নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ হাসিনা vs খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের সাফল্য

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২২


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতির সোপানে পৌঁছানোর সাফল্য বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়করা তাকিয়ে আছেন আমাদের দেশের দিকে। সব বাধা অতিক্রম করে দেশ একের পর এক সাফল্যের চূড়া স্পর্শ করায় বিদেশিদের কাছে অনুকরণীয় দেশ হিসেবে বিবেচিত এখন। দেশের এই যে সাফল্য, তার কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। এ কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। ২০০০ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি এমডিজির আটটি সূচকের মধ্যে সাতটিতেই কাক্সিক্ষত সাফল্য বয়ে এনেছে বাংলাদেশ। বাকিটি পূরণের খুব কাছাকাছি অবস্থায় আছে। চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল সূচকে নির্ধারিত সময়ের দুবছর আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে দেশ। এ সময় সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে অগ্রগতি এসেছে চোখে পড়ার মতো। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিস্তারেও সরকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। লিঙ্গ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমানোর সূচকে এসেছে বিস্ময়কর সাফল্য। যার স্বীকৃতিস্বরূপ সাউথ সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন শেখ হাসিনা। পেয়েছেন ইউএনএমডিজি পুরস্কারও। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পেয়েছেন তিনি। পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রীকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের পরবর্তী সাধারণ অধিবেশন চলাকালে তাঁর হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশের এই যে সাফল্য, তা অর্জনে শেখ হাসিনাকে পাহাড় সমান বাধা পাড়ি দিতে হয়েছে। তাঁর মধ্যে রাষ্ট্রপরিচালনার বিচক্ষণতা থাকায় এমডিজি অর্জনে দেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে বলে আমি বিশ্বাস করি। এজন্য তাঁর প্রতি আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন।
আগামীতে তিনি দেশকে আরও সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন। অন্যরাও যদি তাঁর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানো কঠিন হবে না। কিন্তু বাংলাদেশে কিছু মানুষ আছে, যারা দেশের ভালোটা চায় না। তারা দেশের স্বার্থে আঘাত হেনে চলে প্রতিনিয়ত। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জিএসপি বাতিলের জন্য আমেরিকার একটি পত্রিকায় নিবন্ধ লিখে নিন্দনীয় কাজ করেন। জিএসপি সুবিধার তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার জন্য তিনি মার্কিন সরকারকে অনুরোধ জানান। বেগম জিয়ার এই কর্মকা- দেশের মানুষ মোটেই ভালোভাবে নেয়নি। তাঁর এই নিবন্ধ ছাপার পরপরই আমেরিকা জিএসপি বাতিল করে। অধ্যাপক ড. ইউনূস আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে বিশ্বব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ফোন করান পদ্মা সেতুতে টাকা না দেওয়ার জন্য। হিলারির ফোন পেয়েই সাবেক বিশ্বব্যাংক চেয়ারম্যান পদ্মা সেতুতে টাকা দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এই টাকা না দেওয়ার জন্য অজুহাত হিসেবে ভিত্তিহীন দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। বিশ্বব্যাংক একটি টাকাও না দেওয়ার আগেই কীভাবে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হলো এ নিয়ে আমাদের বিস্ময়ের শেষ ছিল না। শেখ হাসিনা পরিষ্কার বলেছিলেন পদ্মা সেতুতে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু এদেশীয় আরও কিছু ষড়যন্ত্রকারী বার বার পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়টি টেনে এনে ধুয়া তোলেন। দেশের সর্ববৃহৎ সেতু যাতে না হয়, তার জন্য ড. ইউনূসসহ অন্যান্য যাঁরা গভীর ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাঁদের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। শেখ হাসিনা সাহসিকতার সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে সেতুর কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে এর কাজ ২৫ ভাগ শেষ হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ব্যাপারে বর্তমান অর্থমন্ত্রী দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। তাঁর এই দ্বিধাগ্রস্ততাকেও প্রধানমন্ত্রী পাত্তা দেননি। পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। দেশ দ্রুত দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা করলেও অনেকেই তাঁর কাজে বাধা তৈরি করছেন। এ কারণে এই বাধাদানকারীদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সমগ্র দেশকে উন্নয়নের আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশে ধনী-দরিদ্রের যে বৈষম্য রয়েছেÑ তা তিনি দ্রুত ঘুচিয়ে দিতে চাইছেন। সবার জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে তিনি বদ্ধপরিকর। আমাদেরকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর বহুমুখী উদ্যোগ রয়েছে। তিনি এও জানেন, জাতিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে কাক্সিক্ষত উন্নতি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দেশের উন্নতির মূলে সবচেয়ে বড় বাধা অনিয়ম-দুর্নীতি। এর মূলোৎপাটনে তিনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু সরকারের ভেতরে ও বাইরে অনেকে আছেন আখের গোছানোতে ব্যস্ত এবং কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কর্মপরিকল্পনাকে পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করছেন। যাঁরা তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মপরিকল্পনাকে মূল্যায়ন করেন না, তাঁরা দেশের কল্যাণমুখী কোনো কর্মকা-ে বিশ্বাস করেন বলে আমি মনে করি না।
প্রধানমন্ত্রী প্রায় দেড় কোটি লোকের রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলার ব্যাপারে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন গত মেয়াদেই। রাজধানীর চারপাশে স্যাটেলাইট শহর গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। ড্যাপ নামের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। রাজধানীর চারপাশে যে সম্প্রসারিত নগর গড়ে তোলার পরিকল্পনা শেখ হাসিনা নিয়েছেন, আমরা চাই তা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। এ নিয়ে কোনো ধরনের কালবিলম্ব ঠিক হবে না। উন্নত বিশ্বের রাজধানীতে দুই থেকে তিনশ’ কিলোমিটার দূর থেকে এসে অফিস করে সে দেশের মানুষ। ওই দেশগুলোতে রাজধানীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ খুবই উন্নত। রাজধানীর চারদিক দিয়েই রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হোক। পাশের দেশ কলকাতায় শত কিলোমিটার দূর থেকে ট্রেনে এসে অনেকেই অফিস করে সন্ধ্যায় আবার বাড়ি ফিরে যান। ঢাকার সঙ্গে এই ব্যবস্থা আরও পোক্ত হওয়া দরকার। আমরা জানি, রেলখাত বিএনপি সরকারের জমানায় পরিকল্পিতভাবে শেষ করে দেওয়া হয়। রেল যোগাযোগকে রুগ্ন করে তোলা হয়। শেখ হাসিনার সরকার গত মেয়াদ থেকেই রেল নিয়ে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে রেলের উন্নয়নমূলক কর্মকা- ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে মনে হয়। এতে গতি আনার জন্য সরকারপ্রধানকে ভাবতে হবে। রেল যাতায়াত খুবই সাশ্রয়। মালামাল পরিবহনে উপযোগী। রেলমন্ত্রীকে পূর্বাঞ্চলের মতো পশ্চিমাঞ্চলকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সারাদেশের রেল যোগাযোগের নেটওয়ার্ক কার্যকর করে তুলতে হবে। এতে দেশের মানুষ ভীষণভাবে উপকৃত হবে এবং দেশও অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ়তা পাবে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসেছে। বিএনপি সরকারের আমলে এই অনিয়ম-দুর্নীতির উৎসব চলতে থাকে। দেশকে উন্নয়নের দিকে না নিয়ে দুর্নীতিতে ডুবে থাকেন খালেদা জিয়া এবং তাঁর ছেলে তারেক রহমানসহ অন্যরা। দেশ থেকে দুর্নীতিবাজদের শেকড় চিরদিনের জন্য উপড়ে ফেলতে হবে। তার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি। আমি এও মনে করি, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনিয়ম-দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স হিসেবে নিয়েছেন। যে দুর্নীতি করবে, তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজ দূষণে দুর্নীতি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং এই দুর্নীতি ও অনিয়মকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে সরকারপ্রধান দুর্নীতি দমনে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে আমি আশা করি। এও প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশ আজ এমডিজি অর্জনে যে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে, আগামীতে আরও সাফল্য দেখাতে পারবেÑ যদি দেশ থেকে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিদায় করা সম্ভব হয়। বর্তমান সরকারপ্রধান সেটি পারবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক দুর্নীতির চিত্র ভেসে ওঠে গণমাধ্যমে। সাধারণ মানুষকে শতভাগ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যখাত থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি উপড়ে ফেলতে হবে। সরকার প্রতি বছর এ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে থাকে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা পায় না। দেশের মানুষ চমৎকার স্বাস্থ্যসেবা পেলে তার কর্মোদ্দীপনা বজায় থাকে।
স্বাধীনতাবিরোধীরা দীর্ঘদিন বাংলাদেশের ক্ষমতায় অবস্থান করায় দেশের মধ্যে নানা বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। সেটা প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বত্রই। বিশেষ করে, দেশের অনেক এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মকা- চালায়নি রাজনৈতিক কারণে। এ কারণে ওইসব এলাকার মানুষ দীর্ঘকাল ধরে উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঞ্চিত অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দিলে দেশকে আরও কাক্সিক্ষত জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি। সরকারপ্রধানের বিশেষ দিকনির্দেশনায় মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগব্যাধি দমনেও উন্নতি হয়েছে চোখে পড়ার মতো। তবে পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত এবং সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সূচকে দেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। আমরা মনে করি এর জন্য দায়ী উন্নত বিশ্ব। প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোর যে হারে সহযোগিতা করার কথা, সে প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করে চলে না।
সূত্রঃ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.