নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন আর বাস্তবতা- ঘুমভাঙা সকালের মতো

তৌহিদ জামান73

বাইসাইকেলও কখনো কখনো সুখকর স্মৃতি হয়ে যায়!

তৌহিদ জামান73 › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রত্যহ ৮০ কেজি দুধের চা তৈরি করেন সুফিয়া

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

মাটির তৈরি চুলার ওপর বিশাল সাইজের একটি ডেকচি। তাতে জ্বাল দেওয়া হচ্ছে ৭২ কেজি গরুর দুধ। এই দুধ দিয়ে তৈরি হবে দুধচা। আর সেই চা খাওয়ার জন্যে এখানে সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা-রাত ভিড় করে বিভিন্ন জায়গার ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এই দোকানে যার হাতের চা খেতে প্রত্যহ মানুষের ভিড়, তার নাম সুফিয়া বেগম। বয়স এই ত্রিশ-বত্রিশের মত। সুফিয়া বেগম এই চায়ের দোকানের কর্মচারী। বছর তিনেক আগে তিনি এখানে যোগ দেন। খুব সকালে এসে দোকান খুলে, ঝাড়– দিয়ে পরিস্কার করে তারপর চুলায় আগুন দেন তিনি। এরপর চলে তার চা তৈরি আর বিক্রির কাজ। এই আয়ের উপরেই তিনি নির্বাহ করছেন তিন সন্তানসহ নিজের জীবিকা, সন্তানদের পড়াশুনা।
সুফিয়া বেগম যে চায়ের দোকানে কাজ করেন, সেই দোকানের নাম-মীম টি স্টল। যশোর সদরের খয়েরতলা পেট্রোল পাম্পের পাশে রাস্তার ধারে এটি অবস্থিত। পাশে নূরপুর গ্রাম। এখানে অনেক বসতি। সেই নূরপুরের বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম ডাবলু। দোকানের তিনিই মালিক।
তিনি বলেন, সুফিয়া আগে পরের বাসায় কাজ করতেন। হঠাৎ তিন সন্তানকে রেখে স্বামী তাকে রেখে আরেকজনকে বিয়ে করে চলে যায়। ওইসময় তিনি টি স্টলে কাজ করবেন জানালে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সুফিয়া বেগম নিয়োগ পান প্রতিদিন ১২০ টাকা হাজিরায়। এখন তিনি পান আড়াই শ’ টাকা প্রতিদিন।
যশোর সদরের নূরপুর গ্রামে এক হাজার টাকা ভাড়া বাসায় থাকেন সুফিয়া। সাথে ছেলে শিপন- ক্লাস সিক্সের ছাত্র, মেয়ে সুমাইয়া-ক্লাস ওয়ান আর ছোট মেয়ে সুরাইয়া-এখনও স্কুলে যায় না।
সওজ এবং রেলের জায়গার মাঝে একটি বড় ড্রেনের উপরে কাঠের পাটাতনের ওপর দোকানের ভিত্তি। প্রায় ৩০ ফুট লম্বা লাইনের বেঞ্চ রয়েছে সেখানে, চা পান করতে আসা লোকজনের বসার জন্যে।
প্রতিদিন ৮০ কেজি দুধ লাগে এই স্টলে- জানান ডাবলু। বেশি বিক্রি হয় দুধচা। লাল চাও একেবারে কম না। প্রতিদিন কমপক্ষে এক হাজার কাপ দুধচা আর ৭-৮ শ’ কাপ লাল চা বিক্রি করেন তারা। দুধচার দাম ৮ টাকা।
এখানে কাজ করতে কোন প্রকার সমস্যা হয় না জানালেন সুফিয়া। দোকানমালিক তাকে খুবই বিশ্বাস করেন। পুরো দোকানের মালিকানা তার ওপরেই রেখে তিনি নিশ্চিন্ত।
সুফিয়া বলেন, আগে পরের বাসায় কাজ করে যা আয় হতো, তার থেকে এখন খুব ভাল আছেন। সকাল থেকে দুপুর বা বিকেল পর্যন্ত তিনি চা তৈরি করেন।
বিকেলের পরে ডাবলু আসেন- চলে রাত দুইটা পর্যন্ত। যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের পাশে ব্যস্ততম রাস্তার আর পেট্রোলপাম্পের পাশে অনেক বাহনই সেখানে থামে। আর চায়ের সুনাম অনেকদূর পর্যন্ত গড়ানোই সেখানে ভিড় লেগেই থাকে।
মফিজুল ইসলাম ডাবলু জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র চার ঘণ্টা দোকান বন্ধ থাকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.