থাকলেও তার ভেতরটা ছিল আরেক রকম। তিনি গ্রামে এলে সাদা-সিধেভাবে চলতেন নিজ এলাকা সদরপুরে। অথচ এই কাদেরই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খুন, ধর্ষণের মতো জঘণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

গ্রামের যুবক সাব্বির হোসেন (২৮) অবশ্য বলেন, মা-বাবার মুখে রাজাকার কাদেরের গল্প ভাসা ভাসা ভাবে শুনেছি। দেখতে এই অতিশয় ভদ্রলোকই যে একাত্তরের জঘণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধী, তা এ গ্রামের অনেক মানুষেরই জানা ছিল না।

কাদের মোল্লাদের আদি বাড়ি ছিল একই উপজেলার জরিপের ডাঙ্গি গ্রামে। ওই গ্রামের মরহুম সানাউল্লাহ মোল্লার তিন ছেলের মধ্যে মেজ ছেলে ছিলেন আব্দুল কাদের মোল্লা। ১৯৬৪ সালে জরিপের ডাঙ্গি থেকে আমিরাবাদ গ্রামে এসে বাড়ি করেন সানাউল্লাহ মোল্লা। ওই বছরই জরিপের ডাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন কাদের মোল্লা। এরপর ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে ১৯৬৮ সালে স্থানীয় বাইশরশি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

১৯৬৯ সালের শেষ দিকে এমএ পড়তে কাদের মোল্লা ঢাকায় চলে যান বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই মইন উদ্দিন মোল্লা। আমিরাবাদ গ্রামে কাদের মোল্লার বাড়িতে গেলে তার বড় ভাই ইব্রাহিম মোল্লা অবশ্য তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অপরাধ অস্বীকার করেছেন। ইব্রাহিম দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জোর করে কাদেরকে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হলো।

তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়ার আগে প্রতি মাসেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসতেন কাদের।



আব্দুল কাদের মোল্লার ছোট ভাই মাইনউদ্দিন জানান, তার ভাই কাদের দিনাজপুর জেলায় বিয়ে করেছিলেন। তার পরিবারে স্ত্রী ২ ছেলে ৪ মেয়ে রয়েছেন।

মাইনউদ্দিন জানান, ঢাকা মহানগর সাংবাদিক ইউনিয়নের ৩ বারের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ পাবলিক রাইফেলস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, দৈনিক সংগ্রাম ও নয়া দিগন্ত পত্রিকার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন কোম্পানির উপদেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন সময় কর্মরত ছিলেন তার ভাই।

তবে ভাইয়েরা যাই বলুন, শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়ে যাওয়ায় মহাখুশি তার নিজ গ্রামের মানুষও।

প্রবীণ বাদশা সরদার বলেন, বিচারের রায়ে ওর (কাদের মোল্লা) ফাঁসি হওয়ায় ফরিদপুরবাসীকে আংশিক কলঙ্কমুক্ত করলো। এরপর ফরিদপুরের আরো তিন রাজাকার আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকার এবং জাহিদ হোসেন খোকন রাজাকারেরও ফাঁসি হয়ে গেলে জেলার মানুষ মন থেকে নিজের কলঙ্কমুক্ত ভাবতে পারবেন, পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত হবে ফরিদপুর।

যুবক সাব্বির হোসেনও মনে করেন, তার গ্রাম তথা ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর জেলা যাদের কারণে কলঙ্কিত হয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে একজন এই রাজাকার আব্দুল কাদের মোল্লা। তার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় ফরিদপুরের কলঙ্ক ধুয়ে গেছে অনেকটাই। বাকি তিনজনেরও ফাঁসি হয়ে গেলে পাপ মোচন হবে বঙ্গবন্ধুর নিজ জেলা ফরিদপুরের।

সদরপুর উপজেলার প্রবীণ শিক্ষক সিরাজ উদ্দীন ফকির মনে করেন, একাত্তরে দেশ স্বাধীন হলেও পঁচাত্তরের পরে দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা বেশি সময় ক্ষমতায় থাকায় এসব রাজাকাররা বেশ পাল্টাতে পেরেছেন সহজেই। দেরিতে হলেও বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এটা জাতির সবচেয়ে বড় চাওয়া ছিল।

তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হলে দেশে থেকে দেশকে শেষ করার ষড়যন্ত্রকারীদের বড় অংশ নির্মূল হয়ে যাবে।

তবে মুক্তিযোদ্ধা রশিদ মোল্লার আক্ষেপ ছিল, রাজাকারদের বিচার হচ্ছে ঠিকই, তবুও মনে দুঃখ রয়েছে। কি কারণে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম? আজ রাজাকারদের বিচারের জন্য রাস্তায় মানববন্ধন করতে হয়।

এ আক্ষেপ কিছুটা মিটেছে, নিজ উপজেলার কাদের মোল্লার ফাঁসির সঙ্গে সঙ্গেই- যোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা রশিদ।

সুত্র

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: আজকে থেকে বাংলাদেশের জঞ্জাল সাফ শুরু হলো!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

তালপাতারসেপাই বলেছেন: আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: আজকে থেকে বাংলাদেশের জঞ্জাল সাফ শুরু হলো!

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: আজকে থেকে বাংলাদেশের জঞ্জাল সাফ শুরু হলো!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

তালপাতারসেপাই বলেছেন: আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: আজকে থেকে বাংলাদেশের জঞ্জাল সাফ শুরু হলো!

৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৩

তালপাতারসেপাই বলেছেন: আমার প্রশ্নঃ বিরাঙ্গনাদের সন্তানরা কাদের মোল্লা সহ সব যুদ্ধাপরাধীদের স্বম্পত্তির উত্তাধীকার কেন পাবে না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.