নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচার সাকার : বিএনপির কবে হবে বোধোদয়?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:৩৭


জোরালোভাবে না হলেও আপিলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির বহালের প্রতিবাদ করেছে বিএনপি। এই রায়ে দেশের অধিকাংশ মানুষ যখন আনন্দের জানান দিচ্ছিলো, তখন বিএনপি থেকে বলা হয়েছে- এতে তারা হতাশ, বিস্মিত, মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ। বিএনপি এ প্রতিক্রিয়া একদিকে স্ববিরোধী, আরেকদিকে দুর্ভাগ্যজনক। দলের মুখপাত্র একদিকে বলেছেন, তারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিপক্ষে নন, অন্যদিকে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তাদের ক্ষুব্ধ, মর্মাহত ও বিস্মিত হওয়ার ঘটনা দেশবাসীকে বিস্মিতই করেছে।
তবে প্রতিবাদে হরতাল বা কোনো কর্মসূচি দেয়নি। এটিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে বিএনপির কৌশল বা নীতিগত অবস্থান পাল্টানো মনে করছেন অনেকে। কিন্তু এ ব্যাপারে দলটির মুক্তিযোদ্ধা নেতাকর্মীসহ বিএনপি সমর্থকদের অনেকেরই আশা দলের আরো স্পষ্ট ও স্বচ্ছ অবস্থান। বেপরোয়া ও আত্মম্ভরী এবং মুসলিম লীগ, জাতীয় পার্টি, এনডিপি হয়ে সর্বশেষ বিএনপিতে ঠাঁই করা সাকা চৌধুরী নামের এই রাজনীতিকের চরিত্র ও কর্মকা- বিএনপির অজানা নয়। যুদ্ধাপরাধ ছাড়াও তার নৈতিকতা পরিপন্থী কাজের তালিকা বেশ দীর্ঘ। 'সাকা চৌধুরী' কেবল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর হত্যা, নির্যাতন, জোরপূর্বক ধর্মান্তর, নারী নিগ্রহ চালাননি; স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে বিভিন্ন সময় তিনি বিএনপিকেও বিব্রত করেছেন। তাছাড়া শুরু থেকেই বিচার প্রক্রিয়াকে হেয়প্রতিপন্ন ও বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টার মাধ্যমে আইনের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন। বিএনপিতে সাকার পক্ষ নেয়া কেউ কেউ বলতে চান, তিনি এলাকায় খুব জনপ্রিয়। গুরুতর অপরাধী হলে সালাউদ্দিন কাদের বিপুল ভোটে বারবার নির্বাচিত হতেন না। আদালতে তার আইনজীবীরাও এ যুক্তি দেখিয়েছেন। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। কারণ বিচার হয়েছে তার একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের। রাজনীতির বা ভোটের প্রশ্নে নয়।
২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে সাকা চৌধুরীকে আটকের পর প্রায় তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পর তিনি দেশের উচ্চতম আদালতে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগও পেয়েছেন। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী হয়েও বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন ও বিচার প্রক্রিয়ার এসব সুযোগ পাওয়া বিশ্বের যুদ্ধাপরাধ বিচারের ইতিহাসে বিরল। সামগ্রিক বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়, সর্বোপরি মানুষের সন্তুষ্টির বিষয়টি বোধ- উপলব্ধিতে আসতে আর কতদিন লাগবে বিএনপির?
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে শুরু থেকেই দলটির অবস্থান অস্পষ্ট ও পলায়নপর। বিচার বন্ধে তারা কোনো প্রকাশ্য তৎপরতায় যায়নি, আবার আইনের শাসনের শর্তে যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রয়োজনীয়তায়ও সায় দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরের চেতনার প্রতি বিএনপির মতিগতি এখনো ধোঁয়াশা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা রণাঙ্গনের একজন যোদ্ধা হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধীর প্রতি এমন সহানুভূতির ভূমিকা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। বিএনপির এই কপটতার সুযোগই নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াত।
বিএনপি জনসমর্থনহীন দল নয়। তবু কেন আন্দোলনের মাঠে এ দলটি জনগণকে পাশে পায় না, কেন মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের ভাগ তাদের ভাগ্যে জোটে না_ এ দুটি গুরুতর প্রশ্নের জবাব ইচ্ছে থাকলে বিএনপি নিজেই খুঁজে নিতে পারে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা নানা প্রশ্ন, কিছু ব্যর্থতা, সমালোচনার পরও একটি বিষয় ভালোভাবেই রপ্ত করেছে যে, দেশের অধিকাংশ মানুষই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। এ প্রশ্নে সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। সরকারের এই সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে বিএনপির নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিটিও হালে পানি পাচ্ছে না।
অনেকের মতে, যুদ্ধাপরাধের বিচার এখন না হলেও কোনো না কোনো দিন হতোই। হতেই হতো। এ বাস্তবতা ও অনিবার্যতার ধারে-কাছেও না গিয়ে বিএনপি বরং বাগড়া বাধিয়ে চলছে। তা না করে সায় দিলে রাজনৈতিক সুযোগ হতো দলটির। এতে তাদের নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিটিও গতি পেতে পারতো।
বাংলাদেশে বরাবরই মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক ইস্যু বেশ আবেগঘন। এ আবেগ রাজনীতির নদীতে বান নিয়ে আসে। এটাই বাস্তবতা। কারণ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের লাখো পরিবার ভুক্তভোগী। লাখ লাখ তরুণ শহীদদের মর্যাদা দিতে চায়। আওয়ামী লীগ এ বাস্তবতা অনুযায়ীই দলের নীতিনির্ধারণ করে। বিএনপি এ ক্ষেত্রে চরম বেখেয়ালি। দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকসহ দেশ-বিদেশের আরো অনেকেই তা উপলব্ধি করছেন। ব্যতিক্রম শুধু বিএনপি।
স্বাধীনতার পর কোনো ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকেই চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো রাজনৈতিক সুস্থ প্রতিপক্ষ দাঁড়াতে পারেনি। এরশাদ পতন আন্দোলনের শেষ দিকে অবস্থা বদলাতে থাকে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম দলগুলো সংহত হয়। এরশাদ শেষ পর্যন্ত তাদের আর উপেক্ষা করতে পারেননি। তাতে বাংলাদেশে রাজনীতিতে মোটামুটি বহুপক্ষীয় ভারসাম্য আসে। এর জেরে '৯১ তে ততো না হলেও একটি বহুপক্ষীয়তাই বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু বিএনপি সরকার একবার ১৯৯৬ সালে, আরেকবার ২০০৭ সালে আরেকবার নব্বইয়ে স্বীকৃত ক্ষমতার ভারসাম্যটা ভেঙে ফেলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে এ যাত্রায় আবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে রাজনীতি ও ক্ষমতার ভারসাম্য পাল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সেনা স্বৈরতন্ত্রের পর একচেটিয়া অন্য কোনো তন্ত্র কায়েমের আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকে। সেই ধরনের কোনো সুযোগ বা পরিস্থিতি যেন না হয় তা দেখার দায়িত্ব কম নয় বিএনপির।
সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:০৯

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: খা-লেদা পল্টনে সমাবেশে বলেছিল গোলা আযম, নিঝামী, ছাইডি- এরা যুদ্ব অপরাধী নয়। তিনটা পাকি প্রেমী দালালকে আবার মন্ত্রী বানাইসিল। তাই বিএনপি সাকার বিচারের রায়ে হতাশ হতেই পারে।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৪৩

জাহিদ নীল বলেছেন: বিএনপির হবে বোধোদয়????
Ata somvob na

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.