নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রের এ যাবতকালের বিশাল চালানটি ধরা পড়ার ঘটনা যেমন ছিল বিস্ময়কর তেমনি এ সম্পর্কিত মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তদের ঘটনাও আলোড়িত। কারণ এ মামলার রায়ে দুই সাবেক মন্ত্রী এবং মেজর জেনারেল ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদবীর দুই কর্মকর্তা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ৪ জনসহ মোট ১৪ জন মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত হয়েছেন।
ওই সময়ে ঘটনার আকস্মিকতা এত ব্যাপকতর হয়েছিল যে, এর পরিণতি মাঝপথে সম্পূর্ণরূপে থমকে গিয়ে হিমঘরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে চার্জশীটে এ মামলাটি অধিকতর তদন্তের গতি পায় এবং এ তদন্তে একের পর এক শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনাবলী যেভাবে উদঘাটিত হয়েছে তা শুধু বিস্ময়কর নয়, রীতিমতো অবিশ্বাস্যের মতো ঠেকেছিল। অথচ সাক্ষ্য প্রমাণে ওই সব ঘটনা এবং ঘটনার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের সব কর্মকা- প্রমাণিত হয়েছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাসে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদের এ বিশাল চালানের ঘটনা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবহিত ছিলেন। চালানটি ধরা পড়ার পর নতুন করে তাকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি নির্দেশনা প্রদান করেননি। তদন্তে বেরিয়েছে উল্টো তার নেতৃত্বাধীন সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থল থেকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার ৫ সদস্যকে ছেড়ে দেয়া হয়। তার সরকারের শিল্পমন্ত্রী নিয়ন্ত্রণাধীন চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের সংরক্ষিত যে জেটি ঘাটটি থেকে অস্ত্রের এ চালানটি ধরা পড়ে সেই শিল্পমন্ত্রীও এ ঘটনা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের সামান্যতম নির্দেশনাও প্রদান করেননি।
রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা চেন অব কমান্ড অনুসারে অস্ত্র খালাস কাজে নিয়োজিত থেকে নজিরবিহীন রেকর্ড গড়েছেন। ওই সংস্থার তৎকালীন ডিজিসহ ৫ জন মৃত্যুদ-ে দ-িত হয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে এতবড় ঘটনা তিনি পূর্বেই অবহিত ছিলেন এমন বক্তব্য বিভিন্নভাবে তদন্তে এসেছেন। কিন্তু চালানটি ধরা পড়ার পর ডিজিএফআই’র প্রধান তাকে যে বিষয়টি তাৎক্ষণিক অবহিত করেছেন তা তার সাক্ষীর জবানবন্দীতে রেডর্ক হয়েছে। এ ধরনের তথ্য গণমাধ্যমে ফলাও করে তখন থেকে এবং রায় ঘোষণার পরও প্রচার হয়েছে। ডিজিএফআই’র ওই শীর্ষ কর্মকর্তার জবানী অনুযায়ী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নীরব ছিলেন।
তদন্ত সংস্থা সিআইডির তদন্তে বেগম জিয়াকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়নি বিষয়টি স্পর্শকাতর বিধায়। ফলে তিনি রয়ে গেলেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সঙ্গতকারণে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের প্রধানমন্ত্রী আইনের উর্র্ধে তো নয় অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম জিয়ার এ ঘটনা নিয়ে কর্মকা- আইনের উর্ধে রয়ে গেল।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক জিয়ার বিচার দাবি করা হয়েছে। গত রবিবার নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে গত চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অভ্যন্তরে সংঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে অস্ত্রের চালানটি আনা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আদালতের রায় পর্যবেক্ষণে বার বার উঠে এসেছে দেশী বিদেশী কিছু সংস্থা ও তারেক জিয়া নিয়ন্ত্রিত হাওয়া ভবনের নাম। কিন্তু এরা তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম থেকে পার পেয়ে গেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এ ঘটনার সময় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যিনি বা যারা জড়িত তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আবেদন জানানো হয়।
Click This Link
©somewhere in net ltd.