![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হরতালের সময় সময় বলে বি.আর.টি.সি এসি বাসগুলো প্রায় ফাঁকাই যাচ্ছিলো। মীরের বাসা থেকে আসার সময় বাস যখন ফার্মগেটে থামল তখন একটা মেয়ে এবং একটা ছেলে উঠেছে মাত্র। মেয়েটার পরনে ছিল উত্তরার খুব বিখ্যাত একটা স্কুল এন্ড কলেজের ইউনিফর্ম। কাঁধেই সেই ইন্সটিটিউশনের নাম লেখা।
মেয়েটা আগে আগে আসছিল। এবং ছেলেটা তার পেছনে পেছনে। মেয়েটা এসে আমার পাশের তিন সিটের একপাশে ধপাস করে ব্যাগটা ফেলে বসে পড়ল। ছেলেটাও তার পাশে বসল।
বসতে না বসতেই ছেলেটা হঠাৎ উঠে এসে আমার সামনের ডাবল সিটে বসে পড়ল। উদ্দেশ্য দুজনে পাশাপাশি বসা। মেয়েটাকে তার পাশে বসতে বলল। কিন্তু মেয়েটা সেখানে বসবে না। ছেলেটাও আর উঠে গিয়ে মেয়েটার পাশে বসবে না। দুজনেই একজন আরেকজনকে তুই তুকারি করছে এ থেকে বুঝলাম তারা দুজনেই বন্ধু।
ওদের দুজনের মান অভিমান দেখে ভীষন মজা লাগছিল। অন্যের দূর অবস্থা দেখলে মানুষের স্বহজাত প্রবনতা হেসে দেয়া। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আমারও ভীষন হাসি পাচ্ছিলো। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আমার সেই রহস্যময় হাসিটা দিলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটাও হাসি ফিরিয়ে দিল।
এটা দেখে বেচারা ছেলেটা এবার উঠে গিয়ে মেয়েটার পাশে বসতে চাইলো। মেয়েটা এবার ছেলেটাকে তার পাশে বসতে দিবেনা। তাকে বলল, তুই ওইখানে আগে বসছিস তাই এখন ওখানে গিয়েই বসবি। আমার পাশে বসতে পারবিনা।
বেচারা ছেলেটা মুখ কালো করে আমার সামনের সিটে এসে বসে পড়ল। কিন্তু তার কেন যেন শান্তি লাগছিল না। সে একবার ঘাঁড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছে। আমি হাসছি। মেয়েটাও মিটিমিটি হাসছে।
এমন করতে করতে আমার গন্তব্য চলে আসল। আমি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে। নামার আগে আরেকবার ঘাঁড় ঘুরিয়ে মেয়েটাকে দেখলাম। মেয়েটা তখনও হাসছে... আচ্ছা মেয়েটা কি জানে তার পাশের সিটে মুখ কালো করে বসে থাকা ছেলেটা তাকে কি পরিমান ভালোবাসে? ছেলেটার চোখে আমি যে পরিমান হিংসার আগুন দেখেছি। সে আগুন দিয়ে পুরো পৃথিবীটাকে এক নিমিষে জ্বালিয়ে দেয়া সম্ভব। সেটা যদি মেয়েটা জানতো... সেটা যদি মেয়েটা বুঝতো... (০৬-০২-২০১৪)
©somewhere in net ltd.