| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তারেক_মাহমুদ
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
ফজলুল হক সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন এককাপ চা বানাইতেই এত দেরী হয়! ময়নার মা এক চুলায় ভাত, এক চুলায় তরকারী বসাইছিল তাই চুলা খালি ছিল না, এইজন্য চা বানাতে দেরী হয়ে গেল বললেন আমেনা বেগম। গত ৪০ বছর এমন আচরণ সহ্য করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন আমেনা বেগম তাই এখন আর খারাপ লাগেনা। প্রথম দশ বছর ভিষন কষ্ট পেতেন । অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল আমেনা বেগমের :আমেনা গ্রামের মেয়ে, অল্প শিক্ষিত, এস এস সি পাস করেছিলেন সেকেন্ড ডিভিশনে,ওই সময় সেকেন্ড ডিভিশনে এস এস সি পাশ করা খুবই ভাল রেজাল্ট। তারপরই হক সাহেবের সাথে বিয়ে হয়ে যায় আমেনার । আর পড়াশুনা হয়নি। পাড়ার সবাই আমেনার বাবারে বললো, তোমার মেয়েরতো রাজ কপাল এত ভাল ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে, কত বড় চাকুরী করে। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই আমেনা বুঝলো হক সাহেব মানুষ ভাল হলেও অতিমাত্রায় অহংকারী, এবং কথায় কথায় সবার সাথে দূরব্যবহার করা উনার অভ্যাস। অবশ্য কাজটি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারেন কাজটি ঠিক হয়নি তখনি সরি টরি বলে পার পেতে চান।
বিয়ের প্রথম এক বছরের মাথায় একদিন ইত্তেফাক পত্রিকায় আমেনা রাজ্জাক কবরীর একটা সিনেমার বিজ্ঞাপন দেখে খুব শখ হল ছবিটি দেখার। গ্রামে থাকার সময় আমেনাদের বাড়ির পাশের ওয়ালে সিনেমার পোষ্টার দেখে মন চাইতো সিনেমা দেখতে। পাড়ার ছেলেরা সব দলবেঁধে শহরে যেতো সিনেমা দেখতে। সিনেমা দেখে এসে আমেনার চাচতো ভাই মিলন রসিয়ে রসিয়ে সিনেমার গল্প করতো। সেই থেকে আমেনার হলে গিয়ে সিনেমা দেখার খুব শখ। আমেনা স্বামীকে সাহস করে বলেই ফেললেন নিজের সিনেমা দেখার শখের কথা,শুনে হক সাহেব তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। বললেন তোমাদের মত ছোটলোকের মেয়েদের এরচেয়ে আর কি ভাল শখ হবে। কথাটি শুনে আমেনা ভিষন কষ্ট পেলেন। কোন কথা না বলে রান্নাঘরে গিয়ে কিছুক্ষণ ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদলেন। তারপর চোখ মুছে আবার ঘরের কাজে মনোনিবেশ করলেন। বিকেল বেলা হক সাহেব হাসি হাসি মুখ নিয়ে বাসায় আসলেন, আমেনা বেগমকে বললেন তাড়াতাড়ি রেডি হও, বাইরে যেতে হবে। উনাদের গাড়ি মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে থামলো। সেদিনই আমেনা প্রথম সিনেমা দেখেন। পরে হক সাহেব বাসায় এসে অনেক দু:খপ্রকাশ করেন। সেদিনই আমেনা বুঝতে পারেন হক সাহেব কথায় কথায় দুর্ব্যবহার করলেও মানুষ খারাপ না।
গত পনের বছর যাবত হক সাহেব বাইরের কোন মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন না । শুধুমাত্র আমেনা ব্যতিক্রম, একদিন রাত দুটোর সময় আমেনা কান্নার শব্দ পেলেন। আমেনা চোখ ডলতে ডলতে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন হক সাহেব ছোট্ট শিশুর মত কাঁদছে। তখন আমেনা জিজ্ঞাসা করলেন
কি হয়েছে আপনার?
হক সাহেব বললেন আমি কি খুবই খারাপ মানুষ?
হঠাৎ এমন প্রশ্ন? এরপর হক সাহেব যা বললেন তা শুনে আমেনা আকাশ থেকে পড়লেন :
হক সাহেবের বাসায় এর আগে হালিমা নামের একজন বুয়া ছিলেন।সেদিন আমেনা বাপের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। হালিমা বুয়ার একটা পাচ বছরের ছেলে ছিল তার নাম করিম। করিমও মায়ের সাথে হক সাহেবের বাসায় থাকতো। একদিন হক সাহেব অফিস থেকে এসে দেখলেন করিম ড্রইংরুমের সোফায় ঘুমাচ্ছে। হক সাহেব চিৎকার দিয়ে উঠলেন, এই বান্দির পোলা সোফায় ঘুমাচ্ছিস ক্যান? যা আমার জন্য একগ্লাস পানি নিয়ে আয় । করিম পানি নিয়ে এলো। পানির গ্লাস নোংরা ছিল,তাই হক সাহেব আরো ক্ষেপে গেলেন, প্রচণ্ড জোরে চড় কশে দিলেন করিমের গালে। এবং বললেন যা ভাল করে গ্লাস ধুয়ে পানি নিয়ে আয়। করিম পানি আনতে চলে গেল। হক সাহেব সাথে সাথে নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। এত ছোট বাচ্চার সাথে এতটা খারাফ ব্যবহার করা উচিৎ হয়নি। ভাললেন ছেলেটার কাছে গিয়ে ওকে আদর করে দুটো টাকা দেই চকলেট খাওয়ার জন্য। কি মনে বাইরে দাঁড়ালেন এবং জানালা দিয়ে দেখলেন করিম খুব যত্ন করে গ্লাস পরিষ্কার করছে, ছেলেটার জন্য খুব মায়া হল হক সাহেবের ভাবলেন ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিবেন। এরপর করিম গ্লাসে পানি ভরলো। তারপর যা করলো সেটা হক সাহেব কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেন নি। ছেলেটা প্যান্টের জিপার খুলে গ্লাসে কিছু একটা ডুবালো তারপর গ্লাসটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
হক সাহেব সেদিন দেখলেন একটা পাচ বছরের বাচ্চা কিভাবে ঘৃনার বহিঃপ্রকাশ করে। এই ঘটনার পর থেকে হক সাহেব সম্পুর্ণ অন্য মানুষ। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেন না। এখন আর সেই অহংকারও নেই, তবে আমেনা বেগমের সাথে উনার ব্যবহার আগের মতই। আমেনারও গা সওয়া হয়ে গেছে। স্বামী বরং ভাল ব্যবহার করলে উনার সন্দেহ হয় স্বামীর শরীর ঠিক আছেতো!
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: প্রামাণিক ভাই আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম, আপনার মন্তব্যের প্রত্যাশায় ছিলাম। আপনার ভাল লেগেছে জেনে অনুপ্রাণিত হলাম ।
আমাদের কুকুর লেখাটি পড়ার অনুরোধ রইলো ।
২|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো। শেষটায় পুরাই হাইসালাইলাম।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ সুজন ভাই
ভাললাগে আপনাকে সবসময়ই পাই। আপনি সামুতে সবসময় আমার অনুপ্রেরণাদানকারী ।
৩|
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ভাল লেগেছে গল্পটি। তবে আরও একটু মনোযোগী হতে হবে লেখা ও বানানে।
খারাফ<খারাপ হবে।
ধন্যবাদ।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, এডিট করে দিলাম।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
৪|
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২১
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভালই লিখেছেন।তবে ফিনিসিং আরও ভাল হতে পারত।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ সোহেল ভাই পড়ার জন্য।
৫|
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০৫
শামচুল হক বলেছেন: সুন্দর গল্প খুব ভালো লাগল।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমার ও ভাল লাগলো, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৬|
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০২
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: অসাধারন । গল্পের মাঝে বর্তমান সময়ের বাস্তবিক মিল আছে।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু মামা গল্পতো জীবন থেকেই নেওয়া হয়। মামা আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২০
প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর গল্প। খুব ভালো লাগল।