নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্ষণিকের অতিথি

তাহ্িনয়া

সহজ সরল চিন্তা পছন্দ করি এবং সেভাবেই চলার চেষ্টা করি

তাহ্িনয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে অহংকার দমন করবেন ?

২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১০

আমার আগের পর্বের লেখাটিতে উল্লেখ করেছিলাম অহংকার কি এবং অহংকারের লক্ষণগুলো কি কি। আরো উল্লেখ করেছিলাম যে, দ্বিতীয় পর্বের লেখায় আমি উল্লেখ করবো কিভাবে অহংকার দমন করা যায়। ইনশাল্লাহ, চেষ্টা করবো পাঠকের কাছে তা তুলে ধরতে।



যেহেতু অহংকার একটি মরণব্যাধি, তাহলে এই ব্যাধির চিকৎসাও খুব সহজ নয়। মনের সাথে যুদ্ধ করতে হবে অনেক। এটা এমন একটা ব্যাধি যে, দুটো ঔষধ গিলে ফেললেই সেরে যাবে না। যেহেতু ব্যাপারটা আত্মার সাথে সম্পর্কিত তাই এই ব্যাধির চিকিৎসা করতে হবে জ্ঞান বা এলম এবং কর্মানুষ্ঠান বা আমল এর সংমিশ্রনে।



এবারো আমি চেষ্টা করবো কিভাবে অহংকার দমন করতে পারি তা পয়েন্ট আকারে বর্ণনা করতে। তার আগে কোরআনের একটা আয়াত উল্লেখ করলে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হতে পারে বলে মনে করি। “মানুষের বিনাশ হোক, সে কেমন অকৃতজ্ঞ(অর্থাৎ অহংকারী)

কি পদার্থ দ্বারা আল্লাহতায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন(তা জান কি)? আল্লাহপাক তাকে এক বিন্দু শুক্র থেকে সৃষ্টি করেছেন। অনন্তর তার সীমা নির্ধারন করে দিয়েছেন। অতঃপর তার গতিপথ সহজ করে দিয়েছেন। পরিশেষে তাকে মৃতদেহ করে কবরে স্থাপন করবেন। অনন্তর যখন ইচ্ছা তাকে পুনরুত্থিত করবেন।” (সূরা আবাসাঃ পারা ৩০, রুকু ১) এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা তাঁর নিজের ক্ষমতা, মানুষের শুরু, মানুষের মধ্যবর্তীকাল সময় এবং মানুষের শেষটা কি হবে তাই বুঝিয়েছেন।



• সর্বপ্রথম মানুষের উচিত আল্লাহতায়ালার মহিমা ও মাহাত্ম্য সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা এবং নিজেকে চিনে নেওয়া।

• সব সময় লজ্জিত থাকা এইভেবে যে আমার জন্ম একটি তুচ্ছ পদার্থ থেকে।

• মানুষ নিজের ইচ্ছায় বা ক্ষমতায় এই পৃথিবীতে আসেনি। আল্লাহ দয়া করে এই পৃথিবীতে নিয়ে এসেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই পৃথিবীতে তাকে থাকতে হবে - এই চিন্তাটা মাথায় থাকতে হবে। যেহেতু মানুষ নিজের ইচ্ছায় পৃথিবীতে আসে না এবং যাবেও না, সেহেতু নিজের ইচ্ছেমত সে চলতে পারবে না। আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে চলতে হবে। নিজের ইচ্ছেমত চললে মানুষের মনে ভাব আসে যে, “আমার কাজতো আমিই করছি, আমিই একটা কিছু।”

• সব সময় এই আশংকা মনে থাকতে হবে যে, আমার সম্পদ, রূপ, খ্যাতি, স্বাস্থ্য, সন্তান, পরিবার ইত্যাদি যে কোন সময় নিমিষের মধ্যে হারাতে পারি। তাই যা আমি হারাতে পারি তা নিয়ে অহংকার করা ঠিক হবে না।

• আপ্রান চেষ্টা করতে হবে যেন সব সময় নিজের প্রত্যেকটি কথায়, কাজে-কর্মে ও ব্যবহারে বিনয়ী ও নম্র থাকা।

• সব সময় চেষ্টা করতে হবে যে, অহংকারের ব্যাপারে আল্লাহ কি বলেছেন তা মনে রাখা এবং তা বার বার পড়তে হবে। কারণ যতই পড়বো ততই এটা রিমাইন্ডার হিসেবে কাজে দিবে।

• অহংকার যা নির্দেশ করে, তার বিপরীত কাজ করা উচিত। নিজের খেয়ালখুশী বা ইচ্ছাকে দমন করতে হবে। মন চাইলেই সব করা যাবে না।

• যদি মনে অহংকার আসে তাহলে সেই কারণটা নির্ণয় করতে হবে এবং তা প্রতিকারের ব্যাবস্থা করতে হবে। যেমন ধরা যাক, কেউ তার সৌন্দর্যের অহংকার করে। তাহলে তার ভাবা উচিত, এই সৌন্দর্যের স্থায়িত্ব কোথায়? যে কোন মুহূর্তে কোন দুর্ঘটনায় বা রোগের কারণে তার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

• পরকালের ভয় মনের মধ্যে রাখতে হবে। পরকালের ভয় যার মনের মধ্যে থাকবে সে কখনো অহংকারী হবে না।

• সব সময় মনে রাখতে হবে যে, অহংকার করার অধিকার শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালারই আছে।

• নিজের একটা ভাল গুনের কারণেই তো মানুষ অহংকারী হয়। তাই কেউ নিজের কোন কাজের জন্য বা জিনিষের জন্য অহংকারী হলে ভাবা উচিত যে,আমার চেয়ে এই পৃথিবীতে অনেকেই আছেন যারা আমার থেকে বেশী জানেন বা আমার থেকে তাদের বেশীই আছে।

• লোক দেখানো কোন কাজ করা যাবে না। কারণ আমি কাজ করবো, কথা বলবো শুধুমাত্র আল্লাহর খাতিরে, আল্লাহকে ভালোবেসে। যখনই আমি মানুষ কে ইম্প্রেস করতে যাব, তখনি আমার মধ্যে অহংকার আসবে।

• আল্লাহ যা দিয়েছেন তার জন্য সর্বক্ষণ শোকর করতে হবে। তাহলে মন নরম থাকবে এবং অহংকার আসবে না।

• কোন একটা ভাল কাজ করলে এটা কখনোই ভাবা যাবে না যে সেই কাজের জন্য আল্লাহর কাছে বিনিময় বা সওয়াব পাওনা হয়ে গিয়েছে। এতে মনে অহংকার আসে।



আশা করি স্বল্প পরিসরে বুঝাতে পেরেছি। অহংকারী ব্যক্তি কে কেউ পছন্দ করে না, আর আল্লাহতায়ালাও তাকে ঘৃণার চোখে দেখেন। সবাই বিনয়ী, নম্র ও ধৈর্যশীল ব্যক্তিকেই পছন্দ করে। আল্লাহ যেনো আমাকে, আমার পরিবারকে, আপনাকে, আপনার পরিবারকে, সকল মুসলমানকে তাঁর পথে চলার ক্ষমতা দান করেন। আমীন।



আগের পর্বঃ Click This Link

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৭

ইমু ৪৬৮ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৮

তাহ্িনয়া বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ :)

৩| ২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৪

নকীব ভাই বলেছেন: জাজাকাল্লাহ।

২৯ শে মে, ২০১১ রাত ১২:১০

তাহ্িনয়া বলেছেন: কষ্ট করে পড়েছেন, জাযাকাল্লাহ।

৪| ২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১২

ভবঘুরে যোম্বি বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এমন একটা পোষ্ট দেওয়ার জন্য।।

অঃটঃ আজকেই জেনারেল হলাম, আর আপনার পোষ্টেই আমার প্রথম কমেন্ট এবং প্রথম প্লাস:D

২৯ শে মে, ২০১১ রাত ১২:১৬

তাহ্িনয়া বলেছেন: আমার এই লেখা যদি কারো এতটুকুন কাজে লাগে তাহলেই আমি খুশী। ভালো লাগলো জেনে যে আমার পোষ্টেই প্রথম প্লাস আর কমেন্ট দিয়েছেন।ভালো থাকবেন, দোয়া করবেন।:)

৫| ২৮ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৫

মাছুম খানঙ বলেছেন: অনেক অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ । সুন্দর পোষ্টটি করার জন্য। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

২৯ শে মে, ২০১১ রাত ১২:১৮

তাহ্িনয়া বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.