![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধৈর্য থাকলে পড়ে যান আর না থাকলে শুরুতেই কেটে পড়ুন। তাতে আপনার মূল্যবান সময় বেচে যাবে।
-
প্রশ্ন নং একঃ বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কোন রাজার সাথে যুদ্ধে কুলাইতে না পেরে পিছু হটেছিলেন??
-
প্রশ্ন নং দুইঃ পৃথিবীতে প্রথম যেখানে চুম্বকের সন্ধান মেলে তা হলো এশিয়া মাইনর। এই এশিয়া মাইনরের বর্তমান নাম কি??
-
প্রশ্ন নং তিনঃ মন, প্রাণ ও হৃদয় কাকে বলে এবং মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্ক কি??
-
আপনি গ্রাম থেকে শহরে গেছেন অথবা শহর থেকে গ্রামে। যেহেতু আপনি মানুষ সেহেতু প্রাকৃতিক প্রয়োজন হতে পারে। এখন কথা হইলো এমতাবস্থায় আপনি কি করবেন??
-
শহরে হলে শর্টকাট টেকনিক হলো আশেপাশে পাবলিক টয়লেট আছে কি না কাউকে জিজ্ঞেস করা। আর যদি না থাকে তাহলে জিজ্ঞেস করুন আশেপাশে হাসপাতাল বা ক্লিনিক আছে কি না! যদি থাকে তাহলে ফুরুত করে চলে যান। কারন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে টয়লেট গুলি খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং ফ্রী তে কাম সারতে পারবেন।
-
আর যদি গ্রামে হয় তাহলে কাউকে জিজ্ঞেস করুন আশেপাশে মসজিদ কোথায়। কারণ, প্রতিটি মসজিদে প্রসাব পায়খানা সহ ওজু করার সুব্যবস্থা থাকে। এছাড়াও গ্রামে কারো বাড়িতে গিয়ে আপনার প্রাকৃতিক সমস্যার কথা বললে তারা যথেষ্ট পরিমান হেল্প করবে। কারন তারা শহরের মানুষের মত এত কনজারভেটিভ না।
-
আসলে আজকের স্ট্যাটাসটা এলোমেলো। লেখার সময় কেন জানি সিকোয়েন্স মেইন্টেইন করতে ইচ্ছা করতেছে না। মনে যা আসতেছে তাই লিখে যাচ্ছি।
-
শেখ ইয়াসির কাদ্বী বলেছিলেন-
'অন্যদের ভুল থেকে শিক্ষাগ্রহণ করুন'
-
কিছু বড় ভাই আছে যাদের ভুল ধরিয়ে দিলে খুশি হয়ে আপনাকে ছোট ভাই মনে করে ধন্যবাদ দিবে এবং সে তার ভুল টা শুধরে নিবে।
আবার কিছু বড় ভাই আছে যদি তাদের ভুল ধরিয়ে দেন তাহলে আপনাকে একটা ধমক দিবে এবং বলবে, 'আমার চেয়ে তুমি বেশি বুঝো নাকি!'
-
কিছু ছোট ভাই আছে যাদের আপনি ভুল ধরিয়ে দিলে খুব খুশি হবে সামনাসামনি সরি বলে লজ্জা পাবে এবং নিজের ভুল শুধরে নিবে এবং আপনার একজন ভক্তবৃন্দে পরিণত হবে।
আবার কিছু ছোট ভাই আছে তাদের ভুল ধরিয়ে দিলে সরাসরি উল্টা রিয়েকশন করতেও পারে আবার না করতেও পারে কিন্তু আপনি চলে যাওয়ার পর বলবে, 'আইছে বড় ভাই সাজতে! নিজে কত ভুল করে তার হিসাব নাই! অন্যের ভুল নিয়া উনার যত মাথা ব্যথা'
-
আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন-
'দুটি জিনিস অসীম: মহাবিশ্ব এবং মানুষের অজ্ঞতা।'
-
জানিনা আপনারা এমন সমস্যার সম্মুখীন হইছেন কি না! হয়তো অনেকে হইছেন অনেকে হন নি। আমি মুটামুটি সবগুলিই দেখেছি। আর বর্তমান সমাজে এর চেয়েও খারাপ কিছু হয় জুনিয়র সিনিয়িরের মাঝে।
-
রাসুল (সাঃ) বলেছেন-
"যারা বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করেনা তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।"
-
এখন বিষয় হলো ভুল শুধরানো নিয়ে। মানুষ মাত্রই ভুল করে। আমরা কেউ নবী রাসুল নই। আমরা ভুলের বাইরে নই। ভুল আমাদের হতেই পারে। আমার কাছে যেটা ঠিক অন্যের নিকট সেটা ভুল। তাই কারো ভুল চোখে পড়লে ঠাস করে ভুল ধরিয়ে দিলেই হবে না। ভুল ধরাতে হবে আন্তরিকতার সাথে যেন সে খুশি মনে তা গ্রহণ করে।
-
আর নিজেদেরও উচিৎ কেউ ভুল ধরলে সাথে সাথে উল্টা রিয়েকশন না করা। আগেই বলেছি মানুষ মাত্রই ভুল হয়। তাই কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে তা খুশি মনে গ্রহন করে শুধরে নিতে হবে। অন্যথায় আপনি ভুল করতে করতে ভুলের মাঝে পড়ে ঘোল খেয়ে যাবেন।
-
অন্যের পরামর্শ মেনে না নেওয়ার অন্যতম কারন হলো ইগো। ইগো ঝেড়ে ফেলার জন্য সবার আগে যেটা করতে হবে তা হলো সবকিছুকে সবসময় নেগেটিভ চোখে না দেখে পজিটিভ ভাবে নেয়ার অভ্যাস করতে হবে। আন্তরিক ও বিনয়ী হতে হবে। ওকে ছাড়াও আমার চলবে এই ধরনের সস্তা চিন্তা না করে বুঝতে হবে সে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী, তার মূল্যায়ন করতে হবে। আপনি অনেক স্মার্ট হতে পারেন কিন্তু অন্যজনও যে কিছু বিষয়ে আপনার থেকে বেটার হতে পারে সেটা মেনে নিতে শিখুন। ইগো আজই ঝেড়ে ফেলুন, কারণ এটা এক ধরনের সাইকোলজিক্যাল রোগ।
-
শেখ সাদী বলেছিলেন-
"তুমি যদি উচ্চ সম্মান লাভ করিতে চাও তবে অধীনস্থ ব্যক্তিকে নিজের মতো দেখতে অভ্যাস করো । তাকে সামান্য মনে না করিয়া সম্মান করিবে।"
-
টেনিসন বলেছিলেন-
"যে -সম্মান করতে জানে না, সে কিছুই করতে জানে না"
-
কবির সাথে তাল মিলিয়ে বলতে চাই-
"এই করিনু পণ মোরা এই করিনু পণ,
ফুলের মতো গড়বো মোরা মোদের এ জীবন।"
-
কেউ আবার বলতে পারেন 'ভাই আপনি তো ছোট ও বড় নিয়া কথা কইলেন কিন্তু সমবয়সী নিয়া তো কিছু কইলেন না'
-
আসলে সমবয়সী বলতে যাদের সাথে আমাদের উঠাবসা হয় তাদের অধিকাংশকে আমরা ফ্রেন্ড হিসেবে ধরি। এই সমবয়সীদের নিয়ে কিছু বলা যাবে না। কিছু বললে পরে আবার চাকরী থাকবে না।
-
যাইহোক বলা যেহেতু শুরু করছি সেহেতু শেষ করাও দরকার। সমবয়সী এক বন্ধুর নিকট অপর বন্ধুর সব ঠিক আবার বেঠিক। এটা আবার কেমন হইয়া গেলো না কথা টা! মূল পয়েন্টে আসি, আপনি একটা পাপ/অপরাধ করলেন এবং যদি বন্ধুর নিকট সল্যুশন চান তাহলে সে বলবে 'ধুর বেডা এসব কিছুই না, বয়স কালে কম বেশি সবাই দুই একটু আকাম কুকাম করে। তুই টেনশন নিস না।'
-
আবার এমন বন্ধু আছে আপনি একটা ভাল লেখা লিখলেন বা ভাল কিছু করলেন। আপনার বন্ধু আপনাকে বলতে পারে 'হ তুমি মহাভারত জয় করে ফেলছো! এডা এমন বড় কিছু না, চাইলে যে কেউ করতে পারে।'
-
অর্থাৎ বন্ধুরা একেকজন একেক রকম হতে পারে। এক বন্ধু আপনার ভুল ধরিয়ে দিবে এবং ভুল শুধরানোর উপায় বাতলে দিবেন। এমন বন্ধুও আছে আপনি ভুল করছেন সে আপনাকে আরো ভুল করার জন্য উৎসাহ দিবে। আবার এমন বন্ধু আছে আপনি ভুল না করলেও সে আপনার ভুল ধরার জন্য উৎ পেতে থাকবে।
-
সমবয়সীদের নিকট আর যাই করুন অন্তত ভাব নেওয়া যাবে না। ধরেন আপনি অনেক মেধাবী বা অনেক বড় নেতা অথবা অনেক টাকার মালিক। আপনি এই গুণের যেকোনো একটি বা সব গুলিই অধিকার করতে পারেন। আর এগুলা অধিকারী হয়ে অনেক সময় অহংকারী হয়ে যেতে পারেন। যার ফলে সমবয়সী বা বন্ধুদের নিকট ভাব ধরতে পারেন। যদি ভাব ধরেন তাহলে মনে রাখবেন আপনি সবকিছু পেলেও জীবনে কখনো প্রকৃত বন্ধু পাবেন না। কারন, অহংকারীদের প্রকৃত বন্ধু থাকে না।
-
ডেল কার্নেগীর অনুপ্রেরণামূলক বই যারা পড়েছেন সেখানে একটি বিখ্যাত লোকের একটা উক্তি পাবেন। সেই বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তি বলেছিলেন, "আমি যেই হই না কেনো আমি আমার বন্ধুর নিকট কিছু নই।" অর্থাৎ বন্ধু যেমন আপনাকে ঠিক তেমন হতে হবে। কোনো অহংবোধ থাকা চলবে না। শুধু বন্ধু না ছোট বড় কারো নিকট অহংকার প্রদর্শন করা যাবেনা। মনে রাখবেন, "অহংকার পতনের মূল।"
-
বন্ধুদের কথা যেহেতু আসছে তাহলে বাকি প্যাঁচাল পারার আগে আমার বন্ধুদের গল্প শুনাইয়া যাই। আজকাল টিন এজার পোলাপানরা সে গুলিকে কুক এন্ড বুল স্টোরি বলে উড়িয়ে দিবে।
-
হাই স্কুলের শুরুতেই মোবাইল হাতে পাই। ক্লাসে সবার কাছে মোবাইল ছিল না। ২০/৩০ পার্সেন্ট পোলাপাইন মোবাইল ইউজ করতো। আর বেশির ভাগ ফ্যামিলি পোলাপাইনদের মোবাইল ধরতে দিত না। আমরা যে কয়জন ইউজ করতাম সবাইর কাছে সবাইর নাম্বার ছিল। আর প্রায় সবাই একই কোম্পানির সিম ইউজ করতাম। তাতে টাকা কম কাটতো এবং মাঝে মাঝে অফার পেতাম।
-
একবার কি হলো এক নতুন সিম কোম্পানি আসলো আমাদের স্কুলের এখানে। তারা একটা অফার দিয়েছিল নতুন সিম কিনলেই ১২০০ মিনিট এবং ১২০০ এসএমএস ফ্রী। এই মিনিট কই ফুরাইবো এক মাসে! তাই আমরা সবাই মাঝে মাঝে কল কনফারেন্সে আসতাম আর একেকজনের পর একেকজন বকর বকর করতাম। আজকাল ফেইসবুকের গ্রুপ কলের মতই ছিল। আমরা একবার ১৪ জনের উপরে কল কনফারেন্সে কানেক্টেড হয়েছিলাম এবং সেই কলের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৩ ঘন্টা।
-
আমাদের আরেক দুই বন্ধু এই মিনিট শেষ করেছিল দারুন এক পদ্ধতিতে। দুজনে প্রাইভেটে এবং স্কুলে আসার সময় ও যাওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে দুইজন চলে যেত এবং ফোনে ফোনে দুজন গল্প করতে করতে আসতো এবং যেতো। এটা যেদিন শুনেছিলাম সেদিন কি পরিমান যে হেসেছিলাম তা বলার বাইরে। এরপর আসি এসএমএস এর কথায়। তখন এক টাকা দিয়া ১০০ এবং আড়াই টাকা দিয়া ৫০০ এসএমএস কিনা যাইতো। আমার প্রতিদিন ১০০ এসএমএসে হইতো না। আমরা মোবাইলের দিকে না তাকাইয়া মেসেজ লিখতে পারতাম যা এই যুগের পোলাপাইনরা পারব না। কারন, এই যুগের পোলাপাইনরা বটম ওয়ালা মোবাইল চালায় না।
-
আমাদের কিছু বন্ধু ছিল যারা নতুন সিম কিনে আমাদের সবাইরে মেসেজ করতো মেয়ে সেজে। অর্থাৎ মেসেজের ধরন এমন ছিল যে যেন আমরা তাকে মেয়ে মনে করে মেসেজ করি। আর যেই বন্ধু লুতুপুতু মেসেজ পর্যন্ত এগিয়ে যেতো সে খাইতো ধরা। অন্যান্য বন্ধুদের সামনে এটা নিয়ে বেশকিছু দিন মজা চলতো। আর ধরা খাওয়া বন্ধু লজ্জায় লজ্জিত হতো।
-
ঐটা ছিল এনালগ যুগের ফেইক সিম। আর এখনকার যুগের পোলাপাইনরা চালায় ফেইক আইডি। আসলে নতুন করেই কোনো কিছু আসেনি। এই ফেইক জিনিস টা আগেও ছিল। পুরাতন যুগের প্যাঁচাল পারার আগে ফেইক আইডি কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কি কি তা উদাহরণসহ বুঝিয়ে লিখো এবং উহা চালানোর উদ্দেশ্য কি তা একটু দেখে আসি।
-
ফেইক আইডি বলতে সোজা কথায় বলা যায় যে নিজের নাম ব্যবহার না করে অন্য কোনো নামে আইডি চালানো। আর ছদ্মনাম বলতে বুঝায় 'কোনো ব্যক্তি বা ক্ষেত্রবিশেষে কোনো গোষ্ঠীর স্বগৃহীত ও স্বব্যবহৃত কাল্পনিক নাম।'
-
ফেইক আইডি মূলত তিন প্রকার। নিম্নে উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো-
-
১. সম লিঙ্গের ফেইক আইডি। অর্থাৎ ছেলে বা মেয়ে হয়ে নিজের নামে আইডি নাম না দিয়ে অন্য কোনো ছেলে বা মেয়ের নামে আইডি নাম দিয়ে চালানো। যেমনঃ শফিক নিজের নাম না দিয়ে রিসাদ খান নাম দিলো বা শেফালি নিজের নাম না দিয়ে জেনিফার লরেট নাম দিলো ইত্যাদি।
-
২. বিপরীত লিঙ্গের ফেইক আইডি। অর্থাৎ ছেলে হয়ে মেয়ের নামে এবং মেয়ে হয়ে ছেলের নামে আইডি চালানো। যেমনঃ পল্টু কয়েকটি আইডি চালায় সাদিয়া আফরিন, জান্নাতুল মারিয়া, এঞ্জেল প্রিয়া দিয়ে এবং পারভিন একটা আইডি চালায় নিলয় রহমান নীল, ফাহিম আহম্মেদ, প্রিন্স জিসাদ দিয়ে। তবে এই ক্ষেত্রে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এগিয়ে।
-
৩. ক্লীব লিঙ্গের আইডি। অর্থাৎ ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক তারা আইডির নাম এমন দিবে যে আপনি কনফিউশনে পড়ে যাবেন এটা ছেলের আইডি নাকি মেয়ের। যেমনঃ পল্টুর কয়েকটা আইডি নাম হলো ভোরের কাক, জীবন্ত গোলাপ, হার্ট ব্রোকেন এবং কুমকুমের কয়েকটা আইডি নাম হলো রাতের পেঁচা, পুতুলের বিয়ে, মনের মত মানুষ ইত্যাদি।
-
বিপরীত লিঙ্গের ফেইক আইডি নিয়া একটা দুইটা কাহিনী বলা যেতে পারে।
-
কলেজে উঠার পর ফেইসবুক আইডি খুলি। আর ঐসময় থেকেই ফেইসবুক জেনারেশন মুটামুটি শুরু হয়। আমরা বন্ধুরা যতক্ষণ জেগে থাকতাম ততক্ষণ অনলাইনে থাকতাম। খাওয়ার সময় অনলাইন, নাওয়ার সময় অনলাইন, এক বন্ধু তো টয়লেটও মোবাইল নিয়া যাইতো। যাক ওসব কথা। একদিন এক মাইয়া ফ্রেন্ড রিকু পাঠাইলো। একসেপ্ট করার কিছুক্ষণ পরেই মেসেজ আসলো হ্যালো কেমন আছেন? আমিও রিপ্লে দেওয়া শুরু করলাম।
-
কিন্তু সন্দেহ লাগলো যখন দেখলাম সে বেশি বেশি মেসেজ দেয় এবং বেশি বেশি আগ বাড়িয়ে প্রশ্ন করে। সন্দেহ হওয়া মাত্রই আমার টেকনিক এপ্লাই করলাম। ব্যস বেচারা কেডা ছিল তা বের করে ফেলমাম। আমিও চালিয়ে গেলাম দেখি বেচারা কোন অবধি যায়। পরের দিন কলেজে গিয়ে বন্ধুরা মিলে প্ল্যান করে ওর সামনে গিয়ে উল্টা ওরেই বোকা বানাইয়া দিলাম।
-
এমন আরেকটা কাহিনী হইছিল অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে। দেখি এক মাইয়া মেসেজ দিছে। কলেজের ঐ ঘটনার মতই।ব্যস টেকনিক এপ্লাই করে ধরে ফেললাম। বেচারা আমার নিকট কয়বার যে এই কারনে লজ্জা পাইছে তার ইয়ত্তা নেই। সুযোগ পেলেই ক্ষ্যাপাইতাম। আসলে টেকনিক ছিল বলে ধরতে সহজ হইছে। টেকনিক অনেক প্রকারের আছে, আমি এপ্লাই করতাম ওয়ার্ড টেকনিক অর্থাৎ কিভাবে কোন শব্দ টা কে বেশি লিখে। আর ফেইক আইডি দিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাছের বন্ধুরাই মেসেজ করে। তবে অনেকেই অপরিচিত কারো সাথেও ফেইক আইডি দিয়া মেসেজিং করে।
-
সামাজিক কাজ করার সুবাদে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। কিছু স্বেচ্চাসেবী কর্মীদের স্ক্যান্ডেল অর্থাৎ স্ক্রিনশট বের হইছিলো। আর এটার বেশিরভাগ ঘটেছিল ফেইক মেয়ে নামক আইডি গুলির সাথে। যারা করেছিল তারা মূলত জেলাসি হয়ে বা শত্রুতা করে করেছিলো। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে কারন, শুধু সামাজিক সংগঠন না রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনের কর্মীদের ক্ষেত্রেও এমন টা ঘটতে পারে এবং ইদানীং এমন ঘটনাও ঘটেছে কিছু।
-
ফেইক আইডি বা ছদ্মনাম ডিজিটাল যুগের কোনো ইস্যু না। এই ছদ্মনাম অনেক প্রাচীন যুগে এবং মধ্যযুগেও ছিল। চার হাজার বছর আগের চীনের একটি বই যার ইংলিশ অনুবাদ হলো 'আর্ট অব ওয়ার' এটার মূল লেখক ছিলেন সানজু। বেশিরভাগ বিশ্লেষক মনে করেন যে এটা ছিল তার ছদ্মনাম।
-
এছাড়াও প্রাচীন আমলে ভারতবর্ষের বিখ্যাত একজন লেখক ছিলেন চাণক্য। যিনি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে অর্থশাস্ত্র লিখে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন। আর তার অর্থশাস্ত্র প্রায় বিশ্বের অনেক গুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায়। গতবছর থার্ড ইয়ারের পরীক্ষায় আমাদের অর্থশাস্ত্রের মূলনীতি নিয়ে লিখতে হয়েছে। এই চাণক্য নামটাও ছিল ছদ্মনাম। অর্থশাস্ত্রের রচয়িতার প্রকৃত নাম বিষ্ণুগুপ্ত ও গোত্র নাম কৌটিল্য। বিষ্ণুশর্মা রচিত পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থে চাণক্য ও বিষ্ণুগুপ্ত যে একই ব্যক্তির বিভিন্ন নাম, তা বলা হয়েছে।
-
প্রাচীন বাংলার প্রথম সাহিত্য নিদর্শন হলো চর্যাপদ। এই চর্যাপদের বেশিরভাগ কবির ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে। এছড়াও আমরা মনে করতাম যে কুক্কুরীপা ছিলের বাংলার মহিলা কবি। কিন্তু না, কুক্কুরীপা ছিলেন একজন পুরুষ। বিস্তারিত জানতে সুনীতিকুমারের ODBL বইটি পড়তে পারেন অথবা বাংলা একাডেমির কয়েকটি গবেষণামূলক বই যা চর্যাপদের উপর রচিত।
-
ফিমেইল ফেইক আইডি শুধু ডিজিটাল যুগেই ছিল না তা প্রাচীন যুগেও যেমন ছিল তেমনি ছিল পরবর্তী যুগে। নীহারিকা দেবী নামে লেখা লিখতেন অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত।
-
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ নিয়ে 'মহাশশ্মান' নামক মহাকাব্য লিখে মহান হয়ে আছেন মহাকবি কায়কোবাদ। যার আসল নাম কাজেম আল কোরেশী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটবেলায় ভানুসিংহ ঠাকুর নামে কবিতা লিখতেন। ব্রিটিশবিরোধী লেখা ছদ্মনামে কাজী নজরুল তার ধুমকেতু পত্রিকায় লিখতেন। এছাড়াও আরো শত শত দেশী বিদেশী লেখক রয়েছে যারা ছদ্মনামে লিখতেন অর্থাৎ ফেইক আইডি চালাতেন।
-
এখন এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল পোলাপাইনরা বলতে পারে- 'এত বিখ্যাত ব্যক্তিরা ছদ্মনাম অর্থাৎ ফেইক আইডি চালাইছে তাইলে আমি আমরা চালাইলে অসুবিধা কই!'
-
আমার কথা হইলো আপনি ফেইক আইডি একটা কেন দশটা চালান তাতে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই। মাথা ব্যথা হইলো আপনি ফেইক আইডি কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেছেন সেটা নিয়ে। এসব প্যাঁচাল পারার আগে আসুন একটা কাল্পনিক গল্প শুনে আসি।
-
ক্লাস নাইনে উঠার পর উর্মিলার স্বাদ জাগলো ফেইসবুক চালাবে। তাই সে একটা আইডি খুললো। তবে নিজের নামে না। অন্য একটি নামে। এরপর সে অনেকের সাথেই এড হতে থাকলো। তার আইডিতে প্রচুর ফ্রেন্ড রিকু আসতো। তেমনি একদিন অবুঝ বালক নামের একটা আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকু আসলো। দুজনের সাথে হাই হ্যালো চলতে থাকলো এরপর আরো একটু এগিয়ে গেলো। দুজনে ভাল বন্ধু হয়ে উঠলো।
-
উর্মিলার খুব ভাল লাগে অবুঝ বালক আইডির সাথে কথা বলতে। তার প্রতি উর্মিলা দুর্বল হতে থাকলো আর অবুঝ বালক আইডিটাও দুর্বল হয়ে পড়লো উর্মিলার আইডির প্রতি। কিন্তু দুজনেই চালাকি করে কেউ কারো আসল পরিচয় দিলো না। দুজনের প্রেম গভীর থেকে গভীরে চলে গেলো। দুজনের সম্পর্ক লুতুপুতু মেসেজ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকলো। যেহেতু উর্মিলা বয়ঃসন্ধিক্ষণে আছে সেহেতু সে অল্পতে বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলো।
-
এক পর্যায় দুজন দুজনকে দেখার জন্য পাগল হয়ে উঠলো। অবুঝ বালক চায় উর্মিলার পিক আর উর্মিলা চায় অবুঝ বালকের পিক। অবুঝ বালক বলে তুমি আগে দাও আর উর্মিলা বলে তুমি আগে দাও। অর্থাৎ দুজনে পিক দেওয়া নেওয়ায় টানাহেঁচড়া শুরু করে দিলো। পরে দুজনে মিলে একটি সিদ্ধান্তে পৌছালো যে তারা একটি নির্দিষ্ট তারিখে রাত ১২ টা বাজার সাথে সাথে একে অপরকে পিক সেন্ড করবে। যদি কেউ একজন পিক সেন্ড না করে তাহলে সম্পর্ক ঐদিনেই শেষ। ব্যস এই কথাতে দুজনেই রাজি।
-
কিন্তু অবুঝ বালক একটু বেশি বুঝের মত একটা আবদার করে বসলো। সে উর্মিলার অর্ধনগ্ন পিক চাইলো। উর্মিলা নিতে নারাজ। তাই অবুঝ বালকও যোগাযোগ করতে নারাজ বলে জানালো। উর্মিলা যেহেতু আবেগপ্রবণ সেহেতু সে অবুঝ বালকের কথা রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলো। বলে রাখা ভালো উর্মিলা কিন্তু নিজের নামে আইডি খুলেনি।
-
সেই শুভ তারিখ উপস্থিত। এইদিন সন্ধ্যার পর থেকে কারো সময় যেনো আর ফুরাতে চায় না। একটা সেকেন্ড যেন একজনের কাছে এক দিন মনে হতে থাকলো। এরপর দেখতে দেখতে রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট বাজলো। এইদিকে অবুঝ বালক তার পিক অন্যদিকে উর্মিলা তার অর্ধনগ্ন পিক রেডি করে রেখে আছে। ১২ টা বাজার সাথে সাথেই সেন্ড অপশনে ক্লিক করলেই চলে যাবে একজনের কাছে অপরজনের পিক। প্রতিটি সেকেন্ড যেনো প্রতিটি নিশ্বাস এর মতই হয়ে উঠলো। অবশেষে ১১ টা ৫৯ সেকেন্ড থেকে ১২ টা বেজে উঠলো আর সাথে সাথেই একজন অপরজনের কাছে পিক পাঠানোর জন্য সেন্ড অপশনে ক্লিক করলো। ব্যস সাথে সাথে চলে গেলো দুজনের কাছে দুজনের পিক।
-
কিন্তু ঘটনা ঘটলো ভিন্ন কিছু। উর্মিলা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। উর্মিলা যে পিক টার দিকে তাকিয়ে আছে সেটা আর কেউ নয় স্বয়ং তার জন্মদাতা পিতা আশরাফ ইসলাম। উর্মিলার পিক দেখেও আশরাফ সাহেবের একই অবস্থা। সে বার বার নিজেকে বলতেছে এ আমি কি করলাম! এ আমি কি করলাম! এইদিকে আবেগপ্রবণ উর্মিলা পাগল হয়ে গেলো এটা ভেবে যে এতদিনের মেসেজের কথা আর তার অর্ধনগ্ন পিকের কথা ভেবে। এখন সে কি করবে! আশরাফ ইসলাম শহরে থাকেন আর মেয়ে গ্রামে। আশরাফ সাহেব চিন্তা করলেন এখনই ফোন দিয়ে মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে।
-
ফোন দিলো মেয়ের নাম্বারে। নাম্বার অফ। স্ত্রীর নাম্বারে ফোন দিয়ে স্ত্রীকে বললো মেয়ের রুমে গিয়ে মেয়ের কাছে ফোন টা দিয়ে আসতে। কিন্তু আশরাফ ইসলাম অনেক দেরি করে ফেলেছে। তার স্ত্রী অনেক ডাকাডাকির পরেও যখন রুম খুলতেছিল না তখন পাশের বাসার মানুষ ডেকে রুমের দরজা ভেংগে দেখে উর্মিলা ঝুলে আছে ফ্যানের সাথে।
-
ফেইক আইডি চালানো কতটা যুক্তিক বা অযুক্তিক তা নিয়ে তর্ক বিতর্ক করলে তা আর শেষ করা যাবেনা। শুধু সহজ কিছু জিনিস আমরা খেয়াল করি।
-
সমাজের ভালো কিছুর জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করে লেখালেখি করা যেতে পারে অর্থাৎ যা মঙ্গলজনক তার জন্য। যেমন আগের দিনে কবি লেখকরা তাই করতেন। কিন্তু আমি ফেইক আইডির স্বীকৃতি দিচ্ছি না। কারন, ফেইক আইডিকে প্রমোট করার জন্য সাইবার ক্রাইমে ফেসে যেতে পারি। হ্যাকাররা এবং সন্ত্রাসরাও ফেইক আইডি চালায়। ফেইক আইডি খুলে লুতুপুতু করবেন পরে দেখবেন উপরের গল্পের চেয়েও ভয়ানক কিছু ঘটে যাছে।
-
আপনি যদি কুমতলব হাসিল করার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করেন তাহলে সেটা রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় উভয় ক্ষেত্রেই এটাকে নিষিদ্ধ বলে বিবেচনা করা হবে। আর আপনি যদি বলেন আমি তো জাস্ট আমার বন্ধুদের সাথে মজা করার জন্য ফেইক আইডি চালাচ্ছি, তাহলে আপনি প্রতারণা করতেছেন একজন বা বহু জনের সাথে। আপনি মজা বলতে যেটা বুঝাচ্ছেন সেটা হলো আপনি আপনার শিকারে পরিনত ব্যক্তির ইমোশন নিয়ে খেলা করতেছেন। আর কারো আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এক ধরনের সাইকোলজিক্যাল প্রতারণা। আর এই প্রতারণা প্রতিটি রাষ্ট্র+ধর্মে হারাম।
-
রাসুল (সাঃ) বলেছেন-
"যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমাদের মুসলমানদের সমাজভুক্ত নয়।"
[সহীহ মুসলিমঃ ১০২]
-
কিছু লোক আছে নিজের নাম ঠিক রাখে কিন্তু আগে পরে একটা বিকৃত নাম যোগ করে দেয়। যেমনঃ অপ্সরা মর্জিনা, অশান্ত ছেলে বল্টু ইত্যাদি।
-
আপনি কি জানেন অপ্সরা কাদের বলা হয়! অপ্সরা নিয়ে অনেক বড় একটা আর্টিকেল আছে উইকিপিডিয়াতে। পড়ে আসতে পারেন। পুরাণ ও বেদ অনুসারে অপ্সরা বলতে বুঝানো হয়েছে বেশ্যা অর্থাৎ নর্তকীদেরকে। হিন্দু ভাইয়েরা কষ্ট নিবেন না প্লিজ। আমি কিছু বলিনি, আমি জাস্ট উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য টুকু নিয়েছি। এছাড়াও ছেলে মেয়েরা তাদের নামের সাথে এমন নাম যোগ করে যার অর্থ তারা নিজেরাও জানেনা এবং কিছু কিছু অর্থ এতই জঘন্য যে তা মুখে উচ্চারণ করতেও ঘৃন্না লাগে।
-
রাসুল (সাঃ) খারাপ নাম পরিবর্ত করে নাম ভাল নাম ব্যবহারে তাগিদ দিয়েছেন। সাঈদ আল-মাখযূমী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁর পূর্বনাম ছিল সারম (কর্তনকারী, ছিন্নকারী)। রাসুল (সাঃ) তার নাম রাখেন সাঈদ (ভাগ্যবান)।
-
রাসুল (সাঃ) বলেন-
"যার সন্তান হবে সে তার জন্য উত্তম একটি নাম রাখতে হবে। উত্তম আদব শিক্ষা দিতে হবে।"
[বায়হাকীঃ ৮২৯৯]
-
আরেকটা বিষয় হলো আমরা অন্যকে মন্দ নামে ডাকি। অর্থাৎ একজন ব্যক্তির যে নাম তা না ডেকে নাম বিকৃত করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ডাকি। আর এই ব্যাপারে আল্লাহ সম্পূর্ণ নিষেধ করেছেন।
-
আপনি স্ট্যাটাস পড়তেছেন, বুঝাই যাচ্ছে আপনার ধৈর্য আছে। আল্লাহ বলেছেন তিনি ধৈর্যশীলদের ভালবাসেন। সাইকোলজিতে ধৈর্য নিয়েও একটা টপিক আছে। থাক এ নিয়ে আর বেশি প্যাঁচাল পারতে চাই না। এমনিতেই মাথা হ্যাং হইয়া রইছে পরে আবার মেমোরি ক্রাশ করতে পারে।
-
দেখেন তো কি দিয়ে শুরু করেছিলাম আর কি দিয়ে শেষ করলাম মনে আছে কি না! প্রথমে তিনটা প্রশ্ন করেছিলাম। আরেকবার প্রশ্ন তিন টা পড়ে নিতে পারেন।
-
প্রশ্ন নং একঃ বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কোন রাজার সাথে যুদ্ধে কুলাইতে না পেরে পিছু হটেছিলেন??
-
প্রশ্ন নং দুইঃ পৃথিবীতে প্রথম যেখানে চুম্বকের সন্ধান মেলে তা হলো এশিয়া মাইনর। এই এশিয়া মাইনরের বর্তমান নাম কি??
-
প্রশ্ন নং তিনঃ মন, প্রাণ ও হৃদয় কাকে বলে এবং মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্ক কি??
-
পরিশেষে আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি বানী দিয়ে শেষ করতে চাই-
"আমরা সবাই পাপী,
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে
অন্যের পাপ মাপি।"
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:১৮
আরোগ্য বলেছেন: শুভ ব্লগিং
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮
স্রাঞ্জি সে বলেছেন:
শুভ ব্লগিং........