নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সাধারণ মুসলমানের ব্লগে স্বাগতম

হ্যা আমি সেই সত্যবাদীকে সত্যবাদী মনে করি

সাধারণ মুসলমান

একজন সাধারণ মুসলমান। সাধারণ মানুষ কি বলতে কি বলি তাই জ্ঞানী লোকদের উপকারী কথা শেয়ার করে আপনাদের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।

সাধারণ মুসলমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব বর্তমান মুসলমানরে জন্য প্রয়োজন এটা জানা।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪২

দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে ইলম ও যিকিরের গুরুত্ব

রাইয়ান ইবনে লুৎফর রহমান



বিগত শতাদ্বীর অবিসংবাদিত আলিম ও দাঈ হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. প্রতিষ্ঠিত তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ কল্পনাতীত উপকার লাভ করেছে এবং এখনও করছে। আল্লাহ চাহে তো কিয়ামত পর্যন্ত মানুষ এর মাধ্যমে উপকৃত হতে থাকবে।



হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. তাঁর এই অভিনব দাওয়াতী আন্দোলনের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ইলম ও যিকিরের গুরুত্ব বিশেষভাবে উপলব্ধি করতেন। ফলে তিনিও তাঁর পূর্বসূরী বুযুর্গানে দ্বীনের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের কর্মীদেরকে ইলম ও যিকিরের প্রতি মনোযোগী হওয়ার জোর তাগিদ দিতেন।



ইলম ও যিকিরের ইহতিমাম ছাড়া এই অভিনব দাওয়াতী মেহনতের দ্বারা নিত্য-নতুন ফেতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও অগ্রিম সতর্কবাণী শুনিয়েছেন।



হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ.-এর জীবনের শেষ লগ্নে একদিন নিযামুদ্দীনে প্রচুর লোক সমাগম হল। তখন হযরতজী এতই অসুস্থ ছিলেন যে, বিছানায় শুয়ে শুয়ে জোর আওয়াজে দু’চারটি কথাও বলতে পারতেন না। তিনি তখন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তাঁর একজন খাস খাদেমকে তলব করলেন এবং তাঁর মাধ্যমে উপস্থিত পুরো জামাতকে এভাবে হেদায়েত দিলেন : ‘‘আপনারা যদি ইলমে দ্বীন এবং যিকরুল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ গুরুত্ব না দেন তবে আপনাদের সমস্ত চলাফেরা, সমস্ত মেহনত মোজাহাদা বেকার হয়ে যাবে। ইলম ও যিকির হল এই মেহনতের দুটি ডানা, যা ছাড়া সে আকাশে উড়তে পারবে না। যদি এ দুটি বিষয়ের প্রতি অবহেলা-উদাসীনতা প্রদর্শন করা হয় তবে প্রবল আশঙ্কা আছে এ মেহনত মোজাহাদার দ্বারা ফেতনা-ফাসাদ ও গোমরাহির নতুন দরজা খুলে যাবে। যদি দ্বীনের ইলমই না থাকে তাহলে তো ইসলাম এবং ঈমান রসম ও নামসর্বস্ব হয়ে যাবে। আর আল্লাহর যিকির ছাড়া যদি ইলম হয় তবে তা সরাসরি জুলুমাত ও অন্ধকার। আর যদি ইলমে দ্বীন ছাড়া যিকিরের আধিক্য হয় তবে এর মধ্যে খতরা রয়েছে। মোটকথা ইলমের মধ্যে নূর যিকিরের মাধ্যমেই আসে। আর ইলমে দ্বীন ছাড়া যিকিরের প্রকৃত বরকত ও ফলাফল অর্জিত হয় না। বরং অধিকাংশ সময় এসব জাহেল সুফীদেরকে শয়তান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এজন্য এই দাওয়াতের মেহনতে ইলম ও যিকিরের গুরুত্ব কোনোভাবেই ভুলে যাওয়া চলবে না। সব সময় এর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় আপনাদের এই তাবলীগী আন্দোলন একটা ভবঘুরে আন্দোলনের মতো হয়ে পড়বে। আল্লাহ না করুন তখন আপনারা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’’ (মালফুযাতে হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ., পৃষ্ঠা : ৩৯-৪০, মালফুয : ৩৫; হযরত মাওলানা ইলিয়াস আওর উনকী দ্বীনী দাওয়াত, পৃষ্ঠা : ১৫৯)



উপরোক্ত মালফুয দ্বারাই বুঝে আসে হযরতজী ইলিয়াস রাহ. ইলম ও যিকিরের গুরুত্ব কত গভীরভাবে অনুভব করতেন। ইলম ও যিকিরের প্রতি অবহেলা ও উদাসীনতা প্রদর্শনকে তিনি তাঁর দাওয়াতী মেহনতের জন্য কত বড় বরবাদির কারণ মনে করতেন। সুতরাং এই মোবারক দাওয়াতী মেহনতের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্যই এই মেহনতের কর্মীদেরকে ইলম ও যিকিরের ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কীভাবে তারা ইলম ও যিকিরের পথে অগ্রসর হবে? কীভাবে এই বিষয়ে তারাক্কী ও উন্নতি করবে? এখন তো তাদের সকলের পক্ষে নিয়মতান্ত্রিক কোনো মাদরাসায় ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়? এর সমাধানও হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. দিয়েছেন। আর তা এই যে, এই পথের অগ্রপথিক যারা অর্থাৎ আহলে ইলম ও আহলে যিকির এর সোহবত ও সাহচর্য এবং তাঁদের পূর্ণ নেগরানি ও তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে এ পথে অগ্রসর হওয়া। কেননা তাদের তত্ত্বাবধান ও নেগরানি ছাড়া এ পথে অগ্রসর হলে পদস্খলনের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।



হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. বলেন, ‘‘আমাদের এই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির এ কথা খুব ভালোভাবে মনে রাখা উচিত, তাবলীগের জন্য বের হওয়ার সময়গুলোতে ইলম ও যিকিরের প্রতি খুব বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ইলম ও যিকিরের উন্নতি ছাড়া দ্বীনের তারাক্কী সম্ভব নয়। আর এ কথাও স্মরণ রাখতে হবে যে, ইলম ও যিকিরের পূর্ণতা তখনই হাসিল হবে যখন এই রাস্তার বড়দের সাথে সম্পর্ক রাখা হবে এবং তাদের হেদায়েত ও নেগরানি গ্রহণ



করা হবে।



আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামের ইলম ও যিকির অর্জিত হত আল্লাহ তাআলার হেদায়েত ও তত্ত্বাবধানে। হযরত সাহাবায়ে কেরামের ইলম ও যিকির সম্পন্ন হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নেগরানি ও দিকনির্দেশনায়। অতপর প্রত্যেক যুগের লোকদের জন্য আহলে ইলম ও আহলে যিকির যেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খলীফা ও প্রতিনিধি। সুতরাং ইলম ও যিকিরের ক্ষেত্রে এ পথের বড়দের থেকে অমুখাপেক্ষী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’’ (মালফূযাতে হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ., পৃষ্ঠা : ১৪৭, মালফুয : ১৭২)



উল্লেখ্য, ‘এ পথের বড়’ কথাটির অর্থও ইলিয়াস রাহ-এর কথা থেকে বোঝা উচিত।



হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. আরো বলেন, ‘‘ইলম ও যিকির এখনও পর্যন্ত আমাদের মুবাল্লিগদের আয়ত্তে আসেনি। এজন্য আমার বড় চিন্তা হয়। আমার কাছে এর সমাধান হল, এ লোকদেরকে আহলে ইলম ও আহলে যিকিরের কাছে পাঠানো। যাতে তারা তাদের তত্ত্বাবধানে তাবলীগের কাজ করে আবার তাদের ইলম ও সোহবত দ্বারা উপকৃত হয়।’’ (মালূফুযাতে হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ., পৃষ্ঠা : ৫৭, মালফুয : ৫৪)



উপরোক্ত মালফুয থেকে বোঝা যায়, হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. দাওয়াতের কর্মীদের মধ্যে ইলম ও যিকিরের কমতি দেখে কতটা উৎকণ্ঠিত ছিলেন। তিনি এই সমস্যার সমাধানের জন্য আহলে ইলম ও আহলে যিকিরের সোহবত গ্রহণ করা, তাদের নেগরানিতে তাবলীগের কাজ করাকে অতীব জরুরি মনে করতেন। বরং হযরতজী রাহ. এই রাস্তার (ইলম ও যিকির) বড়দের নেগরানি গ্রহণ না করলে শয়তানের জালে ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করতেন।



মাওলানা ইলিয়াস রাহ. বলেন, ‘আমাদের এই দাওয়াতের কাজে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে এ কথা খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে যে, তাবলীগ জামাতে বের হওয়ার উদ্দেশ্য শুধু অন্যের কাছে দাওয়াত পৌঁছানো নয়; বরং এর মাধ্যমে নিজের ইসলাহ ও সংশোধন এবং নিজের তালীম-তরিবয়তও উদ্দেশ্য। এজন্য বের হওয়ার যামানায় ইলম ও যিকিরের মধ্যে মশগুল থাকার খুব ইহতেমাম করতে হবে। ইলমে দ্বীন ও যিকির ছাড়া বের হওয়ার কোনো অর্থ হয় না। এ বিষয়টিও মনে রাখতে হবে যে, ইলম ও যিকিরে মশগুল হতে হবে এ রাস্তায় যারা বড় তাদের নেগরানি ও তত্ত্বাবধানে এবং তাদের দিক-নির্দেশনার আলোকে।







...এমনিভাবে আজও আমরা আমাদের বড়দের নেগরানির মোহতাজ। অন্যথায় শয়তানের জালে ফেঁসে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।’ (মালফুযাতে ইলিয়াস, পৃষ্ঠা : ১১১, ১৩৪)







উপরের আলোচনা থেকে বোঝা গেল, এই দাওয়াতী মেহনতের কল্যাণ ও বরকত তখনই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হবে যখন ইলম ও যিকিরের প্রতি পরিপূর্ণ মনোনিবেশ করা হবে। অন্যথায় এই কাজের দ্বারাই ফেতনার দুয়ার খুলে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আর ইলম ও যিকিরের ফায়েদা ও পূর্ণতা তখনই পুরোপুরি অর্জিত হবে যখন আহলে ইলম ও আহলে দিল বুযুর্গদের সোহবত গ্রহণ করা হবে এবং তাঁদের হেদায়েত ও দিকনির্দেশনায় দাওয়াতের কাজ করা হবে। সুতরাং এই মুবারক মেহনতের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি হক্কানী উলামা-মাশায়েখদের সোহবত ও সংশ্রব থেকে বঞ্চিত থাকতে পারে না।



আল্লাহ তাআলা দ্বীনের সব শাখার খাদেমদেরকে সচেতনতা দান করুন।

http://www.alkawsar.com/article/1053

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

বেলা শেষে বলেছেন: ...Assalamualikum, i had studied most of your writing.Most of them are very beautiful. If you like you may visit us too. Up to next time.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.