নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পারভেজ রানা

পারভেজ রানা পেশায় প্রকৌশলী। ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সদস্য। বাংলাদেশ প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স রেজিস্ট্রেশন বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধিত স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার। ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ থেকে ফায়ার সেফটি ও স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রকৌশলী। পারভেজ রানা ইঞ্জিনিয়ারিং সল্যুশন নামে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। কনস্ট্রাকশন, ডিজাইন ও ফায়ার সেফটি বিষয়ক পরামর্শ দিচ্ছেন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে। তার সাথে যোগাযোগের জন্য লিখুন [email protected],[email protected] বলুন ০১৯১৩৩৩৬১২৭ নম্বরে ফোন করে। সরাসরি দেখা করার জন্য চলে আসুন ৫ম তলা, ১৫২ সেনপাড়া পর্বতা (রোকেয়া সরণি), মিরপুর-১০ (আল হেলাল হাসপাতালের কাছে)। আসার আগে ফোন করে আসবেন। পারভেজ রানা বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ডের চেয়ারম্যান। লেখালেখি করেন কৈশোর থেকে। তার ছয়টি প্রকাশনা আছে। উপন্যাস: এলে তুমি অবেলায়, আত্মদহন। গল্পের বই: ঝড়ের শেষে, স্টেশন (সম্পাদিত)। কবিতা: গহীন ভালোবাসায় (কার্ড),গহীন ভালোবাসায় (বই) ভালোবাসা দাও। লেখকদের জন্য একটি নতুন প্লাটফরম বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। যারা লেখালেখি করছেন তাদেরকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে...

পারভেজ রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিমু এবং আমরা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে.....

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১

http://www.facebook.com/himuebongamra
হিমু এবং আমরা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে..... বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড থেকে...
ভূমিকাটা দেখুন:
বাংলাদেশের সাহিত্যজগতে হুমায়ূন আহমেদ (১৯৪৮-২০১২) যাদুকরী নাম। একজন লেখকের পক্ষে সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য এবং জনপ্রিয় হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন। শুধু গ্রন্থ রচনা নয়, বাংলাদেশের দর্শককে প্রেক্ষগৃহমুখী কিংবা বিদেশি চ্যানেলের সামনে থেকে সরিয়ে আনা তার পক্ষেই সম্ভব। মানুষের ভিতর ইন্দ্রজাল তৈরি করার এক বিস্ময়কর ক্ষমতা ছিল এই লেখকের। অনুভূতির বৈচিত্র্য ও সংবেদনশীলতার প্রখরতা তার সাহিত্যকে দিয়েছে অনন্যতা।

হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে “ নন্দিত নরকে” প্রকাশিত হবার মাধ্যমে। মৃত্যুর আগ পর্যন্তই তিনি সাহিত্যরচনা করে গেছেন। সৃষ্টি করেছেন এমন কিছু চরিত্র যা মানুষকে মোহিত, ভাবিত, প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এ ধরনের সিরিয়াল চরিত্রের ভেতর রয়েছে হিমু, মিসির আলী ও শুভ্র। এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে যে চরিত্রটির পাঠক মুগ্ধতা অত্যাধিক সে হিমু। উঠতি বয়সের কিশোর কিশোরীর মনে এই চরিত্রটি মোহাঞ্জন তৈরি করে। চরিত্র হিসেবে কিংবা আরো সুষ্পষ্ট করে বলতে গেলে উপন্যাসের চরিত্র হিসেবে হিমু সমালোচকদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য?

সমালোচকরা বলেন যখন একটি স্বার্থক চরিত্র সৃষ্টি করতে হবে তখন অবশ্যই তার চারটি বৈশিষ্ট্য পূরণ করতে হবে:

1. Create characters who fulfill the required dramatic functions.
2. Create characters who are memorable
3. Create characters who are believable
4. Create characters who are three-dimensional

হিমু চরিত্রে কোন দ্বন্দ্ব-সংঘাত, উত্থান-পতন, বিশ্লেষণ কিছুই নেই। পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবি পরিহিত একজন যুবক যার বাবা চেয়েছিলেন তাকে মহাপুরুষ বানাবেন তার অদ্ভূত, মাঝে মাঝে অবিশ্বাসযোগ্য কিছু কর্মকাণ্ডের সম্মোহনী শক্তি আমাদেরকে বাধ্য করে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা পড়তে। অনেকটা হ্যামিলনের সেই বাশীওয়ালার মতই। আমরা হিমুর পিছনে পিছনে হাঁটি। তার চোখে পৃথিবী দেখি। চমৎকৃত হই কিংবা আবেগে অভিভূত হয়ে কখনো কেঁদে ফেলি। হিমুর আকর্ষনী শক্তির প্রাবল্য আমাদেরকে নিয়ে যায় ভিন্ন এক জগতে। যে জগতে চরম বিস্ময়কর ব্যাপারটিও মনে হয় খুব স্বাভাবিক।

হিমুর জীবন বৃত্তান্ত থেকে জানা যায় তার প্রাথমিক পাঠশালার একমাত্র শিক্ষক তার বাবা। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের মত মহাপুরুষ বানানো যায় কিনা সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন তিনি তার ছেলের উপর। যদি তার এই কাজ বাঁধাপ্রাপ্ত হয় সেজন্য তিনি হিমুর মাকে হিমুর জন্মের পর পরই খুন করেন। তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন সন্তানকে মহাপুরুষ বানানোর ব্রতই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। জীবনের কোন বয়সে হিমুর কী করতে হবে সবকিছু তিনি ডায়েরিতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তার এই পরীক্ষা ছিল খন্ডিত। কারন তিনি তার সন্তানকে জীবনের অন্ধকার দিকগুলো সম্পর্কে শুধু ধারণা দিয়েছিলেন। জীবনের আলোকিত দিক সম্পর্কে তিনি তার সন্তানকে কখনো জানাননি। নৃশংসতা, দুঃখ, কষ্ট, বেদনার মত বিষয়গুলো তিনি তার সন্তানকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। যেমন:

# শৈশবে হিমুর কোন খেলনা খুব পছন্দ হলো, হিমুর বাবা হাতুড়ি নিয়ে সেই খেলনা ভাঙতে বসলেন। [ ময়ূরাক্ষী, পৃ ৪৮]

# হিমুর জন্য তার বাবা খাঁচায় করে টিয়াপাখি নিয়ে এলেন। হিমুর আনন্দের আধিক্যে কেঁদে ফেলল। তার বাবা গলা টিপে টিয়াপাখিকে মেরে ফেলল।

এভাবে তিনি পুত্রের মন থেকে মায়া কাটাতে চেষ্টা করেছেন। মানুষের খারাপ দিক সম্পর্কে অবহিত করার জন্য তিনি পুত্রকে তার মৃত্যুর পর তার মামাদের সঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে যান। হিমুর মামারা ছিল পিশা শ্রেনির মানুষ। হিমুর বাবার ধারণা ছিল পিশাচশ্রেনির মানুষের সংস্পর্শে না এলে, মানুষের সৎগুণ সম্পর্কে ধারণা হবে না। হিমু তার মামাদের পৈশাচিক আচরণের ও পরিচয় দিয়েছে:

# বড়মামার বাড়িতে তিনটি বিড়াল ছিল। এরা খুবই উপদ্রব করত। বড়মামার নির্দেশে বিড়াল তনিটাকে ধরা হলো। তিনি বললেন, হাদিসে আছে বিড়াল উপদ্রব করলে-আল্লাহর নামে এদের জবাহ করা যায়। তাতে দোষ হয় না। দেখি বড় ছুরিটা বার করা। এই কাজ তো আর কেউ করবে না। আমাকে করতে হবে। উপায় কি! মামা নিজেই উঠানে তিনটা বিড়ালকে জবাই করলেন। এর মধ্যে একটা ছিল --------- গভীবতী। [ ময়ূরাক্ষী, পৃষ্ঠা ৪০]

# এক অন্ধকার বৃষ্টিতে রাতে একজন -কেউ মারবার কোঁচ দিয়ে বড়মামাকে গেঁথে ফেলে। বিশাল কোঁচ। মামার শুইয়ে রাখা হয়। দৃশ্য দেখার জন্যে সারা গ্রামের লোক ভেঙে পরে।
তাঁকে সদরে নিয়ে যাওয়ার জন্যে মহিষের গাড়ির ব্যবস্থা হলো। মামা ঠান্ডা গলায় বললেন, এতক্ষণ বাঁচব না। তোমরা আমাকে থানায় নিয়ে যাও। মরার আগে আমি কারা এই কাজ করছে বলে যেতে চাই। মামা কাউকেই দেখেননি তবু তিনি মৃত্যুর আগে আগে থানায় ওসির কাছে চারজনের নাম বললেন। তিনি বললেন, তাঁর হাতে টর্চ ছিল। তিনি র্টচ ফেলে ফেলে এদের দেখেছেন।
ওসি সাহেব মামার দেয়া জবানবন্দি লিখতে লিখতে বললেন- ভাই সাহেব, এই কাজটা করবেন না। ডেথ-বেড কনফেসন খুব শক্ত জিনিস। শুধুমাত্র এর উপরই কোর্ট রায় দিয়ে দেবে । নির্দোষ কিছু মানুষকে জড়াচ্ছেন। এদের ফাঁসি না হলেও জাবজ্জীবন হয়ে যাবে।
মামা বললেল, যা বলছি সবই সত্যি। কোরান মজিদ আনেন। আমি কোরান মজিদে হাত দিয়ে বলি-। ওসি সাহেব বললেন, তার দরকার হবে না। নিন, এখানে সই করুন। এটা আপনার জবানবন্দি।
মামা সই করলেন। মারা গেলেন থানাতেই। মারা গেলেন থানাতেই। মরবার আগে মেঝো মামাকে কানে কানে বললেন- এক ধাক্কায় চার শত্র“ শেষ। ----- কাজটা মন্দ হয় নাই। [ ঐ, পৃষ্ঠা ৪১-৪২]

তবে হিমুর মামারা হিমুকে অত্যন্ত স্নেহ করতো। ১০০ ভাগ অন্ধকার মানুষের মাঝেও কোথাও আলোকিত দিক থাকে এবং হুমায়ূন আহমেদের নিখুত বর্ণনাতে তা উঠে এসেছে যা যে কোন মানুষকে আবেগ আক্রান্ত করে ফেলে। যেমন: হিমুকে তার ছোট মামা একটি চিঠি লেখেন।
দোয়াগো,
পর সমাচার এই যে, দীর্ঘদিন তোমার কোনো পত্রদি পাইয়া বিশেষ চিন্তাযুক্ত আছি। আশা করি আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন তোমাকে সুস্থ দেহে রাখিয়াছেন। আমাদের এদিকের সংবাদাদি মঙ্গল। তুমি কোনো চিন্তা করিবে না। আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় এই বার ফসল ভালো হইয়াছে। ব্যবসাপাতিও ভালো। তোমাকে মাসিক যে টাকা পাঠানো হয় তাহাতে তোমার খরচ চলে কিনা জানি না। প্রয়োজন হইলেই জানাইবা। এই বিষয়ে কোনোরকম লজ্জা বা সংকোচ করিবে না। তোমাকে যে কী পরিমাণ স্নেহ করি তাহা একমাত্র আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন জ্ঞাত আছেন। শরীরের যতœ নিবা। পথে পথে ঘোরার অভ্যাস ত্যাগ করিবা। মনে রাখিও, ভিক্ষুকরাই পথে পথে ঘুরে। তুমি ভিক্ষুক নও। কারণ আমরা এখনও জীবিত আছি। আল্লাহপাকের ইচ্ছায় তোমার অন্নের অভাব কখনো হইবে না। কোনো কারণে আমার মৃত্যু ঘটিলেও চিন্তাযুক্ত হইও না। কারণ আমি তোমার নামে আলাদা সম্পত্তি লেখাপড়া করিয়া দিয়া রাখিয়াছি। তাহাতে কেই হাত দিবে না। দোয়া নিও।
--------------- ইতি তোমার ছোট মামা। [ দরজার ওপাশে, ১০৯]

----------------------------------------এভাবেই অগ্রসর হচ্ছে
হিমু এবং আমরা

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

রশিদ সভাপতি মুমুরদিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ পারভেজ রানা। হুমায়ুন আহমেদের এক অনবদ্য সৃষ্ট চরিত্র হিমু সম্পর্কে চমৎকার লেখাটি উপস্থাপন করার জন্য।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:১৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:৫৬

পারভেজ রানা বলেছেন: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.