![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোনো শিশুকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় বড় হয়ে তুমি কি হবে, সে ওই প্রশ্নের মানে বুঝুক আর না বুঝুক সে বলে উঠবে সে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। কারণ তার চারপাশ কিংবা পরিবার থেকে সে এটাই শিখেছে। প্রত্যেক বাবা-মার ওই একই স্বপ্ন, ছেলে/মেয়ে হবে ইঞ্জিনিয়ার নাহয় পাইলট। ক'জন বাবা-মা তার সন্তানকে বলে " বড় হয়ে তুই একজন ভালো মানুষ হবি?" না বলে না, কোনো বাবা মা'ই বলে না।
,
,
সন্তানকে স্কুলে যাওয়ার সময় আমাদের বাবা-মা'ই বলে দেয়, "রাস্তায় ঝামেলা দেখলে এড়িয়ে যাবা, অন্যের বিপদে আগাবা না, মারামারি দেখলে দ্রুত সরে যাবা আরও কত কি! অথচ সেই সন্তান যখন রাস্তায় কোপ খেয়ে নিথর দেহে পড়ে থাকে তখন বাবা-মা'রা আবার বুক ফাটিয়ে আর্তনাদ করে আর শাপ-শাপান্ত করি সেই সব মানুষদের যারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার সন্তানের দেহে চাপাতির কোপ দেওয়া দেখেছে! আমাদের বাবা-মা'ই তো একই কথা বলেন কারোর বিপদে এগোবে না, সেসব মানুষরাও তো একই শিক্ষায় শিক্ষিত। কেন এগোবে তারা?!
,
,
আম্মুর সাথে এক আন্টি কথা বলার সময় শুনছিলাম। উনার এক ছেলে, এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তা উনি বলছিলেন,"আমার মেয়ের জামাইটা খুব ভালো, সারাক্ষন আমার মেয়ের কথায় উঠে বসে। কিন্তু আমার ছেলেটা ভালো না, সারাক্ষন বউটার পিছনে ঘুরঘুর করে, বউ যা বলে তাই করে !" মন-মানসিকতাটা আমাদের কোন পর্যায়ে, নিজ স্বার্থ ছাড়া কিচ্ছু বুঝতে চাই না আমরা।
,
,
বিয়ের সময় মেয়ের সাথে জামাইপক্ষের জন্য খুশী হয়ে আমাদের অভিভাবকরা নানা আসবাবপত্র কিংবা নানা জিনিসপত্র এমনকি বিশাল অঙ্কের টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকেন, কারণ একটাই মেয়েটা যাতে শ্বশুরবাড়িতে ভালো থাকে। উনি যে এর মাধ্যমে যৌতুককে পুরোপুরীভাবে এখানে সম্মতি জানাচ্ছেন উনি নিজেও সেটা জানেন না। উনি ভাবছেন এটাতো আমি খুশী হয়ে দিয়েছি, সমস্যা কি এতে ! যা আজকাল আমাদের সমাজে একধনের কুসংস্কারে পরিণত হয়েছে। এতে করে যৌতুক গ্রহনকারীতার লালসা আরো বেড়ে যায়, তার আকঙ্খা আরো তীব্র হতে থাকে !
,
,
সামান্য জুতা চুরকে যেখানে আমরা এতো বড় বড় সাজা দিতে পারি, সেখানে দেশের মেরে খাওয়া হাজার কোটি কোটি আত্মসাৎ করা ব্যক্তিদেরকে আমাদের আন্দাজের মধ্যেও আনতে সক্ষম হই না। যার
ফলে সে অনায়াসেই লুটে খাচ্ছে আমাদের সম্পদ। অথচ দুজনই কিন্তু চুর !
,
,
আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যে সমাজের প্রতিটা ঘরের দেওয়ালে কান পাতলেই শোনা যাবে কারো না কারো চাপা আর্তনাদ!
,
,
সমাজ আমারই ! এই সমাজ, সিস্টেম, সংস্কার সবকিছুই আমাদের অংশ। যেমনটা সমাজ আমরা বানিয়েছি তেমনটাই প্রতিফলন পাচ্ছি। এতে আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নাই। অনেকটা পরিবর্তন হতে হবে আমাদেরকে, অনেকটা ! অন্ধ পথে নিজেকে না বাড়িয়ে আলোর পথ দেখতে হবে। আমরা তো এই সমাজেরই অংশ, সবকিছু শুধু সমাজের দোষ দিয়ে চলে গেলেই তো হবে না। নিজেদের পরিবর্তন সাধন করতে হবে, আমি না পরিবর্তন হলে আমার সমাজটা পরিবর্তন হবে কবে !
©somewhere in net ltd.