নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখি বা দেখার চেষ্টা করি কেননা ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে যদি স্বপ্নও যদি ভেঙ্গে যায় বা ঘুমের ঘোরে দেখা স্বপ্ন যদি মনে না থাকে !!! তাহলে যে নিজেকে একেবারেই হারিয়ে ফেলব আর স্বপ্ন ও কোনদিন-ই বাস্তবে রুপ দিতে পারব না !!! -Tauhidul Islam তানিন

তৌহিদুল ইসলাম তানিন

Be a real Human -> Muslim -> Mumin -> Muhsin by making yourself kind, pious, generous and well-hearted. [ Self Reminder ] যিনি সবসময়য় সম্মান খোঁজেন তিনি অনেক কম ক্ষেত্রেই সম্মানিত হন, আর যিনি এর ধারে-কাছেও যান না, তিনি সবসময়ই অনেক অনেক সম্মানপ্রাপ্ত হন । আর, এটাই ধ্রুব সত্য । :-)

তৌহিদুল ইসলাম তানিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলহামদুলিল্লাহ ! কৃতজ্ঞতা প্রকাশের শুরু এভাবেই.......

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

¶¶¶ জীবন-যুদ্ধে লড়াইরত যে সৈনিককে নিয়ে এই লেখনি রচিত হয়েছিল, তিনি রনে ক্ষান্ত দিয়ে জীবনের সকল দেনা-পাওনা, হিসেব-নিকেশ চুকে, সকল ভুল-ত্রুটির উদ্ধে পরপারের পথে পাড়ি জমিয়েছেন, গত ৫ দিন আগে । ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রজেঊ'ন



আল্লাহ্‌র কাছে এই প্রার্থনা, উনি যেন তার জীবন পথে রচিত সকল ভুল-ত্রুটিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন, কবরের আযাব থেকে অব্যহতি দেন এবং সকল হিসেব-নিকেশের প্রক্রিয়া সহজীকরন করে সবশেষে জান্নাতুল ফেরদাঊস দানে ধন্য করেন । আমীন ¶¶¶






"বিসমিল্লাহির রহ্‌মানির রহিম"

এক বন্ধুর আত্মীয়ের হার্টে তিনটা ব্লক ধরা পড়েছে । বয়স আনুমানিক ৭০। বর্তমানে উনি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । আগামীকাল অপারেশন, ৬ ব্যাগ রক্ত লাগবে । সেই সুত্রে আমার এক বন্ধু আমাকে রক্ত দেয়ার অনুরোধ করলে, অনেকদিন পর এমন প্রস্তাব পেয়ে হাতছাড়া করতে ইচ্ছা হল না তাই সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম (প্রায় ১ বছর আগেও এই বন্ধুর আরেক আত্মীয়ের জন্য রক্ত দিতে গিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে খালি হাতে ফেরত এসেছিলাম, রক্ত না লাগার কারনে । তাই এবার বলে দিয়েছি, রক্ত না লাগলেও জোর করে এক ব্যাগ দিয়ে আসব ! :-) :-) ) আজ সকালে অফিসে হাজিরা দিয়ে বন্ধুসহ সেই হাসপাতালে পোঁছে গেলাম । নিয়মানুযায়ী, রক্ত দেয়ার পূর্বে একটা ফরম পুরন করতে বলা হল । ফরমে প্রাথমিক তথ্য পুরনের পর, কিছু প্রশ্ন ছিল যা কিনা হ্যাঁ/না’র ঘরে টিক চিহ্ন দিয়ে উত্তর দিতে হবে ।



(ক) পূর্বে বা বর্তমানে আপনি কি কোন রোগে আক্রান্ত ?

১) জন্ডিস, ২) ম্যালেরিয়া, ৩) মৃগী রোগ, ৪) হৃদ রোগ,

৫) ডায়াবেটিস, ৬) যৌন রোগ, ৭) এ্যাজমা, ৮) একজিমা,

৯) উচ্চ রক্তচাপ, ১০) কিডনি রোগ, ১১) যক্ষা, ১২) পাইলস,

১৩) ক্যান্সার, ১৪) পেপটিক আলসার, ১৫) টাইফয়েড,

১৬) বাতজ্বর, ১৭) সিফিলিস, ১৮) রক্ত আমাশয়,

১৯) রক্ত জনিত রোগ, ২০) আন্ডুলেন্ট ফিভার, ২১) মিজিলস/ম্যাম্পস ।



(খ) আপনার কি ?

১) ৬ মাসের মধ্যে মেজর অপারেশন হয়েছে ?

২) ৪ সপ্তাহের মধ্যে দাঁত উঠানো হয়েছে ?

৩) ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাক্সিন বা টিকা নেয়া হয়েছে ?

৪) সাম্পতিক ওজন কমে গেছে ?

৫) এলারজি জনিত সমস্যা আছে ?

৬) আকুপাংচার বা কান ফুটো করেছেন ?



(গ) আপনি কি ?

১) রক্ত বা রক্তের উপাদান গ্রহন করেছেন ?

২) ১ সপ্তাহের মধ্যে এসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করেছেন ?

৩) মাদকাসক্ত ?

৪) কোন নেশাযুক্ত ঔষধ / মাদকদ্রব্য গ্রহন করেছেন ?

.

.

.

.

.

.

ঈত্যাদি ।



প্রত্যেকটা রোগের নাম ও প্রশ্নের পাশের “না ঘরে” টিক চিহ্ন দিচ্ছিলাম, আর মাঝে মাঝে কিছু রোগের নাম ও প্রশ্ন দেখে মিটি মিটি হাসছিলাম । বন্ধুটি আমার হাসির কারন বুঝতে পেরে বলল, “আলহামদুলিল্লাহ্‌ বল” কেননা আল্লাহ্‌র রহমতে তোর কোন অসুখ নাই। আমি তাৎক্ষনিক অস্ফুট স্বরে বললাম, আলহামদুলিল্লাহ্‌!



আরও ৬ জন ভাই রক্ত দেয়ার জন্য আসলেন এবং নিয়ম মাফিক সবার থেকে এক সিরিঞ্জ করে রক্ত নেয়া হল পরীক্ষার জন্য । আধাঘন্টা শেষে ফলাফল আসলে, এক ভাই রক্ত দেয়ার জন্য নির্বাচিত না হলে মন খারাপ করে চলে গেলেন যদিও নেক নিয়তে ও আগ্রহ সহকারে এসেছিলেন একজন রোগীর কল্যাণ কামনা করে । কিন্ত তিনি কেন রক্ত দিতে পারলেন না সেই সমস্যা উল্লেখ না করে ডাক্তার উনাকে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিলেন। তখন চিন্তা করলাম, আমিও তো বাদ পড়তে পারতাম কোন সমস্যার কারনে কিন্তু আল্লাহ্‌র অপার মহিমায় তা হয়নি ! আলহামদুলিল্লাহ!



এরপর, বাকি ৫ জনের মধ্যে আমি ও আরেক ভাই রক্ত দিতে এক রুমে প্রবেশ করলাম । আমার সাথের ভাই আমার প্রায় ৫ মিনিট আগে গেলেন রক্ত দেয়ার জন্য এবং যথারীতি আগেই রক্ত নেয়া শুরু হল । আমার চেয়ে ঐ ভাইয়ের স্বাস্থ্য ও উচ্চতা মাশাআল্লাহ ভালো থাকা সত্বেও, কিছুক্ষন পরপর নার্স তার হাত ও রক্তের ব্যাগ নাড়াচাড়া করছিলেন, রক্ত প্রবাহ ঠিক করার জন্য। কেননা; উনার রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল এবং যথেষ্ট সময় নিচ্ছিল । আমার রক্ত নেয়া শেষ হলে, ঐ ভাই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, উনার এত তাড়াতাড়ি হল কিভাবে ! ? উনার প্রশ্ন শুনে আমি মুচকি হাসছিলাম । উত্তরে নার্স বললেন, আমার শিরা স্বাভাবিক ও উনার চেয়ে মোটা, আলহামদুলিল্লাহ্‌!



বের হওয়ার সময় মৃদু হাসছিলাম আর আল্লাহ্‌র কাছে শুকরিয়া আদায় করছিলাম । আলহামদুলিল্লাহ্‌! আলহামদুলিল্লাহ্‌! আলহামদুলিল্লাহ্‌! সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ্‌র এবং সকল কৃতজ্ঞতাও একমাত্র আল্লাহ্‌র নিমিত্তে । মাত্র ২ ঘন্টায় (যাতায়াত ও আনুষাংগিক সহ ৪ ঘন্টা) সামান্য রক্ত দিতে গিয়ে যদি এতগুলো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎস সৃষ্টি হয় তাহলে ২৪ ঘন্টার একদিনে কয়টা হবে ? একমাসে কয়টা হবে ? একবছরের হিসাব করাটাইতো কঠিন হয়ে যাবে ? তাহলে সারাজীবনের কৃতজ্ঞতার উৎসের অংক কষব কিভাবে ??? সুবহানাল্লাহ ! কি করে শোকর আদায় করব ?? অথচ আমরা সারাজীবন অকৃতজ্ঞতার চাদর অন্তরাত্মায় জড়িয়ে মহান আল্লাহকে বেমালুম ভুলে যাই (আমিও এর ব্যতিক্রম নই) ।



আসার সময় উক্ত ঘটনাগুলো উল্লেখ পুর্বক মজা করে বন্ধুটিকে বললাম, আমরা A+ ক্যাটাগরির লোক, তাইতো আমাদের রক্ত “এ পজেটিভ” (A+ve) এবং আমাদের সকল রেজাল্টও পজেটিভ । হাহাহা :-D :-D



____________________________________________________________________________

রচনাকালঃ Tuesday, 12 March 2013 at 00:00

পর্যালোচণায়ঃ ফেসবুক বন্ধু, Farid Miya, Salalah, Oman.



[এই লেখার উদ্দেশ্য কোন ধরনের অহংকারের বহিঃপ্রকাশ নয় । এরপরেও কোনভাবে প্রকাশ পেলে, তা নিতান্তই অনিচ্ছাপ্রসূত এবং তার জন্য সর্বোত্তম ক্ষমাশীল সত্ত্বার কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা কামনা করছি । আস্তাগফিরুল্লাহ]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.