নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
দেশের একটি প্রথম সারির দৈনিকে খবর বেরিয়েছে যে, সরকার মধ্যবর্তী বা আগাম নির্বাচনের কথা ভাবছে। তবে পত্রিকাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার আগে বিরোধী দল বিএনপিকে ভেঙে কয়েক টুকরা করতে চায় সরকার। এই খবর দেওয়া হয়েছে বিএনপির কয়েকজন নেতার উদ্ধৃতি এবং সূত্র থেকে। সরকারের তরফ থেকে কোনও নেতা বা মন্ত্রী নিজ নামে এর সত্যতা নিশ্চিত না করে বরং নাকোচ করেছেন।
এই খবরের কয়েকটি দিক আছে। এক. ২০১৭ সালে হতে পারে মধ্যবর্তী নির্বাচন। দুই. তার আগে বিএনপিতে ভাঙন সৃষ্টি করা এবং তিন. ছোট-খাট দল দিয়ে প্রথমে আগাম বা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তোলা।
যদি ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সরকার নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫ বছর বহাল থাকে তাহলে বাংলাদেশে আরেকটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ২০১৯ সালে। সরকারের তরফ থেকে এ কথাই বার বার বলা হচ্ছে। আর বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর থেকেই আরেকটি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। বিএনপির এই দাবির প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের মৌখিক সমর্থন আছে। তবে বিএনপি যতটা আশা করেছিল ততটা সক্রিয় সমর্থন নয়।
মধ্যবর্তী বা আগাম নির্বাচন কেন প্রয়োজন? প্রয়োজন বাংলাদেশে ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার জন্য। এই আগাম নির্বাচন যদি হয় তাহলে ভোটাররা সেই সুযোগ পাবেন কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছে তাই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আগাম নির্বাচন কোনও ফল বয়ে আনবে না। কারণ জাতীয় নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি উপজেলা ও সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আর সিটি নির্বাচনকে বিএনপি নিয়েছিল অংশগ্রহণমূলক বর্জনের নির্বাচনের জন্য। তাই যদি না হতো তাহলে তারা নির্বাচনের দিন সূর্য মাথার ওপর আসার আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিত না।
পত্রিকার ওই খবরে বলা হয়েছে- আগাম নির্বাচনের আগে বিএনপিতে ভাঙন ধরানো হবে। আর তা বলা হয়েছে বিএনপির দিককার সূত্র উল্লেখ করেই। বিএনপি নেতারা এ নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। আর তাতে এটা প্রমাণ হয় বিএনপির ভেতরে ভাঙনের আলামত আছে। এই আলামত এমনিতেই বার বার প্রকাশ পেয়েছে। বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলটি এখন যে কীভাবে চলছে বিএনপির শীর্ষ নেতারাই তা জানেন না। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির কয়েকজন নেতার ফোনালাপের যে রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে তাতে হতাশা আর আশাভঙ্গের সুর স্পষ্ট।
বিএনপির বাইরে থেকেও আগের সহযাত্রীরা এখন একই কথা বলছেন। বিএনপি সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্প ধারার প্রধান বি. চৌধুরীতো বলেই দিয়েছেন, ‘জামায়াতের সঙ্গ না ছাড়লে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই বিএনপি টিকবে না।’
তাহলে বোঝা যায়, বিএনপি ভাঙার অনেকগুলো কারণ এখনও বিদ্যমান। এছাড়া আছে হতাশা, বিদেশ থেকে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরামর্শ করে দল চালানো, সুযোগ সন্ধানীদের ভিড়, নানা মতের ক্লাব-কালচার আর জামায়াতের আগ্রাসন।
বিএনপি ভেঙে নতুন দল বা উপদল করার জন্য তৎপর বিএনপির কয়েক নেতার নাম এরইমধ্যে সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এর বাইরেও কয়েক নেতার দেশব্যাপী গোপন সফরের কথা জানা যায় বিএনপির ভেতর থেকেই। তারা যদি প্রকাশ্য হন, আর তাদের তৎপরতা যদি সফল হয় তাহলে বিএনপির নামে ৪/৫টি উপদল অথবা বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের ঘোষণা বছর জুড়েই চলতে থাকবে। আর যদি কোনও ধরনের বড় টোপ থাকে, যদি সত্যিই আগাম নির্বাচন হয় তাহলে টোপ গেলার নেতার অভাব হবে বলে মনে হয় না।
জামায়াত নিয়ে বিএনপি এখন এক অদ্ভুত আচরণ করছে। তাদের অবস্থা এখন- ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখির মতো’। আর এ থেকে বোঝা যায়, জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা বিএনপির পক্ষে প্রায় অসম্ভব। দল দুটির মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা আছে। তাই যতই কথা হোক, শেষ বিচারে কেউ কাউকে ছাড়তে পারে না।
সব মিলিয়ে বিএনপি এক গ্রহণকাল পার করছে। দ্য ইকোনমিস্ট-এর মতে, ‘বিএনপি অতীতের যেকানও সময়ের চেয়ে এখন খারাপ অবস্থা পার করছে।’ দ্য ইকোনমিস্ট-এর ভাষায়, ‘২০১৪ সালের ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ওপর ভর করে টিকে আছে শেখ হাসিনার শাসনের বৈধতা। ওই নির্বাচনের সময় বিরোধীদলীয় অনেক নেতা ছিলেন কারারুদ্ধ। অনেক আসনে ভোটই হয়নি। বিএনপির বেশির ভাগ নেতা হয় নির্বাসনে, না হয় জেলে। খালেদা জিয়ার মতো যারা জেলে বা নির্বাসনে নেই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে রয়েছে নানা অভিযোগ। দলটির প্রধানমিত্র জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেশিরভাগই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায়। ২০০৬ সালে ক্ষমতা হারানোর পর বিএনপিতে কোনও নতুনত্ব আসেনি। নেতাকর্মীরা বর্তমানে সক্রিয় নন। বিএনপিকে অতীতে কখনও এতটা দুর্বল দেখা যায়নি।’
এই দুর্বলতার নানা কারণ ব্যাখ্যা করা যাবে। অন্যকে দোষারোপ করা যাবে। কিন্তু অন্যকে দোষারোপ করে সবল হওয়া যায় না। নিজেকে সক্ষম করে তুলতে হয় নিজেকেই।
বিএনপিকে তাই মধ্যবর্তী বা আগাম কোনও নির্বাচন ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে বলে আমার মনে হয় না। আমার মনে হয়, আরেকটি নির্বাচন বিএনপির জন্য একই ফল বয়ে আনবে। বিএনপি হয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাথায় ওপর সূর্য ওঠার আগেই বর্জনের ঘোষণা দেবে, নয়তো নির্বাচনের পর কারচুপির অভিযোগ তুলে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে মাঠে থাকবে না। সেই আন্দোলন অন্তত সহিংসতার মাধ্যমে কয়েকদিন বা মাস চালাতে হলে জামায়াতকে লাগবে। আরও একটি পথ আছে, তা হলে আবারও নির্বাচনে অংশ না নেওয়া। হয়তো তখন দ্য ইকোনমিস্ট আবার প্রতিবেদন করবে- ‘দুর্বল থেকে দুর্বলতর বিএনপি।’
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভোট নিয়ে বিশ্বের যেকোনও দেশের নাগরিকদের চেয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞ বলে আমার মনে হয়। তারা হ্যাঁ/না ভোট, সেনাশাসনের ভোট, এক তরফা ভোট, ভোটারবিহীন ভোট, মাগুরা ভোট, ৫ জানুয়ারির ভোট আর ৯০-এ গণঅভ্যুত্থানের পর বহুল প্রশংসিত গণতান্ত্রিক ভোট সবই দেখেছে। ভোট আসলে কোনটা তা তারা বোঝেন। আর সেই ভোট কী করে আদায় করতে হয় তাও তারা জানেন। আদায়ের জন্য দক্ষ ও যোগ্য হতে হয়।
রাজনৈতিক দলকেও কেউ মুখে তুলে খাওয়াবে না। বিএনপি যেন সেই আশা ছেড়ে দেয়। নিজের খবর নিজেকেই জোগাড় করতে হয়। জামায়াতের সঙ্গে জোট করে, বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে থেকে অথবা দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে নিজের দুর্বলতা ঢাকার কোনও সুযোগ নেই। তাতে দুর্বল থেকে দুর্বলতরই হবে বিএনপি। মধ্যবর্তী নির্বাচনের শুধু গল্প নয় ‘আষাঢ়ে গল্পেও’ পরিণত হতে পারে। সুত্র
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩
গান পাগলা বলেছেন: লাস্ট এই পোস্ট টা করছি দেখে আমাকে মডু আংকেল আটকে দিয়েছ।ব্লগে গালাগালি করছি এইটা কন, আর করুমনা।
তবে পোস্ট আটকানোর মানে কি, সামুতে না আসলে কি মইরা যামু, ডুকলামনা আপনাদের ৭০-৮০ জন ব্লগারের ব্লগে।
আপনাদের এরকম মন মানসিকতার কারনেই এখন অনলাইনে ৭০-৮০ জনের বেশী থাকেনা।
অথচ আরো ২ বছর আগেও অল টাইম ২৫০-৩০০ ব্লগার অনলাইনে থাকতো।
আমরা কষ্ট করে লিখি, পড়ি আপনাদের এত ভাবস কেন????