নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট হয়ে আসছে খালেদা জিয়ার পৃথিবী

২৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:২২


শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া যেতে পারলেন না ওমরাহ করতেও। তিনি নিয়ত করেছিলেন পবিত্র মক্কা মেয়াল্লেমা ও মদিনা মনওয়ারায় গিয়ে আল্লাহর ঘর-কাবা শরীফ ও রসুল (স.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকে ওমরাহ হজ্জ পালন করবেন এবং নিজ পরিবার ও দেশের মানুষের কল্যাণ কামনায় মুনাজাত করবেন। কিন্তু তার অভিপ্রায় পূরণ হলো না। এখানে শুধু না যেতে পারার বেদনাই নয় আরো একটি বিশাল প্রশ্ন রয়েছে। আল্লাহ-রসুল না চাইলে কেউ নাকি এই পবিত্র স্থানে যেতে পারে না। এমনকি সংশ্লিষ্ট পীর-আউলিয়াগণ না চাইলে কেউ তাদের মাজার শরিফ পর্যন্ত জিয়ারত করতে যেতে পারে না। ওমরা করতে যেতে না পারায় বেগম জিয়া কেবল মর্মস্থলে আঘাতই পাননি, দেশবাসীর কাছেও তার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শুধু ওমরা করা নয়। নিজ কর্মদোষে ও একইসঙ্গে কৌশলগত ভুলের কারণে খালেদা জিয়া কেবল জাতীয় রাজনীতিতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েননি, আমাদের জাতীয় ভিত্তিমূলের যে কয়টি অহঙ্কারের স্থান রয়েছে সেখান থেকেও ছিটকে পড়েছেন। তিনি এখন আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে পারেন না। শুধু আমরা গর্বিত বাঙালিরাই নয়, পৃথিবীর সকল দেশের নেতা-নেত্রীরা, রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানগণ বাংলাদেশ সফরের আসলে প্রথমেই ছুটে যান সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মোৎসর্গ করেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে। এই মাত্র কদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসেন। ঢাকায় পা দিয়েই বিমান বন্দর থেকে প্রথমেই ছুটে যান সভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ নিবেদনের মাধামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে। কিন্তু গভীর পরিতাপের বিষয় খালেদা জিয়া আজ স্মৃতিসৌধে যেতে পারে না গণরোষের ভয়ে।

পৃথিবীর যেখানে যতগুলো স্পর্শকাতর, জাতীয় গৌরবময় ও পবিত্র স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। আঙ্গিকে-অবয়বে, চেতনায়, প্রেরণায়, ইতিহাস-ঐতিহ্যে এটি একটি মহান ও অনন্ত প্রেরণার উৎসস্থল হিসাবে চিরদীপ্যমান হয়ে আছে মানব সভাতার ক্রনোলজিতে। মহান একুশের প্রথম প্রহর থেকে শহীদ মিনার অযুত-নিযুত জনতার পদচারণায় মুখর ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। দৃষ্টিনন্দন আলপনায় সাজানো হয় গোটা শহীদ মিনার চত্বর। মহান মনীষীদের অমর বাণী দিয়ে সাজানো হয় চতুর্দিকের দেয়ালগুলো। ১২টা এক মিনিট বাজার আগেই শহীদ মিনারে পৌঁছে যায় সামরিক বাহিনীর বাদকদল। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি, সরকারের প্রধানমন্ত্রী, ভিন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ লাখ মানুষের ঢল নামে শহীদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। একুশের প্রথম প্রহর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিউগলে বেজে উঠে মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধাসূচক ‘রেকুইম’ ও ‘রিভইলি’। প্রটোকল অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, স্পিকার, বিরোধীদলের নেতা, তিনবাহিনীর প্রধানগণ, ক‚টনীতিক প্রমুখের পরেই অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসাবে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করার কথা। কিন্তু বিগত একুশের প্রথম প্রহরে দেখা গেল তিনি আসেননি। তিনি তখন গুলশানের নিজ পার্টি কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ব্রত নিয়ে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে ব্যস্ত। তিনি ব্যস্ততার কারণে আসলেন না, না ভিন্নতর কারণ ছিল সেটা বিশ্লেষণের দরকার আছে। ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলে।

শহীদ মিনারে যাওয়ার প্রশ্নে খালেদা নিশ্চয়ই দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ মিজানুর রহমান চৌধুরীর কথা স্মরণ করেছিলেন। মিজান চৌধুরী একজন মন্ত্রীই ছিলেন না, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন খাঁটি সৈনিকও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ফাঁসির আসামি তখন এই মিজান চৌধুরী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দলের হাল ধরেছিলেন- দলকে পুনর্গঠিত করেছিলেন। অথচ জীবনের অস্তাচলে এসে চতুর বণিক এরশাদের ফাঁদে পা দিয়ে সারা জীবনের ললিত আদর্শের সঙ্গে বেইমানি করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলেন, এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন। জনগণ ধিক্কার দিলেন, তাকে মিরজাফর বলে চিহ্নিত করলেন। তবুও সারা জীবনের রাজনীতির পুঁজিকে সম্বল করে তিনি একুশের প্রহরে মহান শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক নিয়ে উপস্থিত হলেন। জাগ্রত জনতার রুদ্ররোষে পড়ে তিনি ফুল দিতে পরলেন না শহীদ বেদিতে। আইনশৃঙ্খলা র²াকারী বাহিনীর সামনেই ক্ষুদ্ধ জনতা তার পরনের পায়জামা-পাঞ্জাবি টেনে-হিঁচড়ে একদম জন্মদিনের পোশাকে শহীদ মিনার থেকে ‘অ্যাবাউট টার্ন’ করে দিয়েছিল। এমন একটি অত্যুজ্জ্বল ঘটনা বিবেচনায় রেখে যদি খালেদা শহীদ মিনারে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তবে তা অবশ্যই একটি সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ ছিল। কারণ তখন সারা দেশজুড়ে পেট্রল বোমার আঘাতে আহত ও নিহতদের এবং তাদের স্বজনদের গগনবিধারী আর্তচিৎকারে বাংলার আকাশ-বাতাস ছিল অনুরণিত। তাই খালেদার শহীদ মিনারে না যাওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল খুবই সঠিক ও সুবিবেচনাপ্রসূত।

এমন এক নিষ্ঠুর রাজনীতির চোরাবলিতে বেগম জিয়া পা ফসকে পড়েছেন যেখান থেকে বেড়িয়ে আসা খুবই কষ্টসাধ্য ও দুরূহ। এই আত্মহননের রাজনীতির কারণে তিনি তার হৃদয়ের পুত্তলি স্নেহের পুত্ররতœ অরাফাত রহমান কোকোর মৃতদেহটা গ্রহণ করতেও যেতে পারেননি, তার জানাজায় উপস্থিত থাকতে পারেনি, কবরে সমাধিস্থ করার সময়ও সশরীরে তার উপস্থিত থাকা সম্ভব হয়নি। এমনকি, পুত্রশোকে কাতর একজন জননীকে শোক ও সহমর্মিতা জানাতে যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী তার পার্টি-অফিস কাম বাসভবনে গেলেন, বেগম জিয়া তখন দু’পা এগিয়ে সহানুভূতিটুকুও গ্রহণ করতে অপারগ হলেন। কারণ তিনি আপোষহীন নেত্রী, তিনি পণ করেছিলেন হাসিনা-সরকারকে না হটিয়ে তিনি কিছুই করবেন না।

২/৩ বারের প্রধানমন্ত্রী, একটি বড় দলের প্রধান বেগম জিয়া কেবলমাত্র আলবদর-রাজাকার-জামাত-শিবির ও কিছু সাইনবোর্ডসর্বস্ব রাজনীতিক দলের কুবুদ্ধি দ্বারাই নয়, তিনি আজ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন এক শ্রেণির পরগাছা উচ্চাভিলাষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও সুযোগ সন্ধানী পেশাজীবীর দ্ধারা। এ কথা দেশবাসীর কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে গত ৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়া তার গুলশান অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে চলে যাওয়ার সময় কোনো প্রকার ঘেরাও কিংবা জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি দেননি। যদিও কিছু জাতীয়তাবাদী ভাবধারার মিডিয়াকর্মীরা এই ধরনের কর্মসূচি দিতে ম্যাডামকে পীড়াপীড়ি করেছিলেন। ম্যাডাম ভিতরে চলে গেলে তার বিশ্বস্থ দু’জন বাক্তি প্রবেশ করে খালেদা জিয়াকে দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি দিতে প্রলুব্ধ করেন। এদের মধ্যে একজন যদিও জীবনের অস্তাচলগামী যাত্রী এক পা পরপারের দিকে, তবুও স্বপ্ন দেখেন বঙ্গভবনের মসনদে বসার। আর একজন হলেন অন্তত ২৫ বছর পেশায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বেকার তবে ম্যাডামের সাথে প্রটোকল-সম্পর্ক আছে বিধায় রাজকীয় জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। এদের কুপরামর্শেই রাজনীতিতে এই দশা ম্যাডামের।

পবিত্র মক্কা-মদিনা, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার থেকে পারিবারিক কবরস্থান পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিচরণ ‘রেসট্রিকটেড’। এখন তার উন্মুক্ত যাতায়াত তার গুলশান ভবন থেকে বকশিবাজার মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল পর্যন্ত। এই কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়েও ম্যাডাম সোজা পথে যান না। সিএসএফ (চেয়ারপারশনের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) মাঝে মাঝে তাকে উল্টা পথে নিয়ে গিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। কদিন আগে কোর্টে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় জাহাঙ্গীর গেট থেকে একেবারে প্রধানমন্ত্রীর গেট ছড়িয়ে বেগুনবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার উল্টা দিকে চলেছে ম্যাডামের গাড়ির বহর। সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

এভাবে উল্টা পথে হাঁটা পরিত্যাগ করতে হবে বিএনপি নেত্রীকে। এভাবে ভুল পথে হেঁটে তিনি কেবল জনদুর্ভোগই বাড়াতে পারবেন, নিজের মকসুদ-মন্দিরে পৌঁছতে পরবেন না এবং এটা কারো কাম্য হতে পারে না।

সুত্র

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০৬

কানাই স্যার বলেছেন: গুরু কই আপনি? আহ! চমতকার লেখেন। কি খাবেন কন??

২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:২৫

ক খ ত্রিমোহনী বলেছেন: যত ছোট হয় ততই ভাল। কারন খালেদা জিয়ার মত খারাপ মানুষের পৃথিবী যত ছোট হবে আমাদের মত অসহায় মানুষের ততই মঙ্গল হবে ইনশা আল্লাহ।

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

অগ্নিঝরা আগন্তুক বলেছেন: shoto manuser jibon niye chinimini khela ei mohioshi nari netri moreo shanti paben kina sondeho

৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

ডার্ক ম্যান বলেছেন: আপোষহীন নেত্রীর তকমাটাও হারাতে বসেছেন কেয়ারটেকার গভঃ এর দাবি থেকে সরে এসে। পানি খাবি ভালা কথা। খা, তোরে কেউ মানা করছে নি। জল ঘোলা করে এত মানুষ পুড়িয়ে নাকে খত যদি দিতি তাহলে ঢং করার দরকারটা কি ছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.