নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেল্লা। তিনি ঢাকায় একটি বিদেশি এনজিওতে কাজ করতেন। বাংলাদেশে এসেছেন এ বছর মে মাসে। হত্যাকারীরা পেছন থেকে পর পর তিনটি গুলি করে তাভেল্লাকে। তাভেল্লা রাস্তায় পড়ে গেলে হত্যাকারীরা কাছেই অপেক্ষমাণ মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। মাত্র চার-পাঁচ মাস আগে বাংলাদেশে আসা একজন ইতালীয় নাগরিককে কারা, কী উদ্দেশ্যে হত্যা করতে পারে সেটি আপাতদৃষ্টিতে অনুমান করা কঠিন। তবে এ সময় যখন ঘটনাটি ঘটল তার প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা জরুরি। পঁচাত্তরের মর্মান্তিক ঘটনা ও তারপর দুই সামরিক শাসক এবং বিএনপি ও জামায়াত-বিএনপির শাসন ও রাজনৈতিক প্রভাবে বাংলাদেশ যেদিকে ধাবিত হচ্ছিল, সেখান থেকে ২০১৫ সালে এসে সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র একটা বড় টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু দাঁড়ায়নি, এই টার্নিং যে সফলভাবে সম্পন্ন হবে তারও যথেষ্ট আলামত ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। আর সেটি যখন সম্পন্ন হবে তখন পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে আবির্ভূত সামরিক সংস্কৃতি ও ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক ধর্মনিরপেক্ষ, উদার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। প্রায় ছয়-সাত বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন অব্যাহত রেখেছে। বিশ্বের বড় বড় গবেষণা ও জরিপকারী প্রতিষ্ঠান, একটি নয় একাধিক, এদের সবারই গবেষণা ও জরিপের ফল অনুযায়ী ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্ভাবনার আকাশ আরো উজ্জ্বলতর হতে যাচ্ছে। গত মে-জুন মাসে নেলসন বাংলাদেশ এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইআরআই- এই দুই প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও শাসনব্যবস্থার ওপর মোট ৯টি সূচকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং অন্যান্য দলের অবস্থান সম্পর্কে ফল প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, বিএনপি ও অন্যান্য দল থেকে সবকটি সূচকে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে আছে। বিশেষ করে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, নারীর ক্ষমতায়ন ও তরুণ প্রজন্মের আস্থা কোন দলের ওপর বেশি, এই প্রশ্নের তিন সূচকে আওয়ামী লীগের স্কোর বিএনপি ও অন্যান্য দলের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিল সময়ের মধ্যে আরেকটি জরিপ চালানো হয় ব্রিটিশ কাউন্সিল ও অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সম্মিলিত উদ্যোগে। তাতে দেখা যায় বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ তরুণ মনে করে তাদের আগামী ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ৬০ শতাংশ তরুণ বলেছেন, দেশ সঠিক দিকে ধাবিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ের ওপর ১৪১টি দেশে জরিপ চালিয়ে সম্প্রতি তার ফল প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৩০তম, সিঙ্গাপুর সবার ওপরে। এ ক্ষেত্রে ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক ইউরোপীয় রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান অনেক ঊর্ধ্বে। এর মধ্যে চলমান জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ পুরস্কার পেয়েছেন, যেটি সবুজ নোবেল হিসেবে খ্যাত। একই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন পুরস্কার দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনাকে। বিশ্ব অঙ্গনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বাড়ছে।
বাংলাদেশকে কেউ জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে পারবে না
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তিনি রাজনৈতিকভাবে ক্রমান্বয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন। তাই শুরুতে যে কথা বলেছি, বাংলাদেশের টার্নিং পয়েন্টের সফলতা ক্রমেই উজ্জ্বল হচ্ছে। একই তালে সামরিক ও ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির সংস্কৃতি ক্রমেই পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছে। সুতরাং সংগত কারণেই এই পরিস্থিতিতে দেশের বড় একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে এদের রাজনীতির সুবিধাভোগী শ্রেণি ও ব্যক্তিবর্গ ভীষণ অস্বস্তিতে আছে। কয়েকটি অস্বস্তি, যা প্রকাশ পেয়েছে তার দুয়েকটি উদাহরণ দিই। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের দুরভিসন্ধি সবার জানা। এ বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মকর্তা মাজাহার খান জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়েন এবং পাকিস্তানে ফেরত যান। অন্যদিকে বাংলাদেশে আইএসআইয়ের প্রধান সংযোগ যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ নিশ্চিত হয়েছে। বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া চিকিৎসা ও ছেলের সঙ্গে শলাপরামর্শ করার উদ্দেশ্যে ১৫ দিনের জন্য লন্ডনে যান। এখন শোনা যাচ্ছে, তিনি কখন দেশে ফিরবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গত ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্বখ্যাত গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের বিষয়বস্তুর সঙ্গে বাংলাদেশের আরো কিছু ব্যক্তির মতামত প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আতাউর রহমানের একটি মন্তব্যের বাংলা করলে তার অর্থ দাঁড়ায় 'আমাদের গণতন্ত্র এখন ধ্বংসের খাদের কিনারে।' ওই রিপোর্টে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মন্তব্য করেছেন, ২০১৪ সালের পর থেকে শেখ হাসিনার দেশ শাসনের আর কোনো অধিকার নেই। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, 'বাংলাদেশ একটি ফুটন্ত পানির মধ্যে শিগগিরই পড়তে যাচ্ছে। কেউ বলতে পারে না কখন পানি ফুটবে, তবে তা ঘটবে।' আরো আছে, সেগুলো কেউ দেখতে চাইলে গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারেন। দেশের অভ্যন্তরে এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের একটি পরাশক্তির সঙ্গে বহুবিধ অংশীদারিত্বে জড়িত থাকলেও আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক স্ট্র্যাটেজিক ও রাজনৈতিক সমীকরণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কটির জায়গায় কোথায় যেন একটা টানাপড়েন লক্ষ করা যাচ্ছে বিগত কয়েক বছর ধরে। এই পরাশক্তির স্ট্র্যাটেজিক ও করপোরেট স্বার্থের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের সামঞ্জস্যতার যে ঘাটতি আছে তার কিছু আলামতও বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে। উল্লিখিত পরাশক্তির স্ট্র্যাটেজিক ও করপোরেট স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে অন্তত চারটি রাষ্ট্র, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া ও সোমালিয়া ভয়ানক উগ্রবাদী জঙ্গিদের কবলে পড়েছে। সুতরাং ওপরে উল্লিখিত দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং এর সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণের দ্বন্দ্ব বা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে কেউ সুবিধা পাবেন, এই চিন্তার প্রভাবে ইতালীয় নাগরিক সিজারে তাভেল্লা খুন হয়েছেন কি না সেটাও ভাবনার বাইরে রাখা যাচ্ছে না। সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে দেশি-বিদেশি কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কি না সেটি অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক 'সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ' নামে একটি ইহুদি প্রভাবিত প্রতিষ্ঠান এই হত্যাকাণ্ড আইএস ঘটিয়েছে বলে যে দাবি করেছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। সাধারণ কোনো ব্যক্তিকে আইএস এভাবে টার্গেট করে না, এটা তাদের কৌশল নয়। এমন উদাহরণ এখনো কোথাও দেখা যায়নি। প্রশ্ন ওঠে, হত্যাকাণ্ড ঘটার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে এ খবরটি প্রকাশ করার তথ্য তারা কিভাবে পেল বা সংগ্রহ করল? আইএস, আল-কায়েদা তো এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নিশ্চুপ আছে। তা ছাড়া আইএস, আল-কায়েদার টার্গেটে যেসব পশ্চিমা দেশের নাম আছে, তার মধ্যে ইতালির নাম নেই। ইতালির নাগরিক তাভেল্লা হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রহস্যপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলক। মনে হয় এ রকম একটা সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল তারা? জোটসঙ্গী জামায়াত, হেফাজত ও ইসলামী ঐক্যজোটের কুৎসিত জঙ্গি উৎপাদনকারী চেহারাটাকে আড়াল করার চেষ্টা আর কি। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে জামায়াত-বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশে স্থানীয় জঙ্গিদের গ্রেনেড-বোমা হামলাসহ তাদের সব ধরনের তৎপরতা ভয়ানকভাবে বেড়ে আতঙ্কজনক অবস্থায় গিয়েছিল, যা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনগুলো ওই সময়ের মতো একটিও বড় অ্যাকশনে যেতে পারেনি। তাদের সব উদ্যোগই প্রস্তুতিপর্বে ধরা পড়েছে, সবাই গ্রেপ্তার হয়েছে। জঙ্গি দমন প্রসঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, জিরো টলারেন্স নীতি একইভাবে সামনের দিনগুলোতে বজায় থাকলে স্থানীয় জঙ্গিরা ক্রমেই আরো কোণঠাসা হয়ে পড়বে, প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাবে। বাংলাদেশের জঙ্গি পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশি-বিদেশি কোনো চক্রের দুরভিসন্ধিমূলক চিন্তা থাকতে পারে। কিন্তু সেটি তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও বাঙালি সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত সহজাত শক্তি দুর্গম দুর্গ হিসেবে কাজ করবে। এই সহজাত শক্তি কোনো বায়বীয় বিষয় নয়, অনেক জায়গা আছে, যার দুয়েকটির কথা নিচে উল্লেখ করছি। এক. বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের মূল বীজ বপনকারী হলেন পঁচাত্তরের পরে রাষ্ট্রক্ষমতায় আবির্ভূত হওয়া দুই সামরিক শাসক। সীমাহীন ত্যাগে অর্জিত সেক্যুলার আদর্শ সংবিধান থেকে বিলুপ্তির কারণে জঙ্গি উৎপাদনকারী ধর্মাশ্রয়ী একাত্তরের পরাজিত রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশে আবার আবির্ভূত হওয়ার সুযোগ পেয়ে জঙ্গি-সন্ত্রাসী উত্থানের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। কিন্তু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক দুই সামরিক শাসককে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী ঘোষণা ও তাদের সব কর্মকাণ্ডকে অবৈধ করার মধ্য দিয়ে জঙ্গি সহায়ক রাষ্ট্রীয় আদর্শের মৃত্যু ঘটেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে ওই মৃত আদর্শের আর পুনরুজ্জীবন লাভের সুযোগ থাকবে না, জঙ্গিরাও জায়গা পাবে না। দুই. মুক্তিযুদ্ধের ওপর লিখিত হাজার হাজার প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, নাটক ও ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল কথা আজ অবাধে তরুণ প্রজন্মকে পথ দেখাচ্ছে। ২০১৩ সালে শাহবাগ চত্বরে যার একটা নমুনা দেখা গেছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে দীর্ঘ সংগ্রাম ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে। এই সংগ্রামের প্রতি বাঁকে বাঁকে রয়েছে অমূল্য রক্তজাগরণী সম্পদ, যার মূল প্রতিপাদ্য হলো ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি, ধর্মান্ধতা ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে হটাও, বিকাশ ঘটাও ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগতি ও গণতন্ত্রের মন্ত্র। পঁচাত্তরের পর ক্ষমতায় আসা দুই সামরিক শাসক ও তাদের প্রতিভূগণ অনেক ওলট-পালট করেছে এবং এখনো চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের ধাক্কায় তারা এখন ক্রমেই পিছু হটছে, মূল স্রোতে তাদের জায়গা থাকবে না। তিন. আইএস-আল কায়েদার অন্যতম অবলম্বন শিয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ। বাংলাদেশ ৮০-৮৫ শতাংশ সুন্নি মুসলমানের দেশ হলেও স্বল্পসংখ্যক শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কখনো কোনো বিদ্বেষ কেউ প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশের মানুষ যে আইএস ও আল-কায়েদাকে ঘৃণা করে তার আরেকটি প্রমাণ মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ কাজ করে। অবাধ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত শোনা যায়নি বাংলাদেশের কোনো নাগরিক সেখানে থেকে আইএস ও আল-কায়েদায় যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের বৃহত্তর মানুষ ধর্ম-অন্তপ্রাণ ও শান্তিপ্রিয়। তাই জামায়াত, হেফাজত, তালেবানপন্থী ইসলামী ঐক্যজোট কিছু ক্যাডার সৃষ্টি করতে পারবে হয়তো, কিন্তু বৃহত্তর মানুষের কাছে কখনো ঠাঁই পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে না। চার. এ প্রসঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তার ইস্যুটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ যদি আইএস ও আল-কায়েদাপ্রবণ হয়ে পড়ে, তবে সেটি ভারতকে সরাসরি ও চীনকে পরোক্ষভাবে চরম নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে ফেলবে। এ ক্ষেত্রে ভারত ও চীনের দৃষ্টিভঙ্গি একই থাকবে, তারা কিছুতেই সেটা হতে দেবে না। জঙ্গিবাদ এখন একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। এটি সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য শক্তিশালী বৈশ্বিক উদ্যোগ ও সমন্বয় প্রয়োজন। কিন্তু নিজস্ব রাজনৈতিক ও করপোরেট স্বার্থের কারণে বিশ্বের বড় শক্তিগুলো এক প্ল্যাটফর্মে আসতে পারছে না। তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের রেশ না কাটতেই রংপুরের মাহিগঞ্জে আলুটারি গ্রামে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হলেন জাপানি নাগরিক হোসে কোমিও। ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা ও জাপানি নাগরিক হোসে হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে সার্বিক বিবেচনায় কোনো কিছুই সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ এককভাবে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা উদাহরণতুল্য। তাই দেশি বা বিদেশি কোনো চক্র যদি দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রের তকমা দিতে চায়, সেটা কখনো সফল হবে না।
সুত্র: Click This Link
©somewhere in net ltd.