নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় খেলার তালিকায় দাবা অন্যতম। এটা বুদ্ধির খেলা হিসেবেই বেশি পরিচিত। কারণ দাবা বোর্ড দেখতে ছোটখাটো হলে কী হবে, এই খেলা খেলতে যথেষ্ট বুদ্ধি আর কৌশলের প্রয়োজন। গত শতাব্দীতে দাবা খেলায় কম্পিউটারের ব্যবহার একে আরও জনপ্রিয় ও আলোচনার বিষয়তে পরিণত করেছে। আপনারা অনেকেই হয়তো শুনেছেন সেই ১৯৯৬ সালের কথা। আচ্ছা একটু খুলেই বলি।
১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক গ্রান্ডমাস্টার গ্যারি কাসপারভ দাবা খেলেন "ডিপ ব্লু" নামের একটি কম্পিউটারের সাথে। সেবারই প্রথমবারের মতো মানুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা একটি যন্ত্র। সেবার ডিপ ব্লুর সাথে দাবা খেলায় গ্যারি কাসপারভ জিতে যান। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার ঠিক পরের বছর তিনি হেরে যান ডিপ ব্লুর কাছে। এ ঘটনা বিশ্ব জুড়ে সৃষ্টি করেছিল অনেক আলোচনা সমালোচনা। মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছিল, মানুষের চেয়ে কি যন্ত্র বেশি বুদ্ধিমান হতে পারে?
সে যাই হোক, যে দাবা নিয়ে এতো আলোচনা সমালোচনা সারা বিশ্বজুড়ে সেই দাবার জন্মস্থান ভারত উপমহাদেশ। খ্রিস্টিয় ৭ শতকে অর্থাৎ আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে এখানে দাবা খেলা চালু হয়। সেসময় এই খেলার নাম ছিলো চতুরঙ্গ ("চতু" মানে "চার" এবং "অঙ্গ" মানে "অংশ")। আসলে তখন দাবায় হাতি, ঘোড়া, রথ ও পদাতিক সৈন্য এই চারটি অংশ ছিলো। তাই এরকম নাম ছিলো।
কিন্তু চতুরঙ্গ খেলাটা আজকের দাবা বা চেজ হয়ে উঠতে অনেক সময় এবং দেশ পাড়ি দিতে হয়েছে। সেই দীর্ঘ ইতিহাসকে সংক্ষেপে জানাচ্ছি।
ভারতের সাথে প্রাচীনকালে পারস্যের বানিজ্যিক যোগাযোগ ছিলো বেশ ভালো। পারস্যের বণিকেরা ভারতে এই মজার খেলা খেলতে দেখেছিল। তাদের কাছেও খেলাটা ভালো লেগে যায়। এসব বণিকদের হাত ধরে চতুরঙ্গ একসময় পারস্যে চলে যায়। সেখানে এর নতুন নাম হয় "শতরঞ্জ"। সেটা খ্রিস্টীয় ৬০০ সালের দিকের ঘটনা। এখানে দাবা খেলার নিয়ম কানুন আরও উন্নত হয়। প্রায় একই সময় ভারত থেকে খেলাটা চীনযাত্রা করে। চীনারা এর নামকরণ করে জিয়ানকুই (xiangqi)। তবে চীনাদের দাবি জিয়ানকুই তাদের নিজেদের উদ্ভাবিত খেলা। শুধু তাই নয়, তাদের দাবি, দাবা খেলা আসলে ভারতে নয় চীনে উদ্ভাবিত হয়েছে।
প্রাচীন পারস্য বা আজকের ইরান এক সময় মুসলমানদের দখলে চলে আসে। ধীরে ধীরে দাবা মুসলমানদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ইউরোপের স্পেন ছিল মুসলমানদের শাসন। তাই পারস্য থেকে শতরজ্ঞ এক সময় স্পেনে তার শক্ত আসন গড়ে নেয়। পারস্যের শতরঞ্জ স্পেনে এসে Ajedrez নাম ধারণ করে।
শুধু তাই নয় পারস্য থেকে শতরঞ্জ আরও নানাভাবে ইউরোপে প্রবেশ করে। খ্রিস্টীয় দশম থেকে ১২ শতকে পারস্যে সালাউদ্দিনের শাসনামলে ইউরোপের ক্রুসেডাররা জেরুজালেম রক্ষার জন্য দলে দলে ভিড় জমায় পারস্যে। দীর্ঘদিন পারস্যে থাকতে থাকতে তারা পারস্যের অনেক কিছুই আমদানী করতে থাকে ইউরোপে। এভাবে শতরঞ্জও এই সময় ইউরোপে ও রাশিয়ায় ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখানেও সে নতুন নাম পায় "চেজ"। যা পুরাতন ফরাসী ভাষা 'echec' (অর্থ চেক) থেকে উদ্ভুত। শুধু নামেই নয়, খেলাটার আরও অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়। ইউরোপেই দাবায় প্রথম বিশপ (হাতি) যুক্ত হয়। আরও পরে যোগ হয় রাণী।
পরে এই খেলা ইউরোপীয়দের মাধ্যমে একসময় সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই জনপ্রিয়তার কারণেই ১৯২৪ সালে ফান্সের প্যারিস শহরে "দি ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল ডেস চেস" (এফআইডিই) গঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি দাবা খেলার আন্তর্জাতিক নিয়ম কানুন নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। এই সংস্থা আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজক। দক্ষতার উপর নির্ভর করে এফআইডিই খেলোয়াড়দের ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার এবং গ্রান্ডমাস্টার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। যে সব খেলোয়ার প্রতিযোগিতায় সবার সেরা হয় তারাই গ্রান্ডমাস্টার। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ১৫৯টি দেশ এফআইডিই এর সদস্য।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজন এই খেলায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। নিয়াজ মোর্শেদ বাংলাদেশের প্রথম গ্রান্ডমাস্টার। তিনি ১৯৮৬ সালে গ্রান্ডমাস্টার হন। বাংলাদেশে পরবর্তীতে আরও চারজন গ্রান্ডমাস্টার হয়েছেন। তারা হলেন জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, আবদুল্লাহ আল রাকীব, এনামুল হোসেন রাজীব।
মূল লেখাঃ "দাবা ও তার জন্মকথা"
বিঃদ্রঃ লেখাটি কপি করিলে অনুগ্রহ করে লেখকের নাম সহ কপি করিবেন।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬
নহে মিথ্যা বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ...
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:২১
ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: আহারে দাবার সেটগুলা!
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭
নহে মিথ্যা বলেছেন: হুম ছোট বেলায় আমার কেনা দাবার গুটি যে কোথায় আছে খুঁজতে বড় মনে চাচ্ছে
৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৪০
সুমন কর বলেছেন: ছোটবেলা দাবা খেলা হতো ! এখন আর কর্মব্যস্ততার কারণে হয়ে উঠে না। হয়তো ভুলেই যাচ্ছি।
পোস্ট সংগ্রহে থাকল।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮
নহে মিথ্যা বলেছেন: ছোট বেলা ভাবতাম কবে বড় হব আর এখন ভাবি আহারে আবার যদি ছোট বেলায় ফিরে যাওয়া যেত
৪| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: দাবা আমা অন্যতম প্রিয় একটি খেলা।
আমার অনেক দাবার শিরোপাও আছে।
কিন্তু বর্তমানে খেলা হয় না ব্যস্তকার কারণে।
ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮
নহে মিথ্যা বলেছেন: বাপরে... আপনার কাছে কোচিং করা লাগবে
৫| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮
চিরতার রস বলেছেন: দাবা খেলার লোক পাইনা
অনলাইনে খেলতে খেলতে বিরক্ত হৈয়া গেছি
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯
নহে মিথ্যা বলেছেন: যাক তাও ভাল লাগল আপনি খেলাটা ধরে রেখেছেন...
৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুবই চমৎকার পোষ্ট! ভালো পাইলাম। একটা সময় প্রতিদিন বাসার ছাদে দাবা খেলার আয়োজন হতো। এখন মাঝে মাঝে বিকেলে দেখি লেকে এক দল লোক জড়ো হয়ে দাবা খেলছে। আমার খুব মজা লাগে।
আমি দাবা খেলা শিখেছিলাম আমার বাসার দারোয়ানের কাছ থেকে। ভদ্রলোক বেশ ভালো দাবা খেলতেন। এখন শুনি দাবা খেলার কত কি নিয়ম আছে। ইদানিং সময়ও পাই না, খেলাও হয় না। অনলাইনে দাবা খেলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেন যে পোষায় না।
১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭
নহে মিথ্যা বলেছেন: ভাই আসলে অতীতের কথা মনে করলে মনে হয় অতীতটাই ভাল ছিল...
৭| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৫৩
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
স্মৃতিকাতর করে দিলেন... অনেক দিন কারও সাথে দাবা খেলা হয় না...
কম্পুতে এডভান্স লেভেলে আসার পর আর মজা পাই না...
ভালো একটি লেখা।
১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
নহে মিথ্যা বলেছেন: ধন্যবাদ... দাবা খেলায় মজা পান না!!! অবশ্য আমিও পাইনা পিসিতে গাড়ি নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে মাথা এখন আর খাটাতে ইচ্ছা করে না
৮| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:২১
মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: প্রিয় খেলা নিয়ে পোস্ট দেখে এলাম। চৌষট্টি কোর্টের আবেদন ম্লান হবার নয়। চমৎকার লিখেছেন।
প্রিয় সেটটা এখনো আছে, খেলা হয় না। ইউবিসফটের চমৎকার "চেসমাস্টার গ্র্যান্ডমাস্টার এডিশন" কিনে রেখেছি, কত সময় কেটেছে এই গেমটির চমৎকার একাডেমীতে, কত ফেমাস গেম দেখে, কত প্রিন্সিপল শিখে।
দাবা খেলা থাকুক।
১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২০
নহে মিথ্যা বলেছেন: আমি আজ পর্যন্ত একটাও জিততে পারি নাই... কারন কি জানেন ভাই?? এক বার খেলছি... খেলার পর মনে হইছে আমার টাকা দিয়ে কেনা কম্পিউটার... আমার কেনা সিডি... আর আমাকে হারাবে... একবার হেরেই uninstall করে দিছি লাম
৯| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯
উদাস কিশোর বলেছেন: পোষ্ট টা দারুণ ।
দাবা খেলা শেখার চার দিন পরই আমার ট্রেইনারকে কুপোকাত করেছিলাম । তারপর থেকে সে আর কোন দিনই আমার সাথে পেরে উঠেনি ।
এখন খেলার মানুষ খুজে পাই না
১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২
নহে মিথ্যা বলেছেন: খাইছে... যত দূর মনে পরে... আমার এক বন্ধুর ছোট ভাই আমাকে ৫ বার টানা হারায়... পরে আমার সাথে ১০০ টাকা বাজিতে খেলা শুরু করে ১০০ টাকা গচ্চা দেয়... এরপরে ১০০ টাকা উসুল করতে যেয়ে আরো ১০০ টাকা গচ্চা দেয়...
বেচারা এর পর থেকে আমার সাথে কেন জানি আর খেলতে চায় না...
১০| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৫
মামুন রশিদ বলেছেন: দাবার জন্মকথা জেনে ভালো লেগেছে । সুন্দর পোস্ট ।
১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৫
নহে মিথ্যা বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১১
নগত টাকা বলেছেন: দাবা আমার অতি প্রিয় খেলা , ধন্যবাদ লেখার জন্য