নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতা, সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটের দিন আচমকা সরে আসা এবং দল পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে না পারায় হতাশা বিরাজ করছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
পাশাপাশি মামলার ভয়, নিজ ও পরিবারের নিরাপত্তার অভাব, মামলায় গ্রেফতারের ভয়, শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতা না পাওয়ায় মনোবল হারিয়ে ফেলছেন এসব নেতা-কর্মী। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা দলীয় কর্মকাণ্ডে দৃশ্যমান না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ অবস্থা বিরাজ করছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পর তেমন কোনো নেতাকে পাশে পাচ্ছেন না তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
দলের সিনিয়র পর্যায় থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দলের চেয়ে এখন বেশি নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ছাত্রদলের কেউ কেউ এখন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ করে লন্ডনে চলেও গেছেন অনেকে। কেউ আবার ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা চাকরি খুঁজছেন। দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
দলের নেতা-কর্মীদের এমন হতাশার বিষয়ে জানতে বিএনপি সমর্থক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকালের খবরকে বলেন, দলে যে অবস্থা বর্তমানে বিরাজ করছে তাতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা থাকতেই পারে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে দলের হাইকমান্ডকে ভাবতে হবে। তাকে কোনো না কোনোভাবে দলের নেতা-কর্মীদের ব্যস্ত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বয়সের ভারে যারা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না তাদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিয়ে দল গোছাতে হবে। তাহলে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার হবে। তরুণ নেতৃত্ব তাদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য রিস্ক নেবে। সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠিয়ে চেয়ারপারসনকে অবিলম্বে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
উত্তরবঙ্গের একটি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সকালের খবরকে জানান, বিএনপির কোনো ভবিষ্যত্ দেখছি না। বছরের পর বছর রাজনীতি করে দলেও মূল্যায়ন পাচ্ছি না। সর্বশেষ সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গাড়ি পোড়ানো মামলাসহ অসংখ্য মামলায় আসামি হয়ে ফেরারি জীবনযাপন করছি। এ অবস্থায় আর পেরে উঠছি না। তাই ভাবছি উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ চলে যাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক এক সভাপতি জানান, পরিবারের কাছ থেকে আর কত সহায়তা নেব। সবার পরিবারই তো চায় একটা পর্যায়ে সংসারের বড় ছেলে পরিবারের হাল ধরুক।
রাজনীতির কারণে তা পেরে না ওঠায় এবং রাজনীতির কোনো ভবিষ্যত্ না দেখায় এখন পরিবারকে নিয়েই ব্যস্ত হওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজে চলার পাশাপাশি সংসারে অবদান রাখার কথা ভাবছেন।
মহানগর বিএনপির তৃণমূল নেতা মিন্টু জানান, আন্দোলন থেকে সরে আসার পর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। সেখানে দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বসছেন। আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। তাই কেন্দ্রীয় কার্যালয় সরগরম হলেও উল্টো পাশে মহানগর বিএনপি কার্যালয় ভাসানী ভবনের তালা নিজেরাই খুলছেন না। ফলে বিভিন্ন থানা থেকে আগত নেতা-কর্মীরা সেখানে বসতে পারছেন না। কেউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসছেন। কেউ আবার এদিক-ওদিক বসছেন।
তিনি জানান, আগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা মহানগরের দায়িত্বে থাকাবস্থায় কার্যালয় খোলা থাকত। নেতা-কর্মীরা বসতেন। বিশেষ করে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম প্রায়ই আসতেন। কার্যালয় চাঙ্গা রাখতেন। এখন তিনিও আসেন না। বর্তমান সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পর বসতে চাইলেও মহানগরীর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের বিরোধিতার কারণে বসতে পারেননি। এখন মামলার কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই তিনিও আসতে পারছেন না।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের নামে রয়েছে বেশ কয়েকটি মামলা। গ্রেফতার আতঙ্কে তিনি এখন আর দলের কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। সর্বশেষ গত ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর কোনো অনুষ্ঠানে মির্জা আব্বাসকে দেখা যায়নি। এমনকি নিজের এলাকার কোনো অনুষ্ঠানেও তিনি অংশগ্রহণ করেননি। তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস এলাকায় দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. ওসমান ফারুক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন ম এহছানুল হক মিলনসহ অনেকে বিদেশেই রয়ে গেছেন। তারা কেউ সহসা দেশে ফিরছেন না। আবার স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, এমকে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু ও বরকতউল্লা বুলুর মতো নেতারা দেশে থাকলেও কার্যালয়মুখী হচ্ছেন না। এমনকি দলের কোনো কর্মসূচিতেও তারা অংশ নিচ্ছেন না। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের অনেক নেতা স্থানীয় সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকসহ দলের শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের এমন হতাশার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান সকালের খবরকে বলেন, দেশে তো রাজনীতিই নেই। রাজনীতির কোনো সুযোগও এখন বাংলাদেশে নেই। রাজনীতি না থাকলে রাজনীতিবিদরা তো হতাশই থাকবেন। আগে তো সরকারকে রাজনীতির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে জামিনযোগ্য মামলায় আসামি হওয়ার পরও দলের সিনিয়র নেতারা জেলের ঘানি টানছেন। তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তারা বারবার তাদের দলের নেতাদের জামিনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরও কাজ হচ্ছে না।
দল পুনর্গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলেও তো আগে চেয়ারপারসনকে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। কিন্তু সিনিয়র নেতাদের অনেকে জেলে থাকায় এবং অনেকে আবার জামিন না পাওয়ায় প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। তাই চেয়ারপারসন এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। সুত্র
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মিতক্ষরা বলেছেন: বিএনপি হতাশ। সেই সাথে জাতিও হতাশ। কারন আমরা আর কোন নির্বাচন পাব না। এমনকি প্রেস ক্লাবের নির্বাচনও নয়। সবই সরকারী দল ডাকাতি করে নিয়ে গিয়েছে।