![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
ভোর পাচটা মোবাইল ফোনে বিকট শব্দে এলার্ম বেজে উঠলো। আর ঘুমানোর সময় নেই তাই শিরিনা ধড়পড় করে উঠে বসলো। হাতে দুই ঘন্টা সময়। এর মধ্যে রান্না করতে হবে বাচ্চাকে খাইয়ে কাজে যেতে হবে। শিরিনা তার ফুটফুটে সুন্দর মেয়েটার নাম রেখেছে রুমকি। রুমকির বয়স ৫ বছর । ক্লাশ ওয়ানে ভর্তি করেছে বাসার পাশের একটা স্কুলে। ৩ বছর হল শিরিনা গার্মেন্টস এ কাজ নিয়েছে। প্রতিদিন আট ঘন্টা ডিউটি। সকাল সাড়ে সাতটায় বাসা থেকে বের হয়ে যেতে হয়, দুপুর ১টায় লাঞ্চ টাইমে এসে নিজে খেয়ে মেয়েকে খাইয়ে আবার দুইটার মধ্যে গার্মেন্টস এ যেতে হয়। আবার বাসায় ফিরে সন্ধ্যা ৭টায়। এটাই হচ্ছে গার্মেন্টস কর্মী শিরিনার ডেইলি রুটিন ।
শিরিনার বাড়ি নড়াইল জেলার ব্রাক্ষণডাঙ্গা গ্রামে। বাবার নাম রহিমুদ্দীন শেখ পেশায় বর্গাচাষী ছিলেন। দুই বছর আগে মারা গেছেন। শিরিনার বাবা দেখেশুনে ভাল ছেলে সেলিম মোল্লার সাথে শিরিনার বিয়ে দেয়। সেলিম মোল্লা ঢাকায় রিকশা চালিয়ে ভালই রোজগার করতো। বিয়ের সময় শিরিনার বাবা সেলিম মোল্লাকে একখন্ড ধানী জমি কিনে দিতে চেয়েছিলেন যৌতুক হিসাবে। শিরিনার বাবা সেজন্য কিছু টাকাও দিয়েছিলেন সেলিমকে আরো কিছু টাকা জমিয়েছিলেন কিন্তু শিরিনার বিয়ের দুই বছরের মাথায় তার বাবা মারা যায়।পরিবারে আর কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় শিরিনার মা সেই জমানো টাকাগুলি খরচ করে ফেলে। আসলে শিরিনার আরো দুইটি ছোট বোন ছিল তাই। শিরিনার মা তিনজনের সংসার চালাতে গিয়ে জমানো টাকাগুলি খরচ করে ফেলেন।
বিয়ের প্রথম বছর খুব আনন্দেই কেটে যায় শিরিনার। সেলিম মোল্লা খুব হাসিখুশি ছেলে। সেলিম শিরিনাকে নিয়ে একবার চিড়িয়াখানায় বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল । নানান রকম জীবজন্তু দেখে শিরিনার সেকি আনন্দ। শিরিনা আল্লাহে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন এমন একজন ভাল মানুষকে তার জীবনসঙ্গী হিসাবে দেওয়ার জন্য। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাদের একমাত্র মেয়ে রুমকির জন্ম হয়। রুমকির জন্মের ছয় মাসের মাথায় শিরিনার বাবা মারা যায়। এরপরই সেলিম শিরিনাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থেকে। ধীরে ধীরে সেলিমের আসল রুপ প্রকাশ পেতে থাকে। যখন সেলিম জানতে পারে শিরিনার মা জমানো টাকা সব খরচ করে ফেলেছে। তখন সেলিম শিরিনার উপর অত্যাচার শুরু করে দেয়। শিরিনাকে রীতিমত মারধোর করে সেলিম। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। একসময় সেলিম শিরিনাকে ডিভোর্স দেয়।
সেলিমের সাথে ছাড়াছাড়ির পর শিরিনা মেয়েকে নিয়ে অথৈ সাগরে ভাসতে থাকে।শিরিনা ভাবে গ্রামে চলে যাবে আবার ভাবে গ্রামে গিয়ে নিজেই বা কি খাবে আর মেয়েকেই বা কি খাওয়াবে? তার মা এখন মানুষের বাড়ি কাজ করে দুই বোনের ভরন পোষণ করে, তার উপর শিরিনা যদি আবার বাড়ি গিয়ে ওঠে তবে বিষয়টা মোটেই সুখকর হবে না। এসব ভেবে আর বাড়ি যাওয়া হয় না শিরিনার। তার একটা ছোট্ট চেইন ছিল সেটি ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে একটা টিনশেড বাসার একরুম সাবলেট নেয়। আর একরুমে থাকে রুমা ভাবী কাজল ভাই আর উনাদের একমাত্র ছেলে সজীব । কাজল ভাই গার্মেন্টস এ বেশ ভাল পদে চাকুরী করে। রুমাভাবিও গার্মেন্টস এ চাকুরী করতো কিন্তু উনার ছেলে সজীব জন্ম নেওয়ার পর ছেলের দেখাশুনার জন্য অনেকটা বাধ্য হয়েই চাকুরী ছেড়ে দিয়েছেন। কাজল ভাই শিরিনাকে চাকুরি পেতে সাহায্য করে। শিরিনা সারাদিন অফিসে থাকে মেয়ে রুমকি একাই বাসায় থাকে তাই কিছুদিন আগে শিরিনা তার বোন জরিনাকে বাসায় নিয়ে এসেছে । এতে রুমকিরও বাসায় একা থাকতে হয় না আবার শিরিনার মারও কিছুটা কষ্ট লাঘব হয়েছে।
রুমকি দিনের বেলা কখনো খালার সাথে গল্প করে আবার কখনো সজীবের সাথে খেলা করে। রুমকি এখন স্কুলে যায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার স্কুল। রুমকির খালা জরিনা তাকে স্কুলে আনানেওয়া করে।
এভাবেই কেটে যাচ্ছে শিরিনার জীবন। আসলে সব শিরিনাদের জীনব সংগ্রামের গল্পতো এমনি হয়।
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই, অনুপ্রাণিত হলাম
২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯
আটলান্টিক বলেছেন: আপনাকে অনেকদিন পর দেখলাম
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০২
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি সবসময় আছি ভাই
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:১০
মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: ভোর পাচটা মোবাইল ফোনে বিকট শব্দে এলার্ম বেজে উঠলো।
আসলেই ভাই ওদের ফোন গুলা বিকট শব্দ করে!!
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হুম, চায়না ফোনে বিকট শব্দে ই এলার্ম বাজে
৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:১৬
মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: মোল্লা চরিত্রটি যেভাবে দেখিয়েছেন, আসলেই মোল্লারা তেমন কিনা তা যথেষ্ট সন্দেহজনক
রুমকি আর সজীবের বিয়ের দাওয়াত পাব?
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫২
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মোল্লা বংশের নাম, আমাদের গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই মোল্লা বংশের, মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ।
৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:১৭
মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: উনি মোল্লা ছিলেন কামে নাকি নামে?
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: নামে মোল্লা, বেদুঈন ভাই আপনাকেআরো একবার ধন্যবাদ মমনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও লিলিপুটিয়ান সরকারগুলো নাগরিকদের জন্য শিক্ষা ও চাকুরীর ব্যবস্হা করতে পারেনি
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সঠিকই বলেছেন চাঁদগাজী ভাই, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৮
কামরুননাহার কলি বলেছেন: জানিনা সব শিরিনাদের জীবন এমনি হয় কিনা । তবে হয়তো হতোও পারে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: বেশিরভাগ শিরিনাদের জীবন এমনই হয়, আবারো ধন্যবাদ।
৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১২
কামরুননাহার কলি বলেছেন: হয়তো,
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১৭
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি অনেকের সাথে কথা বলে দেখিছি, সবার কাহিনী প্রায় একই রকম।
৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪২
কামরুননাহার কলি বলেছেন: আমিও দেখেছি অনেকের সাথে কথা বলে কিন্তু তাদের জীবন সবারই এক রকম। তাই আর ও সব কিচ্ছু ভাবিনা। শুধু ভাবি এদের কপাল খারাপ, এই টুকো।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এদের বেশিরভাগেরই স্বামী যৌতুকের জন্য ত্যাগ করে চলে যায়, অভাব এদের নিত্যসঙ্গী, এদেরকে সংগ্রাম করেই বেচে থাকতে হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আসলেই প্রতিটি মানুষ জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে।
সেই সংগ্রামে কেউ সুখী হয় কেউ বা দুঃখী।
ভাল লাগলো শিরিনার জীবন-কথন।