নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির ভারত বিরোধিতার গতিভাষ্য

২১ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:২৪


অনেক কথাই এখন জানতে পারছেন বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি তাদের মনের কথা এখন জানাচ্ছে দেশের মানুষকে। একটি সাক্ষাৎকারে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া কিছু কথা বলেছেন, যা এদেশের মানুষের সকলেরই জানা দরকার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে তার সঙ্গে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর নয়া দিল্লি ভিত্তিক পত্রিকা ‘দ্য সানডে গার্ডিয়ান’-এর সাংবাদিক সৌরভ সান্যালকে একটি সাক্ষাৎকার দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিজেপি মুখপাত্র এম জে আকবর ওই পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক। নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠকের বিষয়ে, খালেদা জিয়া বলেছেন- ‘আমাকে সব খোলাখুলি বলতে দিন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমার বৈঠকের সম্ভাবনা নাকচ করলেন। তারপরে নয়া দিল্লি সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কথা বলল। প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রাক্বালে বাংলাদেশের এই বিবৃতি আসার কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর নয়া দিল্লিতে বললেন, বৈঠক হবে। আপনি এটাকে কীভাবে দেখবেন? বৈঠকটি যাতে না হয় সে জন্য বাংলাদেশ সরকার তাদের সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টার পরও বৈঠক হওয়ায় আমি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। মোদিজির সঙ্গে আমার কোনো আলোচনা হোক তা তারা চায়নি।
আমি কি একবারও বলেছি, আমি মোদিজির সঙ্গে দেখা করব না? নির্বাচনে জয়ের পর ব্যক্তিগতভাবে আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। বিএনপি ও আমাকে ভারত বিরোধী হিসেবে পরিচিত করতে এখানে ব্যাপকভাবে অপপ্রচার চলছে।’ এরপরে তার কাছে প্রশ্ন ছিল- ‘…আপনি যেভাবে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আপনার বৈঠক ঠেকাতে সরকার চেষ্টা চালিয়েছে। তাহলে ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি যখন বাংলাদেশে আসলেন তখন আপনি কেন তার সঙ্গে দেখা করলেন না?’ এর উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন- ‘প্রশ্নটি করায় আপনাকে ধন্যবাদ। হ্যাঁ, এটা একটা ঘটনা যে, বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির রাষ্ট্রীয় সফরে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধে তাদের তিন নেতার দণ্ডের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী তখন সারা দেশে হরতাল ডেকেছিল। আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ বাতিল করেছিলাম কারণ আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে আমার উপর হামলা হতে পারে বলে আমাদের কাছে খবর ছিল। আসলে প্রাণনাশের হুমকি ছিল। আপনাদের মনে থাকতে পারে, তার হোটেলের খুব কাছে যেখান দিয়ে আমাকে যেতে হত সেখানে একটি পেট্রল বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছিল।’ ‘কিন্তু জামায়াতে ইসলামী আপনাদের জোটসঙ্গী। তারা কেন আপনার উপর হামলা করবে কেন?’- এ পশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন- ‘ঠিকই, ঘটনাটি এখানেই। আমার কোনো কিছু ঘটলে তার পুরো দোষ দেয়া হত জামায়াতকে। এবং এটাই ছিল আমাদের বিরোধীদের গেইম প্ল্যান, যা আমরা বুঝতে পেরেছিলাম এবং বৈঠকটি বাতিল করেছিলাম। আজকে আমি আপনাকে সত্যি কথাটা বললাম।’
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- ‘প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা না করার বিষয়ে আপনি আপনার ব্যাখ্যা দিলেন। কিন্তু এটা তো আপনার আরেকটা ভারত বিরোধী অবস্থান বলে বাইরের সবাই ধরে নিল?’ এর জবাবে খালেদা জিয়া বলেন- ‘আমি ভারত বিরোধী হব কেন? দেখেন, এইটাই আমি আপনাকে বলার চেষ্টা করছি। আমাকে ভারত বিরোধী ও হিন্দুবিরোধী হিসেবে চিত্রিত করার জন্য সরকার চারদিক থেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের শক্তিশালী বন্ধন রয়েছে এবং আমাদের মুক্তির জন্য ভারতের অবদান আমরা পুরোপুরি স্বীকার করি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের লক্ষ্য ছিল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার করা। বিএনপি ও আমাকে ভারত বিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
খালেদা জিয়া আরও বলেছেন- ‘জামায়াত আমাদের জোটসঙ্গী এবং শুধু এটাই। জোটে তাদের বিএনপির কথা শুনতে হয়। দেখেন আমরা যেহেতু এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছি, আমাকে বলতে দিন- আপনি শুনে বিস্মিত হবেন যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিশেষ করে হিন্দুরা আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত হয়। তাদের ঘরবাড়ি লুটে নেয়া হয়, জমি দখল করা হয় এবং আমাদের বলা হয় হিন্দুবিরোধী? আমরা হিন্দুদের সঙ্গে আছি এবং দেশের সব নাগরিকের কল্যাণ চাই।’
খালেদা জিয়া এভাবেই বিবরণ দিয়েছেন তার বিরোধিতার গতিভাষ্যের। বেরিয়ে এসেছে তার ভারত বিরোধিতার কৌশল। খালেদা জিয়া নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করবেন, এটাই স্বাভাবিক কথা। কিন্তু প্রশ্নটি হচ্ছে, এটা নিয়ে খালেদা জিয়া কেন এত নার্ভাস ছিলেন? কেন ছিলেন তা তিনি নিজেও জানতেন। সেই কথাগুলোই বেরিয়ে এসেছে মিডিয়ায়। খবর বেরিয়েছে- দেখা করার পর মোদি খালেদা জিয়াকে তিনটি প্রশ্ন করেন। যা খালেদা জিয়াকে রীতিমত বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। তিনি এসব প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ হন। মোদির প্রথম প্রশ্ন ছিল- ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রণব মুখার্জির সঙ্গে যেদিন সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল সেটা বানচাল করতে কারা সেদিন ঢাকায় হরতাল ডেকেছিল? বেগম জিয়া উত্তরে বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও অন্যান্য জোটসঙ্গীরা যৌথভাবে হরতালের ডাক দিয়েছিল। মোদি বেগম জিয়ার জবাবে কোনো মন্তব্য করেননি।
মোদীর দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, ২০০৪ সালে চীন থেকে গোপনে দশ ট্রাক অস্ত্র চট্টগ্রাম বন্দরে অবৈধভাবে খালাস করে ভারতীয় সন্ত্রাসীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার যে আয়োজন করা হয়েছিল সেটা ঘটেছিল আপনার (খালেদা জিয়ার) প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়ে। আর সেই গোপন আমদানির সঙ্গে আপনার ক্যাবিনেটের দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র ও শিল্পমন্ত্রী জড়িত ছিলেন। শোনা যাচ্ছে আপনি এবং আপনার দল ওই ঘটনার তদন্তে খুব একটা সাহায্য করেননি? সূত্র মতে, বেগম জিয়া এই প্রশ্ন শুনে এতটাই বিব্রত হন যে তিনি তার কোনো জবাবই দিতে পারেননি। আর তৃতীয় প্রশ্ন ছিল- বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ নিয়ে। মোদি খালেদা জিয়াকে জানান, বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় তার দলের ও জোটসঙ্গী জামায়াতের নেতাদের সম্পৃক্ততার কথা ভারত-বাংলাদেশ যৌথ তদন্তে উঠে আসছে। বিএনপি ও তার জোটসঙ্গীদের ওইসব দোষীদের আড়াল না করে তাদের শাস্তিদানের জন্য তদন্তকারীদের সাহায্য করার আশ্বাস দেয়া তার নৈতিক দায়িত্ব। সূত্র মতে, এ ব্যাপারেও বেগম জিয়া জবাব দেননি। মোদির এ প্রশ্নেও তিনি বিড়ম্বনায় পড়ে যান।
অতীতের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক অনেক দীর্ঘকালের এবং পারস্পরিক সহযোগিতা, আস্থা ও আদর্শের ভিত্তিতেই এ সম্পর্ক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নিবিড় সম্পর্ক লক্ষণীয়। জিয়াউর রহমান এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে জামায়াতকে রাজনীতি করার ব্যবস্থা করে দেন। সে সময় জামায়াত ও ছাত্রশিবির আবার দেশের রাজনীতি করার সুযোগ পায়। গোলাম আযম মাকে দেখতে আসার নাম করে দেশে এসে থাকা শুরু করে। কিন্তু সে সময় জিয়াউর রহমান এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি। জিয়া সরকারের আমলে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয়, পরে তার মৃত্যুর পর এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। জামায়াতে ইসলামী জিয়াউর রহমানের আমলে নতুন ফ্রন্ট করে রাজনীতি শুরু করে এবং ১৯৭৭ সালের ২৩ এপ্রিল সামরিক ফরমান জারি করে রাষ্ট্রীয় আদর্শ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার অবসান ঘটিয়ে জামায়াতকে রাজনীতির সুযোগ করে দেয় জিয়াউর রহমান। ১৯৭৯ সালের ২৫-২৭ মে প্রকাশ্য সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে দল হিসেবে আবার আবির্ভূত হয়। এর পর শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের তৎপরতা। এ হল স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত।
খালেদা জিয়ার আমলে গোলাম আযমের নাগরিকত্বের বৈধতা দেয়া হয়। জামায়াত ’৯১-এর নির্বাচনে ১৮টি আসন পায়। জিয়াউর রহমান যেমন যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, খালেদা জিয়াও তা অব্যাহত রাখেন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় এসে জামায়াতের নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মন্ত্রিত্ব দেন। খালেদা জিয়া যতই বলুন এটা আদর্শিক নয়, নির্বাচনী জোট, বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এটা বাংলাদেশের মানুষের অজানা নয়, তারেক রহমান ২০০৪ সালে শিবিরের এক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘শিবির ও ছাত্রদল এক মায়ের পেটের দুই সন্তান।’ এমন কথা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীও বলেছিলেন, যা বহুল সমালোচিত। আসলে জামায়াত ও বিএনপির রাজনীতি আদর্শিক এবং সে আদর্শ হল প্রতিক্রিয়াশীলতার আদর্শ, স্বাধীনতাবিরোধীদের ঐক্যের একটি আদর্শ। উভয় দল সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একে অপরের প্রতি তীব্রভাবে নির্ভরশীল।
খালেদা জিয়া ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, অমীমাংসিত ইস্যুর জন্য ভারত নয়, আওয়ামী লীগ দায়ী। এখানেও তিনি নিজের দলের এবং তার স্বামীর ব্যর্থতা আড়াল করতে চেয়েছেন। জিয়াউর রহমানের সময় ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শুধু যৌথ নদী কমিশন আর সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। ১৯৭৯ সালের ১১ নভেম্বর কুমিল্লা সীমান্তে সীমান্ত বৈঠক ব্যর্থ হয় এবং বিলোনিয়া সীমান্তে গোলাগুলি হয়। জিয়াউর রহমানের সরকার তখন তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। জিয়াউর রহমানের সময়ে ভারত- বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। অথচ ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি লাভ এসেছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত সরকারপ্রধানরা এসব ইতিহাসের সাক্ষী।
আমাদের মনে আছে- ‘সমুদ্র জয়’ কিংবা মায়ানমারের সঙ্গে আইনি জয়ের ঘটনাটি ঘটেছে আওয়ামী লীগের সময়েই। যে দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে, তা পেছনে ফিরে দেখা দরকার। বাংলাদেশের দাবি ছিল, সমুদ্রসীমা নির্ধারণে ন্যায্য মাপকাঠি হওয়া উচিত উত্তর-দক্ষিণ ধারণাটি। আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার আগে মায়ানমার ও ভারত পূর্ব-পশ্চিম ধারণার মাপকাঠি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের অনেকটা জায়গা, প্রায় একতরফাভাবে দখল করে রেখেছিল। মায়ানমার বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ও জলসীমার অনেকটা ভেতরে বৃত্তাকারে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্র নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছিল। ভারতও পূর্ব-পশ্চিম মাপকাঠির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অনেকটা জলসীমা নিজেদের দখলে নিয়ে রেখেছে।
ভারত ও মায়ানমার উভয় দেশের বিরুদ্ধে সমুদ্রে উত্তর-দক্ষিণ মাপকাঠির ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছিল। বলা যায়, বাংলাদেশ বাধ্য হয়েছিল আদালতে যেতে। কারণ মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে এ নিয়ে অনেক দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় শুধু সময়ক্ষেপণ হওয়া ছাড়া আর কিছুই হচ্ছিল না। উত্তর-দক্ষিণ মাপকাঠির ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরের সীমা নির্ধারণের দাবি আন্তর্জাতিক আদালতে বৈধতা পাওয়ায় বাংলাদেশের সৌভাগ্য ও সম্ভাবনার সীমা বহুদূর বিস্তৃৃত হয়েছে। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন এবং আরো দূরবর্তী জলসীমা আদালতের রায়ে বাংলাদেশের অধিকারভুক্ত হওয়ায়, সীমাহীন জলসম্পদ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সীমাহীন তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য মূল্যবান খনিজসম্পদ আহরণের সুযোগও পেয়ে গেছে বাংলাদেশ।
এই আওয়ামী লীগের সময়েই ছিটমহলে বিজয় হয়েছে বাংলাদেশের। এর পাশাপাশি বিএনপি কী করেছে? বিএনপি সেই দল, যার সময়ে শায়খ রহমান-বাংলা ভাইরা দখল নিয়েছিল বাংলাদেশে। আর বিএনপির মন্ত্রীরা বলেছিলেন- বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই। বিএনপি’র জঙ্গি মদত নতুন নয়। তা নিয়ে অনেক লম্বা লেখা তৈরি করা যাবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষ যে ঐক্য ও সৌহার্দ্যরে স্বপ্ন দেখছেন, এর জন্য মানবতার বিজয়কে এগিয়ে নিতে হবে। একজন লেখককে যেমন সবসময় প্রকৃত প্রগতির পক্ষেই দাঁড়াতে হয়, তেমনি একজন গণমানুষের প্রতিনিধিকে দাঁড়াতে হয় সাধারণ মানুষের আকাক্সক্ষার পক্ষে। বাংলাদেশের এই প্রজন্ম তা অনুধাবন করতে পারছে। এটা আশার বিষয়। সা¤প্রদায়িকতা, হীনমন্যতা, মৌলবাদী শঠতা মননে রেখে প্রকৃত মানবতাবাদ চর্চা হয় না। হয় না রাজনীতিচর্চাও। আপাত দৃষ্টিতে হচ্ছে দেখা গেলেও মহাকাল তা ধারণ করে না। নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)র নেতা। অনেকে বলেছিলেন- এই দল উগ্রবাদ লালন করবে। না, তা আমরা প্রত্যক্ষ করছি না। আজ বাংলাদেশে যারা ‘ইনডিয়া’ বিরোধিতার নামে মিথ্যা বুলি আওড়াচ্ছেন তাদের জন্য কথা একটিই, সত্যের পথে আসুন। প্রতারণা বাদ দিন। ভারত বাংলাদেশ নিয়ে নেবে- এই জুজুর ভয় আর দেখাবেন না। কারণ এই বাংলাদেশের নাগরিকরা এখন অনেক কিছুই জানেন এবং বুঝেন।
ফকির ইলিয়াস : সাংবাদিক, কলাম লেখক। সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.