![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
দশ বছরে শুভকে চারটা স্কুল পাল্টাতে হয়েছে। একটা স্কুলে দুই তিন বছর পড়ার পরই দেখা গেল বাবার বদলীর কারনে অন্য জায়গায় যেতে হয় । কি আর করা! আবার নতুন স্কুল নতুন বন্ধুবন্ধব। পুরানো বন্ধুদের জন্য মন খারাপ হয় শুভর। এভাবেই কেটে গেছে স্কুল ও কলেজ জীবন।
এখন শুভর পড়াশুনা শেষ, ছোটখাটো একটা চাকুরীও জুটিয়ে ফেলেছে। ভ্যালেন্টাইন ডে আসছে, তাই শুভর মনটা খুব খারাপ। শুভ মনে পড়ে গেল তার হারিয়ে ফেলা ভালবাসা সুপ্তিকে। শুভর বাবা চট্টগ্রাম বদলী হওয়ার আগে ঢাকাতে ওরা ভাড়া বাসায় থাকতো। শুভ তখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র, পড়াশুনার ভিষন চাপ। মাঝেমাঝে পড়ার ফাকে বাসার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতো। মানুষের চলাফেরা , ফেরিওয়ালা, ভিক্ষুকদের হাকডাক দেখতো। কখন কোন ফেরিওয়ালা আসবে, কয়টার সময় দুধওয়ালা আসবে সবই শুভর মুখস্থ। মাঝেমাঝে একটা মেয়ে চুল শুকাতে সামনের বাসার ছাদে আসতো,শ্যমলা বর্ণের কিন্তু চোখদুটো কেমন যেনো মায়াভরা। মেয়েটার ছাদে উঠার রুটিনও মুটামুটি মুখস্থ হয়ে গেছে শুভর। ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন একটা পঁয়তাল্লিশ থেকে দুটোর মধ্যে মেয়েটা ছাদে ওঠে চুল শুকাতে। শুভর কলেজ দেড়টা পর্যন্ত, কলেজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে রাস্তায় এক মিনিটও দেরী করে না শুভ, সরাসরি বাসায় চলে আসে। এরপর ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এমন ভাব নিয়ে মেয়েটার দিকে তাকায়, যেনো মেয়েটা নয় রাস্তার ফেরিওয়ালা, এবং ফকিরদের দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছে।
একদিন ভর দুপুরে শুভ কলেজ থেকে এসে দ্রুত নিজেদের বাসার ছাদে উঠলো। মেয়েটা তখন ছাদে চুল শুকাচ্ছিল। মেয়েটা কি মনে করবে সেটা ভেবে ছাদে ট্যাংকির পাশের পানির কল ঘুরাতে লাগলো। যেন মেয়েটা ভাবে বাসায় পানি নেই তাই ছাদে দেখতে এসেছে। কিছুক্ষণ পরই একটা ঢিল পড়লো তাদের ছাদে সাথে একটা কাগজ জড়ানো। কাগজে লেখা,
'আরে মশাই যতই কল ঘুরান আপনি যে আমাকে দেখতে ছাদে উঠেছেন সেটা আমি ভালই বুঝতে পারছি'।
শুভর বুকের ভিতর ৩৫০ ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে গেল।এটাকি স্বপ্ন নাকি সত্যি! শুভ তখন দৌড়ে বাসায় গিয়ে একটা কাগজ কলম নিয়ে এল। শুভ লিখলো,
' দেখুন সত্যি আমাদের বাসার কলে পানি ছিল না তাই দেখতে এসেছি। তবে আপনি সুন্দর সেটা মানতেই হবে। সবচেয়ে সুন্দর আপনার চোখ, কেমন যেন মায়াভরা। আমার নাম শুভ, ইন্টারমিডিয়েট ফাস্ট ইয়ার'
লেখা শেষ করে শুভ কাগজটি ইটের সাথে পেঁচিয়ে পাশের ছাদে ঢিল মারলো। মেয়েটা কুড়িয়ে নিয়ে পড়লো। এর কিছুক্ষণ পর আবার ঢিলের সাথে আর একটা চিঠি তাতে লেখা,
'আমি সুপ্তি, ক্লাস নাইনে পড়ি
অত ভনিতা করেন কেন মশাই? সরাসরি বললেই পারেন আমাকে দেখতে ছাদে উঠেছেন। আপনি ব্যালকনি থেকে আমাদের বাসার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন, আমি ভালই বুঝতে পারি আপনি আমাকে দেখার জন্য ব্যালকনিতে দাঁড়ান।
এরপর শুভ সাহসী হয়ে উঠলো, এবং লিখলো 'ঠিক আছে স্বীকার করলাম আপনাকে দেখার জন্যই ছাদে উঠেছি, কোন সমস্যা?
এই চিঠি পেয়ে কোন জবাব না মিষ্টি হেসে হাত নেড়ে সুপ্তি বাসায় চলে যায়।
সুপ্তিদের বাসা এবং শুভদের বাসা সামনাসামনি, শুভর পড়ার ঘর থেকে সুপ্তির পড়ার ঘর দেখা যেতো। শুভ এখন সবসময় ঘরের জানালা খোলা রাখে, এবং পর্দা সরিয়ে রাখে যাতে মাঝেমাঝে সুপ্তিকে দেখা যায়। পরদিন আবার কলেজ থেকে ফিরেই শুভ ছাদে যায়। কিছুক্ষণ পরেই সুপ্তির চিঠি,
'আরে মশাই অমন করে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকবেন না,গালে মাছি ঢুকবে। আর পড়াশুনায় মন দিন,নইলে ফেল করবেন, ইন্টারমিডিয়েট এর পড়া শুনেছি খুব কঠিন'
শুভ এবার বাংলা সিনেমার নায়কের মত ডায়লগ লিখলো, 'ঠিকই বলেছেন ইন্টারমিডিয়েট এর পড়াশুনা খুব কঠিন, তবে আপনি পাশে থাকলে আমার কাছে কিছুই কঠিন নয়'
এরপর থেকে শুভ পড়াশুনায় খুব মনোযোগী হয়ে উঠলো। সুপ্তিও সামনে এস এস সি পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকলো। তবে প্রতিদিন দুপুর বেলা আধাঘণ্টা বরাদ্দ ছিল সুপ্তির জন্য। এ সময় চিঠি চালাচালিও চলতে থাকলো।
(আগামী পর্বে সমাপ্ত)
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৭
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: জেনে আনন্দিত হলাম, নিরন্তর শুভেচ্ছা করুনাধারা আপু।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪১
আটলান্টিক বলেছেন: বাহ সুপ্তি নামটা যতবার শুনি ততো ভাল লাগে।এই ভাললাগাটা শুরু হয়েছিল হুমায়ুন আহমেদের কালো যাদুকর বইটা পড়ে।আপনার গল্পে হুমায়ুন আহমদের ছায়া রয়েছে ভাইয়া।ভাল লাগলো পড়ে।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কালো যাদুকর পড়িনি, পড়তে হবে মনে হচ্ছে। আপনি সবসময়ই আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকেন । ধন্যবাদ আপনাকে ।
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
ক্লাশ নাইনে পড়ে ইন্টারমিডিয়েটের পড়ালেখার খবর রাখে আজকালের মেয়েরা? ফার্মের মুরগীতে হরমোন বেশী!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হা হা হা মজা পাইলাম ভাইয়া।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: গতানুগতিক গল্প। এক প্রকার ভাল লাগল।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই, শহুরে প্রেমের গল্প গতানুগতিকই হয়,অথবা আমি ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। এক প্রকার ভাল লেগেছে এতেই আমি খুশি।
৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২১
প্রামানিক বলেছেন: সামনের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই, আমার ভালবাসা গ্রহণ করুণ।
৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪
কানিজ রিনা বলেছেন: আমিতো ক্লাস নাইন থেকে ইন্টারের ক্লাসের
বই পড়েছি। যে বই গুল আমার প্রেমিক
দিয়েছিল। প্রেমিক এক সময় স্বামী হয়েছিল
স্বামী থেকে আর প্রেমিক হয় নাই। ধন্যবাদ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কানিজ আপু এটা আমাকে বললেন নাকি, চাঁদগাজী ভাইকে বললেন? আপনার প্রেমের সফল পরিণতি জেনে ভাল লাগলো।
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১২
আটলান্টিক বলেছেন: ক্লাশ নাইনে পড়ে ইন্টারমিডিয়েটের পড়ালেখার খবর রাখে আজকালের মেয়েরা? ফার্মের মুরগীতে হরমোন বেশী
হা হা হা
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গাজী ভাই সবসময়ই বস
৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৩২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সুপ্তি বড়ুয়া জয়ী নামের এক মেয়ে ছিল আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড, তার বাড়িও চট্টগ্রাম। ভালোই চ্যাট হতো আমাদের। প্রেমঘটিত একটা ব্যাপার নিয়ে বেশ ঝামেলায় ছিলো সে। ইদানীং তাকে দেখছি না।
কৈশোরকালের প্রেমে বিরাট আবেগ জড়িয়ে থাকে। মানুষ সারাজীবনেও সে আবেগ-অনুভূতিকে ঝেড়ে ফেলতে পারে না।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সঠিকই বলেছেন কিশোর বয়সের প্রেম মনে দাগ কেটে যায়। যা কোনদিনই ভোলা যায় না। বুঝেছি সুপ্তি নামটা আপনাকে নস্টালজিক করেছে।
৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:০২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি গল্প ভালো লিখেন।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১২
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আনুপ্রেরণা পেলাম রাজীব ভাইয়া, ভাল থাকুন সবসময়।
১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: গল্প পড়ে অনেক ভাল লাগা রেখে গেলাম।
শুভ কামনা রইল।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ কবির ভাইয়া, আপনার প্রোফাইলের ছবিটা বড়ই মায়াময়।
আপানার জন্য ভালবাসা।
১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: পিচ্ছি পিচ্ছি ..... ছবিতে সবার একটু মায়া জন্মানো স্বাভাবিক।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: : আমার মেয়েটাও অতটুকুই তাই মায়া জন্মালো , আমার মেয়েকে নিয়ে লেখাটা নিশ্চয় পড়েছেন, বাবা শিরোনামে দুইদিন আগের পোষ্ট
১২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩০
ব্যর্থ সৈনিকের দিনলিপি বলেছেন: আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৪০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ সৈনিক ভাইয়া, খুব তাড়াতাড়িই দ্বিতীয় পর্ব আসছে
১৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:২২
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: ভাল লেগেছে, কারণ আপনার গল্প পড়ে আমার এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভুত ভাইয়া, আজই আসছে, অপেক্ষায় থাকুন।
১৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩০
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রথম পর্ব পড়লাম।দেখি শেষ পর্বে কি হয়।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১২
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ সোহেল ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩১
করুণাধারা বলেছেন: এ পর্যন্ত পড়ে ভাল লাগল।