![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
মহানায়িকা সুচিত্রা সেনকে নিয়ে আজও আগ্রহের কমতি নেই। আমি সুচিত্রা সেনের এমন একজন ভক্তকে চিনি যিনি কলকাতায় গিয়ে প্রায় ২০ কি. মি. পথ পাড়ি দিয়েছিলেন শুধুমাত্র সর্বশেষ সুচিত্রা সেন যে হাসপাতালে মৃত্যু বরন করেছিলেন সেই বেলভিউ হসপিটালকে এক নজর দেখার জন্য। এবারের বইমেলায় চেনাঅচেনা সুচিত্রা সেন বইটি সুচিত্রা সেনের সেই ভক্তর জন্যই কিনেছিলাম। উনাকে দেওয়ার আগে নিজেই একবার পড়ে নিলাম। তাই এই বইটি সম্পর্কে কিছু কথা লিখতে চাই।
রেহানা আশিকুর রহমান সম্পাদিত চেনা অচেনা সুচিত্রা সেন বইটি ২০১৪ সালে সুচিত্রা সেনের মৃত্যুর পরই প্রকাশিত হয়। সুচিত্রা সেনের জীবনে কিছু জানা অজানা অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে । যেমন সুচিত্রা সেনের জন্ম, বিবাহ, সিনেমা জগত, মৃত্যু,তার প্রিয় মানুষের বর্ণনায় এই অধ্যায় গুলো গভীরভাবে ফুটে উঠেছে।
ব্যক্তিজীবন ও সিনেমায় আগমন:
১৯৩১ সালের ৬ই এপ্রিল মহানায়িকা জন্ম গ্রহণ করেন। তখন তিনি সুচিত্রা নন সেই সময় তার নাম ছিল রমাদাশ গুপ্ত। বাংলাদেশের পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পাবনার সবার কাছেই রমা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। করুণাময় দাশগুপ্ত ও ইন্দিরা দেবীর ৫ম সন্তান ছিলেন সুচিত্রা। পাবনা জেলার একটি সাধারণ স্কুলেই কাটে তার শিক্ষাজীবন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তখনকার বিখ্যাত শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সাথে ১৯৪৭ সালে।
মাত্র ১০ মিনিটের সিদ্ধান্তে রমাদাস গুপ্তের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। আদিনাথ সেন দেখামাত্রই ছেলের জন্য এমন সুন্দরী মেয়ে ঠিক করেছিলেন। বিয়ের পর শ্বশুর আদিনাথ সেন বাংলা চলচ্চিত্রে আসার ব্যাপারে সুচিত্রাকে সহযোগিতা করেন। কারণ তখনকার খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার বিমল রায় ছিলেন আদিনাথ সেনের শ্যালক। তাছাড়া স্বামী দিবানাথ সেনও স্ত্রীকে চলচ্চিত্রে কাজ করার ব্যাপারে উৎসহ দেন। ১৬ বছর দাম্পত্য জীবন শেষে সুচিত্রা ও দিবানাথ সেন আলাদা হয়ে যান। তাদের দুজনের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেন।মুনমুন সেনের দুই কন্যা রিয়া সেন ও রাইমা সেন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। বিবাহ বিচ্ছেদের পর সুচিত্রা সেন আর বিবাহ করেননি। সুচিত্রা সংসার জীবনের শুরুতে গেণ্ডারিয়ায় দিবানাথ সেনের বাড়িতে ছিলেন, পরিবারটি পরবর্তীতে কলিকাতার বালিগঞ্জে স্থায়ী হয়ে গিয়েছিলেন।
সুচিত্রা-উওম ক্যামিস্ট্রি :
বইটিতে কৌশিক পাল বলেছেন : সুচিত্রা-উওম প্রেম করাটাকে এত সুন্দর এত বিশ্বাসযোগ্যভাবে দেখিয়েছেন যে -আসলে বাঙালী চিরকাল উইশফুল প্রেমটাকে বেশী পছন্দ করে। ওদের সেই চাহনি একে অপকে জড়িয়ে ধরার মাধুর্য.
বাঙালী পর্দায় উওম সুচিত্রাকে দেখে ভাবতো ইস আমিও যদি ওভাবে প্রেম করতে পারতাম। ২৫ বছর অভিনয় জীবনে সুচিত্রা ৬০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তার মধ্যে ২৯টি ছবিতেই তিনি উওমের নায়িকা ছিলেন। উওমকুমার নিজেই স্বীকার করেছেন সুচিত্রা না থাকলে উওমের জন্মই হতো না। এক সাংবাদিক একবার উওমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন সবাইতো আপনাকে ফ্লপ মাস্টার জেনারেল বলতো আপনি প্রতিবাদ করেননি? উওম তখন বলেছিল, তাইতো যাচ্ছিল, রমা এসে আমাকে বাঁচিয়ে দিল। উওম আরো বলেছিলেন, তার আগেতো অন্য নায়িকার সাথে প্রেমের ডায়লগ দিতে গিয়ে উত্তাপবোধ করতাম না, সাড়ে চুয়াত্তুর এ সুচিত্রার সাথে অভিনয় করতে গিয়ে বুঝলাম নায়িকা এসে গেছে। সুচিত্রা উওমের সম্পর্ক ছিল যতটা ভালবাসার ঠিক ততটাই শ্রদ্ধার। তাইতো উওম স্বয়ং মেনে নিয়েছিলেন তাদের জুটিটার নাম উওম সুচিত্র নয়, সুচিত্রা উওম। উওম কুমারের মৃত্যুর পর সুচিত্রা শেষ শ্রদ্ধা জানানো জন্য গিয়েছিলেন সমাধি পাশে সেদিন উওমের স্ত্রী সুচিত্রাকে বলেছিলেন, আজও মালাটা তুমিই দেও সারাজীবনতো মালাটা তুমিই দিয়ে এসেছো।
স্বেচ্ছা নির্বাসন:
১৯৭৮ সালে চোখ ধাঁধানো অভিনয়জীবনকে বিদায় জানিয়ে স্বেচ্ছা অবসর নেন সুচিত্রা সেন। ১৯৭৮ সালে তার প্রনয়পাশা ছবিটি মুক্তি পায় ছবিটি তেমন সফল ছিল না। এরপর থেকেই মুলত স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান এই মহা নায়িকা। ৩ যুগ ধরে অন্তরালে থাকার সময় যে কয়জন সুচিত্রা সেনের সাথে দেখা করতে পারেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম,এছাড়া মমতা বন্দোপ্যাধায়সহ খুব অল্প সংখ্যক মানুষের সাথেই দেখা করেন তিনি।
মৃত্যু : ১৭ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে সুচিত্রা সেন কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বইটিতে অনেক বিস্তারিতভাবে সুচিত্রা সেন সম্পর্কে লেখা আছে। বেশী দীর্ঘ লিখলে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে তাই বইটির চুম্বক অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি সুচিত্রা সেনের সিনেমা খুব কমই দেখেছে, যা দুই তিনটি দেখেছি তাতেই মুগ্ধ। আসলে বাংলাসিনেমার ইতিহাসে উত্তম সুচিত্রা জুটির মত এমন রোমান্টিক জুটি আর দ্বিতীয়টি আসেনি। এখনো 'এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো ' এই গানের আবেদন এখনো সেই আগের মতই আছে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আবিদা আপু।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়ে সমৃদ্ধ হলাম।উত্তম-সুচিত্রা জুটির বহু ফিল্মের মধ্যে সপ্তপদী যেন আজও আমার দেখা শ্রেষ্ঠ ছবি।যদিও বিতর্ক চলতেই পারে।
ধন্যবাদ,ভাল থাকুন নিরন্তর।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য, পোষ্ট তৈরি করতে যথেষ্ট শ্রম দিয়েছি যদিও খুব বেশি মানুষ পোষ্টি পড়েনি। উওম সুচিত্রা জুটি বাংলা সিনেমাকে সমৃদ্ধ করেছে। অনেক ভালবাসা নিবেন পদাতিক চৌধুরী ভাই।
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪
আল ইফরান বলেছেন: লেখার পেছনে শ্রম দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
সুচিত্রাকে নিয়ে যদিও কোন আগ্রহ নাই কিন্তু আপনার আগ্রহ দেখে মন্তব্য রেখে গেলাম।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আগ্রহ না থাকার পরও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ইফরান ভাই।
৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
উনাকে নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি, উনার একটা ছবি দেখেছিলাম, মনে হয়
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগলো, অনেক ধন্যবাদ গাজী ভাই।
৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সত্যিই সুচিত্রা রূপে, গুনে, অভিনয়ে মহানায়িকা।
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:০১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: দারুন বলেছেন সুচিত্রা তার অভিনয় জীবনে ভক্তদের মাঝে অপরিসীম ভাললালাগার অনুভূতি তৈরি করেছিলেন। তাইতো আজো ভক্তদের মাঝে বেচে আছেন মহানায়িকা।
৬| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: রিভিউটি দারুণ লাগলো। আমারো প্রিয় ছিল এই নায়িকা।
উপরের মন্তব্যটি ভুলে এখানে হয়ে গেছে, ডিলেট করে দিন।
০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: প্রিয় সুজন ভাই, উওম সুচিত্রা জুটি মানুষের মনের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৬
আবিদা সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ তারেক সুচিত্রা সেনকে নিয়ে লেখার জন্য। আমার খুব খুব খুব প্রিয়। বলা যায় আমার প্রথম প্রেম সুচিত্রা সেন। বান্ধবীরা যখন উত্তম কুমারকে নিয়ে আবেগীয় আলোচনায় ব্যস্ত, আমি চোখ বড় বড় করে সাদা-কালো টিভিতে সুচিত্রা সেনকে দেখতাম। উত্তম কুমারও আমার পছন্দের নায়ক কিন্তু অন্য নায়িকার সাথে যেসব ছবি করেছেন, সেসব ছবিতে উত্তমের দিকে মনযোগ দিয়েছি। আর সুচিত্রা? সাউন্ড অফ করে দিলেও আমি টিভি থেকে চোখ সরাবো না এমনই ফ্যান আমি।
আমার সব সময়ের আরেক প্রিয় নারী অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো।
সুচিত্রা সেন আর মেরিলিনের মতো করে আর কোনো নারী দীর্ঘ সময় আমার মুগ্ধতার ফ্রেমে বন্দি হতে পারেনি।