নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তৌহিদ রাসেল

তৌহিদ রাসেল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

তৌহিদ রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মন, প্রাণ ও হৃদয় কাকে বলে এবং আত্মার সাথে মস্তিষ্কের সম্পর্ক কী?

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:১৪




সাইকোলজিক্যাল এবং দার্শনিক একটা প্রশ্ন ছিল। আর তা হলো- 'মন, প্রাণ ও হৃদয় কাকে বলে এবং মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্ক কী'।

অনেকেই এই বিষয়ে আমার থেকে আরো ভাল জানেন। আমি সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করতে গিয়ে বড় করে ফেলেছি। সেজন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আর উক্ত প্রশ্ন সমন্ধে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই মনোবিজ্ঞান, দর্শনের বই এবং গুগলে খোজ করতে পারেন।


মন কাকে বলে?

মন বলতে সাধারণভাবে বোঝায় যে, বুদ্ধি এবং বিবেকবোধের এক সমষ্টিগত রূপ যা চিন্তা, অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন যে, মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোন কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে।


প্রাণ কাকে বলে?

প্রাণ শব্দটা সহজ মনে হলেও এর উত্তর দেওয়া সহজ নয়। আচ্ছা আপনি নিজেই এর একটা সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করুন দেখবেন পারবেন না। প্রাণ এমন এক জিনিস যা ধরা যায় না ছোয়া যায় না কিন্তু বুঝা যায়। যতক্ষণ প্রাণ থাকবে ততক্ষণ একটি জিনিসকে জীবিত বলা যায়।

তবে কোনো জিনিস থেকে প্রাণ চলে গেলেও জিনিসটির অনেক কোষ জীবিত থাকে। অনেকে প্রাণ এবং আত্মা মিলিয়ে ফেলে। তবে দুটো জিনিস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ঘুমের সময় আত্মা দূরে চলে গেলেও প্রাণ কিন্তু দেহে থাকে।


হৃদয় কাকে বলে?

হৃদয় হচ্ছে হৃদপিণ্ড। বক্ষঃস্থলে অবস্থিত হৃদপিণ্ড মুষ্টিবদ্ধ হাতের সমান, দৈর্ঘ্য ৪ ইঞ্চি, প্রস্থ ৩ ইঞ্চি, বুকের বামদিকে এক-তৃতীয়াংশ প্রসারিত হৃদপিণ্ড অতিশয় ব্যস্ত একটি অঙ্গ। প্রতি মিনিটে ৭২ বার, সেই হিসাবে প্রতিদিন ১০৪,০০০ বার রক্ত পাম্প করে এবং দৈনিক প্রায় আট হাজার লিটার রক্ত দেহের সর্বত্র পৌঁছে দেয়।

হৃদয় শব্দের সাথে অন্যান্য যে সব শব্দ জুড়ে দেয়া হয়েছে তা এমন কতগুলো মানবীয় আবেগ যা হৃদপিণ্ডের সাথে সম্পর্কিত নয়। হৃদপিণ্ডের ঘৃণা বা ভালোবাসার সময় নাই তাকে অতিশয় ব্যস্ত থাকতে হয় রক্ত পাম্প করার কাজে। মিনিটে ৭২ বার তাকে সংকোচিত ও প্রসারিত হয়। তাই হৃদয় শব্দটির ক্রিয়া মূল হচ্ছে 'হৃ' অর্থাৎ হর।

হর কখনো স্থির থাকতে পারে না, ভালোবাসতে বা ঘৃণা করতে পারে না। আবেগ, অনুভূতি, উপলব্ধি ও বোধের সাথে হৃদয়কে সমার্থক করা নিজের মধ্যে হৃদয় এবং এর কার্যকারীতা অনুসন্ধান না করার ফল। আবেগ, অনুভূতি, উপলব্ধি ও বোধ এগুলো মূলত মস্তিষ্কের সাথে জড়িত।


মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্ক কী?

মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্ক বলতে গেলে আমাদের জানা উচিৎ মস্তিষ্ক এবং আত্মার সংজ্ঞা। মস্তিষ্ক হল কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের পুরোভাগ, যা মস্তকের অভ্যন্তরে অবস্থিত এবং দেহের প্রধান নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র। আত্মা হল কোন জীবের অংশ যা কোন শরীর নয়। দেহ যখন জীবিত থাকে, তখন এর ভেতরে একটি আত্মা থাকে। আর মৃত্যুর সময় আত্মা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।

আসলে আত্মা এবং মস্তিষ্কের সাথে কী সম্পর্ক এই বিষয়ে কোথাও আলোচনা হয়েছে কি না জানিনা। তবে আত্মা ও দেহের সম্পর্ক নিয়ে অনেক লেখাই আছে। আমি আত্মা এবং মস্তিষ্কের সম্পর্ক নিয়ে একটু সাজাতে চেষ্টা করলাম। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।

আত্মা হল কোন জীবের অংশ যা কোন শরীর নয়। জীব যখন জীবিত থাকে, তখন এর ভেতরে একটি আত্মা থাকে এবং আত্মার সাথে মস্তিষ্কের কাজ চলে। আর মৃত্যুর সময় আত্মা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে তখন আর মস্তিষ্ক কাজ করেনা।

মানুষ যতক্ষণ জীবিত থাকে ততক্ষণ আত্মা থাকে, মৃত্যুর পর আত্মা দেহ ছেড়ে চলে যায় কিন্তু মস্তিষ্ক দেহের সাথেই রয়ে যায়।

আত্মার অবচেতন বলতে কিছু নেই। আত্মা সর্বদা চেতন থাকে। অবচেতন হয় মস্তিষ্ক। মানুষ যখন কুমায় চলে যায় তখন মূলত তার মস্তিষ্ক চেতনাহীন হয়ে যায় কিন্তু আত্মা ঠিকই চেতন থাকে।

অনেকেই বলে থাকে ঘুমের মাঝে আত্মা অচেতন থাকে, যার ফলে হঠাৎ করে ডাক দিলে মানুষ চমকে উঠে। মূলত এটা ভুল ধারণা। আসলে মস্তিষ্ক রেস্টে থাকে বা স্বপ্নের সময় সে কাজে ব্যস্ত হয়ে যায় যার ফলে কেউ হঠাৎ করে ডাক দিলে মস্তিষ্কে সিগনাল গিয়ে মস্তিষ্ককে ধাক্কা দেয় ফলে আমরা চমকে উঠি। আত্মা অচেতন থাকে না। মূলত আত্মা একটি জগতে চলে যায়। আর এ নিয়ে প্রতিটি ধর্মীয় গ্রন্থে বলা আছে।

আচ্ছা আমরা যখন একা অন্যমনস্ক হয়ে বসে থাকি বা কিছু ভাবতে থাকি তখন দেখবেন পাশে এসে কেউ চমকে দেওয়ার জন্য শব্দ করে তখন আমরা চমকে উঠি। তাহলে কি আমরা বলব যখন আমি বসে ছিলাম তখন আত্মা অচেতন ছিল??

মস্তিষ্ক ঘুমায় কিন্তু আত্মা ঘুমায় না।

আসলে মস্তিষ্কের সাথে আত্মার সম্পর্কটা একটা উদাহরণের মাধ্যমে বলা যায়। ধরেন, দেহ হলো একটি ইঞ্জিন যার মূল পার্টসটি হলো মস্তিষ্ক এবং ইঞ্জিন এর তেল বা চার্জ হলো আত্মা। একটা ইঞ্জিন তখনই সচল হয় যখন তাকে তেল বা চার্জ দেওয়া হয়। মূল পার্টসের কারণেই ইঞ্জিন যথাযথভাবে চলে।

যদি কখনো মূল পার্টসে কোনো সমস্যা দেখা দেয় তখন দেখবেন ইঞ্জিনের বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা দেখা দেয় অর্থাৎ মানুষের মস্তিষ্কে প্রোবলেম হলে সে উদ্ভট আচরণ করে। এছাড়াও মুল পার্টসে কোনোর সমস্যার কারনে অন্য কোনো পার্টসে কাজ নাও করতে পারে। যেমন মানুষের স্ট্রোক হলে দেহের অনেক অঙ্গ অকেজো হয়ে যায়।

ইঞ্জিনে তেল বা চার্জ শেষ হয়ে গেলে মুল পার্টস কোনো কাজ করতে সক্ষম না, পুরো ইঞ্জিনটা বন্ধ হয়ে যায়। আর আত্মা দেহ ছেড়ে একেবারে যাওয়ার সাথে সাথেই মস্তিষ্কের আর কোনো কাজ করা সম্ভব হয় না। ইঞ্জিনে নতুন করে তেল বা চার্জ দিলে নতুন করে চলতে সক্ষম কিন্তু মানুষের দেহে আর আত্মা আর নতুন করে দেওয়া যায় না।

তবে স্রষ্টা চাইলে তা সম্ভব। কুরআনে এক নবীর বর্ণনা আছে যার মৃত্যু হয়েছিল এবং অনেক বছর পর আবার উক্ত দেহে আত্মা প্রবেশ করিয়ে জীবিত করেছিলেন।

এছাড়াও হাসরের দিন সমস্ত মানুষকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উঠাবেন, এমনকি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ মানে ফিঙ্গার প্রিন্ট পর্যন্ত যথাযথভাবে স্থাপন করবেন।

মস্তিষ্কের নির্দেশনায় আমরা পৃথিবীতে যে কর্ম করেছি সে অনুযায়ী বিচার হবে। খারাপ কর্ম করলে নরক এবং ভাল কর্ম করলে স্বর্গে স্থান হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.