নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লঘু বুদ্ধির লঘু মানব!

তন্ময় সাগর

ব্যাক্কল কথন!

তন্ময় সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ন ডরাই\'

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫০

'ন ডরাই ' মানে সম্ভবত 'ভয় পাই না'।

দুঃখজনক হলেও সত্য ন ডরাই তে আমি 'ভয় পাই না' এমন অর্থবাচক বা দ্যোতনার কিছু পাইনি। সে কথায় পরে আসছি।


ন ডরাই' সম্ভবত বাংলাদেশের এযাবৎকালের মধ্যে নির্মিত হওয়া সেরা মেকিংয়ের মুভি। দৃশ্যায়ণ, ধারণ, কালার কম্বিনেশন সবই এক কথায় অসাধারণ। কয়েকটা জায়গায় তো পুরোই বিস্ময়াভূত হবেন। বাংলাদেশের মুভি দেখছেন কিনা দ্বিধায় পড়ে যাবেন। দৃশ্যায়ণ ও ক্যামেরার মুন্সিয়ানা অনিন্দ্য সুন্দর। মেকিং আন্তর্জাতিক মানের। মানতেই হবে। তবে অকাজের কাজি সেন্সর বোর্ড কোন দৃশ্যগুলো কাটাতে বাধ্য করেছে সেটা আমরা হয়ত আন্দাজ করতে পেরেছি পুরো মুভি দেখে। আমাদের আন্দাজ ঠিক হয়ে থাকলে দৃশ্য কর্তনে মুভির গল্প বয়ানে কোন হেরফের হয়েছে বলে মনে হয় না। তবে, দৃশ্যগুলো না কাটালে হয়ত দৃশ্যগুলোর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আমরা আলোচনা ও মতামত দেবার সুযোগ পেতাম। অবশ্য তখন দৃশ্য কাটা না কাটার এই আলোচনাও থাকতো না হয়ত।

ন ডরাইয়ের প্রচার শুরু থেকে জেনে আসছি দেশে সার্ফিং নিয়ে নির্মিত প্রথম মুভি এটি। সার্ফিং আছে। শুরু হয় সার্ফিং দিয়েই। কিন্তু সার্ফিং এই মুভির উপজীব্য এটা বলা বোধহয় সমীচিন হবে না। ঘটনা হিসেবে সার্ফিং আছে। কিন্তু সার্ফিং উপজীব্য হয়ে উঠতে পারেনি বা সার্ফিং উপজীব্য না এই মুভির৷
নাম তো ন ডরাই। তাহলে ভয় পাই না এমন ঘটনা এই মুভির উপজীব্য? মজার বা দুঃখের বিষয় সেটাও এই মুভিতে পাই না।

গল্পের মুল চরিত্র সার্ফিংয়ে পুরস্কার বিজয়ী সোহেল? পরিবার বা আদতে সমাজের অবদমনের শিকার হয়ে সার্ফিং ছাড়তে বাধ্য হওয়া আয়শা?

সার্ফিং মুল উপজীব্য দাবী করা হয়ে থাকলেও বিপথগামী অমনযোগী শৃঙ্লাহীন সোহেলের সেরা সার্ফার হয়ে উঠার লড়াইটা অতটো সময় পায় নাই মুভিতে। সামান্য সময়ের পরিশ্রমেই সে অসামান্য হয়ে উঠলো এমনটাই মনে হয়েছে। পুরস্কার জিতেও ফেললো। গল্প এখানেই শেষ না। আবার আয়শার ভাল সার্ফিং করা বা ছোট বেলা থেকেই সার্ফিংয়ের প্রতি অগাধ আবেগও শেষ পর্যন্ত জোরালো ভাবে দেখানো হয়নি। ভাইয়ের অত্যাচারে অবদমিত আয়শা ঘরে বন্দি হতে, সার্ফিং ছাড়তে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়েতে বাধ্য হয়। আয়শার মধ্যে আমরা ন ডরাই বা ভয় পাই না এমন কোন কিছু পাই না অন্তত অত্যাচারী স্বামীর গায়ে হাত তুলবার আগ পর্যন্ত। তার আগে অর্থাৎ বিয়েরও আগে পাড়ার কান কথা লাগিয়ে বেড়ানো এক মহিলার আচরনের প্রতিবাদ করতে দেখি আমরা বটে। সেটাও সব হারাবার পর। সামান্যতম। অথচ সমাজ বা পরিবারের অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য না করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়েতে না বসে, সার্ফিং চালিয়ে গেলেই আয়শার ন ডরাই মানে ভয় পাই না মনোভাব প্রকাশ পেতে পারতো। মুভির নামকরনের সার্থকতা, সেই সাথে আয়শার লড়াই সংগ্রামও উঠে আসতো। উঠে আসতো অদম্য মনোভাব। মুভির প্রচারে বিয়ের পোশাকে সার্ফিং বোর্ড হাতে আয়শাকে দেখে আমরা সাধারণ দর্শকের ভেবেছিলাম এটা সার্ফিং ভালবাসা প্রান্তিক এক নারীর লড়াই সংগ্রামের মুভি। সার্ফিংয়ে তার মুক্তি ও বিজয় অর্জন। আদতে মুভিটা কার ও কীসের সেটা মুভি দেখলে আপনি বিভ্রান্ত হবেন। অমনোযোগী ও শৃঙ্খলাহীন জীবন যাপনকারী সোহেলের বিশ্বজয়ী সার্ফার হয়ে উঠার গল্প এই মুভি? না সমাজের অত্যাচারে হার মানতে বাধ্য হওয়া কন্যা আয়শার গল্প এটা?

মাঝে মার্কিন নাগরিক এস্থার সাথে সোহেলের সম্পর্কিত হওয়া, ঢাকায় চলে যাওয়া এসব ন ডরাই নামের গল্পটা যেমন প্রতিবাদের লড়াইয়ের মনে হচ্ছিল সেটার সাথে যায় না৷ যেমনটা, হার মানতে বাধ্য হওয়া আয়শাকে বেমানান লেগেছে ন ডরাই-তে! এতো ভাল মেকিংয়ের মুভির শেষটাও গড়পড়তা সাদা মাটা একেবারে। বলা হয়েছে সত্য ঘটনা অবলম্বনে ন ডরাই নির্মিত। সেই সত্য ঘটনার পুরো বয়ান আমাদের দেখানো ন ডরাই তে থেকে থাকলে, কৌতুহল থেকে যায় সেই সত্য ঘটনার ঠিক কোন জায়গাটা নির্মাতাদের উদ্বুদ্ধ করেছে এমন ঘটনা নিয়ে এতো সুন্দর মেকিংয়ের মুভি বানাতে!

চাটগাঁর ভাষায় হলেও ন ডরাই এক মুহুর্তের জন্য হলে ভাষাগত বিরক্তি তৈরি করবে না আপনার। বরং কোথাও কোথাও বেশি ভাল লাগাবে। কথিত অশ্লীল শব্দ বা বাক্য ব্যবহার বরং বেশি প্রাসঙ্গিক বাস্তবানুগ মনে হয়েছে। আর আয়শা নাম নিয়ে আইনী নোটিশের ঘটনাটি অহেতুক মূর্খতা বা ভিন্ন কোন কিন্তুর কারন বলে মনে হচ্ছে ন ডরাই দেখা শেষ করার পর।

আমাদের চলচ্চিত্র হাটি হাটি পা পা করে একটা পরিণতির দিকে যাচ্ছে। ন ডরাই দেখিয়ে দিলো মেকিং কাকে বলে। ন ডরাই মেকিংয়ের জন্য অনেক পুরস্কার পাবে বা পাওয়া উচিত বলে ধারনা করি। ন ডরাই দেখে আপনি- স্বস্তি শান্তি দুটোই পাবেন। আর গল্পের জন্য ন ডরাইয়ের সমালোচনা করতে থিয়েটারে গিয়ে আপনাকে ন ডরাই দেখতেই হবে।




মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালী সংস্কৃতিতে নারী কতটুকু সামনে পেছনে যেতে পারবে, সেটার লিলমিট আছে; সার্ফিং দিতে বাংগালী মেয়েকে মডার্ণ করার মতো পাগলামীর কথা ১ম শুনলাম।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১২

তন্ময় সাগর বলেছেন: আগে ন ডরাই দেখুন। তারপর মন্তব্য করুন
আপনার মডার্ণ শব্দটির অর্থ ও প্রয়োগ দুটোই বুঝি নাই।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


সার্ফিং মানে নায়িকার শরীর দেখানোর কৌশল হতে পারে; মনে হয়, গার্বেজ টার্বেজ লেখকের ম্যাঁওপ্যাঁও

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৩

তন্ময় সাগর বলেছেন: এক্ষেত্রেও বলতে চাই আগে দেখুন। তারপর কারো উদ্দেশ্য আবিষ্কার কইরেন না হয়।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখবো। এই মুভি দেখার আমার কোনো সখ নেই। আমার স্ত্রী মুভিটি দেখতে চেয়েছেন। ওর খুশির জন্যই দেখব।

৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালী মেয়েকে সুইমিং কাপড় পরায়েছে, এই তো, নাকি কোন বিশাল পন্ডিতি আছে? হাউকাউ

৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩১

স্বপ্নময় স্বপ্নের পথচারী বলেছেন: না ডরাই নামক অশ্লীল ছবি বাংলাদেশে অতি দ্রুতই বন্ধ করা হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.