| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তামাদী তারুণ্য
আমি একজন বিনোদন সাংবাদিক। দেশের একটি স্বনামধন্য দৈনিকে কাজ করছি..
আমাদের নিজস্ব আটপৌড়ে জীবনের বাইরে দাঁড়িয়ে আমরাই সে জগত নির্মাণ করেছি। কেননা আমরা আনন্দে বাঁচতে চাই। যে জীবন আমাদের কিংবা যে জীবন আমাদের নয় কিংবা যে জীবন আমরা ছুঁতে চাই, আমাদের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি, আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ-ব্যাথার কল্পগাঁথার ভেতর দিয়ে; সুরে, চিত্রে আমরা যে জীবন স্পর্শ করতে চাই, মিলিয়ে নিতে চাই, জানতে চাই জানার অধিক, দেখতে চাই দেখার অধিক- সে জগতই আমরা নির্মাণ করে চলেছি প্রতিনিয়ত- আমাদের সৃষ্টিকলার নানা মাধ্যমে।
তাই, সে এক মহাযজ্ঞ। ভাষাশিল্পী জীবনকে তুলে ধরছেন তার ভাষায়, চিত্রশিল্পী ছবিতে এঁকে ফিরছেন তার জীবন, সুর ভাজছেন সুরকার, গান লিখছেন গীতিকার, চিত্রনাট্যে নির্মাণ চলছে নির্মাতার স্বপ্ন, অভিনয় শিল্পী ঘাম মুছছেন লাইট ক্যামেরা অ্যাকশানে ফাঁকে, চ্যানেলে চ্যানেলে চলছে কেনাবেচা, রিমোটে রিমোটে বদলে যাচ্ছে দর্শকের চোখ, কানে বাজছে সংগীত, শিল্পী গাইছেন, মঞ্চের অন্ধকারে কিংবা আলোয় প্রকাশ্যে বেজে উঠছে জীবনের জয়ধ্বনী!
এসব খবর সংগ্রহ করি আমরা। কেননা রঙিন এ জগতের আকাশে তারকারা যে স্থির নয়। প্রতিনিয়ত ছুটোছুটি। সে তারার পেছনে ছুটছি আমরা। কেননা আমরা জানি, ঘটনাবহুল সে জগতের গল্প শোনার আশায় উদগ্রীব হয়ে থাকছেন আপনারা; আমরা তা টের পাই! তাই আমরাও ক্লান্তিহীন সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছি আপনাদেরই জন্য নির্মিত সংবাদমাধ্যমগুলোতে।
তেমনি একটি সংবাদ মাধ্যম বাংলামেইল২৪ডটকম। অন্যান্য খবরের পাশাপাশি আমরা সমান গুরুত্বের সঙ্গে শিল্প ও বিনোদনের সংবাদ প্রচার করে এসেছি বিগত একটি বছর। পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করেছি অনলাইন বিনোদন সংবাদিকতা ও সংবাদ প্রচারের একটি স্বরূপ উন্মোচনের। শুধু সংবাদই নয় পাঠককে আমরা দিতে চেষ্টা করেছি সংবাদ পাঠের আনন্দ। তার পাশাপাশি আমরা দায়বদ্ধতা অনুভব করেছি সত্য উন্মোচনের। বিনোদন জগতের আলোর পাশাপাশি অন্ধকারকেও আমরা চিহ্ণিত করেছি সমানভাবে।
বিগত বছরের আলোচিত ইস্যুগুলোর অনেকগুলো ইস্যুই উৎপত্তি হয়েছে আমাদেরই সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে। আমরা আপনাদের প্রতিমুহূর্তে পাশে পেয়েছি। পাশে পেয়েছি দেশের গুনী নির্মাতা, শিল্পী ও তারকাদের। আজ বাংলামেইলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকলের কাছে আমরা অভিনন্দন বার্তা পৌঁছাতে চাই।
দুই.
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। আমরা, মানে যারা বিনোদনের খবর প্রচার করে থাকি- অনেককেই তাদের ব্যাপারে নাক সিঁটকাতে দেখেছি, তারা বলেন, ‘আরে বিনোদন সাংবাদিকতা আবার সাংবাদিকতা নাকি।’ আমিও তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলতে চাই, হুঁ আপনারা ঠিকই বলেছেন, আমরাতো বিনোদন সাংবাদিক নই। আমরাতো প্রধানত আনন্দবাহক।
হ্যাঁ পাঠক, পৃথিবীর সকল আনন্দবাজারের খবর আমরা আপনাদেরই বিনোদনের জন্য প্রচার করে থাকি। তাই আমরা বিনোদন সাংবাদিক। এ বিষয়ে কারো মূর্খতার ব্যাপারে নিশ্চয় আপনিও আপোস করবেন না।
তিন.
নানা মাধ্যমে আমরা সংবাদ প্রচার করে থাকি। আপনাদের চোখ যখন পত্রিকার পাতায় গতকালের খবর পড়ছে, তখন আমরাই দৈনিকের বন্ধুদের পাশাপাশি আপনাদের জন্য প্রতিমুহূর্তের খবর নিয়ে হাজির হতে সংকল্পবদ্ধ হয়েছি।
আমরা জানি, অনলাইনে বিনোদনের খবর পড়তে গিয়ে আপনাদের একটু ঝামেলায়ও পড়ে যেতে হয়েছে। কেননা আজ যা আপনি অনলাইনে পড়ছেন তাই কাল ফের ছাপা হচ্ছে দৈনিকের পাতায়। টাকাটাই জলে যাচ্ছে তাই না?
আপনাদের মনে হতে পারে, গতির কাছে হার মেনে যাচ্ছে দৈনিক পত্রিকাগুলো। কিন্তু তা নয়। দৈনিক পত্রিকার বিনোদন সাংবাদিকতা আর অনলাইন পত্রিকার বিনোদন সাংবাদিকতার মধ্যে যে হাজারক্রোশ তফাৎ। সে তফাৎ ধরতে পারছেন না অনেকেই। সে তফাৎ স্পষ্ট হয়ে গেলেই এ ঝামেলা চুকে যাবে এমন প্রত্যাশাই করছি। আপনার কাছেও সংবাদ আর পুরোনো ঠেকবে না পত্রিকা হাতে নিয়ে।
সময় সবসময় পরিবর্তন দাবি করে। সে চাহিদাই পূরণ করতে হয়তো ব্যর্থ হচ্ছেন আমাদের দৈনিকের বিনোদন সাংবাদিক বন্ধুরা। যারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের ভরসা কেবল তারাই যারা অনলাইনের পাঠক নন। আরো কিছুদিন হয়তো তারা তাই শান্ত্বনা দিতে পারেন নিজেদের। কিন্তু প্রতিনিয়ত হাতে হাতে যে পৌঁছে যাচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট! তার সাথে সাথে সংবাদও।
তাই কিছুটা বৈরী মনোভাবও প্রকাশিত হয়ে পড়ছে অভ্যস্ত পাঠক এবং কিছু কিছু দৈনিকের সাংবাদিক বন্ধুদের মধ্যে। সংবাদ প্রদানে তারা তাই বাধাও দিচ্ছেন শিল্পীদের। (জানা গেছে, শিল্পীদের মধ্যে তারা বাধ্যবাধকতা তৈরি করছেন এমন- কিছুতেই আগে অনলাইন পত্রিকায় তথ্য প্রদান করা যাবে না। যে কোনো সংবাদ আগে দৈনিকে দিতে হবে তারপর অনলাইনে।) অথচ এ বৈরীতার বদলে বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হয়ে ওঠার কথা ছিল। কেননা প্রতিমুহূর্তে অনলাইন সাংবাদিকরা যে সংবাদ প্রচার করছেন তার থেকে জন্ম নিচ্ছে পরবর্তি সংবাদের সূত্র। তৈরি হচ্ছে সংবাদের প্রবাহমানতা।
দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক বন্ধুরা কি এ বিষয়গুলো উপলব্ধি করবেন না? নিশ্চই করবেন। অনভ্যস্ত পাঠকও অনলাইন বিনোদন সংবাদের দিকে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন- এ আমরা জানি।
দৈনিক পত্রিকাগুলোর মতো বাংলাদেশে বর্তমানে অনলাইন পত্রিকার সংখ্যাও অনেক। তাই এখানেও মান এবং মানহীনতার প্রশ্ন উঠেছে। বিনোদনের সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রেও উঠেছে বিতর্ক। এসব অভিযোগগুলো হল- চটকদারি সংবাদ, যৌনতাকে পুঁজি করে নানাবিধ স্ক্যাণ্ডালের খবর, গুজবনির্ভর সংবাদ প্রকাশ।
কিন্তু একটা কথা কি আপনি উপলব্ধি করেছেন যে, ভালো খারাপ সবগুলো দৈনিক কিন্তু আপনি না কিনলে আপনার চোখের সামনে এসে হাজির হতে পারে না। তাই আপনি দৈনিককে দুষতে পারছেন না। বিপরীত দিকে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বদলৌতে আপনার হাতের কাছেই পৌঁছে যাচ্ছে যে কোনো অনলাইন পত্রিকার সংবাদ। তাই আপনার কাছে মনে হতে পারে অনলাইন বিনোদন সাংবাদিকতা উচ্ছন্নে গেছে। আসলে কিন্তু তা নয়!
যে অনলাইন পত্রিকাগুলো পরিচ্ছন্ন সংবাদ প্রচার করে থাকে আপনি চাইলেই তা বেছে নিতে পারেন। অপশন তৈরি করাই আছে। শুধু ক্লিক করুন। আপনি এড়িয়ে গেলেই আর অসুস্থ চর্চা থাকবে না। কেননা আপনার প্রত্যক্ষ সমর্থনেই কেবল এগিয়ে যেতে পারে একটি অনলাইন পত্রিকা।
অনলাইন সংবাদমাধ্যমের এ উত্থানের সময়ে আপনার সচেতনতাই পারে সুস্থ একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠিত করতে।
©somewhere in net ltd.